জাতীয়

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান মুহিবের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার রেখার নামে ৩০টি দলিলে রয়েছে অন্তত ৩৭ একর জমি। সব জমিই পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরের আশপাশে। কম করে হলেও এসব জমির মূল্য দেড়শ কোটি টাকা হবে। রেখা একজন কলেজ শিক্ষক হয়ে কীভাবে এত জমির মালিক হলেন তা স্থানীয়দের কাছে এক রকম রহস্য।

তারা বলছেন, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান মুহিব। নির্বাচনে সহজেই তিনি এমপি নির্বাচিত হন। স্বামী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই টাকা আর জমির নেশায় পেয়ে বসে মুহিবপত্নীকে। দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপায়েই এত সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর তাপস সাহা গং নামে এক হিন্দু পরিবারের কাছ থেকে কোটি টাকা দিয়ে ৮শ শতাংশ (৮ একর) জমি কেনেন রেখা। এই জমির অবস্থান ইটবাড়িয়া মৌজায়। দলিল নং-৪৫১২। ২০২৪ সালে ধুলাসার মৌজায় আলমগীর হোসেন হাওলাদারের কাছ থেকে নেন ৫ দশমিক ২৬ একর জমি। ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৬৬৭০নং দলিলে বৌলতলীতে রিয়াজুল ইসলাম মিলন তালুকদারের কাছ থেকে কেনেন ০.৬১ একর জমি। ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট কাউয়ারচর মৌজায় আব্দুস সত্তার গংয়ের কাছ থোকে নেন দেড় একর, দলিল নং ৪১২০। একই সালের ৩১ আগস্ট ১ দশমিক ৩৪ একর জমি কেনেন রেখা। যার দলিল নং ৪১১৯।

২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কাউয়ারচর মৌজায় ৩৯৬২নং দলিলে স্থানীয় দাদন মিয়ার ১ দশমিক ১২ একর জমি কেনেন মাত্র ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল ধুলাসার মৌজায় মোশারেফ হাওলাদার গংয়ের কাছ থেকে নেন ১ দশমিক ২১ একর জমি। একই এলাকায় পরের বছরের ১৯ জুন ২৫৪৬নং দলিলে দশমিক ৩৮ একর জমি কেনেন।

২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর ৫২১২নং দলিলে বৌলতলী মৌজায় ১ দশমিক ৩৯ একর ধানী জমি নেন স্থানীয় আবুল কাশেম গংয়ের কাছ থেকে। ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি কাউয়ারচর মৌজায় আবদুল ছত্তার গংয়ের ০ দশমিক ৭৬ একর জমি লিখে নেন রেখা। যার দলিল নং -৪০১১। ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ধুলাসার মৌজায় নাজিম সিকদার গংয়ের দেড় একর জমি দলিল করে নেন মহিবপত্নী ফাতেমা আক্তার। যার দলিল নং-৫০১৭। ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর কাউয়ারচরে জলিল গংয়ের ৩৯ শতাংশ জমি বাগিয়ে নেন রেখা।

২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ধুলাসার মৌজার সোনা মিয়া গং ও নুর সাঈদ গংয়ের কাছ থেকে ৪৮ লাখ টাকায় কেনেন একটি জমি। একই জায়গায় ৪০৮২নং দলিলে রয়েছে রেখার আরও ৩০ শতাংশ জমি। বৌলতলীতে ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর স্থানীয় আজিজুর রহমানের ১০২ শতাংশ জমি মাত্র ৬ লাখ টাকায় দলিল করেন রেখা। দলিল নং-৬৬৭২।

একই সালে তিনি ফিরোজা বেগমের কাছ থেকেও সমপরিমাণ জমি দলিল করেন একই স্থানে। যার দলিল নং-৬৬৭১। ধুলাসারের আব্দুল মালেক গংয়ের ১৯০ শতাংশ, গঙ্গামতিতে ৩০ শতাংশ, ২০২০ সালে রফিকুল ইসলাম গংয়ের কাছ থেকে কেনেন ১৫৪ শতাংশ জমি। এছাড়া ২০১৮ সালে ০.৪৫ একর, ২০১৯ সালে ০.২০ একর, ২০১৭ সালে দেড় একর ও ০.৪২ একর জমি কেনের রেখা।

ধুলাসার ইউনিয়নের সাবেক এক চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে জানান, স্কুল-কলেজের চাকরি বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য ও টিআর কাবিখার কাজ না করে পুরো টাকা লুটপাট করে নিয়েছেন তিনি। সেই অর্থেই কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরের মতো জায়গায় এত জমি কিনেছেন তিনি।

ফাতেমা আক্তার রেখা আলহাজ জালাল উদ্দিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। কলেজের অফিস সহায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, ফাতেমা আক্তার কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রভাষক হয়েছেন। তার বেতন সর্বসাকুল্যে ৩৮ হাজার টাকার মতো।

এসব বিষয়ে জানতে ফাতেমা আক্তার রেখার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার কলাপাড়ার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বাড়িতে তালা দেওয়া। স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে রেখাকে কোথাও দেখা যায়নি।

আন্তর্জাতিক

সরকার লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে চাইলে ব্রিটেন সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।

রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে। এছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে ড. ইউনূস রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে আশা ব্রিটেনের। সেইসঙ্গে রাজনীতিতে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রত্যাশা করে যুক্তরাজ্য।

২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটক হয়েছিলেন তারেক রহমান।

পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডন চলে যান। এরপর লন্ডনে থেকে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ড দেওয়ার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তারেক। এরপর লন্ডন থেকেই তিনি দল পরিচালনা করছেন।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার জন্য তারেক রহমানকে দায়ী করে থাকে এবং আদালতেও তার শাস্তি হয়। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটনা পর থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার গুঞ্জন শোনা যায়।

ড. ইউনূসের কাছে কী আশা যুক্তরাজ্যের, জানালেন মন্ত্রী ক্যাথরিন

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটা রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট।

রোববার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা সফররত ক্যাথরিন ওয়েস্ট পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন প্রত্যাশার কথা জানান।

ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব দলের সমান অংশগ্রহণ চায় যুক্তরাজ্য।

লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফেরানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে কথা হয়নি। তবে সরকার চাইলে সহায়তা করতে প্রস্তুত ব্রিটেন।

তিনি আরও জানান, সামরিক জান্তার দমনপীড়নে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ১০ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।

যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট দুই দিনের সফরে গতকাল শনিবার ঢাকায় আসেন।

গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরকালে প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

ক্যাথরিন ওয়েস্ট যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরে সরাসরি চীন, উত্তর-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর দেখভাল করেন। তাছাড়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, বিশেষত রফতানি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক কূটনীতি, প্রযুক্তির বিস্তৃতি ও প্রয়োগের বিষয়গুলো তদারক করে থাকেন।

জাতীয়

গত কয়েকবছরের মতো ২০২৫ সালেও দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। রোববার (১৭ নভেম্বর) জনপ্রশাসন বিভাগ থেকে তারিখ চূড়ান্ত করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ও ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমার প্রথম পর্ব জুবায়েরপন্থিদের অধীনে ও দ্বিতীয় পর্ব সাদপন্থিদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মুসলমানরা তাবলিগ জামাতের এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশদারিত্বের বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিরা। ২০১৫ সালে তাবলিগের দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির একক নেতৃত্বের বিরোধিতা করেন পাকিস্তান ও ভারতের কয়েকজন মুরব্বি। তাবলিগের মূল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নিজামুদ্দিন মারকাজের সমান ক্ষমতা দাবি করে আলমি শূরা নামে কমিটি গঠন করেন তারা।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশীদারিত্বের বিবাদে দিল্লি-লাহোর জড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়েই এর প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদেও ছড়িয়ে পড়ে এ বিভক্তি।

ওই সময়ের ১১ জন শূরা সদস্যের মধ্যে ৬ জন নিজামুদ্দিন মারকাজ ও মাওলানা সাদের পক্ষে অবস্থান নিলেও বাকি ৫ জন তার বিরোধিতা করেন। হেফাজতপন্থি আলেমরা তাদের সঙ্গে যুক্ত হলে বাংলাদেশেও বিষয়টি নিয়ে উত্তাপ ছড়ায়। এ অংশের বাধায় মাওলানা সাদ ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি। বাংলাদেশে আসলেও ইজতেমায় অংশ না নিয়েই ফিরে যেতে হয় তাকে।

ওই বছরে ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

এরপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ভাগ হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ২০১৯ সাল থেকে আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগের কার্যকম পরিচালনা করেন তারা।

জাতীয়

আওয়ামী লীগ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে গণহত্যা করেছিল। অথচ কিছু রাজনৈতিক দল সুবিধার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের আশ্রয় দিচ্ছে।

তাদের বিতাড়িত না করলে ছাত্র-জনতার আরেকটি যুদ্ধ হবে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ১০০ দিন উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের বিচার এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের দাবিতে সমাবেশটি করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, সম্প্রতি জনগণ উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। নাগরিক কমিটি এ বিষয়ে তাদের স্পষ্ট বিবৃতি চায়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় এখনো আওয়ামী লীগের দোসররা রয়ে গেছে। তাদের হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে। তাদের বিতাড়িত করুন। নয়তো ছাত্র জনতাকে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে। যেখানে ছাত্ররাই আগামীর রাষ্ট্রের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হবে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী দোসরদের আশ্রয় দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল টাকা বা অন্য কোনো উপায়ে আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করছে। আপনারা এর থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনাদের রাজনৈতিক যন্ত্র-কলাকৌশল ছাত্ররা দখল করে নেবে।

তিনি অভ্যুত্থানে আহতদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা টাকার বিনিময়ে রক্ত বিক্রি করবেন না। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একদল নকল সার্টিফিকেট বানিয়ে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। ২৪’এর বিপ্লবে আমরা এটা হতে দেব না।

নাগরিক কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে এ গণহত্যা করেছিল। ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন ছাত্রদের আন্দোলন দমিয়ে রাখতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে এদেশের নাগরিকদের হত্যা করেছে। যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য, তাদের দলীয়ভাবে ব্যবহার করেছে।

এ সময় তিনি আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

রাজনীতি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ২০২৫ সাল নাগাদ সকল সরকারি নির্মাণে পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধ হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকারি অফিসে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যেন নির্মাণ কাজে পোড়ানো ইট ব্যবহার না করা হয়। সরকারই হচ্ছে নির্মাণ কাজে ইটের সবচেয়ে বড় গ্রাহক। রাস্তাঘাট ও ভবন নির্মাণে সরকার ইট ব্যবহার করে থাকে। বড় বড় কাজে ইট ব্যবহার হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, সরকারকে পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্যবস্থায় যেতে হবে। সরকার চাহিদা পত্র দিলেই এর সমাধান হতে পারে।

তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ ইটভাটা। এটি বন্ধের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দেশের নতুন ইটভাটার ছাড়পত্র দেয়া হবে না। ৩৪৯১ টি ইট ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে। অন্যদিকে জেলাগুলোতে অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটাকে জনস্বার্থে অন্য স্থানে সরিয়ে নেয়া হবে। তবে ব্লক ইট তৈরির কাজে প্রয়োজনে প্রণোদনা দেবে সরকার।

তিনি বলেন,নতুন কোন ইটভাটার অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। যেকোনো ফর্মেই হোক না কেন আমরা ইটভাটার অনুমোদন দিচ্ছি না। যে সমস্ত এলাকা থেকে ইটভাটার দূষণ নিয়ে অভিযোগ আসছে আমরা সেইসব এলাকার ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তবে তিনি বলেন, জিগজ্যাগ ইটভাটাতে আপাতত আমরা কোন অভিযান চালাচ্ছি না কারণ অনেকেই জিগজ্যাগ ইটভাটায় ইনভেস্ট করেছে। আমরা এসব ইটভাটার মালিকদেরকে সতর্ক করে কমিটি গঠন করে দিয়েছি যাতে তারা নিয়ম-নীতি মেনে ইট উৎপাদন করে। এলাকা এবং কমিটি যদি পরিদর্শনকালে কোন অনিয়ম খুঁজে পায় তাহলে এসব ইটভাটা ভেঙে দেয়া হবে।

পরিবেশ দূষণে পলিথিনের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ৩ নভেম্বর থেকে নিষিদ্ধ পলিথিন বা পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলে পলিথিন ব্যবহার বন্ধেও নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে ৩ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে পলিথিন উৎপাদন, বিক্রি, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ১২৪টি মোবাইল কোড অভিযান পরিচালনা করে ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১২ লাখ ৫২ হাজার ১ শত টাকা জরিমানা আদায় এবং ২৬৮৭১. ৬ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে।

হর্ন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ একথা উল্লেখ করে সৈয়দা রিজোওয়ানা হাসান বলেন, হর্নের আওয়াজ বন্ধ করাটা আমি জাতীয় কর্তব্য বলে মনে করি। কারণ এই হর্নের কারণে বহু মানুষ বধির হয়ে যাচ্ছে, তাদের শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছে। কোন মধ্যম আয়ের দেশে এ ধরনের কার্যক্রম মেনে নেয়া যায় না।

তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও তৎ সংলগ্ন এলাকায় যানবাহনের হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ করে এসব এলাকা হর্নমুক্ত এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে রাজধানী ঢাকার ১০টি রাস্তা হর্নমুক্ত ঘোষণা করা হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে হর্নমুক্ত নীরব এলাকা ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, যেমন করেই হোক,গাড়ির হর্ন বন্ধ করা হবে। চালক কিছু হওয়ার আগেই হর্ন দেয়। এ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

তিনি বলেন, একদিনে এই সমস্যার সমাধান হবে না। তবে একটু হলেও আশা জেগেছে যে সরকার অবস্থান নিচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে হর্ন বন্ধ করার একটা ক্যাম্পেইন চালু করব আমরা।

তিনি বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে অভিজ্ঞ তরুণদেরকেও রাস্তায় হর্ন বন্ধ করার কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হবে। হর্ন বন্ধ করতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। সবাই সচেতন হলে হর্নমুক্ত নীরব বাংলাদেশ করা সম্ভব হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, এখন জনগণের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে কিন্তু আইনের ছোট্ট গ্যাপ থাকায় আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আইনের এক জায়গায় বলা হয়েছে, নীরব এলাকায় হর্ন বাজানো যাবে না। কিন্তু নীরব এলাকায় হর্ন বাজালে কী শাস্তি হবে? ওই শাস্তির ধারায় গিয়ে এটাকে আবার ইনক্লুুড করা হয়নি। এ আইন সংশোধন করে শাস্তি যুক্ত করতে হবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, কিছু যানবাহন ব্রেক করে গতি নিয়ন্ত্রণ করে না। হর্ন বাজিয়ে চলে। হর্নের কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও একটি বড় কারণ। সুতরাং হর্ন বন্ধ করলে সড়ক দুর্ঘটনাও কমতে পারে।

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন নিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সেন্ট মার্টিন ও পর্যটন শিল্পকে একসঙ্গে রক্ষা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।

তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিন নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ওই নরম ভূখ-ে কেউই কোন সামরিক ঘাঁটি করতে পারবে না। এখন যারা সেন্ট মার্টিন নিয়ে আন্দোলন করছেন তারা হলেন জাহাজ মালিক ও হোটেল মালিক। তারা ওখানকার স্থানীয় মানুষকে উসকে দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এই যে পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে বলা হচ্ছে তা কিন্তু একদিনের সিদ্ধান্ত নয়। বিভিন্ন সময়ে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোই পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় আমরা সীমিত পরিসরে বিধি-নিষেধ আরোপ করছি। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে সেন্ট মার্টিনে পর্যটন কার্যক্রম চলবে। কাজেই পর্যটন যে বন্ধ- এ কথাটা তো ঠিক নয়। মিথ্যা প্রচারণা।’

রিজওয়ানা হাসান বলেন, জনসচেতনতা ও জীববৈচিত্র রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত করতে আমরা কাজ করছি। গত বছর সেন্ট মার্টিন বন্ধ ছিল কিছু সময়। তখন তো কেউ প্রতিবাদ করেননি। এখন এমন কথা বলা হচ্ছে যে সেন্ট মার্টিনে দুর্ভিক্ষ হবে। হীন ব্যক্তিস্বার্থে কেউ কেউ এসব বিভ্রান্তিকর কথা ছড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিন নিয়ে কোন বিভ্রান্তি নেই। এই বিভ্রান্তিগুলো রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় ডিসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল দু মাসের মধ্যে অন্তত একটি নদী দূষণমুক্ত করতে হবে। তারা সময় ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা দেবে। ৪ নভেম্বর দুই মাস শেষ হয়েছে। এর মধ্যে কিছু জায়গার ডিসি পরিবর্তন হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর পর্যন্ত আমরা ৬৩টি জেলার কর্মপরিকল্পনা পেয়েছি। শুধুমাত্র রাঙ্গামাটি জেলার ডিসি মহোদয় জানিয়েছেন তাদের রাঙ্গামাটি জেলার নদীগুলো দূষিত নয়।

তিনি জানান, ঢাকাসহ সারাদেশের নদ-নদী ও খাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানসহ দেশের কিছু জায়গায় নদী ও খাল খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শহরে যেকোনো একটা নদীকে দূষণমুক্ত করতে দেশের নদ ও নদী সমূহের দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন মেয়াদে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। জনগণও নদী ও খাল খননে স্বেচ্ছাসেবক হয়ে কাজ করছে।

কপ২৯ সম্মেলন নিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এ সম্মেলন নিয়ে আমাদের অবস্থানটা খুবই স্পষ্ট। বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব ব্যাংক অর্থ সাহায্য দেবে বলেছে। বাংলাদেশের থেকে এই সম্মেলনে বলা হয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের যে টার্গেটটা ছিল তা সম্পূর্ণ করতে। কারণ এ টার্গেট থেকে তারা এক চতুর্থাংশ ফান্ড দিয়েছে।

জলাবদ্ধ ভবদহ নিয়ে তিনি বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ভবদহ বিল নিয়ে কাজ করেছি। ২০২৪-এ এসে এখনো ভবদহ বিল নিয়ে কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। এটাকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা উচিত ছিল। এখানে আমরা চেষ্টা করছি আপাতত পানি কমিয়ে আনতে। সেখানকার মানুষকে বাঁচাতে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট রেগুলারিটি অথরিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলেছে, ওখানে ঋণ আদায় স্থগিত রাখবে। পরে এটি শিথিল করে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, জলাবদ্ধতায় থাকা মানুষদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য বলা হয়েছে। সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি জানতে জুম মিটিং করব।

উপদেষ্টা বলেন, ভবদহের সমস্যার সমাধানে এবার শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থাকব না। বুয়েট আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দেয়া হবে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকেও বিশেষজ্ঞ এনে এর কারণ নির্ণয় করা হবে।

জাতীয়

“আগামী বছর পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে হবে বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।”

আগামী বছর থেকে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা ফিরিয়ে আনার ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

২০২৫ সালের শেষে এ পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

শুক্রবার রাতে তিনি বলেন, “আগামী বছর পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে হবে বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।”

একসময় প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও ২০০৯ সালে তা বন্ধ করে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চালু করা হয়। এ পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হত।

তবে করোনাভাইরাস মহামারীর জেরে ২০২০ সালে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ কমাতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১৩ বছর পর ২০২২ সালে ডিসেম্বরে ফের ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ওই ফলাফলের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বৃত্তির জন্য নির্বাচিত ৮২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়।

তাদের মধ্যে ৩৩ হাজার জন ট্যালেন্টপুলে (মেধাবৃত্তি) এবং ৪৯ হাজার ৩৮৩ জন সাধারণ বৃত্তি পায়।

ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসে ২২৫ টাকা করে পায়। তাছাড়া উভয় ধরনের বৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রতি বছর ২২৫ টাকা করে এককালীন দেওয়া হয়।

উপজেলা বা থানায় প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যার অনুপাতে উপজেলা বা থানা কোটা নির্ধারণ করে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি বণ্টন করা হয়। সাধারণ বৃত্তি বিতরণ করা হয় ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক।

সেবার দেশের প্রতিটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মোট শিক্ষার্থীর ২০ শতাংশকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরের বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় আর বৃত্তি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “এ বছর তো আর সময় নেই, আগামী বছর থেকে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এখনো চিন্তাভাবনার পর্যায়ে আছে।”

নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল হয়ে যাওয়ায় আগামী বছর শিক্ষাক্রম সংশোধন হবে। তবে প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে আগের শিক্ষাক্রমই বহাল ছিল। তবে আগামী বছর দুই শ্রেণির বই কিছুটা পরিমার্জন করা হবে।

সচিব বলেন, “আগের পাঠ্যক্রমে আমরা ফিরছি। বৃত্তি পরীক্ষাটা আগের মতই নেওয়ার কথা আলোচনা হচ্ছে। সমাপনী পরীক্ষা চালুর আগে যেভাবে বার্ষিক পরীক্ষা আর বৃত্তির জন্য আলাদা একটা পরীক্ষা নেওয়া হত, সেভাবে চিন্তা করা হচ্ছে।”

বৃত্তি পরীক্ষা কোন পদ্ধতিতে হবে- এ প্রশ্নে ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “আগামী বছর পঞ্চম শ্রেণির মূল্যায়ন কোন পদ্ধতিতে হবে তা এনসিটিবি নির্ধারণ করে দেবে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।”

বৃত্তি পরীক্ষার কারণে শিক্ষার্থীদের বাড়তি চাপ পোহাতে হয় বলে আগে অভিযোগ ছিল অভিভাবকদের। এ বিষয়ে সচিব বলেন, “আগ্রহী পরীক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। আগেও এমনটি হত।”

রাজনীতি

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষায় ১৯৯৯ সালে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়, যার চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তারেক রহমানকে প্রেসিডেন্ট ও ডা. জোবাইদা রহমানকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করে ২৩ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান।

পরিচালকরা হলেন– অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক আবুল হাসনাত মোহা. শামীম, ডা. সৈয়দা তাজনীন ওয়ারিস সিমকী, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন, কৃষিবিদ খন্দকার মাহফুজুল হক বাচ্চু, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অ্যাডভোকেটে মোহাম্মদ আলী, আমিরুল ইসলাম কাগজী, ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, কৃষিবিদ আনোয়ারুননবী মজুমদার বাবলা, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক শেখ মুনির উদ্দিন. প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, প্রকৌশলী উমাশা উমায়ন মনি চৌধুরী ও সাংবাদিক হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কার্য্করী কমিটির পরিবর্তে এই ‘বোর্ড অব ডাউরেক্টস কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষায় ১৯৯৯ সালে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়, যার চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

‘একটি উদ্যোগ, একটু চেষ্টা এনে দেবে স্বচ্ছলতা, দেশে আসবে স্বনির্ভরতা’– এই শ্লোগান নিয়ে এই অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছে।

জাতীয়
জাতীয়

শুধু ‘হার্ট অ্যাটাক’য়ের কারণে বুকের বাম পাশে ব্যথা হয় না।

ভোঁতা, তীক্ষ্ণ বা চাপ ধরা- অনুভূতি যেমনই হোক, বুকে বা নারীদের ক্ষেত্রে স্তনের তলার দিকে ব্যথা হওয়ার বিষয়কে মোটেই অবহেলা করা যাবে না।

আর সার্বিকভাবেই বুকে ব্যথা হওয়া স্বাস্থ্য সমস্যাকে ইঙ্গিত করে।

এই তথ্য জানিয়ে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্যালিফোর্নিয়া’র সান্টা মনিকাতে অবস্থিত ‘প্রোভিডেন্স সেইন্ট জন’স মেডিকেল সেন্টার’য়ের চিকিৎসক ডেভিড কাটলার বলেন, “বুকের সব ব্যথা ‘হার্টঅ্যাটাক’ নির্দেশ করে না। অন্য কোনো আঘাত, হজম সমস্যা, হৃদপিণ্ডের অসুস্থতা, রক্ত প্রবাহে গণ্ডগোল এমন নানান করণে বুকের বাঁ দিকে ব্যথা হতে পারে।”

আট রকমের কারণে বাঁ বুকে বা স্তনের তলায় ব্যথা করতে পারে।

আঘাত

সম্প্রতি উল্টে পড়ে গিয়ে পাঁজরে আঘাত পেয়ে থাকলে, হতে পারে বুকে ব্যথা।

ডা. কাটলার বলেন, “বুকের দেয়ালে থাকা মাংস পেশি ফুলে যাওয়া, টান পড়া বা বেকায়দায় থাকলে সেখানে ব্যথা করতে পারে।”

সমাধান: বুকের পেশিতে হালকা ব্যথা হলে সময়ের সাথে সেটা সেরে যায়। এক্ষেত্রে আরাম পেতে গরম ভাপ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পাঁজরে কোনো ফাঁটল আছে কি-না সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হতে পারে।

কস্টোকনড্রাইটিস

বাম দিকে স্তনের হাড়ে ‍সুক্ষ্ম, চেপে ধরা ব্যথা, গভীর নিঃশ্বাসে বা কাশলে অবস্থা আরও খারাপ হয়- এরকম অবস্থাকে বলা হয় ‘কস্টোকনড্রাইটিস’।

ডা. কাটলার ব্যাখ্যা করেন, “স্তনের হাড় ও পাঁজরের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী তরুণাস্থির প্রদাহের কারণে এরকম হয়। আর সাধারণত বয়সের চল্লিশের পরে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।”

সমাধান: এক্ষেত্রে পেশাদার বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। ব্যথা কমানোর ওষুধসহ নানান ধরেনর সেবার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান সম্ভব।

হজমতন্ত্রে সমস্যা

পেটের সমস্যা থেকেও বুকে ব্যথা হতে পারে। এরকম কয়েকটি সমস্যার মধ্যে রয়েছে-

অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা জিইআরডি: পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালী দিয়ে উঠে আসলে এই সমস্যা হয়। ফলে বুকেও ব্যথা হতে পারে। অ্যান্টাসিড-ধর্মী ওষুধে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া অতিরিক্ত খাওয়া, তেলেভাজা মসলাদার খাবার, অ্যালকোহল সেবন, ধূমপান এড়াতে হবে। কারও কারও ক্ষেত্রে ডাল ও বীজ ধরনের খাবার থেকেও সমস্যা হয়। এরকম হলে সেগুলো চিহ্নিত করে খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

গ্যাস্ট্রাইটিস: বা পাকস্থলীর ভেতরের আবরণে প্রদাহ। যা থেকে পেটে ব্যথা হয়। সেখান থেকে বুক বা স্তনের নিচে ব্যথা হতে পারে। চিকিৎসক কারণ বের করে চিকিৎসা দিতে পারবেন। ঘরোয়া কোনো প্রতিকার নেই।

হিয়াটল হার্নিয়া: যখন পাকস্থলীর ওপরের অংশটি বুক এবং পেটকে স্ফীত ও বিস্তৃতি পেশি দিয়ে আলাদা করে ফেলে তখন এই অবস্থার তৈরি হয়। ফলে অস্বস্তি বা ব্যথা হতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে সবসময় দরকার হয় না, তবে ‘হার্টবার্ন’য়ের ওষুধ দিতে পারেন চিকিৎসকরা। এতেও সমস্যা না মিটলে হার্নিয়া অপারেশন’য়ের প্রয়োজন পড়বে।

স্তনের অবস্থা

নারীদের ক্ষেত্রে স্তনের চারপাশে ও নিচে ব্যথা হওয়ার নানান কারণ থাকতে পারে।

ম্যাসটাইটিস: যা কিনা স্তন কোষ সম্বন্ধীয় ব্যথা হিসেবে পরিচিত। স্তনদানকারী মায়েদের এমন সমস্যায় হয় দুধ আটকে গেলে।

জনস হপকিন্স মেডিসিন’য়ের তথ্যানুসারে- এরফলে উষ্ণভাব, লালচে ও ফুলে যেতে আর ফ্লু হলে যেমন ব্যথা করে তেমন অনুভূত হয়।

সমাধান: অবশ্যই ধাত্রী ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের শরাণাপন্ন হয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে হবে।

ফাইব্রোসিস্টিক ব্রেস্ট: মাসিক চলার সময় নারীদের সারা শরীরে হরমোনের ওঠানামা চলে। বিশেষ করে ৩০ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে যাদের বয়স। এর ফলে স্তনে পিণ্ডর মতো ফোলা অথবা দড়ির মতো রেখা ফুটে উঠতে পারে, বিশেষ করে মাসিক শুরুর আগ সময়ে। এটার জন্য বুকে বা স্তনে ব্যথাও হয়।

সমাধান: এটা ক্ষতিকর নয়। আর স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায় না- জানান ডা. কাটলার। তবে কোনো পিণ্ড বা দলা কিংবা ফোলাভাব হলে অর্থাৎ স্তনে কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

স্তন ক্যান্সার: খুবই অস্বাভাবিক বা সচারচর দেখা যায় না, তারপরও স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে বুকে ব্যথা। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে- স্তনে বা বগলে পিণ্ড হওয়া, স্তনের চারপাশ ফুলে ওঠা বা পুরু হওয়া, বুকের ত্বকে টোল পড়া ও অস্বস্তিভাব, স্তনাগ্রে লালচে ভাব বা স্তর পড়া, রস নিঃসরণ বা স্তনের আকারের পরিবর্তন।

সমাধান: “এসব লক্ষণ থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে যত আগে চিকিৎসা শুরু করা যাবে ততই মঙ্গল”- বলেন ডা. কাটলার।

স্নায়ুর সমস্যা

কোনো কোনো নির্দিষ্ট কোনো স্নায়ুগত সমস্যা থেকে বুকে বা স্তনে ব্যথা হতে পারে।

থোরাসিস নিউরালজিয়া: “যখন পিঠের কোনো স্নায়ু সুক্ষ্মভাবে খোঁচা দেয় তখন বুকে সুক্ষ্ম বা কেউ ছুরি চালাচ্ছে এমন অনুভূতি হয়” বলেন ডা. কাটলার।

সমাধান: বুকে বা পিঠে কোনো আঘাত পেলে এমন হতে পারে। নানান ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়ে।

শিঙ্গলজ: যদি চিকেনপক্স বা জলবসন্তে শিকার হলে, ভালো হওয়ার পরও ভাইরাস আবার উদ্ভুদ হতে পারে ফুসকুড়ির আকারে। বিশেষ করে বয়স পঞ্চাশের পরে গেলে। এরপলে ত্বকের তলায় থাকা স্নায়ুতে প্রদাহ হয়। যেখানে থেকে জ্বালা, ব্যথা প্যাঁচানোর মতো অনুভূতি হতে পারে।

ডা. কাটলার বলেন, “যদি ভাইরার বুকের অংশে আক্রমণ করে তবে ব্যথা ও জ্বালাভাব অনুভূত হয়।

সমাধান: ডাক্তারকে জানাতে হবে ফুসকুড়ি উঠছে এবং একসময় জলবসন্ত হয়েছিল। এর কোনো চিকিৎসা না থাকলেও ‘অ্যান্টিভাইরাল’ ওষুধ দিয়ে দ্রুত উপশম সম্ভব।

ফুসফুসের সমস্যা

বিভিন্ন ধরনের ফুসফুসের রোগ থেকেও বুকে ব্যথা হতে পারে।

ফুসফুসে সংক্রমণ: ‘আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন’য়ের তথ্যানুসারে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিস থেকে সুক্ষ্ম ও ছুরি চালানোর মতো ব্যথা বুকে হয়। বিশেষ করে গভীর শ্বাস নিলে ব্যথা বেশি অনুভূত হয়। সাথে থাকবে জ্বর, নিঃশ্বাসে সমস্যা, ক্লান্তি।

প্লুরেসি: ফুসফুসে আবরণে ‘অটোইমিউন’ রোগ থেকে সংক্রমণ হয়। যে কারণে সুক্ষ্ম ব্যথা অনুভূত হতে পারে বুকে।

সমাধান: কারণ বের করে চিকিৎসা নিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকে সেরে যায়। তবে ডাক্তারই সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।

হৃদ সমস্যা

ডা. কাটলার বলেন, “বুক বা স্তনে বিশেষ করে বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ হতে পারে হৃদপিণ্ডের নানান সমস্যা।”

অ্যাঞ্জাইনা: এই অবস্থায় সাময়িকভাবে হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ কমে যায় তখন বুকে ব্যথা হয়। মনে হয় ‘হার্ট অ্যাটাক’ হচ্ছে।

ডা. কাটলার বলেন, “হার্ট অ্যাটাক’য়ের মতো এটাও এক ধরনের হৃদপিণ্ডের রোগ।”

সমাধান: বিশ্রাম বা ওষুধের মাধ্যমে সারানো যায়। এছাড়া জীবনযাত্রা পরিবর্তন, রক্তচাপের ওষুধ, বা কোলেস্টেরল কমানোতে সমস্যা সমাধান করা যায়। হঠাৎ এই ধরনের ব্যথা হলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া জরুরি।

হৃদপিণ্ডে সংক্রমণ: ‘পেরিকর্ডাইটিস’ বা ‘এন্ডোকার্ডাইটিস’য়ের মতো সমস্যা হয় যখন হৃদপিণ্ডের কোনো অংশ স্ফীত হয়। ভাইরাসের আক্রমণ বা নিউমনিয়া থেকে এরকম হতে পারে। সুক্ষ্ম ও ছুরি চালনার মতো ব্যথা হয় পেটের উপরিভাগ থেকে স্তনের নিচ পর্যন্ত।

সমাধান: রোগের ধরন বুঝে চিকিৎসক সারানোর ব্যবস্থা করবেন। দরকার হতে পারে উচ্চ মাত্রার ‘অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি’ ওষুধ।

হার্ট অ্যাটাক: হৃদপিণ্ডের ধমনিতে রক্ত জমাট বেধে আটকে গেলে এই অবস্থা তৈরি হয়।

ডা. কাটলার বলেন, “এই অবস্থায় অসহ্য ব্যথা অনুভূত হয় বুকে বাম দিকে, হাতে ঘাড়ে এবং চোয়ালে। এছাড়া বুকে চাপ ধরাভাব, ক্লান্তি, ঠাণ্ডা ঘাম, মাথা ঝিমঝিম, বমিভাব, নিঃশ্বাসে সমস্যা থাকবে।”

সমাধান: জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

বিনোদন

এক সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) অন্যতম জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ছিলা ‘লাল গোলাপ’। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হতো।

অনুষ্ঠানটিতে আমন্ত্রিত অতিথিকে একটি লাল গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেন সাংবাদিক শফিক রেহমান।

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সেই অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে, বিটিভিতে ফের ফিরছে দর্শকপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘লাল গোলাপ’। দীর্ঘ আট বছর পর ফের লাল গোলাপ হাতে দেখা যাবে শফিক রেহমানকে।

ইতোমধ্যে নাকি দুই পর্বের শুটিংও সেরে ফেলেছেন তিনি।

এসব তথ্য দিয়েছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান নিজেই।

সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমকে প্রবীণ এ সাংবাদিক জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে অনুষ্ঠানটি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেখা যাবে। এরই মধ্যে অনুষ্ঠানটির দুটি পর্ব রেকর্ড করা হয়েছে।

শফিক রেহমান সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন লাল গোলাপ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করে। সমসাময়িক দেশি-বিদেশি ঘটনা নিয়ে এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্ব সাজানো হতো। কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর প্রতিবেদনও থাকতো। পাশাপাশি দেখানো হতো বিভিন্ন সিনেমার অংশবিশেষ।

উল্লেখ্য, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলায় ২০২৩ সালের আগস্টে শফিক রেহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৬ সালে তাকে পাঁচ মাস কারাগারেও থাকতে হয়েছিল। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের ছয় বছরের প্রবাসজীবন থেকে ১৮ আগস্ট দেশে ফেরেন শফিক রেহমান।