আন্তর্জাতিক

ফিনল্যান্ড-সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়। কিন্তু তাদের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পথে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে তুরস্ক।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়্যেপ এরদোগান শুক্রবার জানান, ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন না তিনি।

তিনি তখন জানিয়েছিলেন, ফিনল্যান্ড-সুইডেন নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তানের সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের মদদ দেয়।

তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যের পর তাদের বোঝাতে তৎপর হয়ে ওঠেছে ন্যাটোর অন্য দেশগুলো।

আর এর মাঝেই নিজেদের শর্তের কথা জানালেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভসোগলু।

রোববার তিনি জানিয়েছেন, যদি ফিনল্যান্ড-সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দিতে চায় তাহলে তাদের কিছু শর্ত মানতে হবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শর্তের বিষয়ে বলেছেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে জঙ্গিদের মদদ দেওয়া বন্ধ করতে হবে, নিরাপত্তার পরিস্কার নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং তুরস্কের ওপর আরোপিত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভসোগলু আরও বলেছেন, আমরা কাউকে হুমকি দিচ্ছি না বা সুযোগ বুঝে সুবিধা আদায় করার চেষ্টাও করছি না। আমরা বিশেষ করে পিকেকে কুর্দিস গ্রুপকে সুইডেন যে সমর্থন দিচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে কথা বলছি।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গুরুতর অসুস্থ। এমন দাবিই করেছেন সাবেক ব্রিটিশ গোয়েন্দা ক্রিস্টোফার স্টিলি।

তিনি বলেছেন, এটি নিশ্চিত না তার কি রোগ হয়েছে। এটা কি আরোগ্য যোগ্য নাকি গুরুতর বা অন্য কিছু।

অন্যদিকে পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ ধনকুবেরের একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই অডিওতে ধনকুবেরকে বলতে শোনা যায়, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পুতিন গুরুতর অসুস্থ।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস ম্যাগাজিন নিউজ লাইনসের হাতে অডিওটি এসেছে। সেই অডিওতে একজন পশ্চিমা ব্যবসায়ীর কাছে রুশ ধনকুবের বলেন, বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করার আগ মূহুর্তে পুতিনের ব্লাড ক্যান্সারের একটি অপারেশন হয়েছে।

সেই ধনকুবেরকে আরও বলতে শোনা যায়, আমি পুতিনের মরণ প্রত্যাশা করি। যে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে, ইউক্রেনের অর্থনীতি ও অন্য অর্থনীতি, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। সমস্যা হলো তার মাথা নিয়ে। একজন উন্মাদ পুরো বিশ্বকে টালমাটাল করে দিতে পারে।

এদিকে ৯ মে রাশিয়ার বিজয় দিবসে পুতিনকে দেখা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেনাদের পাশে আটোসাটো হয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছেন তিনি।

পুতিনকে এমন অবস্থায় দেখে অনেকে সন্দেহ করেন হয়ত রুশ প্রেসিডেন্ট সত্যি সত্যিই অসুস্থ।

আন্তর্জাতিক

দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংঘাত নিয়ে খবর পরিবেশনকারী নারী সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ ছিলেন টেলিভিশনের পর্দায় এক পরিচিত মুখ। সাহসী বর্ণনার জন্য আরব বিশ্বে পরিবারের অংশ হয়ে উঠেছিলেন শিরিন।

আল জাজিরার এই নারী সাংবাদিক গত বুধবার (১১ মে) ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে সংবাদ সংগ্রহের সময় নিহত হন। তবে তিনি ছিলেন সেই প্রবীণ টেলিভিশন সংবাদদাতা, যিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন।

জেরুজালেমে জন্ম নিলেও মার্কিন নাগরিকত্ব ছিল শিরিনের। টনি আবু আকলেহ নামে এক ভাই রয়েছে তার। বন্ধুরা এবং সহকর্মীরা শিরিনকে একজন সাহসী ও দয়ালু সাংবাদিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

প্রায় তিন দশকের ক্যারিয়ারে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম তুলে ধরেছেন শিরিন। অবশ্য কেউ কেউ তার বিখ্যাত ‘সংক্রামক হাসি’র কথা উল্লেখ করতেও ভুলেননি।

শিরিনের সহকর্মী এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে আল জাজিরার প্রতিনিধি নিদা ইব্রাহিম বলেছেন, শিরিনকে হারানো অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি ছিলেন দয়ালু এবং নিবেদিতপ্রাণ। তার প্রতিবেদনগুলোতে অনেক তথ্য উঠে এসেছে। তিনি তার কাজ সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানতেন এবং সুক্ষ্মতা বুঝতেন।

ইব্রাহিম অশ্রুসিক্ত অবস্থায় কথা বলছিলেন। তিনি শিরিনকে ‘অনন্য মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

শিরিনের বিনয় এবং ব্যক্তিত্বের শ্রেষ্ঠত্বের কথা উল্লেখ করে ইব্রাহিম আরও জানান, মৃত্যুর আগেও শিরিন হিব্রু শিখছিলেন। তিনি ইসরায়েলি মিডিয়ার বর্ণনাগুলো আরও ভালভাবে বুঝতে চাইছিলেন।

শিরিন বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত কভার করেছেন। তবুও তিনি নতুন কিছু শিখতে এবং নতুন উপায় ব্যবহার করে প্রতিবদন চালিয়ে যেতে আগ্রহী ছিলেন।

১৯৭১ সালে জেরুজালেমে জন্মগ্রহণ করেন শিরিন। তিনি একজন খ্রিস্টান, জর্ডানের ইয়ারমুক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়েছেন। এর আগে পড়েছিলেন স্থাপত্য বিষয়ে। স্নাতক হওয়ার পর তিনি ফিলিস্তিনে ফিরে যান। সে সময় ভয়েস অব ফিলিস্তিন রেডিও এবং আম্মান স্যাটেলাইট চ্যানেলসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়া আউটলেটে কাজ করেন।

১৯৯৬ সালে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কে যোগ দেন শিরিন। তখনও আল জাজিরার বয়স মাত্র এক বছর।

এক ভিডিও বার্তায় শিরিন বলেছিলেন, মানুষের কাছাকাছি থাকার জন্য আমি সাংবাদিকতা বেছে নিয়েছি। সত্য পরিবর্তন করা সহজ নাও হতে পারে। তবুও আমি ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠস্বর বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে পারি।

একজন টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে শিরিন ২০০৮, ২০০৯, ২০১২, ২০১৪ এবং ২০২১ সালের গাজার যুদ্ধ থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বরে উত্তর ইসরায়েলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ছয় ফিলিস্তিনির ঘটনা তুলে ধরেছেন। তিনি ২০০৬ সালে লেবাননের যুদ্ধসহ এই অঞ্চলের খবরও কভার করেছিলেন।

আল জাজিরার সাংবাদিক ডালিয়া হাতুকা বলেন, শিরিন একজন পথপ্রদর্শক। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনি যখন ছোট ছিলেন মা-বাবাকে হারিয়েছেন। ফিলিস্তিনে দেখা নিষ্ঠুরতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বরং সেখানে তার উপস্থিতি আল জাজিরার সমার্থক হয়ে উঠেছিল। এমনকি রামাল্লায় সেনারাও ব্যঙ্গ করে শিরিনের বিখ্যাত সমাপনী লাইনটি বলতেন: শিরিন আবু আকলেহ, আল জাজিরা, রামাল্লা।

এক বিবৃতিতে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক শিরিনের হত্যাকাণ্ডকে ‘সরাসরি হত্যা’ এবং ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। এছাড়াও সাংবাদিকদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।

তবে ইসরায়েলি বাহিনী সাংবাদিকদের টার্গেট করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং শিরিনের মৃত্যু নিয়ে একটি যৌথ তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছে।

শিরিনের সহকর্মী তামের আল-মেশাল বলেন, শিরিন ফিলিস্তিন এবং আরবে সাংবাদিকদের জন্য মডেল ছিলেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি তার কাজে পেশাদার এবং ধৈর্যশীল ছিলেন।

আল জাজিরাকে পাঠানো শিরিনের শেষ বার্তাটি ছিল সকাল ৬টা ১৩ মিনিটে। তিনি সেখানে জেনিন শহরের খবর ও ছবি পাঠানোর কথা বলছিলেন।

তবে আল জাজিরার সহকর্মী এবং দর্শকরা জানতেন না, যে সংবাদটি তিনি পাঠাবেন তা তার মৃত্যুর সংবাদ।

 

আলজাজিরার সাংবাদিককে মাথায় গুলি করে হত্যা করল ইসরাইল

================================================

অবরুদ্ধ পশ্চিমতীরে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক নারী সাংবাদিকের মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা।

নিহত ওই সাংবাদিকের নাম শিরীন আবু আকলেহ। বুধবার ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে জেনিন শহরে ইসরাইলি সেনারা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। খবর আলজাজিরার।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার জেনিন শহরের কাছে ইসরাইলি বাহিনীর চালানো অভিযানের প্রতিবেদন কভার করতে গেলে নারী ওই সাংবাদিককে ইসরাইলি সেনারা গুলি করে, এতে তিনি নিহত হন।

আলজাজিরার আরেক সাংবাদিক নিদা ইব্রাহিম বলেছেন, কেন সংবাদিক শিরীন আবু আকলেহকে গুলি করা হয়েছে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু এই ঘটনায় সামনে আসা একটি ভিডিওতে আবু আকলেহকে মাথায় গুলি করা হয়েছে বলে দেখা গেছে।

এ সময় জেরুজালেমভিত্তিক কুদস পত্রিকার আলী সামওদি নামে আরেক ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের পিঠে গুলি চালায় ইসরাইলি বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

পাঁচ বার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, কোনোবারই মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি, সর্বশেষ ভোটে পরাজয় তার রাজনৈতিক জীবনকেই সঙ্কটে ঠেলে দিয়েছিল; কিন্তু দেশ সঙ্কটাপন্ন হওয়ার পর সেই রনিল বিক্রমাসিংহের রাজনৈতিক জীবন জেগে উঠল।

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় জনবিক্ষোভের মুখে মাহিন্দা রাজাপাকসে বিদায় নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরে এলেন রনিল বিক্রমাসিংহে; নিলেন আবার প্রধানমন্ত্রিত্বের শপথ।

৭৩ বছর বয়সী রনিল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) চেয়ারম্যান। ঝানু রাজনীতিক হিসেবে তার যেমন পরিচিতি, তেমনি পশ্চিমাদের কাছেও তার রয়েছে কদর, আবার প্রতিবেশী প্রভাবশালী দেশ ভারতের সঙ্গেও তার সুসম্পর্কের কথা বিদিত।

শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের কালে বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর বিরোধী দল থেকে রনিলকে প্রধানমন্ত্রী করে দৃশ্যত জনবিক্ষোভ প্রশমন করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে।

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার একটি বৌদ্ধমন্দিরে আশির্বাদ নিতে যান রনিল বিক্রমাসিংহে।
ছবি: রয়টার্সশ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার একটি বৌদ্ধমন্দিরে আশির্বাদ নিতে যান রনিল বিক্রমাসিংহে। ছবি: রয়টার্স
প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া রনিলের জীবনের ৪৫ বছরই পার্লামেন্টে পদচারণা। তিনি প্রথম এমপি হন ১৯৭৭ সালে, মাত্র ২৮ বছর বয়সে।

‘কলম্বো এলিট’ রনিলের বাবা বিশিষ্ট আইনজীবী এসমন্ড বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তার মায়ের দিকের আত্মীয় জুনিয়াস রিচার্ড জয়াবর্ধনেকে এখন পর্যন্ত দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ধরা হয়।

জয়াবর্ধেনে ও প্রেমাদাসা সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছিলেন ব্যারিস্টার রনিল। প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমদাসা খুন হওয়ার পর ১৯৯৩ সালের ১ মে প্রথম শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রনিল। এর আগে তিনি পাঁচবার এ দায়িত্ব নিলেও কোনোবারই পুরো মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।

ইউএনপির ভরাডুবি ঘটে ২০২০ সালের নির্বাচনে, রাজাপাকসেদের দল এসএলপিপির কাছে। সেবার একটি আসনেও জয় পায়নি রনিলের দল। আর কলম্বোয় সেটাই ছিল রনিলের প্রথম হার।

ভারতের সংবাদ মাধ্যম নিউজ এইটিন লিখেছে, সেবার শোচনীয় হারের পর গণমাধ্যম রনিল বিক্রমাসিংহের রাজনৈতিক জীবনের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছিল। দলীয় সভাপতির পদ ছাড়ার জন্য ইউএনপির নেতারা দাবি তুলেছিলেন।

কিন্তু রনিল তাতে কান না দিয়ে পদ আঁকড়েই ছিলেন, শুধু তাই নয়, গত বছর মনোনীত সদস্য হিসেবে পার্লামেন্টেও ফেরেন। পার্লামেন্টে এখন দলের একমাত্র সদস্য তিনি, আর তিনিই এখন প্রধানমন্ত্রী। আর তার দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া একাংশ বিরোধী দলের আসনে।

নিউজ এইটটিন লিখেছে, তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে রনিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বন্ড কেলেঙ্কারিতে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ডুবতে বসা রনিলের পাশে তখন দাঁড়িয়েছিলেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। আর মাহিন্দার বিপদে রনিলও পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন বলে কথা আছে।

রনিল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মাহিন্দার টুইট তার সত্যতাই তুলে ধরে। পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী টুইটে জটিল এই মুহূর্তে নতুন প্রধানমন্ত্রীর সফলতা কামনা করেছেন।

সমালোচকদের কেউ কেউ মনে করছেন, রাজাপাকসে পরিবারকে রক্ষা করতেই রনিলকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে।

মাহিন্দার মতো গণনেতা না হলেও ভঙ্গুর শ্রীলঙ্কাকে রক্ষা করতে পারলে ইতিহাস হয়ে থাকবেন রনিল।

তবে এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের অধীনে রনিল কি কাজ করবেন? অনেকেরই ধারণা, তার প্রধানমন্ত্রিত্বে সরকার গঠনের পর গোটাবায়াকে গদি ছাড়তে বলবেন।

কারণ মাহিন্দা পদত্যাগ করলেও বিক্ষুব্ধ জনতা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার পদত্যাগের দাবি থেকে এখনও সরেনি।

আন্তর্জাতিক

ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল সোমবার হঠাৎ করে ইউক্রেন সফরে যান। তিনি যান ঝুঁকিপূর্ণ বন্দর নগরী ওডেসাতে। যেই শহর বর্তমানে দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।

আর বন্দর নগরী ওডেসাতে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শামহাল।

তবে ওডেসাতে এ দুজনের বৈঠক চলার সময় সেই অঞ্চলটিতে মিসাইল হামলা চালায় রাশিয়া।

আর মিসাইল হামলার কারণে বৈঠকের মাঝখানেই ওঠে পড়তে হয় ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টকে।

তারা বৈঠক ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। এ বৈঠকটিতে ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কিও।

গণমাধ্যম সিএনএনকে বৈঠকের মাঝ পথে ওঠে যাওয়ার খবরটি জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একজন কর্মকর্তা।

এদিকে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের জন্য তারা নিজেদের সর্বোচ্চটা দেবেন এবং ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া অব্যহত রাখবেন।

অন্যদিকে যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেনে সফরে আসায় ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান জেলেনস্কি।

আন্তর্জাতিক

চরম আর্থিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে উত্তাল গণবিক্ষোভের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন বলে খবর এসেছে।

দেশটির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার ছোট ভাই। স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলগুলো এই দুর্দশার জন্য তাদেরকেই দায়ী করে আসছে।

বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, অর্থনীতির ভুল ব্যবস্থাপনার কারণে শ্রীলঙ্কা বিদেশি ঋণে ডুবতে বসেছে, রিজার্ভ ঠেকেছে তলানিতে।

কলম্বোয় সরকারবিরোধীদের গুরুত্বপুর্ণ একটি বিক্ষোভস্থলে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি: রয়টার্স

ভারত মহাসাগরীর দ্বীপ দেশটির হাজার হাজার মানুষ প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে।

সোমবার দেশটির রাজধানী কলম্বোয় সরকারবিরোধীদের গুরুত্বপুর্ণ একটি বিক্ষোভস্থলে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের হামলার ঘটনা ঘটে। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর আসে। প্রধানমন্ত্রীর এ পদত্যাগে সংকটে পড়া দেশটিতে নতুন একটি মন্ত্রীসভার গঠনের পথ খুলতে পারে।

শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার এক বিশেষ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া দেশজুড়ে চলা রাজনৈতিক সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দাকে পদত্যাগ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তার কয়েকদিনের মধ্যেই সাড়া দিলেন তার বড় ভাই।

এখন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া একটি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য পার্লামেন্টে থাকা সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে বিরোধী এসজেবি পার্টি নিশ্চিত করেছে, তাদের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা অন্তর্বর্তী এ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না।

সরকারি দলের সমর্থকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠি ও লোহার পাইপ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছবি: রয়টার্স

সরকারি দলের সমর্থকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠি ও লোহার পাইপ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছবি: রয়টার্স

সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ক্ষমতাসীন দলের একদল সমর্থক জড়ো হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। এরপর প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। এই বৈঠক শেষ করে মিছিল করে গিয়ে প্রেসিডেন্ট দপ্তরের সামনে অবস্থানরত সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় তারা।

তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠি ও লোহার পাইপ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হামলকারীদের সেখান থেকে সরাতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।

বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের এ হামলার ঘটনার পর দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। কলম্বোয় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কাছে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।

স্থানীয় হাসাপতালের ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবারের এ সহিংসতায় অন্তত ৭৮ জন আহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হোলোকাস্ট নিয়ে তার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বৃহ্স্পতিবার ফোন দেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। ফোনালাপের পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এ ক্ষমা চাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তবে পুতিনের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, লাভরভের মন্তব্যের জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্ষমা চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট তা গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া ইহুদি জনগণ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদি হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি পুতিনের মনোভাব পরিষ্কার করার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বেনেট।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান রাশিয়ার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, পুতিন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ইউক্রেন যেন আজভস্টালে আটকে থাকা তাদের সেনাদের নির্দেশ দেয়, অস্ত্র ফেলে দিয়ে রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে পুতিন আশ্বস্ত করেছেন, আজভস্টাল স্টিল কারখানায় আটকে থাকা বেসামরিক লোকদের বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে প্রস্তুত আছে রাশিয়া।

তাছাড়া প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট হোলোকাস্ট নিয়েও কথা বলেছেন।

সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ মন্তব্য করেন জার্মান কুখ্যাত নাৎসি নেতা এডলফ হিটলারের শরীরে ছিল ইহুদি রক্ত।

এ বিষয়টি নিয়ে রাশিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্কের টানপোড়েন দেখা দেয়। যদিও রাশিয়া পুতিন-বেনেট ফোন আলাপ নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে সেখানে এ বিষয়টি উল্লেখ করেনি।

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন জানিয়েছে, আজভস্টালে আটকে থাকা তাদের সর্বশেষ সেনা ইউনিটকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়া।

তারা জানিয়েছে, আজভস্টাল স্টিল কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেছে রাশিয়ার সেনারা।

এ ব্যাপারে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার দখলদাররা আজভস্টাল এলাকায় ইউক্রেনীয় ইউনিটগুলোকে অবরুদ্ধ করা ও ধ্বংস করে দেওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও যুদ্ধবিমানের সহায়তা নিয়ে স্টিল কারখানাটির দখল নেওয়ার জন্য আক্রমণ শুরু করেছে।

এদিকে আজভস্টালে আটকে থাকা বেসামরিক লোকদের বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেছে রাশিয়া।

আর রাশিয়া এমন ঘোষণা দেওয়ার পর ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, রাশিয়া চাইছে স্টিল কারখানার ভেতর আটকে থাকা সেনাদের ধ্বংস করে দিতে।

এদিকে রাশিয়া তিন দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বললেও তারা এখনো আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।

আন্তর্জাতিক

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে মঙ্গলবার দুই ঘণ্টা কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর সিএনএনের।

এ দুই নেতা ইউক্রেন ইস্যু ও বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার বিয়ষটি নিয়ে কথা বলেন।

রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, পুতিন ম্যাক্রোঁকে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও উগ্র জাতীয়তাবাদীরা যে অন্যায় করছে সেগুলো বন্ধ করতে পারত। কিন্তু সেটি না করে তারা বিষয়টিকে অবহেলা করছে।

পুতিনের পর ম্যাক্রোঁ বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি তোলেন। তখন পুতিন জানান, পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণেই খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে।

তাছাড়া পুতিন ম্যাক্রোঁকে নির্বিঘ্নে পণ্য সরবরাহের বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, পুতিন আজভস্টালের বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আজভস্টালে উগ্র জাতীয়তাবাদীরা বেসামরিক লোকদের আটকে রেখেছেন। তাদের নিরাপদে বের করে নেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়ার সেনারা।

তাছাড়া ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা করতে এখনো প্রস্তুত আছেন তিনি, এমনটি জানিয়েছেন পুতিন।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন একটি ডিক্রি জারি করেছেন।

ডিক্রিটি হলো, যে সব বিদেশী রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবন্ধুসুলভ আচরণ করে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেই সব কিছু নির্দিষ্ট অবন্ধু দেশগুলোর কোম্পানি বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাশিয়াও প্রতিশোধমূলক নিষেধাজ্ঞা দেবে।

নতুন ডিক্রি অনুযায়ী, রাশিয়া যে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে তারা কোনো পণ্য ও কাঁচামাল পাঠাবে না।

জানা গেছে, পুতিনের জারি করা নতুন ডিক্রি অনুযায়ী, ওই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাশিয়ার কোম্পানি চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল তাদের চুক্তি রক্ষা করার বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও শিথিল করে দেওয়া হবে।

এদিকে ডিক্রি অনুযায়ী, আগামী ১০ দিনের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে সেটির তালিকা তৈরি সম্পন্ন করতে হবে।