জাতীয়

শবে বরাত: মসজিদে ভিড় ধর্মপ্রাণ মুসল্লির

মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল বরাত সারা দেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। প্রতিটি মসজিদ দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে।

এশার নামাজে ছিল মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। বাবা, চাচা, মামার সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে আসে ছোটরাও।

তাদের কেউ কেউ নিয়ে আসে নিজের জায়নামাজও। বড় বড় মসজিদ, মাজার, দরগা, খানকাহকে ঘিরে বসেছে আতর, টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, পাঞ্জাবি, নামাজ শিক্ষা, দোয়া দরুদসহ ইসলামি বই, আগরবাতি, মুখরোচক খাবার, চা, পিঠা, খেজুর ও শরবতের স্টল।

কিছু মসজিদে বাড়তি মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদের ছাদ, বারান্দা ও সড়কের একপাশে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। এশার নামাজের পর মসজিদে মসজিদে ছিল পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা। এরপর মিলাদ মাহফিল, দরুদ, জিকির, কিয়াম, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত।

সরেজমিন ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও নগরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশের বেশিরভাগ মসজিদ সাজানো হয়েছে বর্ণিল বাতি দিয়ে। বেশি মানুষ যাতে মাগরিব ও এশার জামাতে অংশ নিতে পারেন তার জন্য বাড়তি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হাটহাজারীর হজরত শেরে বাংলা (র.) মাজার ও মসজিদের আলোকসজ্জা অনেক দূর থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল পথচারীদের। চশমা হিলের মসজিদের দৃষ্টিনন্দন সাজও দূর থেকে নজর কাড়ছিল নগরবাসীর। আলোকসজ্জা করা হয়েছে  বিশ্ব মসজিদ খ্যাত দামপাড়ার জমিয়তুল ফালাহ মসজিদেও। এ মসজিদের উত্তর-পশ্চিম পাশের সড়ক ও ফুটপাতে অর্ধশতাধিক অস্থায়ী স্টল বসেছে।

শবে বরাতকে ঘিরে বিকেল থেকে চাঙা হয়ে ওঠে ইফতারির দোকানগুলো। সারা দিন যারা নফল রোজা রেখেছিলেন তাদের জন্য ইফতার কিনছিলেন স্বজনরা। চট্টগ্রামের রেওয়াজ হিসেবে, অনেকে আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী বিশেষ করে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া রুটি, মাংস, পরোটা, উন্নতমানের খাবার বিলি করেছেন। এর জন্য কয়েকদিন ধরে বাজার সওদা করেছেন তারা। তাই চাঙা ছিল মুরগি, গরু, ছাগল, মহিষের মাংসের বাজারও। সওয়াবের আশায় অনেকে গরিব, মিসকিনদের দান-সদকা দিতে দেখা গেছে। নামাজ ও মোনাজাতের পর মুসল্লিরা ছুটে যান স্বজনদের কবর জেয়ারতে। অনেকে বিভিন্ন আউলিয়ার মাজার জেয়ারত করেন এ সময়।

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে নামাজ শেষে চৈতন্য গলি বাইশ মহল্লা কবরস্থানে যাচ্ছিলেন রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি শবে বরাতে বাবা-মা, মুরুব্বিরা সারা রাত নফল এবাদত করতেন, স্বজনদের কবর জেয়ারত করতেন, কোরআন তেলাওয়াত করতেন। গরিব ও স্বজনদের খাওয়াতেন। এখন বাবা-মা কবরের বাসিন্দা। জেয়ারতের জন্য ছেলেকে নিয়ে কবরস্থানে যাচ্ছি। এ রাত গুনাহ মাফ চাওয়ার রাত। এ রাত ভাগ্য বণ্টনের রাত। এ রাত ভালো কাজ করার রাত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *