নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করতে সার্চ কমিটির সম্ভাব্য সদস্যদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে সরকার। ১৩তম নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নাম সুপারিশ করবে এই কমিটি।
ইসি গঠনে মতামত নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শেষে সার্চ কমিটির সদস্যদের নাম প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। ২০ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে এই সংলাপ। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ১২তম নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
আরও জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া রাষ্ট্রীয় অন্যসব কাজে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে হয়। এ কারণে সার্চ কমিটি গঠনে সদস্যদের খোঁজার কাজটি কার্যত সরকারের মাধ্যমেই রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে।
২০১২ ও ২০১৭ সালে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছিল। ওই সময় সার্চ কমিটি প্রধান হিসাবে নিয়োগ পান সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের একজন সিনিয়র বিচারপতি। সদস্য ছিলেন- হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) ও সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান। তবে ২০১৭ সালে আগের কমিটির সংশ্লিষ্ট পদধারীদের বহাল রেখে আরও দুজন সদস্য বাড়ানো হয়। তাদের মধ্যে একজন নারীসহ দুজনই ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার আগের কমিটির সংশ্লিষ্ট পদধারীদের বহাল রেখে সুশীল সমাজ, সাবেক আমলাদের মধ্য থেকে আরও একজন করে সদস্য নেওয়া হতে পারে। তবে যত সদস্যের কমিটিই হোক না কেনো- সেখানে অন্তত একজন নারী সদস্য রাখা হবে।
বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্যে রয়েছেন মো. ইমান আলী, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মো. নূরুজ্জামান এবং ওবায়দুল হাসান। এদের সিনিয়র দুজনের মধ্যে যেকোনো একজনকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তাই এবার আপিল বিভাগ থেকে সার্চ কমিটির প্রধান হিসাবে আগের সার্চ কমিটিতে থাকা অভিজ্ঞ একজনকে রাখা হতে পারে।
অন্য দিকে বর্তমানে সিএজির দায়িত্বে আছেন সাবেক সচিব মুসলিম চৌধুরী ও পিএসসির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক সচিব সোহরাব হোসাইন। সূত্র আরও জানায়, যারা পদাধিকার বলে নির্ধারিত সদস্য তাদের জানুয়ারি মাসে কারও বিদেশ সফর আছে কিনা, শারীরিক অবস্থা কী এসব বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে অনির্ধারিত সদস্যদের মধ্যে যাদের কথা ভাবা হচ্ছে তারা সার্চ কমিটিতে থাকতে ইচ্ছুক কিনা-সে বিষয়েও আগাম মতামত নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন কোনো আইনি প্রক্রিয়া নয়। সংবিধানে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা হলেও গত অর্ধ শতাব্দীতে কোনো সরকারই আইন করেনি। সার্চ কমিটির বিষয়ে সংবিধানেও কিছু বলা নেই। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মতে, সার্চ কমিটি কোনো আইনি প্রক্রিয়া না হলেও রাষ্ট্রপতির আদেশ আইনের কাছাকাছি বলেই ধরতে হবে।