প্রকৃতিতে এখন ভরা কার্তিক। হেমন্তের ভোরে শিশির সিক্ত দূর্বাঘাস ও পথঘাট। মুক্তোদানার মতো জ্বলজ্বল করছে সূর্যের আলোতে। জনপদগুলো সকাল-সন্ধ্যায় ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। অকস্মাত্ শিরশিরে উত্তরে হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। প্রতিদিন বাড়ছে শীতের আমেজ। এরই মধ্যে উত্তরের জেলাগুলোতে ধীরে ধীরে জেঁকে বসছে শীত। দিনে রোদের তাপ থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পথঘাটে দৃষ্টিসীমা হরণ করছে। রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে কুয়াশার গাঢ়ত্ব। কুয়াশার চাদর ফুঁড়ে উঁকি দিচ্ছে প্রভাতের সূর্য। বিশেষ করে উত্তরের জেলাগুলোতে গরম কাপড় ছাড়া বের হওয়া যাচ্ছে না।
শীতের আমেজ বোঝা যাচ্ছে রাজধানীতেও। ভোরে বাসা থেকে বের হলেই শীত অনুভূত হয়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শীতের আবহ কেটে গেলেও আগের মতো গরম পড়ছে না। রোদের তেজও কমেছে। দিনের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, এবার একটু আগাম শীত এসে পড়ছে। চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে, ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সব জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪। নীলফামারীর সৈয়দপুরে শীতের কনকনে ভাব অনুভূত হচ্ছে। সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এখানে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দুই-একদিনে এর পারদ আরো নেমে যেতে পারে। এবার একটু আগাম শীত এসে পড়েছে এ জনপদে। রাতে ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। তবে দিনের বেলায় বেশ গরম থাকছে পরিবেশে।
রাজশাহী ও রংপুর এই দুই বিভাগ ছাড়া দেশের বাকি অঞ্চলের অধিকাংশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। ফলে এসব অঞ্চলে সকাল-সন্ধ্যায় কুয়াশার দেখা মিলছে। শেষরাতে তো বটেই, সকাল-সন্ধ্যায়ও গরম কাপড় পরতে হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের মানুষদের। রাজধানীর বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ শুক্রবার ঢাকার আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। শুষ্ক থাকতে পারে আবহাওয়া। সেই সঙ্গে কমতে পারে দিনের তাপমাত্রাও। এদিকে ঢাকায় আজকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এদিকে দিনের স্থায়িত্ব কমে এসেছে। রাত হচ্ছে দীর্ঘ। শীত থেকে রক্ষা পেতে উত্তরের জেলার বাসিন্দাদের অনেকে শীতের কাপড় কিনতে শুরু করেছেন। রাজধানী ঢাকাতেও অনেকে লেপ-তোশক-কম্বল বের করতে শুরু করেছেন।