খেলাধুলা

অবিশ্বাস্য ধসে হারের মুখে বাংলাদেশ

সিলেট টেস্ট চতুর্থদিনে গড়াল বটে কিন্তু ম্যাচের কোনো আকর্ষণ আর অবশিষ্ট নেই। শ্রীলংকার রান-পাহাড়ে পিষ্ট হওয়ার পর রোববার শেষ বিকালে অবিশ্বাস্য ব্যাটিংধসে তৃতীয়দিন শেষেই পরাজয়ের ডাক শুনছে বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাঁচ উইকেটে ৪৭ রানে তৃতীয়দিন শেষ করা স্বাগতিকরা দাঁড়িয়ে নিশ্চিত হারের মুখে। সর্বোচ্চ রান তাড়ার নতুন বিশ্বরেকার্ড গড়ে জিততে বাকি পাঁচ উইকেটে করতে হবে আরও ৪৬৪ রান! সাত রানে অপরাজিত মুমিনুল হকের সঙ্গে ক্রিজে আছেন তাইজুল ইসলাম (৬*)।

সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিংকে ‘হরর শো’ বললেও কম বলা হবে। যে উইকেটে শ্রীলংকার দুই ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস গড়েছেন জোড়া সেঞ্চুরির বিরল কীর্তি, সেখানেই প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র নয় ওভারের মধ্যে ৩৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে উইকেট বিলিয়ে আসেন সবাই। বিশ্ব ফার্নান্ডোর করা প্রথম ওভারেই এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। পরের ওভারে রাজিথার অফ-স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে সাজঘরের পথ ধরেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান। পালটা আক্রমণে চাপ কমানোর ব্যর্থ চেষ্টায় জাকির হাসানও (১৯) টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। নবম ওভারে টানা দুই বলে শাহাদত হোসেন ও লিটন দাসকে শূন্য রানে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে খাদের কিনারে ঠেলে দেন বিশ্ব ফার্নান্ডো।

এর আগে পাঁচ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে তৃতীয়দিনের খেলা শুরু করা শ্রীলংকার দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৪১৮ রানে। বাংলাদেশের নিষ্প্রভ বোলিং ও ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাল বাকি পাঁচ উইকেটে আরও ২৯৯ রান যোগ করেছে তারা। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু দ্বিতীয় ইনিংসেও স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। প্রায় দেড়শ বছরের টেস্ট ইতিহাসে একই ম্যাচে এক দলের দুই ব্যাটারের জোড়া সেঞ্চুরির মাত্র তৃতীয় নজির এটি। এর আগে এই কীর্তি ছিল শুধু অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল ও ইয়ান চ্যাপেল এবং পাকিস্তানের মিসবাহ-উল-হক ও আজহার আলীর। সেঞ্চুরির আগে ও পরে দুবার জীবন পাওয়া ধনঞ্জয়াকে ১০৮ রানে থামিয়ে সপ্তম উইকেটে ১৭৩ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অধিনায়কের বিদায়ের পর সেঞ্চুরি পূর্ণ করা কামিন্দু লেজের ব্যাটারদের নিয়ে বাংলাদেশকে আরও ভুগিয়ে শেষ ব্যাটার হিসাবে আউট হন ১৬৪ রানে। মিরাজের চার উইকেটের পরও বাংলাদেশের আশার বেলুন ততক্ষণে চুপসে গেছে। এরপর শেষ বিকালে সেই বিভীষিকাময় ব্যাটিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *