জাতীয়

বিবিয়ানায় ত্রুটি: রাজধানীর অনেক চুলাই জ্বলছে না

বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রথম রোজার দিনে রান্নার গ্যাস স্বল্পতায় নাকাল হতে হয়েছে রাজধানীর অনেক পরিবারকেই।

রোববার হবিগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের এ ত্রুটির কারণে শুধু ঢাকায় নয়, সারাদেশেই গ্যাস সরবরাহ কমে যায় বলে গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানি ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

দেশের অন্যতম প্রধান এ গ্যাসক্ষেত্রে ক্রুটি দেখা দেওয়ার পর এদিন দুপুরের মধ্যে তা মেরামতের চেষ্টা করা হয়। দিনভর অপেক্ষায় ছিলেন তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারাও। তবে সোমবার সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন ঢাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা এ কোম্পানির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এদিন দুপুরের আগেই ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক এলাকার চুলায় গ্যাস একেবারে উধাও হয়ে যাওয়ার খবর আসে। বিকালের দিকে কিছুক্ষণের জন্য অনেক এলাকায় গ্যাস আসলেও চাপ কম থাকায় তাতে রান্না করা যায়নি।

এ বিষয়ে রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জরুরি বার্তা পাঠিয়ে গ্রাহকদের কাছে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে।

বার্তায় বলা হয়, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো কোনো এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপের সৃষ্টি হচ্ছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা ত্রুটি মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করা যাচ্ছে।

“গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে কোনো কোনো এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।“

সাময়িক এ অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

তিতাসের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মির্জা মাহবুব হোসেন বলেন, এদিন সাধারণ সময়ের তুলনায় সরবরাহ লাইনে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম পেয়েছেন তারা। এর মধ্যেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সচল রাখতে গিয়ে আবাসিক এলাকায় রেশনিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস কমিয়ে দিতে হচ্ছে।

“দুপুরের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছিল। পরে বিকালে বলা হয় আজকের (রোববার) মধ্যে আর সম্ভব না। আগামীকালের (সোমবার) মধ্যে শেভরনের গ্যাসফিল্ডের সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা আশা করছি।
দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাসের সংযোগ হয়ে প্রতিদিন ১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের চেয়ে বেশি গ্যাস পেয়ে থাকেন গ্রাহকরা।

আর দেশের ২২টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে বেশির ভাগ গ্যাস আসে শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে।

পেট্রোবাংলার হিসাবে, শনিবার দেশের মোট গ্যাস উৎপাদন হয়েছে ২৭৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট। এরমধ্যে বিবিয়ানা থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ১১৫১ মিলিয়ন ঘনফুট, যা দেশের মোট উৎপাদিত গ্যাসের ৪১ শতাংশ।

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা সাজিয়া আফরিন বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সকাল ১০টার দিকে গ্যাস চলে যায়। সাময়িক সমস্যা মনে করে বিকালে ইফতারি তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো খাবার তৈরি করতে পারিনি।

“বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে কিছু ইফতার কিনে আর ছোলা মুড়ি দিয়ে প্রথম দিনের ইফতার সারতে হয়েছে। রাতে রান্নাও করতে পারিনি। রাত ১১টার দিকে মিন মিন করে স্বল্প চাপে কিছু গ্যাস আসতে শুরু করেছে।“

সাজিয়ার মতই মিরপুর, শ্যামলী, শান্তিবাগসহ আরও কিছু আবাসিক এলাকা থেকে গ্যাস সঙ্কট ও ভোগান্তির কথা জানান অনেক বাসিন্দা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *