লেখায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহসিনা আক্তার খানমের (লীনা তাপসী খান) বিরুদ্ধে।
নজরুল সঙ্গীতশিল্পী লীনা তাপসীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন আরেক নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ইফফাত আরা নার্গিস, যিনি জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি-নায়েমের সাবেক মহাপরিচালক।
লীনা তাপসী খানের পিএইচডি-অভিসন্দর্ভের উপর ভিত্তি করে রচিত ‘নজরুল সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ নামক গ্রন্থের ৩৮টি স্থানে অন্যের লেখা নকল করা হয়েছে বলে দাবি করছেন ইফফাত আরা।
তবে লীনা তাপসী দাবি করছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’।
ইফফাত আরা নার্গিসইফফাত আরা নার্গিসরোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে লীনা তাপসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন ইফফাত আরা।
তিনি বলেন, ২৭৭ পৃষ্ঠার ‘নজরুল সঙ্গীতে রাগের ব্যবহার’ গ্রন্থের ১৬৯ পৃষ্ঠাই লীনা তাপসী খানের রচনা নয়। অন্যের গ্রন্থ থেকে হুবহু নকল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ পৃষ্ঠা নজরুল ইনস্টিটিউট ও নজরুল একাডেমি প্রকাশিত স্বরলিপির বই থেকে স্ক্যান করে মূলপাঠ হিসেবে ঢোকানো হয়েছে। যা সাধারণত বইয়ের পরিশিষ্টে উল্লেখের কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
বাকি সব লেখা রবীন্দ্রনাথের ‘গীতিবিতান’ ও ‘নজরুল-গীতিকা, ইদ্রিস আলীর লেখা ‘নজরুল সঙ্গীতের সুর’, স্বরলিপিকার জগৎ ঘটক ও কাজী অনিরুদ্ধের ‘নবরাগ’, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘নজরুল সৃষ্ট রাগ ও বন্দিশ’ এবং কাকলী সেনের ‘ফৈয়াজী আলোকে নজরুলগীতি’ প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে তথ্য নির্দেশ ছাড়া হুবহু চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইফফাত আরা।
তিনি বলেন, ২০১০ সালের মে মাসে লীনা তাপসী এটি পিএইচডি থিসিস হিসেবে উপস্থাপন করেন। ২০১১ সালে নজরুল ইনস্টিটিউট এটি বই আকারে প্রকাশ করে। ওই অভিসন্দর্ভের উপর ভিত্তি করে ২০১৬ সালে লীনা তাপসী খান বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক থেকে পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক হন।
লীনা তাপসী খানলীনা তাপসী খানইফফাত আরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সদস্যদের জানানো পরও তারা কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
লীনা তাপসীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তার পিএইচডি ডিগ্রি এবং ডিগ্রির জন্য প্রাপ্ত সব সুবিধা বাতিলের দাবি জানান তিনি।
একইসঙ্গে এই গ্রন্থের জন্য লীনা তাপসী খানকে দেওয়া ‘নজরুল পদক’ প্রত্যাহারের দাবিও জানান ইফফাত আরা।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “বিষয়টা সম্পর্কে আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে আমরা বিষয়টা দেখব।”
অভিযোগের বিষয়ে লীনা তাপসী খান বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, তা মিথ্যা, ভুল ও বানোয়াট। তিনি আত্মপ্রচারণার জন্য একটা প্রতারণামূলক কাজ করছেন। আমি লিখিতভাবে এটার প্রতিবাদ জানাব।”