রোহিঙ্গা ইস্যুতে জড়িত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর (রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজে) এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা না দিয়ে তাদের (আন্তর্জাতিক সংস্থা) উচিত রাখাইন রাজ্যে যাওয়া। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা। তাদের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে বেশি করে যুক্ত হওয়া।’
সোমবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্তব্য উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও কন্যাশিশু। এখন আমাদের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্তব্য তাদের জন্য কিছু করা, তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা। এটা লিপ সার্ভিসের সময় নয়। রোহিঙ্গাদের কথা বলে দূরে থাকতে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারি না আমরা। এটা স্বাভাবিক কার্যক্রমের সময় নয়।’
মিয়ানমারের কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে অবরোধের আওতায় আনলেও দেশটির সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যথেষ্ট নয়। কেন তারা এক বা দুইজন জেনারেলকে তাদের দেশে যাওয়া বন্ধ করছে এবং অন্যান্য ব্যবসা স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে নিচ্ছে? গত চার বছরে গণহত্যার পরও মিয়ানমারে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সাড়ে তিন থেকে ১৫ গুণ বেড়েছে। এটা সত্যিকার অর্থে হতাশাজনক।’
রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার বিরোধিতা করায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কি কুতুপালংয়ে আছে নাকি ভাসানচরে আছে, সেটা অগুরুত্বপূর্ণ ও অপ্রাসঙ্গিক। প্রাসঙ্গিক হলো, তারা তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত যাবে এবং সম্মানজনক জীবিকা ও ভবিষ্যৎ পাবে।’
ডিকাব সভাপতি পান্থ রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেসান্দ্রা বের্গ ফন লিনডে এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি শিয়ার, মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামির, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, মহাপরিচালক সামিয়া হালিম ও ডিকাবের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন বক্তৃতা দেন।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সদস্য ইশরাত জাহান ঊর্মি।