রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ফখরুলকে অনুদান! সামাজিকমাধ্যমে ঝড়

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকার একটি চেক দেওয়া হয়েছে! সেই চেক নিয়ে আবার ফখরুল তার স্ত্রীসহ বিদেশ ভ্রমণ করছেন! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ছবি ছড়িয়ে এ দাবি করা হচ্ছে, যা নিয়ে ঝড় উঠেছে।

চিকিৎসার জন্য স্ত্রী-সন্তানসহ সিঙ্গাপুরে আছেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি দেশ ছেড়ে যাওয়ার পরপরই একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়, যেটিতে দেখা যাচ্ছে তিনি স্ত্রী রাহাত আরাসহ দাঁড়িয়ে আছেন। ছবির নিচে একটি চেকের পাতা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের চেকটিতে তারিখ দেওয়া হয়েছে ২০ আগস্টের। টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ৫০ লাখ। চেকটিতে সিলসহ দুজনের সইও আছে। ফখরুল সিঙ্গাপুর গেছেন গত ‍বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট)।
ফেসবুকে এমন দাবি করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এ ‘অনুদানের’ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। ফখরুলসেটি নিয়েছেন কিনা, তাও জানানো হয়নি।

বিএনপি নেতার অনুদানের বিষয়টি ফেসবুকে প্রকাশ পেলে শুরু হয় মন্তব্যের ঝড়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই হচ্ছে বেশি। কয়েকটি ফেসবুকে গ্রুপে আবার পক্ষে বিপক্ষে লেখা হচ্ছে। কেউ সরকারকে সাধবাদ দিচ্ছেন; কেউ বিএনপিকে দোষারোপ করছেন। ছবি তা অনুদান সত্য কিনা সে ব্যাপারে তর্ক হচ্ছে প্রচুর।

ফ্যাক্ট চেক করে এমন কিছু গ্রুপে চেকের বিষয়টি ভুয়া বলে দাবি করা হচ্ছে তবে ব্যক্তি বিশেষরা চেকটি সত্য ও প্রধানমন্ত্রী চাইলে বিরোধী দলকে যেকোনোভাবে সাহায্য করতে পারেন বলে দাবি করছেন।

তবে বিএনপি নেতারা সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিষয়টিতকে মিথ্যা দাবি করেছেন। বিএনপি মহাসচিবের ব্যক্তিগত সহকারী মো. ইউনুস আলী বলেন, মহাসচিবের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা হয়েছে। তিনি এটাকে পুরোপুরি গুজব, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, সম্মানহানি এবং হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে নকল চেক বানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানও পোস্টটিকে অসত্য দাবি করেছেন। তিনি বলেন, চমৎকার নোংরামির উদাহরণ। এ ধরনের নোংরামি যারা করতে পারেন তাদেরকে কোনো সভ্যতার মধ্যে উল্লেখ করা যাবে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। তার ব্যাপারে অবান্তর কোনো গুজব ছড়ানোর আগে চিন্তা ভাবনা করা উচিত। এ ধরনের মানুষদের বলবো গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকবার জন্য।

৭৬ বছর বয়সী ফখরুল এর আগেও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০১৫ সালে কারাবন্দী অবস্থায় তার ঘাড়ের ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়ে। পরে মুক্তি পেয়ে তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করাতে যান। সবশেষ ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশটি থেকে চিকিৎসা নেন তিনি। প্রতিবছরই তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যেতে হয়।

মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির আরও তিন নেতা সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ বছরের ২৭ জুন থেকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর ২৬ আগস্ট চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

এদিকে আগে থেকেই চিকিৎসাজনিত কারণে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। শিলং আদালতের আদেশে মুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ অবস্থান করছেন দিল্লিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *