বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা শ্রমিক শ্রেণিসহ সব মানুষের অধিকারগুলো হরণ করেছে।
রোববার (১ মে) সকাল ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত মহান মে দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
সংগ্রাম-রক্তপাত ছাড়া কোনো দাবি আদায় হয় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী, চাল, ডাল, তেল লবণসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। আজকে শ্রমিক ভাইয়রা কি কষ্টে দিন যাপন করছেন সেটা আমার চেয়ে আপনারা ভালো জানেন। সরকার শ্রমিকদেরকে ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-তেল-লবণ দিতে পারে না। তারা বড় লোকদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করে, কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোনো হাসপাতাল হয় না। শ্রমিকরা চিকিৎসা পায় না। তাদের ছেলেমেয়েরা চিকিৎসার সুযোগ পায় না। সব জায়গায় শ্রমিকেরা আজকে অবহেলিত। অথচ এই শ্রমিক শ্রেণীর শ্রমের ভিত্তিতেই বিশ্বের সবকিছু গড়ে উঠেছে। আজকে বড় বড় মেগা প্রজেক্ট হয়, কিন্তু শ্রমিক ভাইদের জন্য কিছু হয় না। রানা প্লাজার শ্রমিকেরা এখনও তাদের ক্ষতিপূরণ পায়নি।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের ৩৫লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম, সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। বিনা বিচারে আটক অবস্থায় তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। বৈষম্যবিহীন একটা রাষ্ট্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। দুর্ভাগ্য আজকে ৫০ বছর পরে সেই অধিকারগুলো আমরা ফিরে পায়নি।
এই সরকার জনগণের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। মানুষের সব অধিকারগুলো আজকে হরণ করে নিয়েছে। তারা সম্পূর্ণভাবে পর নির্ভরশীল। একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরে যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটি উঠাবার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধর্ণা দিয়েছে কিন্তু পারেনি। এখন তারা বলছে তারা নাকি ভারতের মাধ্যমে সেটা করবে। এটা এই জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার একটা বিষয়।
আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাদে বাধ্য করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি পার্লামেন্ট এবং এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রমিক নেতা হুমায়ুন কবীর, ফিরোজুজ্জামান মোল্লা মামুন, আবুল খায়ের খাজা, আবুল কালাম আজাদ, মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মিয়া মো. মিজানুর রহমান, মনজুরুল ইসলাম মনজু, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম-আহবায়ক আবদুর রহীম প্রমুখ।
পরে একটি শোভাযাত্রা নয়াপল্টন থেকে নাইটিংগেল মোড়, বিজয়নগর, পুরানা পল্টন মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।