বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে যেভাবে গোলাগুলি করা হচ্ছে তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর প্রচণ্ড রকম হুমকি। এমনকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে সাগরে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের বড় বড় যুদ্ধ জাহাজ। দুর্ভাগ্যের কথা হচ্ছে বর্তমানে সরকার যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে এদের কাছে দেশের সার্বভৌমত্ব কোনোভাবে প্রভাব বিস্তার করছে না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি এই সরকার দুর্বল। বিদেশের উপর নির্ভর করে তারা ক্ষমতায় টিকে আছে। যে কারণে তারা মিয়ানমার সম্পর্কে একটা কথা পর্যন্ত বলতে সাহস পায় না। মিয়ানমার থেকে সেন্টমার্টিনে গুলি হচ্ছে; মারাও গেছে লোক। অথচ এ নিয়ে সরকার কোনো কথা বলে না। এটা আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি এই ইস্যুতে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
রোববার বিকাল ৩টায় ঠাকুরগাঁয়ে পৈত্রিক বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব এ সব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, একটা ভিন্ন দেশ থেকে আমার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সমুদ্রসীমানার যে পথ ওই পথে আমরা যাতায়াত করতে পারছি না। সেখানে গোলাগুলি করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ সরকার এখন পর্যন্ত একটা সিরিয়াস স্টেটমেন্ট পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে পারেনি। আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত হানছে তারা (সরকার) বলছে আমরা দেখছি। এই দেশের জনগণ সরকারের কাছে আশা করে তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে, স্বাধীনতা রক্ষা করবে, সেখানে মায়ানমার ইস্যুতে কোন রকম কথায় আমরা শুনতে পাচ্ছি না।
বর্তমান সরকারের অব্যবস্থাপনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এবার ঈদ সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত খারাপ ভাবে এসেছে। মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে গেলে। সেখানে মানুষ পশু কিনতে পারছে না। হাটবাজারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যেসব জিনিসের দাম অনেক কম ছিল, সেগুলোর দামও এখন আকাশচুম্বী। ঢাকাতে দেখা যায় পশুর হাটে কোনো লোক নেই। এটার কারণ একটাই তা হচ্ছে মানুষের আর্থিক অবস্থা চরমভাবে খারাপ হচ্ছে। এই সরকার দেশের সমস্ত সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে। এবং অর্থনীতিকে চরম খারাপ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদরা বলেছেন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ও নাজুক।
সাবেক পুলিশের প্রধান বেনজীর ও সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ সম্পর্কে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, যেসব কর্মকর্তা কর্মচারীরা মনে করছেন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে লুটপাট করে তারা টিকে থাকতে পারবেন, আলটিমেটলি টিকে থাকা যায় না। আজিজ এবং বেনজীর তার একটি প্রমাণ। লুট করলে চুরি করলে অন্ধের মতো অজনপ্রিয় ম্যান্ডেটবিহীন সরকারকে সমর্থন করলে সেখানে টিকে থাকা যায় না। দেখেন ওই সরকারই তাদেরকে আজ বলির পাঠা বানিয়েছে। আজকে পত্রিকায় দেখলাম ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার বিশাল ফিরিস্তি বের হয়েছে। সব এক এক করে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম,সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ ও অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।