সাব্বির রহমান আর নেতিবাচক খবরের এগিয়ে চলা যেন হাত ধরাধরি করে। ক্যারিয়ারে ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে যতটা, তার চেয়ে বেশি খবরে এসেছেন তিনি বাজে ফর্ম আর মাঠের ভেতরে-বাইরের নানা বিতর্ক দিয়ে। তবে জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ব্যাটসম্যানের দাবি, এখন তিনি বেশ পরিণত।
নানা সময়ে অনেক বিতর্কে জড়ালেও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামর্থ্য ও সম্ভাব্য ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ বিবেচনায় জাতীয় দলে অনেক দিন ছিলেন সাব্বির। তবে তার সম্ভাবনা বা তাকে নিয়ে প্রত্যাশা বাস্তব রূপ পেয়েছে সামান্যই। বিতর্কের সঙ্গে তার বসবাসও বন্ধ হয়নি কখনও। সব মিলিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আছেন তিনি জাতীয় দলের বাইরে।
এই পথচলায় মেঘে মেঘে বেলা কম হয়নি। তার ২৯ বছর বয়স পূর্ণ হলো রোববার। কিন্তু ব্যাট হাতে ২২ গজে কিংবা মাঠের বাইরে নানা জায়গায়, পরিণত আচরণ খুব কমই দেখা গেছে তার মধ্যে।
ভুল থেকে শিখেছেন, এই দাবি তিনি বেশকবারই করেছেন। কার্যক্ষেত্রে প্রমাণ খুব একটা দেখা যায়নি। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের আগে রোববার তার দল বেক্সিমকো ঢাকার অনুশীলনের ফাঁকে পুরনো সেই কথা আবার শোনা গেল সাব্বিরের কণ্ঠে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দাবি করলেন, এখন তিনি বুঝতে পারছেন।
“আমি এখনও তরুণ। এখন পরিণত। গত ৩-৪ বছর যেটা ছিল না, এখন হয়তো সেটা বুঝতে পারছি। ভালো পরিণত মনে হচ্ছে (নিজেকে) এবং মনে হচ্ছে যে কিছুটা শান্তশিষ্ট ও পরিণত হিসেবে কাজ করা উচিত। সবকিছু মিলিয়ে ভালোমতো খেলার চেষ্টা করব।”
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর গত বিপিএল কিংবা কদিন আগে প্রেসিডেন্ট’স কাপ, কোথাও পারফর্ম করতে পারেননি সাব্বির। নিজের দিনে ম্যাচ জেতাতে পারেন বলেই তবু দল পেতে সমস্যা হয়নি বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে।
তার নিজের জন্য, জাতীয় দলের বাইরে থাকা অনেকের জন্য এই টুর্নামেন্টকে সুযোগ বলে মনে করছেন তিনি।
“এই টুর্নামেন্টের জন্য আমরা সবাই, সব খেলোয়াড় অপেক্ষা করছিলাম। যারা বিপিএল বা প্রিমিয়ার লিগ খেলি, যারা ফার্স্ট ক্লাস টুর্নামেন্ট খেলি, এ ধরনের টুর্নামেন্ট সবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি যারা জাতীয় দলে নাই, ওদের জন্য ফেরার বড় সুযোগ এই টুর্নামেন্ট।”
“আমি চেষ্টা করব ভালো খেলার জন্য, সবসময় বলে আসছি। কষ্ট করছি, কঠোর পরিশ্রম করছি। দেখা যাক, কতটা পারফর্ম করতে পারি।”
এই টুর্নামেন্টের জন্য তার প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে বলেও জানালেন সাব্বির।
“পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। সারাদিন ব্যাটিং (অনুশীলন) করে আমি রান করতে পারব (ম্যাচে), তার কোনো বিকল্প নেই বা কোনো উত্তর নেই (নিশ্চয়তা নেই)। কিন্তু আমি চেষ্টা করছি।”
“রাজশাহীতে যতদিন ছিলাম, ২০ দিন বা ২৫ দিন, ভালো প্র্যাকটিস করেছি। সেন্টার উইকেটে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছি। যেটা ব্যাটিংয়ে দরকার, যেটাতে আমার ব্যাটিং করার সুযোগ হয়েছে, ব্যাটিং করতে চেষ্টা করেছি। এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে প্র্যাকটিস করেছি। ভালো কিছু করার জন্য প্র্যাকটিস করেছি।”
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হোক বা ঘরোয়া ক্রিকেটে, তাকে নিয়ে দলের প্রত্যাশা মুখ থুবড়ে পড়েছে একের পর এক। তিনি নিজেও বলছেন, খেলায় উন্নতি করতে হবে অনেক।
“অবশ্যই এখান থেকে আরেক লেভেল ভালো খেলতে হবে আমাকে। ঘরোয়াতে যখন আমি ৩০-৪০ বা ৬০-৭০ রানে আউট হয়ে যাই, সেখানে সেঞ্চুরি করতে পারলে আমার লেভেলটা হয়তো বাড়বে। সেক্ষেত্রে একটা লেভেল ওপরে খেললে আমি পরবর্তীতে আরও ভালো খেলতে পারব।”
মঙ্গলবার টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে প্রথম ম্যাচে সাব্বিরদের প্রতিপক্ষ মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী।