আন্তর্জাতিক

নিউইয়র্ক টাইমস্ আর্কাইভ : তিনি (বঙ্গবন্ধু) গ্রেফতার এবং আটকাবস্থার সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়েছেন

॥ আনিসুর রহমান ॥
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি কমান্ডো স্কোয়াড বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন থেকে গ্রেফতার করেছিল। তারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ক্র্যাকডাউন শুরু করার সময় বঙ্গবন্ধুর অবস্থান সম্পর্কে জাতিকে অন্ধকার অবস্থায় রেখেছিল।

স্কোয়াডের কমান্ডার পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের (এসএসজি) কর্মকর্তা, অনেক বছর পরে তার ‘মিশনের’ বিষয়ে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন।

বিশ্ববিখ্যাত নিউইয়র্ক টাইমস (এনওয়াইটি) আর্কাইভ থেকে এখন জানা গেছে যে, বঙ্গবন্ধু নিজেই সংবাদপত্রের বিশ্ববিখ্যাত প্রতিবেদক পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী সিডনি হিলেল শ্যানবার্গসহ আরও কয়েকজন আমেরিকান সাংবাদিককে এই পর্বটি সম্পর্কে একটি প্রাণবন্ত বর্ণনা দিয়েছেন।

এনওয়াইটি ‘তিনি গ্রেফতার ও আটকাবস্থার সম্পূর্ণ কাহিনী বলেছেন’ শিরোনামসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

বাংলাদেশের জাতির পিতা পাকিস্তানে নয় মাস বন্দী থাকার পর দেশে ফেরার মাত্র এক সপ্তাহ পরে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন।

এনওয়াইটি লিখেছে, বঙ্গবন্ধু তার কান্নারত স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবকে বলছিলেন যে, ‘তারা আমাকে মেরে ফেলতে পারে। আমি হয়তো আর কখনো তোমাকে দেখতে পাব না। কিন্তু আমার জনগণ একদিন মুক্ত হবে এবং আমার আত্মা তা দেখতে পাবে এবং খুশি হবে।’

তার দুই ছেলে নাবালক শেখ রাসেল এবং শেখ জামাল সেখানে ছিলেন যখন তিনি বিদায় নেন এবং ‘পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে চুম্বন করেন।

এনওয়াইটি প্রতিবেদন অনুসারে, পশ্চিম পাকিস্তানি আধিপত্য এবং অধিক জনবহুল পূর্ব অঞ্চলের শোষণের অবসান ঘটাতে চলমান গণ আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি সেনা ক্রাকডাউন আসন্ন বলে গুজব বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে সেই মুহুর্তের কয়েক ঘন্টা আগে বঙ্গবন্ধু কিছু গোপন প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

এনওয়াইটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘রাত ১০:৩০ টায় তিনি দক্ষিণ-পূর্ব বন্দর শহর চট্টগ্রামে একটি গোপন দফতরে ফোন করেছিলেন এবং তার জনগণের কাছে একটি শেষ বার্তা দিয়েছিলেন, যা রেকর্ড করা হয়েছিল এবং পরে গোপন ট্রান্সমিটারে সম্প্রচার করা হয়েছিল।

এনওয়াইটি-এর মতে, সম্প্রচারের সারমর্ম ছিল যে, ‘তাদের নেতার ক্ষেত্রে যাই ঘটুক না কেন’ তাদের যে কোনো সেনা আক্রমণ প্রতিহত করতে হবে এবং এবং ‘তিনি পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের জন্য স্বাধীনতার কথাও বলেছিলেন।’

বঙ্গবন্ধু মার্কিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, তার বার্তা পাঠানোর পর তিনি আধাসামরিক বাহিনী ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) এবং আওয়ামী লীগের সদস্য যারা তাকে পাহারা দিচ্ছিল তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পুরো শহর জুড়ে পশ্চিম পাকিস্তানের আক্রমণ শুরু হয় রাত ১১টার দিকে দ্রুত তা তীব্র আকার ধারণ করে। সৈন্যরা মধ্যরাত ১ টার দিকে শেখ মুজিবের বাড়িতে গুলি ছুড়তে শুরু করে, ‘১৯৭২ সালের ১৮ জানুয়ারি সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠায় এনওয়াইটি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছিল।

এতে বলা হয় যে, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যখন গুলি মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে উপরের তলায় তার ড্রেসিং রুমে নিয়ে যান এবং তারা সবাই মেঝেতে শুয়ে পড়েন।

শানবার্গ লিখেছেন ‘সেটি (সাক্ষাৎকার) ছিল আজকের তাঁর বর্ণনার একটি অংশ। শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো তাঁর গ্রেফতার, কারাবাস, মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যাওয়া এবং মাত্র এক সপ্তাহ আগে মুক্তি লাভের গল্প বলেছিলেন।

বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক আরো লিখেছেন ‘শান্ত ও কিছুটা তিক্ততা মিশিয়ে এবং কখনও কখনও তার সৌভাগ্যের জন্য হাসতে হাসতে, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন আমেরিকান সংবাদপত্রের সংবাদদাতার সঙ্গে সাবলীল ইংরেজিতে কথা বলেছেন।

এনওয়াইটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু একটি কোচে হেলান দিয়ে মার্কিন সাংবাদিকদের সঙ্গে ২৫ মার্চের রাতে ঘটনার সূচনা থেকে নানা বিষয়ে কথা বলেছিলেন। স্থানটি ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের সরকারি বাসভবনের বসার ঘর। ইয়াহিয়া তখন পশ্চিম পাকিস্তানে গৃহবন্দী ছিলেন।

এনওয়াইটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু তার পরিবারকে বিদায় জানানোর পর, পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা তাকে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে নেয়। তিনি জীপের কাছে পৌঁছে অভ্যাস বশে ও দৃঢ় কন্ঠে (বঙ্গবন্ধু) বলে উঠলেন ‘আমি আমার পাইপ ও তামাক নিতে ভুলে গেছি। আমার পাইপ ও তামাক অবশ্যই লাগবে!

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সৈন্যরা হতবাক হয়ে গিয়ে গেলো কিন্তু তারা তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, যেখানে তার স্ত্রী তাকে পাইপ এবং তামাক দিয়েছিলেন।

এতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুকে তারপর ‘পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য পাকিস্তান সরকারের কারাগারে সাড়ে নয় মাস কাটাতে হয়েঠিল।

বঙ্গবন্ধু বলেন, তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, পাকিস্তানি সামরিক শাসক তাকে হত্যা করার চক্রান্ত করেছিল।

তিনি বলেন, আমি বাড়ি থেকে বের হলেই তারা আমার গাড়ি লক্ষ্য করে গ্রেনেড নিক্ষেপ করতো এবং তারপর বলতো যে, বাঙ্গালী চরমপন্থীরা এটা করেছে এবং এ কারণেই সেনাবাহিনীকে আমার জনগণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।

এনওয়াইটি বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে বলেছে, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমাকে অবশ্যই আমার নিজের বাড়িতে থাকতে হবে এবং তাদেরকে আমার নিজের বাড়িতে আমাকে হত্যা করতে হবে, যাতে সবাই জানতে পারে যে তারা আমাকে হত্যা করেছে এবং আমার রক্ত আমার জনগণকে শুদ্ধ করবে।

বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছিলেন, তিনি তার বড় ছেলে কামাল এবং তার দুই মেয়েকে আত্মগোপনে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মেঝ ছেলে জামাল তখনও ঢাকার ধানমন্ডিতে দোতলা বাড়িতে ঘরেই ঘুমাচ্ছিলেন।‘

রাত ১০ টার মধ্যে শেখ মুজিব খবর পেয়েছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা বেসামরিক জনগণের উপর আক্রমণ করার জন্য অবস্থান নিয়েছে। কয়েক মিনিট পরে সৈন্যরা তার বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং কাছাকাছি একটি মর্টার শেল বিস্ফোরিত হয়।

এনওয়াইটি লিখেছে, সৈন্যরা শিগগিরই ঘরে ঢুকে পড়ে, একজন প্রহরীকে হত্যা করে সিঁড়ি বেয়ে উঠেছিল। ‘শেখ মুজিব বলেছিলেন, তিনি ড্রেসিংরুমের দরজা খুলে তাদের মুখোমুখি হন’।

বঙ্গবন্ধু মার্কিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘গুলি বন্ধ করুন! গুলি বন্ধ করুন! আপনি কেন গুলি করছেন? যদি আপনি আমাকে গুলি করতে চান তবে আমাকে গুলি করুন, আমি এখানে আছি, কিন্তু আপনি কেন আমার লোকজন এবং আমার সন্তানদের গুলি করছেন ?’

তিনি স্মরণ করেন, অন্য একজন মেজর লোকদের থামিয়ে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন তখন আর গুলি চালানো হবে না এবং ‘শেখ মুজিবকে বলেছিলেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং তার অনুরোধে তাকে বিদায় জানানোর জন্য কয়েক মুহূর্ত অনুমতি দেয়া হয়েছে’।

পাকিস্তানি নথিতে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় সামরিক সদর দফতর থেকে একটি রেডিও বার্তা পাঠানো হয় যে, ‘পাখি (এখন) খাঁচাবন্দী।’

বঙ্গবন্ধু বলেন, সামরিক জীপে ওঠানোর পর তাকে প্রথমে জাতীয় পরিষদ ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়, ‘যেখানে আমাকে একটি চেয়ার দেওয়া হয়।’

‘তারপর ওরা আমাকে চা খেতে দিল,’ তিনি বিদ্রƒপ কণ্ঠে বলেন। ‘আমি বললাম, ‘ চমৎকার। চমৎকার পরিস্থিতি। চা খাওয়ার এটাই এটাই আমার জীবনের সেরা সময়’।

কিছুক্ষণ পর তাকে সামরিক ক্যান্টনমেন্টের একটি স্কুলের ‘একটি অন্ধকার ও নোংরা ঘরে’ নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরবর্তী ছয় দিন তিনি সেই কক্ষে দিন কাটান। তাঁর রাত-মধ্যরাত থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত কাটতো সামরিক আইন প্রশাসক লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান বাসভবনের একটি কক্ষে।

নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে যে এই লোকটিকে বাঙালিরা সামরিক দমন-পীড়নের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী বলে বিবেচনা করতো। যে নিপীড়নে কয়েক লাখ বাঙালি নির্যাতিত ও নিহত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘১লা এপ্রিল, শেখ মুজিব বলেন, তাকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে এক হাজার মাইলেরও বেশি দূরে ভারতীয় ভূখ- দ্বারা বিচ্ছিন্ন পশ্চিম পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপরে মিয়ানওয়ালি কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কনডেম সেলে রাখা হয়।’

নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে আরো বলা হয়, বঙ্গবন্ধু পরবর্তী নয় মাস সেই কারাগার এবং উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশের লায়ালপুর ও সাহিওয়ালের এবং দুটি কারাগারে পর্যায়ক্রমে পার করেন।

এতে বলা হয়, ‘সামরিক সরকার তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগে বিচার শুরু করে, যার মধ্যে ছয়টিতে ছিল মৃত্যুদ-। এর একটি ছিল ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা’।

৩২ ধানমন্ডিতে স্কোয়াডের নেতৃত্ব থাকা পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর এসএসজি কর্নেল জেড এ খান পরে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন যে তিনি কুমিল্লায় পোস্টেড ছিলেন এবং ২৩শে মার্চ ঢাকায় এলে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সেই সময় সামরিক মহলে ঔদ্ধত্য ও আত্মম্ভরিতার জন্য পরিচিত খানের মতে, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী তাকে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করার আনুষ্ঠানিক আদেশ দেন।

খান বলেন, বেসামরিক বিষয়াদির তত্ত্বাবধানের দায়িতে নিয়োজিত আলী তাকে প্রথমে সামরিক বাহিনী ব্যবহার না করে এবং একটি বেসামরিক গাড়ি শুধু একজন অফিসারকে সাথে নিয়ে কাজটি সম্পন্ন করতে বলেন।

খানের মতে ৩২ ধানমন্ডিতে বিক্ষুদ্ধ উপস্থতির জনতার কারণে তিনি আদেশটিকে একটি অসম্ভব হিসাবে বিবেচনা করে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন, যা আলীকে ক্ষুব্ধ করে।

অবশেষে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল হামিদ, সেই সময় ঢাকায় ছিলেন। তিনি এতে হস্তক্ষেপ করেন এবং সম্পূর্ণ যুদ্ধের সাজে কমান্ডো ব্যবহারের অনুমতি দেন।

খান বলেন, ‘সিওএএস (হামিদ) তখন মেজর জেনারেল রাও ফরমানকে টেলিফোন করেন এবং তাকে আমার সকল প্রয়োজন পূরণ করতে বলেন এবং আমাকে বলেন যে মুজিবকে জীবিত রাখতে হবে এবং তাকে হত্যা করা হলে আমি ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকব।’

এই অফিসার বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের দিকে সামরিক যান চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্য যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন এবং কীভাবে তার লোকেরা শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন তার বিশদ ব্যাখ্যা করেন।

খান বলেন, বাড়ির কাছে পৌঁছে গুলি বর্ষণ শুরু হয়, কম্পাউন্ডের ভেতর থেকে কিছু লোক দৌঁড়ে গেট থেকে বেরিযয়ে আসে এবং বাড়ির চারপাশে বেষ্টনী তৈরি করে।

তিনি বলেন, বাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ প্রহরী তাদের তাঁবুতে ওঠে, খুঁটি ধরে তাঁবুটি তুলে বাড়ির সামনের লেকের দিকে দৌড় দেয়।

খান বলেন, ‘তখন ঘোর অন্ধকার, হাউস সার্চ পার্টি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাড়ির একজন বেসামরিক প্রহরী তার একজন সৈন্যকে দা দিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করে।’

তিনি বলেন, লোকটিকে একজন সৈন্য পেছন থেকে গুলি করে ‘কিন্তু তাকে হত্যা করেনি’।

খানের লোকেরা নিচতলায় এবং প্রথম তলায় কাউকে খুঁজে পায়নি। ‘একটি ঘর তালাবদ্ধ ছিল এবং শব্দ শুনে বোঝা যাচ্ছিল যে ঘরটিতে লোক রয়েছে।’

তিনি স্মরণ করেন, ‘আমি মেজর বিলালকে দরজা ভেঙে ফেলতে বললাম এবং ক্যাপ্টেন সাঈদ এসেছে কিনা এবং কোন ভিড় তৈরি হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য নিচে গেলাম।

খান বলেন, যখন তিনি ক্যাপ্টেন সাঈদকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তখন একটি গুলির শব্দ হয়, তারপর গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয় এবং তার পরে সাব-মেশিনগানের শব্দ শুনা যায়।

খান আরো বলেন, ‘আমি নিশ্চিত হলাম যে মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, তিনি দৌড়ে উপরের তলায় গিয়ে তাকে জীবিত ও অক্ষত দেখে স্বস্তি পান।

খান দাবি করেন, ‘আমি তাকে আমার সাথে যেতে বললাম এবং তিনি তার পরিবাররের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার অনুমতি চাইলে আমি অনুমতি দেই।’

খান বলেন, তিনি পরে জানতে পারেন যে একটি কক্ষের বারান্দা থেকে সৈন্যদের দিকে একটি গুলি চালানো হয় এবং এর জবাবে তারা একটি গ্রেনেড ছোঁড়েন এবং একটি এসএমজি থেকে গুলি ছোঁড়া হয়।

খান বলেন, গুলি চালানোর পর শেখ মুজিব বেরিয়ে আসেন এবং গ্রেফতার হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *