দেশের সব নাগরিককে করোনার টিকার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন উৎস থেকে এক কোটি টিকা কেনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দেশে শিগগিরই সেসব টিকা আসতে শুরু করবে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান। সেই সঙ্গে তিনি বিশ্ববাসীকেও ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সম্প্রচার করে।
সংক্রমণ ঠেকাতে সবকে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখতে এবং মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসু বলে প্রমাণিত। কাজেই বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি যথাসম্ভব ঘন ঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধুইয়ে নিন অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবানুমুক্ত করুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সেই সঙ্গে আপনারা নিজেরা গরম পানির ভাপ নিতে পারেন।
তিনি বলেন, সবচেয়ে কার্যকর এবং পরীক্ষিত অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়েই আমরা গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু করেছি। আপনারা জেনেছেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ টিকা রপ্তানির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে রাশিয়া এবং চীনের টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। উপহার হিসেবে চীনের কাছ থেকে টিকা এরই মধ্যে আমরা পেয়েছি। আমরা টিকা পাওয়ার জন্য আমেরিকার কাছেও অনুরোধ জানিয়েছি। বিশ্ব টিকাদান সংস্থা কোভ্যাক্সের কাছ থেকেও আমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টিকা পাব। বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা এক কোটি টিকা কেনার উদ্যোগ নিয়েছি। খুব শিগগিরই দেশে টিকা আসতে শুরু করবে। তাছাড়া, দেশেই যাতে টিকা উৎপাদন করতে পারি, সে ব্যবস্থা করেছি। নিজেদের টিকা তৈরিতে কয়েক মাস সময় লাগবে। আমরা দেশের সব নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসব, ইনশাআল্লাহ।
করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস শুধু মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে না, এ ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। সংক্রমণ এড়াতে লকডাউন বা সাধারণ ছুটি বহাল রাখতে হয়েছে। আমরা গত বছর একটানা দুই মাসেরও বেশি সময় সাধারণ ছুটি দিয়েছিলাস। দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর গত ৫ এপ্রিল থেকে পর্যায়ক্রমে ‘লকডাউন’ কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে অগণিত মানুষের রুটি-রুজির ওপর আঘাত এসেছে। কিন্তু এ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া বিকল্প কোন উপায় ছিল না। কারণ, আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, প্রতিটি দেশেরই স্বাস্থ্য অবকাঠামোর একটি নির্দিষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। হঠাৎ করে দ্রুতগতিতে রোগী বাড়তে থাকলে, তখন সেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। আপনারা দেখেছেন, উন্নত দেশগুলো পর্যন্ত করোনা রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেজন্য আমাদের কোনোভাবেই রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেওয়া যাবে না।