বিনোদন

বলিউডে নারীদের পারিশ্রমিক নিয়ে মুখ খুললেন প্রিয়াঙ্কা

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে ব্যাপক পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কথা তুলে ধরেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস।

যুক্তরাষ্ট্রে একটি গোয়েন্দা সিরিজে পুরুষ সহকর্মীর সমান পারিশ্রমিক পেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। জানান, দীর্ঘ ২২ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে এই প্রথম এমনটা হচ্ছে।

প্রিয়াঙ্কা অভিনীত ওই গোয়েন্দা সিরিজের নাম ‘সিটাডেল’ শিগগির যেটার প্রচার শুরু হবে।

এ বছর বিবিসির ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন ভারতের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। যুক্তরাষ্ট্রের গায়ক-গীতিকার নিক জোনাসকে বিয়ের পর যিনি এখন সে দেশেই বেশি সময় থাকছেন এবং সেখানেই কাজ করেছেন।

‘বিবিসি ১০০ উইম্যান’ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার, একজন নারী হওয়ার কারণে পারিশ্রমিক নিয়ে বৈষম্যের শিকার এবং বিশ্ব সুন্দরীর খেতাব জয়ের পরও কীভাবে শুধু গায়ের বর্ণের কারণে বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন তা তুলে ধরেন।

প্রিয়াঙ্কা বলেন, তিনি বলিউডে কখনও সমমর্যাদা পাননি।

‘‘আমি আমার পুরুষ সহ-অভিনেতার বেতনের ১০ শতাংশ পারিশ্রমিক পেয়েছি। এই ব্যাবধান বিশাল, যথেষ্ট বিশাল।

“অনেক নারী এখনও সেভাবেই কাজ করছেন। আমি নিশ্চিত, এখন বলিউডে কাজ করলে আমাকেও এভাবেই করতে হবে। আমার প্রজন্মের নারী অভিনেত্রীরা সব সময় সমান পারিশ্রমিকের দাবি জানিয়েছেন। আমরা চেয়েছি, কিন্তু পাইনি।”

তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে ব্যাপক পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কথা তুলে ধরে আরো বলেন, এই মনোভাব ‘স্বাভাবিক’ ধরে নিয়েই তিনি দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন।

‘‘ভেবেছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিনেমার শুটিং সেটে বসে থাকার বিষয়টি ঠিকই আছে, যখন সহকর্মী পুরুষ অভিনেতা তার নিজের মত করে সময় নিয়েছেন। আর যখন তিনি সেটে আসতে চান কেবল তখনই আমরা শুটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট মাথায় নিয়ে ২০০২ সালে বলিউডে নাম লেখান প্রিয়াঙ্কা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা চড়াই-উৎড়াই পেরতে হয়েছে তাকে। অভিনয় করেছেন ৬০টির বেশি সিনেমায়।

এখন বলিউডে নিজস্ব চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে তার।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসাবে শিশুদের নিয়েও কাজ করছেন তিনি।

দুবাইয়ে কী করছেন প্রিয়াঙ্কা?
প্রথম দক্ষিণ এশীয় অভিনেত্রী হিসাবে তিনি আমেরিকান নেটওয়ার্ক ড্রামা সিরিজ কোয়ান্টিকোতে (২০১৫) নেতৃত্ব দিয়েছেন।

মর্যাদাপূর্ণ একাধিক ফ্যাশন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে প্রথম ভারতীয় হিসাবেও তিনি জায়গা করে নিয়েছেন।

অথচ এই প্রিয়াঙ্কাকেই বলিউডে কাজ করতে গিয়ে শুরুতে গায়ের রং নিয়ে ‘বডি শেমিং’ এর শিকার হতে হয়েছে।

বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমাকে ‘কালো বিড়াল’, ‘ডাস্কি’ বা ‘খানিকটা কৃষ্ণবর্ণ’ বলা হতো। বলতে চাচ্ছি, যেদেশে আমরা প্রায় সবাই ব্রাউন বা বাদামি, সেখানে ‘ডাস্কি’ বলতে আসলে কী বোঝায়।

“ভেবেছিলাম, আমি যথেষ্ট সুন্দর নই। বিশ্বাস করতাম আমাকে অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যদিও উজ্জ্বল বর্ণের সহ-অভিনেতাদের তুলনায় নিজেকে একটু বেশি প্রতিভাবান ভাবতাম আমি। কিন্তু গায়ের রং আর সৌন্দর্যের বিষয়টি সঠিক ধরে নিয়েছিলাম, কারণ বিষয়টিকে খুব স্বাভাবিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *