খেলাধুলা

বিশ্বকাপে তাকিয়ে তিনশর সীমানা বারবার ছোঁয়ার তাড়না

উইকেটের কাভার সরানোই ছিল। রোববার অনুশীলনের ফাঁকে বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল, কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বেশ সময় নিয়ে দেখলেন উইকেট। পরে মুশফিকুর রহিমসহ আরও কজন পরখ করলেন উইকেট। টিপে দেখলেন কেউ কেউ। কতটা কী বুঝতে পারলেন তারা, সেসব জানার উপায় নেই। তবে উইকেটের চেহারা দেখে অন্তত খুশিই হওয়ার কথা তাদের !

দূর থেকে উইকেট যতটা দেখা গেল, মনে হলো ঠিক আগের ম্যাচের মতোই। ঘাসের ছোঁয়া আছে খানিকটা। উইকেটের আচরণও যদি একইরকম থাকে, আগে ব্যাট করলে বাংলাদেশের চাওয়া থাকবে নিশ্চয়ই একই। আরও একবার তিনশ ছাড়ানো!

এই জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের উইকেট এমনিতে দারুণ ব্যাটিং বান্ধব বলে পরিচিত বরাবরই। তবে মজার ব্যাপার হলো, এখানে ২২ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ প্রথমবার তিনশ ছুঁতে পারল আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে!

৫০ ওভারে ৩০৬ রান তুলে সেদিন ৮৮ রানে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। স্কোর যদিও আরেকটু বড় হওয়ার পথে ছিল। কিন্তু শেষ ৪ ওভারে কিছুটা খেই হারিয়ে রান আসে কেবল ২২। তবে টসের সময় অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, তাদের দৃষ্টি ২৬০ রানে। সেখান থেকে দল ঢের বেশি রান করে ফেলে।

অথচ চট্টগ্রামের উইকেট এবার একটু আলাদা। ঘাস থাকার কারণে নতুন বলে সিম মুভমেন্ট মিলছে বেশ। আফগান পেসাররা সুইংও করাতে পারেন। শুরুর সময়টা তাই চ্যালেঞ্জিং। ১০-১৫ ওভার কাটিয়ে দিতে পারলে অবশ্য উইকেট যথারীতি কথা বলতে থাকে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে।

শুরুর কঠিন সময়টা পার করার পর সময়ের সঙ্গে রান বাড়ানো, দ্বিতীয় ওয়ানডের গোছানো ব্যাটিং থেকে বাংলাদেশ আশার জোগান পেতে পারে আগামী বিশ্বকাপের জন্য। বিশ্বকাপ হবে ভারতে, যেখানে বেশির ভাগ উইকেটই থাকবে ব্যাটিং সহায়ক। বড় রানের খেলা তাই সেখানে হবে। বড় রানের অভ্যাসও তাই দ্রুত গড়ে তোলা জরুরি।
পরিসংখ্যান বলছে, অভ্যাসটা বাংলাদেশ গড়ে তুলছে টুকটাক। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশিবার তিনশ ছুঁয়েছে ভারত, ২৭ ম্যাচে ১০ বার। এরপরই যৌথভাবে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ। ১৮ ম্যাচে ৫ বার পেরেছে ইংল্যান্ড, দুই ম্যাচ বেশি খেলে বাংলাদেশ।

তবে এই পরিসংখ্যানের গভীরে ঢুকলে খানিকটা ফাঁকও চোখে পড়বে। বাংলাদেশের পাঁচ তিনশর চারটিই তুলনামূলক দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, যারা আদৌ বিশ্বকাপে খেলতে পারবে কিনা, সেই সংশয় আছে প্রবল। এই সময়টায় শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে তিনশ করতে পারেনি বাংলাদেশ।

অবশ্য দেশে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ যে মাঠে খেলে বাংলাদেশ, সেই মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াসের মন্থর উইকেট বড় একটি বাধা তিনশ করার ক্ষেত্রে। আফগানদের বিপক্ষে চলতি সিরিজের সব ম্যাচ চট্টগ্রামে রাখার বড় একটি কারণও এটি। সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজ তুলে ধরলেন উইকেটের কথাই।

“ওয়ানডেতে রান হলে ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাস পায়। যদি বড় বড় ইভেন্টে খেলতে যান, বিশেষ করে বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ, যেহেতু আমাদের সামনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আছে ভারতে, ওখানে কিন্তু ৩০০ রান করতেই হবে, ৩০০ রান তাড়া করতে হবে এবং তিনশর বেশি রান করতে হবে। কারণ উইকেট ভালো থাকে।”

“আমরা যদি এখান থেকেই মানিয়ে নিতে পারি এবং এখানে উইকেট ভালো আছে, যদি খাপ খাইয়ে নিতে পারি, তাহলে বিশ্বকাপ বলেন বা বড় ইভেন্টের জন্য ভালো হবে। বিশ্বকাপে উইকেট অনেক ভালো থাকে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *