নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এ পর্যন্ত দেশী-বিদেশী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রায় ২৭ দশমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছে।
প্রস্তাবিত এ বিনিয়োগ দেশে ১০ লাখেও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এর মধ্যে প্রায় ২৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে সরকারি এবং ৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেসরকারি খাতের জন্য ।
এর মধ্যে চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং জার্মানির বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রায় ১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রস্তাব এসেছে।
বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানি যেমন জিয়াংসু ইয়াবাং ডাইস্টাফ কোং লিমিটেড, হোন্ডা মোটরস, সুমিতোমো নিপ্পন, এশিয়ান পেইন্টস, বার্গার পেইন্টস, আদানি গ্রুপ, উইলমার, সিয়াম গ্রুপ, টিআইসি গ্রুপ, ইউনিলিভার, সাকাটা ইঞ্চ, জিহং মেডিকেল প্রোডাক্টস (বিডি) কো লিমিটেড, সিসিইসিসি বাংলাদেশ, এইচএএস টেক লিমিটেড, রামকি এনভিরো সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড ফোর্টিগ্রুপ, লিজার্ড স্পোর্টস বিভি, ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ লিমিটেড রয়েছে।
স্থানীয় কোম্পানিগুলো হল মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড, ম্যাকসন স্পিনিং অ্যান্ড টেক্সটাইল, সামুদা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, উত্তরা মোটরস লিমিটেড, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), সায়মান বিচ রিসোর্ট লিমিটেড, মাফ জুতা লিমিটেড, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ), রানার মোটর্স, সাইফ পাওয়ারটেক, ডেল্টার ফার্ম লিমিটেড এবং এশিয়া কমেম্পাজিট মিলস্ লিমিটেড।
বাসস-এর সঙ্গে আলাপকালে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, এই বিনিয়োগ প্রস্তাবের বাইরে অনেক বিশ্ববিখ্যাত বিদেশী কোম্পানি বড় বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পা নগর (বিএসএমএসএন) দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের একটি আদর্শ স্থান হিসেবে পরিচিত।
তিনি বলেন, যদি বিএসএমএসএন-এ বিনিয়োগ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে আগামী বছর শিল্প ব্যবহারের জন্য বিনিয়োগকারীদের জমি দেয়া বেজার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হবে।
পবন চৌধুরী উল্লেখ করেন, বিএসএমএসএন বাংলাদেশের পরবর্তী বিনিয়োগ ও বাণিজ্য মূলধন হবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ও বিদেশ থেকে অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক অঞ্চলে সব ধরনের সুবিধা প্রদান করছে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় এবং বিদেশী উভয় ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করবে তারা একই সুবিধা ভোগ করবে।
চৌধুরী জানান, বেজা গভর্নিং বোর্ড ইতোমধ্যে ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও জমি অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে ৬৮টি সরকারী ইকোনমিক জোন এবং ২৯টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে নয়টি অঞ্চল ইতোমধ্যে উৎপাদনে গিয়েছে এবং ২৮টি জোনের উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। ৩৫ শিল্প নির্মাণ কাজ চলছে ২৬ শিল্প উৎপাদননে গিয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ইতোমধ্যে ৩৯ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
পবন চৌধুরী বলেন, দেশের বিনিয়োগকারীদের একটি স্থানে প্রয়োজনীয় সমস্ত পরিষেবা প্রদানের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) কেন্দ্রও চালু করেছে বেজা। ওএসএস সেন্টারের আওতায় মোট ১২৫টি সেবা প্রদান করছে বেজা। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীরা এখন অনলাইনের মাধ্যমে ৪৮টি সেবা পাচ্ছেন।