আন্তর্জাতিক

মদিনায় অগ্নিকাণ্ডে ৬ বাংলাদেশির মৃত্যুতে রাষ্ট্রদূতের শোক

সৌদি আরবের মদিনায় একটি সোফা কারখানায় গত বুধবার গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডে ছয় বাংলাদেশির মৃত্যুতে রিয়াদে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, মৃতদের ক্ষতিপূরণ আদায়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব। রাষ্ট্রদূত জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের শ্রম কাউন্সিলরকে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জেনে দূতাবাসকে অবহিত করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।

এ ছাড়া স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় এবং মৃতদেহ দ্রুত দেশে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

গত এক দশকে সৌদি আরবের বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় অর্ধশত প্রবাসী নিহত হয়েছেন।

এদের মধ্যে সোফা কারখানার দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেশি এবং এসব কারখানার বেশিরভাগই বাংলাদেশি দ্বারা পরিচালিত। এ কারণে এসব কাজে নিয়োজিত সিংহভাগ শ্রমিকই বাংলাদেশের।

জানা যায়, ২০১৭ সালের অক্টোবরে রিয়াদের শিফা সানাইয়া এলাকায় এ রকম একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১০ বাংলাদেশি, ২০১৬ সালের এপ্রিলে পূর্বাঞ্চলীয় শহর জুবাইলের এক পেট্রোকেমিক্যাল কারখানায় আগুন লাগার ঘটনায় ১২ জন প্রাণ হারান। সেই সময় গুরুতর আহত হয়েছিল ১১ জন।

একই বছর আগস্টে রিয়াদের হারাজ বিন কাশেম মানফুহা এলাকার একটি সোফা কারখানায় চার বাংলাদেশি শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যান। এবং ঠিক তার এক বছর আগে দাম্মামের দাল্লা সানাইয়া এলাকার একটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে চার বাংলাদেশি নাগরিকসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়।

২০১৪ সালের মে মাসে রিয়াদের সিফা সানাইয়ার আরেকটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে কুমিল্লার ৯ জন ও ফেনীর একজনসহ মোট ১০ জন নিহত হন।

সবশেষ মদিনা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে হেরাজ মার্কেটের কাছে আল খলিল সড়কের পাশে অবস্থিত একটি সোফা তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৭ শ্রমিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গেছে।

জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট সূত্রে জানা যায়, ১০ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ৪টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

মদিনার উয়ুন থানাসূত্রে পাঁচ বাংলাদেশির নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত পাঁচ বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত করেন জেদ্দা বাংলাদেশ কনস্যুলেটের শ্রম কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম।

তারা হলেন মিজানুর রহমান, মো. আরাফাত হোসেন মানিক, ইসহাক মিয়া, আবদুল আজিজ ও রফিক উদ্দিন। এ ছাড়া স্থানীয় প্রবাসী সূত্রে আরেকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, তার নাম সাইফুল ইসলাম। এদের মধ্যে মিজানুর রহমান ও আরাফাত হোসেন মানিক সহোদর ভাই।

তবে আরেক বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে বলে কনস্যুলেট জানায়। অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মৃতদেহ মদিনার কিং ফাহাদ হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষিত রয়েছে। নিহতদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট তৎপর রয়েছে।

রাষ্ট্রদূতের নির্দেশনায় দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং নিহতদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের শ্রম কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম সেখানে গেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *