এক সময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মতো তারকা ক্রিকেটারকে ছাড়িয়ে গেলেন তাসকিন আহমেদ।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের নতুন রেকর্ড গড়ার পথে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যান তাসকিন।
সাকিবের রেকর্ড ছুঁতে তাসকিনের আজ প্রয়োজন ছিল স্রেফ একটি উইকেট। সাকিবের রেকর্ড নিজের করে নিতে তাসকিনের প্রয়োজন ছিল ২ উইকেট। প্রথমটি করতে তাসকিন আহমেদের লাগল কেবল চারটি ডেলিভারি।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসানের পাশে জায়গা করে নিলেন তাসকিন। ম্যাচের শেষ দিকে ছাড়িয়ে গেলেন সাকিবকে। বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড এখন দুর্বার রাজশাহীর পেসারের।
রোববার মিরপুরে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে স্টিভেন টেইলরের উইকেট নিয়ে সাকিবের রেকর্ডটি স্পর্শ করেন তাসকিন। পরে রকিবুল হাসানকে এলবিডব্লিউ করে সাকিবকে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছান তাসকিন। এবারের বিপিএলে তার উইকেট এখন ২৪টি।
২০১৯ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। তাকে ছাড়িয়ে যেতে তাসকিনের লাগল কেবল ১১ ম্যাচ।
এক আসরে ২২ উইকেট নেওয়ার নজির আছে ছয়টি। সেখানে আছেন তাসকিনও। ২০১৯ বিপিএলে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি সিলেট সিক্সার্সের হয়ে।
এই কৃতিত্ব প্রথম দেখিয়েছিলেন কেভন কুপার। ক্যারিবিয়ান এই পেসার ২০১৫ বিপিএলে বরিশাল বুলসের হয়ে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন মাত্র ৯ ম্যাচ খেলেই।
পরে ২০১৭ বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট নেন সাকিব, ২০১৯ আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৪ ম্যাচে ২২টি নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, একই আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের রুবেল হোসেন ২২ উইকেট নেন ১৫ ম্যাচে। সবশেষ গত বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেটের দেখা পান শরিফুল ইসলাম।
দেশি ম্যাজিকে রাজশাহীর জয়
বিদেশিবিহীন দল নিয়ে খেলতে নেমে টেবিল টপার রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। মিরপুরে দুই দলের লো স্কোরিং ম্যাচ উত্তাপ ছড়িয়েছে। রাজশাহীর দেওয়া ১২০ রানের লক্ষ্য ছুঁতে ব্যাট করা রংপুরকে শেষ ওভারে ২৫ রান তুলতে হত। কিন্তু সে ওভারে তিন ছক্কা হাঁকিয়েও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত ২ রানের জয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে রাজশাহী।
বিপিএলে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ১২০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই থরহরি কম্প অবস্থা রংপুরের। দলীয় রান ৫০ ছোঁয়ার আগেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে দলটি। তবে শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বীরত্বে লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হয় তারা।
অবশ্য শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৫২ রানের লড়াকু এক ইনিংস খেলেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি সাইফ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১১৭ রানেই থামতে হয় তার দলকে।
রাজশাহীর বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ৪ ওভার বল করে এক মেডেনসহ ১৮ রান খরচায় ৪ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তিনি। দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ ও মোহর শেখ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা রাজশাহীকেও ভুগতে হয়েছে। রংপুরের দুই স্পিনার খুশদিল শাহ এবং রাকিবুল হাসানের ঘূর্ণিতে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৯ রানে আটকে যায় তারা। প্রথম সারির ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে সর্বোচ্চ ২৮ রান আসে স্পিনার সানজামুল ইসলামের ব্যাটে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই রান তুলতে গিয়েই নাভিশ্বাস ছুটেছে রংপুরের।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে এসেছে রাজশাহী। ১১ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ১০। আর ১০ ম্যাচ থেকে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শীর্ষেই আছে টানা আট জয়ের পর ব্যাক-টু-ব্যাক হারের মুখ দেখা রংপুর।