অর্থনীতি

ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে আসেম : অর্থমন্ত্রী

ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক পুনর্গঠন নিশ্চিতকরণে আসেমভূক্ত (এশিয়া ও ইউরোপ) দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা একমত প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, আমাদের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক উন্নয়ন করতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে যত বিলম্ব হবে তত সমস্যা তৈরি হবে। যত কম সময়ে এই করোনা মোকাবিলা করা যাবে অর্থনীতিতে তত কম প্রভাব পরবে। এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের (আসেম) অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের চতুর্দশ সভা শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে এবারের সভাটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের সভার আয়োজক দেশ ছিল বাংলাদেশ। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, এবারের সভার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলা : একটি শক্তিশালী, টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিতকরণ’। আসেম অংশীদার ৪৫টি দেশের অর্থমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এশিয়া-ইউরোপ অঞ্চলের প্রতিনিধিরা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় ভিডিও বক্তৃতার মাধ্যমে সকলকে স্বাগত জানান।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সভায় শুধু কোভিড নয়, এর প্রভাবে বিভিন্ন দেশের আর্থ সামাজিক স্তরে যেসব ক্ষত তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থা থাকলেও অন্যান্য অনেক দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। সবাই চেষ্টা করবেন কত দ্রুত আমরা এই সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি এবং অর্থনীতিকে স্বাভাবিক স্তরে নিয়ে যেতে পারি। নিজে ভালোভাবে বাঁচতে হলে আগে অন্যকে ভালো ভাবে বাঁচাতে হবে। সেই প্রতিপাদ্যকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখান থেকে আমরা সামনের দিকে চলার পথ পাবো।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীরা বলেন, বর্তমান অবস্থা ও অভূতপূর্ব পরিস্থিতি হতে উত্তরণে ও বৈশ্বিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে শক্তিশালী বহুপাক্ষিক সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশ্বের অন্যান্য এলাকার ন্যায় এশিয়া ও ইউরোপ অঞ্চলের দেশসমূহও এ মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা করছে, যা তাদের কর্মসংস্থান, আয়, ব্যবসায়, বিনিয়োগ, বাণিজ্যসহ জীবনের অন্যান্য সকল পর্যায়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। ফলশ্রুতিতে, কোভিড-১৯ এর অপ্রতিরোধ্য বিস্তারের কারণে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহের (এসডিজি) বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ বর্তমানে অনেক আসেম অংশীদার দেশের উপর যেভাবে প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

মহামারির সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব হ্রাস, জীবন, জীবিকা ও ব্যবসা-বাণিজ্য সুরক্ষা এবং কোভিড-১৯ এর কার্যকর সমাধান বের করাকে সবচেয়ে জরুরি সমষ্টিগত অগ্রাধিকার বলে সভায় একমত প্রকাশ করা হয়। এশীয়-ইউরোপ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা, কার্যকর অংশিদারিত্ব গড়ে তোলা এবং পারস্পরিক সমঝোতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন অর্থমন্ত্রীরা। কোভিড-১৯ যে কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে তা মোকাবিলা এবং একটি শক্তিশালী, টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক পুনর্গঠন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে তারা একত্রিত হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *