জাতীয়

স্বামীকে মুক্ত পেয়ে যা বললেন হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী

মুন্সীগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞান পড়ানোর সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেফতার করা। ১৯ দিন কারাভোগের পর রোববার বিকাল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল।

স্বামীর কারামুক্তির পর কথা বলেন বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হালদার। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি গণমাধ্যমসহ দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

ববিতা হালদার স্বামীর জামিন মঞ্জুরে সরকারের কাছে তার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে মানহানি এবং আইসিটি আইনে মামলা করা হবে। এছাড়া তিনি সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেন এবং মামলা থেকে তার স্বামীর অব্যাহতি চান।

রোববার দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোতাহারাত আখতার ভূঁইয়া হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২৩ ও ২৮ মার্চ তার জামিন চাওয়া হলেও আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এদিকে আসামিপক্ষের নিযুক্ত আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমান উল্লাহ এ মামলার শুনানি করেন। তিনি বলেন, ২৩ ও ২৮ মার্চ হৃদয়ের মণ্ডলের জামিন চাওয়া হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে আমরা সিআর মিস করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামি হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মামলার সব কিছু যাচাই-বাছাই করে ৫ হাজার টাকা বেল্ড মানি করে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমান উল্লাহ আরও বলেন, শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল শ্রেণিকক্ষে বলেছিলেন, ধর্ম বিশ্বাস আর বিজ্ঞান যৌক্তিক। এতে একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০ মার্চ দশম শ্রেণির মানবিক শাখার বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। সেখানে বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের পক্ষে-বিপক্ষে কথোপকথন হয়। কোনো এক শিক্ষার্থী ওই কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তী সময়ে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীনকে বিষয়টি জানানো হয়। প্রধান শিক্ষক সেদিনই হৃদয় চন্দ্রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এবং শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকতে বলেন।

শিক্ষার্থীরা স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানায়। এর পরের দিন সকালে তারা বিদ্যালয়ে এসে ওই শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

২২ মার্চ বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিশিয়ান মো. আসাদ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন। পরে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *