সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনে বাধা দিলে শাস্তি পেতে হবে বলে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ার করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, সাংবাদিকদের কাজের বাধা হয়ে না দাঁড়াতে সারাদেশে ছাত্রলীগের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
গত সপ্তাহে ছাত্রদলের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই মতবিনিময় হয়।
ওই সংঘর্ষ চলার সময় এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ছাত্রলীগকর্মীরা কেড়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “ছাত্রলীগ অবশ্যই সাংবাদিকদের সহযোগিতা করবে, সাংবাদিকরাও ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করবেন। আমরা একে অপরের শত্রু নই।
“এক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে, তবে আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেব, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।”
“কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে, অতি উৎসাহী হয়ে এ রকমের কোনো ঘটনা ঘটায়, তাহলে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব,” বলেন তিনি।
ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে ছাত্রদল নেতারা যে অভিযোগ করে আসছে, তার জবাবও মতবিনিময় সভায় দেন জয়।
তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে সহাবস্থান না থাকার যে কথা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা। দীর্ঘদিন তারা (ছাত্রদল) মধুর ক্যান্টিনে বসেছে, রাজু ভাস্কর্যে তাদের কর্মসূচি পালন করেছে। আমাদের নেত্রীকে নিয়ে খারাপ কথা বলার পর কিন্তু আমরা কথা বলেছি। এই মন্তব্য কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মেনে নেয়নি।
“দীর্ঘদিন সহাবস্থানে থাকার পর ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর কী এমন এজেন্ডা তারা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখাতে হবে?”
জয় বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগ করে না, তবুও তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করা এমন বক্তব্য মেনে নেয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি ছাত্রদলের গুণ্ডা, অছাত্রদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করে, তাহলে আমরা বলেছি, আমরা তাদের পাশে থেকে তাদের প্রতিরোধ করব।”
ছাত্রদলকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি তাদের ক্ষমা করে দেয়, তবে আমরাও তাদের স্বাগত জানাব।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সভায় বলেন, “আমরা চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে যেন শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকে। এ বিষয়ে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাদের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করি।”
মতবিনিময় সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন ও সৈয়দ আরিফ হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মামুন তুষার, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসিফ হাওলাদার, অর্থ সম্পাদক মাহাদী হাসান, দপ্তর সম্পাদক নাসিমুল হুদাসহ সমিতির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।