প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশে সক্ষম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই ধরনের অংশীদারিত্বের জন্য ওষুধ কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে এক বৈঠকে রহমান এই আহবান জানান।
আজ এখানে এক তথ্যবিবরণীতে এ কথা বলা হয়।
রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, পিপিই’র পাশাপাশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং ওষুধ উৎপাদন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তাদের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেবে।
তিনি কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কোভ্যাক্স ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ৫৫ লাখের অধিক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য মার্কিন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
মহামারির শুরু থেকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দুই দেশ দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা কথা স্মরণ করে রহমান ভাইরাস মোকাবিলায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য মহামারি ব্যবস্থাপনা সরঞ্জামের বিশ্বব্যাপী উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-মার্কিন অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের প্রথম বৈঠকের ফলো-আপ ছিল এই বৈঠক।
জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির উপর কোভিড-১৯ মহামারির বিরূপ প্রভাব নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
ফলো-আপ বৈঠকে অংশগ্রহনকারীরা দুই দেশের মধ্যে চলমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ২০২০ সালের অংশীদারিত্ব বৈঠকের চিহ্নিত সহযোগিতার অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দুটি বন্ধুত্বপ্রতীম সরকারের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরো গভীর করার জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এবং এর বাইরেও সম্পৃক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তারা।
এসময় তারা শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক বিমান চলাচল পুনরায় চালু সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশে শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা আরো উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন উপদেষ্টা।
বার্নিকাট এই খাতে বাংলাদেশের নিরন্তর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং আরো অগ্রগতির জন্য সহায়তার প্রস্তাব দেন।
যুক্তরাষ্ট্র কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে।
উভয় পক্ষ স্বীকার করেছে যে, ২০২০ সালের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠক দুই দেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতাকে জোরদার করেছে এবং এ বছরের শেষের দিকে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।