খেলাধুলা

রাত পোহালেই বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল আইসিসির কাছে জমা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ১৫ সদস্যের দল এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সে দলে কারা থাকছে, সে ব্যাপারেও কিছুটা ধারণা করাই যায়। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে বড় কোনো চমক থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

নিয়মিত মুখদের রেখেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য দল সাজাতে পারেন নির্বাচকরা। চমক হতে পারত তামিম ইকবাল বা সাকিব আল হাসানের অন্তর্ভুক্তি। তবে তামিম এরই মধ্যে অবসর নিয়েছেন, আর সাকিব দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়েও নিজের বোলিং অ্যাকশনকে ‘বৈধ’ প্রমাণ করতে পারেননি।

এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে সাকিবের থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। তবে যদি সাকিব বোলিং অ্যাকশন শোধরাতে পারেন, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকবে। এছাড়া যদি সাকিবকে শুধুই ব্যাটার হিসেবে খেলাতে চান নির্বাচকরা, সেক্ষেত্রেও ভাগ্য চমকাতে পারে সাকিবের।

এদিকে আগামীকাল আইসিসির কাছে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জমা দিলেও এই দল আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ইনিংস শুরুর দায়িত্ব বর্তাবে তানজিদ হাসান এবং লিটন দাসের কাঁধে। সৌম্য সরকার চোট থেকে সেরে উঠলে দলে ফিরতে পারেন। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি টপ অর্ডারে ব্যাট করবেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

এছাড়া অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের মধ্যে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজদের দলে থাকা নিয়ে আপাতত কোন শঙ্কা নেই। একইভাবে তাওহীদ হৃদয়, রিশাদ হোসেনের দলে থাকাটাও প্রায় নিশ্চিত।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল ভেন্যু পাকিস্তানের কন্ডিশন বিবেচনায় চার পেসারকে রাখতে পারেন স্কোয়াডে নির্বাচকরা। সেক্ষেত্রে হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম বাদ পড়তে পারেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিমানে চড়ার টিকিট পেতে পারেন তানজিম হাসান সাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান, নাহিদ রানা ও তাসকিন আহমেদ।

আর সাকিব আল হাসানের না থাকায় বাঁহাতি স্পিনারের অভাব পুষিয়ে দিতে দলে জায়গা হতে পারে নাসুম আহমেদের।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের সম্ভাব্য স্কোয়াড

তানজিদ হাসান, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলি অনিক, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান, নাহিদ রানা, তাসকিন আহমেদ।

খেলাধুলা

কদিন আগে রাগঢাক না রেখেই তামিম ইকবাল জানিয়েছিলেন, জাতীয় দলে ফিরছেন না। আচমকা অবসর নেওয়া এবং অবসর ইস্যুতে আগেও কয়েকবার নাটকের জন্ম দেওয়া তামিম কি আদৈৗ ফিরবেন? বহুল কাঙ্ক্ষিত উত্তরটি মিলতে পারে আজ। বুধবার সকালে ঢাকা থেকে সিলেটে এসেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তামিম খেলবেন কি খেলবেন না, সেই সিদ্ধান্ত জানতে তার সঙ্গে বসবেন একটি পাঁচ তারকা হোটেলে। আগে থেকেই আছেন আরেক নির্বাচক হান্নান সরকার। অবসর ভেঙে বিশ্বকাপের আগে ফেরা তামিমকে আট জাতির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাওয়া যাবে কিনা, আজই আসতে পারে সিদ্ধান্ত।

২০২৩ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেন তামিম। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে ফেরেন ক্রিকেটে। তারপর দুটি ওয়ানডে খেললেও যাননি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে। এরপর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে আছেন তারকা এই ব্যাটার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর নিলেও এখনও টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন তামিম। তবে তার সিদ্ধান্ত জানতেই সিলেটে এখন বিসিবি নির্বাচকরা।

এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহর মাঝেই আইসিসিকে জানাতে হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল। বিসিবি সূত্রের খবর, তামিমের পাশাপাশি সাকিব আল হাসানকেও চায় টিম ম্যানেজমেন্ট।

খেলাধুলা

একে তো একাদশে ছিলেন না দলের সেরা তারকা সুলেমান দিয়াবাতে। তার ওপর ম্যাচের ২২তম মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

কিন্তু সব শঙ্কা উড়িয়ে সাদা-কালোরা মাঠ ছাড়ল বড় এক জয় নিয়ে।
ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে শনিবার প্রিমিয়ার লিগে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান। ৬ ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করেছে তারা।

শুরুতে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় মোহামেডানের শাকিল আহাদ তপুকে। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ব্যবধানে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলে গেলো মোহামেডান। ৪৭ মিনিটে । মুজাফফরভের কর্নারে বুরকিনা ফাসোর ডিফেন্ডার মোনজির কলিদিয়াতি লাফিয়ে উঠে বল জালে জড়ান।

৫৪তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন ইমানুয়েল সানডে। ৬৩তম মিনিটে আর্নেস বোয়াটেংয়ের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসার পর ফিরতি সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্কোরলাইন ৩-০ করেন সৌরভ দেওয়ান।

৮৮ মিনিটে সানডের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার সেলিম রেজা। দুই মিনিট পর সৌরভ নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে পঞ্চম গোল উপহার দেন।

যোগ করা সময়ে চট্টগ্রাম আবাহনী পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ দেয়। ইমতিয়াজ সুলতান জিতু গোলকিপারের বিপরীত দিক দিয়ে জালে জড়িয়ে দলকে কিছুটা সান্ত্বনা এনে দেন। ছয় ম্যাচে কোনো পয়েন্ট না পাওয়া চট্টগ্রাম আবাহনী আছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে।

খেলাধুলা

অন্য দশজন ক্রিকেটারের যেমন স্বপ্ন থাকে, তাসকিন আহমেদও পুষছেন ঠিক তেমনই। নিজেকে ভেঙেছেন, নতুন রূপে গড়েছেন। কখনও চোখের জলে ক্যারিয়ারের পথ পিচ্ছিল করেছেন। তবুও থেমে যাননি। তাসকিন সেসবের পুরস্কারও পাচ্ছেন।

দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। আজ ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে বিপিএলে ছাপিয়ে গেছেন সবাইকে। অনেক কিছু পাওয়ার পর তৃপ্ত তাসকিন শুনিয়েছেন স্বপ্নের কথা।

মিরপুরে বৃহস্পতিবার দুর্বার রাজশাহীর হয়ে তাসকিন গড়েছেন বিপিএলের সেরা বোলারের রেকর্ড। তার আগে ১১ বিপিএলের ইতিহাসে কেউ এক ম্যাচে সাত উইকেট পাননি। তাসকিন পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তারেন মোহাম্মদ আমিরকে (১৭ রানে ৬ উইকেট)। তবে বিশ্বের সেরা হতে পারেননি। যৌথভাবে হয়েছেন স্বীকৃত কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। এমন দিনে সাংবাদিকদের সামনে অকপটে বলেছেন, ‘আমার স্বপ্ন লেজেন্ডারি ফাস্ট বোলার হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করা।’

ঢাকার বিপক্ষে গতিতে ঝড় তুলে ১৯ রানে তাসকিন নিয়েছেন ৭ উইকেট। ইনিংসের শুরুর পর শেষটাও টেনেছেন তাসকিনই। ইনসুইং, বাউন্সার আর গতিতে ভুগিয়েছেন ঢাকার ব্যাটারদের। দুর্বার রাজশাহীর পেসার জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সেরা বোলার হওয়ারও কীর্তি গড়ার পর ম্যাচটি তাসকিন তার ছেলে তাসফিনকে উৎসর্গ করেছেন।

ঢাকাকে হারিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘দিনশেষে যখন ভালো করি বা উইকেট পাই আমার ছেলে আমার বাবা— এরা অনেক খুশি হয়। ওদের সমর্থনও অনুপ্রেরণা দেয়। যেদিন বোলিং ভালো করতে পারি না, সেদিন তাসফিন (ছেলে) অনেক মন খারাপ করে। আজকে আমি শিওর ও অনেক খুশি। তো এটা তাসফিনের জন্যই।’

নিজের বোলিং স্পেল ইতিহাসে স্থান পাওয়ার পরই নিজের স্বপ্নের কথা বলেছেন তাসকিন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে আমরা ফাস্ট বোলাররা উন্নতি করতেছি। অনেকেই রেকর্ড গড়ছে দেশে বা বাইরে। এটা খুবই ভালো লক্ষণ। আমাদের যে উন্নতির ধারাবাহিকতা আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। আমার স্বপ্ন কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করা। যাতে অনেক উইকেট পাই এবং অনেক কন্ট্রিবিউশন থাকে দেশকে জেতানোর পেছনে, আমারও এটাই লক্ষ্য থাকে।’

খেলাধুলা

যুব বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক হিসেবে আকবর আলির প্রতি একটা বাড়তি আগ্রহ সবসময়ই আছে। দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় শিরোপা এসেছে তার হাত ধরে।

অনূর্ধ্ব-১৯ দলে তার সতীর্থদের অনেকেই ইতোমধ্যে জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিতও হয়ে গেছেন। কিন্তু আকবর এখনও খেলতে পারেননি বাংলাদেশের হয়ে।

উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে অবশ্য আলো ছড়াচ্ছেন তিনি। সবশেষ এনসিএল টি-টোয়েন্টিতেও ৯ ইনিংসে ১৪৯.৬৪ স্ট্রাইক রেটে ২০৮ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এবারের বিপিএলে আকবর খেলবেন দুর্বার রাজশাহীর হয়ে। এখান থেকেই কি জাতীয় দলের উইটেকরক্ষক ব্যাটার হিসেবে প্রতিযোগিতায় নিজের নাম তিনি জানান দিতে চান জোরেশোরে?

এমন প্রশ্নের উত্তরে শুক্রবার মিরপুরে দলের অনুশীলন শেষে আকবর বলেন, ‘আমার মনে হয় না, প্রতিযোগিতাটা অন্য কারও সঙ্গে। আমার মতে, প্রতিযোগিতাটা নিজের সঙ্গে। আমি যদি ভালো করতে পারি, অবশ্যই আমার সুযোগ আসবে। ’

এবারের বিপিএলে ড্রাফটের পর দুর্বার রাজশাহীকে দুর্বল হিসেবে দেখছিলেন অনেকে। তবে বেশ কিছু নামী দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার দলে ভিড়িয়েছে তারা। এই দল নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা কতটা? এমন প্রশ্ন ছিল আকবরের কাছে।

তিনি বলেন, ‘আপনি যখন একটা দলে খেলবেন, সেই দলটা নিয়ে আপনাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আশাবাদী হতে হবে। আমরাও আমাদের দল নিয়ে আশাবাদী। আমাদেরও যথেষ্ট ভালো দল আছে। আমরা যদি নিজেদের পটেনশিয়াল অনুযায়ী খেলতে পারি, যেকোনো দিন যেকোনো দলকে হারাতে পারি। টি-টোয়েন্টি এমন একটা খেলা, যেখানে আপনি কাগজে-কলমে দল বানিয়ে ফল বের করতে পারবেন না। মাঠের খেলাই আসলে মূল। ’

দুর্বার রাজশাহী অধিনায়কত্বের প্রস্তাব দিলে কী করবেন জানতে চাইলে আকবর বলেন, ‘এটা ভাবতে হবে। ম্যানেজমেন্ট থেকে প্রস্তাব এলে আমি অবশ্যই ভেবে দেখতে পারি। টিম ম্যানেজমেন্ট কীভাবে সবকিছু চাচ্ছে, এর ওপর এসব নির্ভর করছে। ’

খেলাধুলা

জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির ফাইনালে যেতে ১২০ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল খুলনা বিভাগ। অথচ সে রান তুলতেই তাদের ত্রাহি অবস্থা। কোনোমতে ৮১ রানে পৌঁছুতেই সব উইকেট খোয়া যায় দলটির। এতে ৩৮ রানের জয় তুলে নিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গেছে ঢাকা মেট্রো। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ রংপুর।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মেট্রো। তবে খুলনার বোলিং তোপে শুরু থেকেই তটস্থ থাকতে হয় তাদের।

দলটির হয়ে ব্যাট হাতে মাঠে নামা ১০ ব্যাটারের মধ্যে তিন অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল তিন জন। এর মধ্যে দলের প্রায় অর্ধেক রানই এসেছে একা অধিনায়ক নাঈম শেখের ব্যাটে। তার ৫৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংসকে একপাশে রাখলে ভয়াবহ ব্যাটিং দুর্দশার চিত্রই ফুটে ওঠে। শেষ পর্যন্ত নাঈমের ফিফটিতে চড়েই ২০ ওভার শেষে তাদের রান দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১১৯।

খুলনার পক্ষে সমান দুটি করে উইকেট নেন মাসুম খান, পারভেজ জীবন ও মেহেদী হাসান।

কিন্তু মামুলি লক্ষ্য পেয়েও খুলনার ব্যাটাররা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন কই! প্রথম ওভারেই খুলনার দুই ব্যাটার আজিজুল হাকিম তামিম (০) ও ইমরুল কায়েসকে (০) সাজঘরের পথ চেনান ঢাকা মেট্রোর স্পিনার রাকিবুল হাসান।

পরের ওভারে মিঠুন রানআউটের ফাঁদে পড়লে মুহূর্তেই ২ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে বসে তারা। সে বিপর্যয় থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে এসেছে দলীয় সর্বোচ্চ ২২ রান।

মোসাদ্দেক-রাকিবুলের ঘূর্ণিতে শেষ পর্যন্ত ১৭.৪ ওভারে ৮১ রান অলআউট হয়ে যায় খুলনা।

ঢাকা মেট্রোর পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সৈকত, দুটি করে উইকেট যায় রাকিবুল ও মারুফ মৃধার ঝুলিতে।

আগামী ২৪ ডিসেম্বর সিলেট স্টেডিয়ামে এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে মুখোমুখি হবে রংপুর ও ঢাকা মেট্রো।

খেলাধুলা

প্রথম দুই ম্যাচে দাপুটে জয়ের পর তৃতীয় ম্যাচেও দারুণ জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৮০ রানে হারিয়ে ধবলধোলাই করল তারা।

সঙ্গে বেশ কয়েকটি রেকর্ডও গড়েছে বাংলাদেশ।

৮০ রানের এই জয় টি-টোয়েন্টিতে আইসিসির কোনো পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় বাংলাদেশের। এর আগের রেকর্ডটি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। গত বছরের মার্চে চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডকে ৭৭ রানে হারায় বাংলাদেশ। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও এটা সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটির ব্যবধান ছিল ২৭ রান।

ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়া বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে। প্রথম ম্যাচে ৭ রানে জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে ২৭ রানের জয় পায় তারা। শেষটি জয়ে ক্যারিবীয়দের ধবলধোলাই নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো টাইগারদের কাছে ধবলধোলাই হওয়ার তিক্ত স্বাদ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটি আবার নিজেদের মাঠেই।

এর আগে ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডকে তাদের মাঠে ধবলধোলাই করেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের পর চতুর্থ দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করল টাইগাররা।

খেলাধুলা

মাহেদি হাসানের অলরাউন্ড নৈপুন্যে দারুণ জয় দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। মহান বিজয় দিবসটি জয়ে রাঙালো লিটন-মাহেদিরা।

ব্যাট হাতে ২৪ বলে অপরাজিত ২৬ রান করার পর বল হাতে ১৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক হয়েছেন মাহেদি। পাশাপাশি দলের অন্যান্য বোলারদের পারফরমেন্সও ছিলো চোখে পড়ার মত। বিশেষভাবে শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে যখন জয়ের জন্য ১০ রান দরকার, তখন মাত্র ২ রানে প্রতিপক্ষের শেষ ২ উইকেট শিকার করে সিরিজে বাংলাদেশকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন পেসার হাসান মাহমুদ।

সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ২ ওভারে উইকেট না পড়লেও তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার আকিল হোসেন। ১টি চারে ১১ বলে ৬ রান করা তানজিদ হাসানকে বোল্ড করেন আকিল।

তানজিদের বিদায়ে ক্রিজে এসে প্রথম বলেই আকিলকে সহজ ফিরতি ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। আকিলের হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাকে রুখে দেন প্রায় এক বছর পর দেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা আফিফ হোসেন। কিন্তু নিজের ফেরার ম্যাচকে স্মরনীয় করে রাখতে পারেননি আফিফ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার রোস্টন চেজের বলে সুইপ করে শর্ট থার্ডম্যানে আকিলকে ক্যাচ দেন ২টি চারে ৮ রান করা আফিফ

পাওয়ার প্লের শেষ বলে চতুর্থ উইকেট হারাতে পারতো বাংলাদেশ। চেজের বলে ওপেনার সৌম্য সরকারকে ক্যাচ আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান সৌম্য।

দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর সৌম্য ও জাকের আলির ব্যাটে ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। নবম ওভারে ৫০ রান পূর্ণ হয় টাইগারদের।

১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে সৌম্যর সাথে জুটিতে ৫০ পূণ করেন জাকের। ঐ ওভারের চতুর্থ বলে পেসার রোমারিও শেফার্ডের বলে লং অনে রোভম্যান পাওয়েলকে ক্যাচ দেন তিনি। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ বলে ২৭ রান করেন জাকের। সৌম্যর সাথে ৪২ বলে ৫৭ রান যোগ করেন জাকের।
দলীয় ৮৭ রানে জাকের ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সৌম্য। দলের রান ১শ হবার আগেই পেসার ওবেড ম্যাককয়ের বলে বোল্ড হন সৌম্য। ৩২ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৩ রান করেন সৌম্য। ১৫ ওভারে ৯৬ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় ষষ্ঠ উইকেটে ২৯ বলে ৪৯ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন মাহেদি হাসান ও এক বছর পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা শামীম হোসেন। ১৬তম ওভারে ৯ রান, ১৭তম ওভারে ১১ রান, ১৮তম ওভারে ১০ ও ১৯তম ওভারে ১২ রান তুলেন। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন শামীম। ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৩ বলে ২৭ রান করেন শামীম। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৪ বলে অপরাজিত ২৬ রান করেন মাহেদি। বাংলাদেশ পায় ৬ উইকেটে ১৪৭ রানের সংগ্রহ।

আকিল ও ম্যাককয় ২টি করে উইকেট নেন। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪৮ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়ে বল হাতে দারুন শুরু করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার ব্র্যান্ডন কিংকে ১ রানে বিদায় করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে নিকোলাস পুরানকে ১ রানে থামান স্পিনার মাহেদি। ২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

তৃতীয় উইকেটে ১৫ বলে ৩১ রানের জুটিতে পাওয়ার প্লেতেই দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন জনসন চালর্স ও চেজ। কিন্তু পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশকে উইকেট উপহার দেন মাহেদি। ২টি করে চার-ছক্কায় ১২ বলে ২০ রান করা চার্লসকে শিকার করেন মাহেদি।

৩৩ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের ব্যাটিং ধস নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৬১ রানে পৌঁছাতেই সপ্তম উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। সপ্তম ওভারে আন্দ্রে ফ্লেচারকে শূন্য ও চেজকে ৭ রানে মাহেদি, ১১তম ওভারে গুদাকেশ মোতিকে ৬ রানে পেসার তানজিম হাসান সাকিব এবং পরের ওভারে আকিলকে ২ রানে আউট করেন স্পিনার রিশাদ হোসেন।

এরপর অষ্টম উইকেটে ৩৩ বলে ৬৭ রানের ঝড়ো জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের সম্ভাবনা জাগান অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল ও শেফার্ড। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে শেফার্ডকে ২২ রানে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন তাসকিন।
শেফার্ড ফেরার পর শেষ দুই ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৯তম ওভারে ৮ রান আসলে শেষ ওভারে ১০ রানের সমীকরণ পায় ক্যারিবীয়রা।

শেষ ওভারে বল হাতে প্রথম দুই বলে মাত্র ১ রান দেন হাসান মাহমুদ। তৃতীয় বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ তুলে দেন রোভম্যান। চতুর্থ বলে বাই থেকে আসে ১ রান। পঞ্চম বলে আলজারি জোসেফকে বোল্ড করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪০ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ চার ম্যাচে হারের বৃত্ত ভেঙে জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৬০ রান করেও দলের হার রুখতে পারেননি দলনেতা রোভম্যান।

৪ ওভারে ১৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার মাহেদি। ৫২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই সেরা বোলিং ফিগার মাহেদির। এছাড়া হাসান-তাসকিন ২টি করে এবং তানজিম ও রিশাদ ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহেদি।
আগামী ১৮ ডিসেম্বর কিংসটাউনে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৪৭/৬ (সৌম্য ৪৩, শামীম ২৭, জাকের ২৭, আকিল ২/১৩)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৯.৫ ওভারে ১৪০/১০ (রোভম্যান ৬০, শেফার্ড ২২, মাহেদি ৪/১৩)।
ফল : বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মাহেদি হাসান (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।

খেলাধুলা

কার্টি-জঙ্গুর জুটিতে একশ

পাল্টা আক্রমণে দ্রুত রান তুলছেন কেসি কার্টি। সাবধানী শুরুর পর রানের গতি বাড়িয়েছেন আমির জঙ্গু। তাদের জুটি একশ স্পর্শ করেছে ৮৯ বলে।

নতুন বোলার আফিফ হোসেনের ওভারের শেষ বলে জঙ্গুর ছক্কায় জুটির রান যায় তিন অঙ্কে।

২৯ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ১৯০। ৭৫ বলে কার্টির রান ৮৪। ৪২ বলে জঙ্গু খেলছেন ৪৬ রানে।

আম্পায়ার্স কলে বাঁচলেন কার্টি

এলবিডব্লিউর জোরাল আবদনে আম্পায়ার সাড় না দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে ব‍্যর্থ হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আম্পায়ার্স কলে বেঁচে গেলেন কেসি কার্টি।

নাসুম আহমেদের বলে প‍্যাডেল সুইপ করার চেষ্টায় ব‍্যাটে বলে করতে পারেননি কার্টি। বাঁহাতি স্পিনারের ডেলিভারি ছুঁয়ে যেত লেগ স্টাম্প। তাই বেঁচে যান ব‍্যাটসম‍্যান, তবে টিকে যায় বাংলাদেশের রিভিউ।

২৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ১৬৫।

বাংলাদেশ যেখানে, মাঝপথে উইন্ডিজও সেখানে

২৫ ওভারে ১৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশও ২৫ ওভারে ১৫০ রানই করেছিল।

বাংলাদেশ অবশ‍্য এই রান করেছিল ৩ উইকেট হারিয়ে, স্বাগতিকরা করেছে ৪ উইকেটে।

২৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ১৫০। ৬৪ বলে ৬৯ রানে ব‍্যাট করছেন কেসি কার্টি। ২৯ বলে আমির জঙ্গু খেলছেন ২১ রানে।

================================================================================

বাংলাদেশ দুই উইকেট হারালো দ্রুতই। দুজনেই ফিরলেন শূন্য রানে।এরপর হাল ধরলেনন সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের বিদায়ের পরও দলকে পথ হারাতে দেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলি অনিক। তাদের দুজনের জুটিতে তিনশ ছাড়িয়েছে দলের রান।

বৃহস্পতিবার সেন্ট কিটসে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২১ রান করেছে বাংলাদেশ। এই মাঠে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আর নেই। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৯৪ রান তাড়া করেছিল, সেটিই এখন সর্বোচ্চ।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৫ বলে কোনো রান করার আগেই সাজঘরে ফেরত যান তানজিদ হাসান তামিম। আলজারি জোসেফের বলে ক্যাচ দেন তিনি। এক বল পর শূন্য রানেই আউট হন তানজিদ হাসান তামিমও।

এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১২৭ বলে ১৩৬ রানের জুটি গড়েন সৌম্য ও মিরাজ। গুদাকেশ মোতির বলে সৌম্য এলবিডব্লিউ হলে এই জুটি ভাঙে। ৭২ বল খেলে ৬ চার ও চারটি ছক্কায় ৭৩ রান করে আউট হন তিনি। মিরাজও রান আউট হয়ে যান ৭৩ বলে ৭৭ রান করে।

এই সিরিজেই দলে সুযোগ পাওয়া আফিফ হোসেন ব্যর্থ হন আরও একবার। ২৯ বল খেলে ১৫ রান করেন তিনি। তবে বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেয়নি মাহমুদউল্লাহ ও জাকের আলির জুটি। ১১৭ বলে ১৫০ রানের জুটি গড়েন তারা।

তাদের জুটিতে ভর করে বাংলাদেশের রানও তিনশ ছাড়িয়ে যায়। ৬৩ বলে ৭টি চার ও চারটি ছক্কায় ৮৪ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ৫৭ বলে ৬২ রান আসে জাকের আলির ব্যাট থেকে। দুজনেই থাকেন অপরাজিত।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩২১/৫ (তানজিদ ০, সৌম‍্য ৭৩, লিটন ০, মিরাজ ৭৭, আফিফ ১৫, মাহমুদউল্লাহ ৮৪*, জাকের ৬২*; জোসেফ ১০-১-৪৩-২, ব্লেডস ৬-০-৭৩-০, শেফার্ড ১০-১-৬৫-০, চেইস ৮-১-৩৮-০, মোটি ১০-০-৬৪-১, রাদারফোর্ড ৬-১-৩৭-১)।

খেলাধুলা

দেশের বাইরে সেরা বছর

২০০৯ সালের সাফল‍্যকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজেই দুটি টেস্ট জিতেছিল তারা। এত দিন কোনো পঞ্জিকা বর্ষে এটাই ছিল সেরা সাফল‍্য।

এবার জিতল তিনটি। পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে দুই ম‍্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে এই বছর দেশের জয় হল তিনটি।

আইসিসি টেস্ট চ‍্যাম্পিয়নশিপের কোনো আসরে এটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল‍্য। এবার জিতল তিন ম‍্যাচ।

বাংলাদেশের সেরা গন্তব‍্য

দেশের বাইরে বাংলাদেশের সেরা সাফল‍্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সব মিলিয়ে এখানে তিনটি টেস্ট জিতল বাংলাদেশ।

২০০৯ সালে জিতেছিল দুটি টেস্ট, ১৫ বছর পর জিতল আরেকটি।

দুটি করে টেস্ট জয় আছে পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়েতে। একটি করে ম‍্যাচ জিতেছে নিউ জিল‍্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায়।

১০১ রানের জয়

আক্রমণে ফিরে দুটি চার হজম করেছিলেন নাহিদ রানা। তবে শমার জোসেফের সঙ্গে লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন তিনিই। গতিময় পেসারের দারুণ ইয়র্কারে এলোমেলো হয়ে গেল স্টাম্প। বাংলাদেশ পেল ১০১ রানের জয়।

২০০৯ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিতল বাংলাদেশ। ২৮৭ রানের লক্ষ‍্য দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ১৮৫ রানে গুটিয়ে দিল সফরকারীরা।

প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া নাহিদের হাত দিয়েই হলো শেষটা। সেবার ১ উইকেট পাওয়া তাইজুল ইসলামের এবার শিকার পাঁচটি। তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ নিলেন দুটি করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৬৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১৪৬

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৬৮

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ‍্য ২৮৭) ৫০ ওভারে ১৮৫ (ব্র‍্যাথওয়েট ৪৩, লুই ৬, কার্টি ১৪, হজ ৫৫, আথানেজ ৫, গ্রেভস ২০, দা সিলভা ১২, আলজারি জোসেফ ৫, রোচ ৮, সিলস ১*, শামার জোসেফ ৬; হাসান ৬-০-২০-২, তাসকিন ১০-০-৪৫-২, তাইজুল ১৭-৫-৫০-৫, রানা ৯-২-৩২-১, মিরাজ ৮-০-৩১-০)।

রোচকে ফিরিয়ে হাসানের দ্বিতীয়

আক্রমণে ফেরার ওভারে জোড়া শিকার ধরলেন হাসান মাহমুদ। আলজারি জোসেফের পর কিমার রোচকে ফিরিয়ে দিলেন এই পেসার।

স্টাম্পে থাকা লেংথ ডেলিভারির লাইনে যেতে পারেননি রোচ। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন তিনি। বল লাগতো মিডল স্টাম্পের চূড়ায়। টিকে থাকে রিভিউ, তবে আম্পয়ার্স কলের জন‍্য ফিরে যান রোচ।

জয়ের আরও কাছে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

৭ বলে ৮ রান করেন রোচ।

৪৯ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৯ উইকেটে ১৭৬। ক্রিজে জেডেন সিলসের সঙ্গী শামার জোসেফ।

দা সিলভাকে ফিরিয়ে তাইজুলের ৫

দারুণ বোলিং করা তাইজুল ইসলামের হাত ধরে এলো আরেকটি সাফল‍্য। জশুয়া দা সিলভাকে ফিরিয়ে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার পেলেন নিজের পঞ্চম উইকেট।

জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টায় স্টাম্প তাক করে করা ডেলিভারির লাইনে যেতে পারেন ক‍্যারিবিয়ান কিপার-ব‍্যাটসম‍্যান। প‍্যাডে লাগার পরই কেবল খেলতে পারেন ব‍্যাটে।

আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন দা সিলভা। বল লাগত মিডল স্টাম্পে, দ্বিতীয় রিভিউ হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

১৮ বলে এক চারে দা সিলভা করেন ১২ রান।

তাকে বিদায় করে সাকিবের সঙ্গে ব‍্যবধান কমালেন তাইজুল। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৯বার ৫ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। তাইজুল পেলেন ১৫তম বার।

৪৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৭ উইকেটে ১৭২। ক্রিজে আলজারি জোসেফের সঙ্গী কিমার রোচ।

আথানেজকে টিকতে দিলেন না তাইজুল

দারুণ এক ডেলিভারিতে আলিক আথানেজকে বোল্ড করে দিলেন তাইজুল ইসলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপদ বাড়িয়ে বাঁহাতি এই স্পিনার নিলেন নিজের তৃতীয় উইকেট।

বলের লাইনের ধারে কাছে যেতে পারেননি বাঁহাতি ব‍্যাটসম‍্যান। অনেক দূরে থেকেই ব‍্যাট চালিয়ে দেন তিনি। কিন্তু বিশাল টার্ন করে বল ছোবল দেয় মিডল স্টাম্পে।

৬ বলে ১ চারে ৫ রান করেন আথানেজ।

২৭ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ১০৮। ক্রিজে কাভেম হজের সঙ্গী জাস্টিন গ্রেভস।

৯১ রানে থামলেন জাকের

একের পর এক সঙ্গীর বিদায়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন জাকের আলি। তাতে ক‍্যারিয়ারের প্রথম শতকের আশাও জাগালেন এই মিডল অর্ডার ব‍্যাটসম‍্যান। শেষ পর্যন্ত অবশ‍্য তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পাওয়া হলো না তার। ক‍্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে থামলেন ৯১ রানে।

আলজারি জোসেফের স্লোয়ারে ছক্কা মেরে নব্বইয়ের ঘরে যান জাকের। তিন বল পর পুল করে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন তিনি, আলিক আথানেজের হাতে।

১০৬ বলে পাঁচ ছক্কা ও আট চারে ৯১ রান করেন জাকের।

৫৯.৫ ওভারে ২৬৮ রানে থামে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ১৮ রানে পিছিয়ে থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় ২৮৭ রানের লক্ষ‍্য।

৫ উইকেটে ১৯১ রানে দিন শুরু করা বাংলাদেশ এদিন শেষ ৫ উইকেটে যোগ করে ৭৭ রান। এতে সবচেয়ে বড় অবদান জাকেরের। শেষ চার ব‍্যাটসম‍্যানের মিলিত অবদান কেবল ৪ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৬৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১৪৬

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৬৮

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ‍্য ২৮৭) ৫০ ওভারে ১৮৫ (ব্র‍্যাথওয়েট ৪৩, লুই ৬, কার্টি ১৪, হজ ৫৫, আথানেজ ৫, গ্রেভস ২০, দা সিলভা ১২, আলজারি জোসেফ ৫, রোচ ৮, সিলস ১*, শামার জোসেফ ৬; হাসান ৬-০-২০-২, তাসকিন ১০-০-৪৫-২, তাইজুল ১৭-৫-৫০-৫, রানা ৯-২-৩২-১, মিরাজ ৮-০-৩১-০)