দক্ষিণ বাংলার মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের পায়রা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (২৪ অক্টোবর)।
উদ্বোধনের পর সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, করোনা ঝুঁকিতেও এই সেতুর কাজ অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাই সচেষ্ট ছিলেন। সময় বর্ধন এবং নানাবিধ জটিলতার মধ্যেও প্রকল্পের পূর্ত কাজের চুক্তি মূল্য থেকে ৫২ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। নির্মাণশৈলীর দিক থেকে নান্দনিক শোভামণ্ডিত এই সেতুটি ইতোমধ্যে স্থানীয় মানুষের নজর কেড়েছে। প্রতিদিন অগণিত মানুষ এ সেতুটি দেখার জন্য ভিড় করছে। বিশেষ করে রাতের আলোকিত সেতু মানুষকে আকৃষ্ট করছে।
তিনি বলেন, পায়রা সেতু নির্মাণের বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে সহজসাধ্য মনে হলেও এর তলদেশে পানির স্রোত ছিলো। তীব্র এবং নদীর গতি প্রকৃতি ছিলো অভিনব। যেটিকে পদ্মার সঙ্গে তুলনা করা চলে। এছাড়া চ্যানেলের তলদেশে গভীরতা পাওয়া যায় ৪৩ মিটার। আধুনিক প্রযুক্তি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা হয়েছে এ সেতু নির্মাণে। ভায়াডাক্টসহ ৩৩৮টি পাইলের মধ্যে ৪০টি পাইলের গভীরতা ১৩০ মিটার। যা এ যাবতকালের সর্বাপেক্ষা গভীর। নদীর মধ্যে পিলার-টু-পিলার বা স্প্যানের গ্যাপ রাখা হয়েছে ২শ মিটার। এটিও এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য বরিশাল বিভাগে এই প্রথম ফোরলেন পায়রা সেতু। আর এ সেতু পারপারের টোল আদায়ে যে ডিজিটাল টোলপ্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে, সেটিও প্রথমবারের মতো বিভাগের কোন সেতুতে সংযুক্ত হলো। এছাড়া এ সেতুর বরিশাল প্রান্তে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে। সেসঙ্গে দেশের কোন সেতুতে প্রথমবারের মতো ‘ব্রিজ হেলথ মনিটরিং সিস্টেম’ সংযোজন করা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন দুর্যোগ বা ওভারলোডেড গাড়ি চলাচলের ফলে ব্রিজের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, তার (ক্ষতির) পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), কুয়েত ফান্ড এবং ওপেক ফান্ডের অর্থায়নে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়ে ১৪৪৭ দশমিক ২৪ কোটি টাকা। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। আর সেতুর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ১২৬৮ মিটার এবং প্রস্থ ২২ দশমিক ৮০ মিটার। এ সেতুতে ৩২টি স্প্যান ও ৩৩৮টি পাইল রয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতুর পাইল সংখ্যা ৫২টি। এছাড়া পিলার সংখ্যা ৩১টি।