রাজনীতি

গভীর রাতে ফের হাসপাতালে খালেদা জিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সোয়া ৩টা) তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছিল।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা শনিবার গভীর রাতে গুলশানের বাসায় গিয়ে জরুরি কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রাত আড়াইটার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া।

এদিকে, দলীয় প্রধানের হাসপাতালে যাওয়ার খবরে গভীর রাতেই বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসা ও হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন।

এ সময় নেতাদের মধ্যে ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এর আগে চলতি মার্চ মাসের ১৩ তারিখ খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরদিন মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় ফেরেন।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে ৬ মার্চও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন।

মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশসহ (খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি) সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও তা নাকচ করে দেয় সরকার। বরং আগের মতো দুই শর্তে (বিদেশে যেতে পারবেন না ও ঢাকায় থেকে চিকিৎসা) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর এ বিষয়ে গত বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২৫ মার্চ থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত থাকবে।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *