আন্তর্জাতিক

ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন আনল যুক্তরাষ্ট্র, কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে

ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন আনল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হচ্ছে। আর এতে বড় প্রভাব পড়বে ভারতীয়দের ওপর।

এ নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভারতীয়সহ সব অ-অভিবাসী ভিসা আবেদনকারীদের তাদের নিজেদের দেশ বা বৈধ বসবাসের দেশ থেকেই ভিসার ইন্টারভিউয়ের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এ পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো- অতীতে আবেদনকারীরা ভিসা পাওয়ার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করতেন, অর্থাৎ যেখানে অপেক্ষার সময় কম, এমন অন্য কোনো দেশ থেকে আবেদন করা- সেই পদ্ধতি বন্ধ করা।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের জারি করা এক বিবৃতি অনুযায়ী, এই নতুন ভিসার নিয়ম বিশ্বজুড়ে কার্যকর করা হবে।

কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে

এ নতুন সিদ্ধান্তের ফলে সেই সব ভারতীয় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা দীর্ঘ অপেক্ষা এড়ানোর জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং জার্মানির মতো দেশ থেকে ভিসার জন্য আবেদন করেছে। এর অর্থ হলো- যেসব ভারতীয়দের দ্রুত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের প্রয়োজন, তারা এখন আর বি১ (ব্যবসা) বা বি২ (পর্যটন) ভিসার জন্য বিদেশে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবে না।

এ নতুন নীতিতে এখন আর সেই বিকল্পটি অবশিষ্ট নেই, শুধুমাত্র কিছু ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি ছাড়া। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে দেশগুলিতে মার্কিন সরকার নিয়মিত অ-অভিবাসী ভিসার কার্যক্রম পরিচালনা করে না, সেই সব দেশের নাগরিকরা তাদের বসবাসের দেশ ভিন্ন হলে অন্য কোনও নির্দিষ্ট দূতাবাস বা কনস্যুলেটে আবেদন করতে পারে। এ ক্যাটাগরিতে আফগানিস্তান, কিউবা, শাদ, রাশিয়া এবং ইরানের মতো কয়েকটি দেশের নাগরিক বা বাসিন্দারা অন্তর্ভুক্ত।

ভারতীয়দের ওপর কী প্রভাব পড়বে

পর্যবেক্ষকদের মতে, এ বিধিনিষেধটি এমনিতেই বেড়ে চলা ব্যাকলগ বা কাজের জট আরও বাড়িয়ে দেবে। এই বছরের শুরুতে ভিসার জন্য অপেক্ষার সময় হায়দরাবাদ এবং মুম্বাইয়ে সাড়ে তিন মাস থেকে পাঁচ মাস ছিল, কলকাতায় এটি ছিল পাঁচ মাস, আর চেন্নাইতে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় নয় মাসে।

পুরনো নিয়ম

অতীতে, বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময়, যখন আবেদনের জটের কারণে দেশের ভেতরে অপেক্ষার সময় তিন বছর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল, তখন অনেকেই অন্য দেশে গিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিত।

২০২১ সালে মহামারির পর ভ্রমণ আবার শুরু হলে, ট্রাভেল এজেন্টরা মনে করে বলেছে- কীভাবে ভারতীয়রা বি১/বি২ ভিসার ইন্টারভিউয়ের জন্য জার্মানির মতো অন্য দেশে যেত। সে সময় ভারতে বি১/বি২ ভিসার জন্য অপেক্ষার সময় ছিল ১৫-২০ মাস, তাই দুই বছর আগে ফ্রাঙ্কফুর্টে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বিশেষ করে ভারতীয় আবেদনকারীদের জন্য অঅভিবাসী ভিসার ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করেছিল।

এছাড়াও, গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে একটি নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট ‘ইন্টারভিউ ওয়েভার প্রোগ্রাম’ বাতিল করার পর, এখন সমস্ত অ-অভিবাসী ভিসা আবেদনকারীদের জন্য সশরীরে ইন্টারভিউতে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর অর্থ হল, বেশিরভাগ আবেদনকারীকে এখন মার্কিন দূতাবাস বা কনস্যুলেটে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে, যাদের আগে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারের প্রয়োজন ছিল না।

এ নতুন নিয়মের ফলে এইচ, এল, এফ, এম, জে, ই, এবং ও ক্যাটাগরির ভিসাগুলি প্রভাবিত হবে। এমনকী ৭৯ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি এবং ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম প্রযোজ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *