রাজনীতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা হবে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫-এ অংশ নিয়ে বিএনপি এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা এক ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায় তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

‘এক ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির দুই দশমিক পাঁচ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো- বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪দ্ধ৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে সাত দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বাড়ানো।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বাড়ানোর জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল।

পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো- ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

রাজনীতি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্যাংককে শুক্রবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার প্রধানতম দুই দেশের সরকার প্রধান পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে খোলামনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

দুই সরকার প্রধানের ৪০ মিনিটব্যাপী আলোচনা ছিল খোলামেলা, ফলপ্রসূ এবং গঠনমূলক।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের দুটি দেশের বন্ধুত্ব সুদৃঢ় ইতিহাস, ভৌগলিক নৈকট্য এবং সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালের আমাদের কঠিন সময়ে ভারত সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।’

যদিও এটি দুই নেতার প্রথম সরাসরি বৈঠক, তবে অধ্যাপক ইউনূস জানান, গত আট মাসে দুই দেশের মধ্যে বহুবার দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ হয়েছে।

দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের কল্যাণে সম্পর্ককে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে আমরা আপনার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চাই।’

বিমসটেকের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস সাত সদস্য দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য ভারতের সমর্থন চান। তিনি গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের আলোচনা এবং তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তির চূড়ান্তকরণের আহ্বান জানান।

বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।

তিনি উল্লেখ করেন, দুই প্রতিবেশী দেশের ইতিহাস বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় থেকেই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

প্রধানমন্ত্রী মোদি অধ্যাপক ইউনূসের আন্তর্জাতিক মর্যাদার কথা স্মরণ করে বলেন, ভারত সর্বদা একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের পক্ষে থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না আমাদের সম্পর্ক জনগণের সঙ্গে।

অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের অবস্থান জানতে চান। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিডিয়ার মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, যা ভারতের আতিথেয়তার অপব্যবহার বলে মনে হয়। শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে মিথ্যা ও উসকানিমূলক অভিযোগ করে চলেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি যে, আপনার দেশে অবস্থানকালে তাকে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত রাখার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন, যা ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ দিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- গণঅভ্যুত্থানের সময় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশই শিশু। প্রতিবেদনটি এটাও জানায়- হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং অমানবিক কার্যকলাপের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নিজে নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও ‘নেতাদের গ্রেফতার করে লাশ গুম করার’ নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ভারতের সম্পর্ক কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে নয়, বরং দেশের সঙ্গে।

অধ্যাপক ইউনূস সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিও উত্থাপন করেন এবং বলেন, এ ধরনের মৃত্যু রোধে যৌথভাবে কাজ করলে তা শুধু পরিবারগুলোর বেদনা কমাবে না, বরং দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবার এসব মৃত্যুতে কষ্ট অনুভব করি’। তিনি অনুরোধ জানান, ভারত যেন এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে উপায় খুঁজে বের করে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালায় এবং মৃত্যুর ঘটনাগুলো ভারতের ভেতরেই ঘটে। উভয় নেতা বিষয়টি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিমসটেকের বাংলাদেশের চেয়ারম্যানশিপের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমসটেকের দৃশ্যমানতা বাড়াতে চায় এবং এই সংস্থাকে একটি কার্যকর ও প্রাণবন্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, যা এই অঞ্চলের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সহায়তা করবে এবং বিশ্বব্যাপী পণ্য আমদানি-রপ্তানির একটি দক্ষ পথ তৈরি করবে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্বেগের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা অনেকটাই অতিরঞ্জিত এবং ‘এর বেশিরভাগই ভুয়া খবর’। যেসব হামলার অভিযোগ এসেছে, তা স্বচক্ষে যাচাই করার জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সাংবাদিক পাঠানোর অনুরোধ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি দেশে ধর্মীয় ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা নজরদারির আওতায় আনতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা প্রচলন করেছেন এবং তার সরকার এমন যেকোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

দুই নেতা তাদের খোলামেলা ও ফলপ্রসূ সংলাপের সমাপ্তি টানেন পরস্পরের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করে এবং উভয় দেশের জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

শেখ হাসিনাকে ফেরত দিন

সীমান্ত হত্যা, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির নবায়ন ও তিস্তা নিয়ে আলোচনা * জনগণের কল্যাণে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চান ড. ইউনূস * সম্পর্ক খারাপ হয়, এমন বক্তব্য পরিহারের আহ্বান নরেন্দ্র মোদির

অনেক জল্পনাকল্পনার পর অবশেষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও ভারতে বসে হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য, সীমান্ত হত্যা, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির নবায়ন, তিস্তার পানিবণ্টনসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় তুলেছেন ড. ইউনূস। বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন মোদি। পাশাপাশি তিনি সীমান্ত সুরক্ষা, অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন। নরেন্দ্র মোদি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠনে ভারতের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে শুক্রবার বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধান আধা ঘণ্টারও বেশি সময় দুদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। বৈঠকে ড. ইউনূস ১০ বছর আগের কথা মনে করিয়ে মোদিকে একটি ছবি উপহার দিয়েছেন।

অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের দুটি দেশের বন্ধুত্ব সুদৃঢ় ইতিহাস, ভৌগোলিক নৈকট্য এবং সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালে আমাদের কঠিন সময়ে ভারত সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।

দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের জনগণের কল্যাণে সম্পর্ক সঠিক পথে এগিয়ে নিতে আমরা আপনার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চাই। বিমসটেকের নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে অধ্যাপক ড. ইউনূস সাত সদস্য দেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির জন্য ভারতের সমর্থন চান। তিনি গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের আলোচনা এবং তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি চূড়ান্তকরণের আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় অধ্যাপক ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান। নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। তিনি উল্লেখ করেন, দুই প্রতিবেশী দেশের ইতিহাস বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় থেকেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

প্রধানমন্ত্রী মোদি অধ্যাপক ইউনূসের আন্তর্জাতিক মর্যাদার কথা স্মরণ করে বলেন, ভারত সর্বদা একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের পক্ষে থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। আমাদের সম্পর্ক জনগণের সঙ্গে।

অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের অবস্থান জানতে চান। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিডিয়ার মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, যা ভারতের আতিথেয়তার অপব্যবহার বলে মনে হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে মিথ্যা ও উসকানিমূলক অভিযোগ করে চলেছেন। তিনি বলেন, আমরা ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি যে, আপনার দেশে অবস্থানকালে তাকে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত রাখার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন, যা ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ভারতের সম্পর্ক কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে নয়, বরং দেশের সঙ্গে।

অধ্যাপক ইউনূস সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিও উত্থাপন করেন এবং বলেন, এ ধরনের মৃত্যু রোধে যৌথভাবে কাজ করলে তা শুধু পরিবারগুলোর বেদনা কমাবে না, বরং দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। তিনি বলেন, আমি প্রতিবার এসব মৃত্যুতে কষ্ট অনুভব করি। তিনি অনুরোধ জানান, ভারত যেন এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে উপায় খুঁজে বের করে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা শুধু আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালায় এবং মৃত্যুর ঘটনাগুলো ভারতের ভেতরেই ঘটে। উভয় নেতা বিষয়টি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্বেগের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা অনেকটাই অতিরঞ্জিত এবং ‘এর বেশির ভাগই ভুয়া খবর’।

যেসব হামলার অভিযোগ এসেছে, তা স্বচক্ষে যাচাই করার জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সাংবাদিক পাঠানোর অনুরোধ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি দেশে ধর্মীয় ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার প্রতিটি ঘটনা নজরদারির আওতায় আনতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা প্রচলন করেছেন এবং তার সরকার এমন যে কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি অত্যন্ত গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট যত ইস্যু আছে, এর সবকটি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সব বিষয় আলোচনায় তুলেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতে বসে তিনি যেসব উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন সে প্রসঙ্গ, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির নবায়ন, তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ এসেছে।

বৈঠক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিও। তিনি জানান, ড. ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই সময় মোদি বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। এর পাশাপাশি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিক্রম মিশ্রি।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক, বাংলাদেশের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরির আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন। এছাড়া (দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে) এমন কথাবার্তা এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই নেতার মধ্যে সীমান্ত নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলেও জানান বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেছেন, সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় সীমান্ত আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানো জরুরি বলে জানান মোদি।

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছে। তবে এ মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি বলা তার জন্য ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় এ কূটনীতিক।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি ভারত সরকারের জনগণকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জনগণের জন্য বাস্তবসম্মত সুফল বয়ে এনেছে। এমন কোনো বক্তব্য বা প্রচার এড়িয়ে চলা উচিত, যা পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে। সেই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা এবং বিশেষ করে রাতে অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করা জরুরি। দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পর্যালোচনা এবং সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান প্রক্রিয়া সক্রিয় রাখা যেতে পারে। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।

মোদিকে ছবি উপহার ড. ইউনূসের : প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এক দশক আগের স্মৃতিময় একটি ছবি উপহার দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, ছবিটি ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে অধ্যাপক ইউনূসকে স্বর্ণপদক প্রদানের সময়কার।

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্ম ও দেশবাসী বাংলাদেশের ভবিষ্যত নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে অসাধারণ সংকল্প ও শক্তি প্রদর্শন করেছে। জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।’

প্রধান উপদেষ্টা আজ বৃহস্পতিবার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় এ কথা বলেন।

চলমান সংস্কার কর্মসূচির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়েছে যাতে নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, বেসামরিক প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সংস্কার আনা যায়।’

এই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে আমাদের জাতির একটি মৌলিক রূপান্তর সাধিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যাচ্ছি, তখন এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো আমরাও একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি।’

বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারের অস্থিরতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কূটনৈতিক উত্তেজনা এবং বাণিজ্য বিঘ্নতা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘সুদের হার বৃদ্ধি ও ঋণ পরিষেবা ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এশিয়ার ঋণ সংকট আরও গভীর হচ্ছে।’

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ২০৩০ এজেন্ডার প্রতি প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও অগ্রগতি খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ শতাংশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল এশীয় দেশগুলো প্রতি বছর ২.৫ থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এসডিজি অর্থায়নের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসডিজি অর্থায়নের বাইরেও এশিয়াকে ব্যাপক পরিমাণে অবকাঠামো বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য আনতে হবে।

দুর্নীতি ও আর্থিক অপচয় রোধের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থপ্রবাহের শিকার।

তিনি উল্লেখ করেন, এই ধরনের দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যা তারা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে যে অর্থ পায় তার চেয়ে বহুগুণ বেশি।

তিনি বলেন, ‘এশিয়াকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্পদ পুনরুদ্ধার ও পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য একটি বহুপাক্ষিক মধ্যস্থতা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা ক্রমবর্ধমান চাপে রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার কারণে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো কঠিন সময় পার করছে।’

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই সংকটকে আরও গভীরতর করছে। ‘খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,’ তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জ্বালানি নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত জ্বালানি আমদানিকারক উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য। জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হলে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ঋণ সংকট বৃদ্ধি পায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই টেকসই জ্বালানি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা মানবসম্পদ উন্নয়নে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগ করে, তারা অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতার দিক থেকে ভালো ফল পায়।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত করতে ডিজিটাল শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের প্রসার ঘটাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন তীব্রতর হচ্ছে, ঋণের বোঝা অসহনীয় হয়ে উঠছে এবং মানবিক সংকট বাড়ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দুর্বল হয়ে পড়ছে, এবং বিশ্ব এখন সম্মিলিত পদক্ষেপের অভাবের কারণে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীন।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের ৬০ শতাংশ জনসংখ্যা এবং ৫৫ শতাংশ বিশ্ব জিডিপি ধারণকারী এশিয়া এই পরিবর্তনগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।’

‘নতুন নিয়ম, বিধিনিষেধ এবং প্রযুক্তি সরকার পরিচালনা ও অর্থনৈতিক নীতিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে,’ তিনি বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এক দশক আগে যে নীতিগুলো কার্যকর ছিল, সেগুলো আর প্রাসঙ্গিক নয়। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।’

সম্মেলনে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার মহাসচিব ঝাং জুন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও বোয়াও ফোরামের চেয়ারম্যান বান কি-মুন এবং চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্বাহী উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং বক্তব্য রাখেন।

রাজনীতি

ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠককে ‘আশার আলো’ হিসেবে দেখছে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিমসটেকে সাইডলাইন বৈঠক হয়েছে, এটা (বৈঠক) খুব আনন্দের কথা। আমরা মনে করি যে, ভূ-রাজনীতি এবং বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির যে প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশ-ভারতের এ অঞ্চলের যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাহেবের বৈঠকটা আমাদের সামনে একটা আশার আলো তৈরি করেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক নিয়ে এরকমই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে যে একটা বিটারনেস (তিক্ততা) তৈরি হয়েছিল, সেটি যেন আর বেশি সামনে না যায় অথবা এটা যেন কমে আসে। সেখানে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি যতদূর দেখেছি, তাতে করে আমার মনে হয়েছে এ ব্যাপারে দুজনই যথেষ্ট আন্তরিক এবং এটা নিসন্দেহে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মানুষেরই উপকার করবে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। আধা ঘণ্টা স্থায়ী ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় তুলে ধরা হয় বলে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

এদিকে গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে ক্রীড়াঙ্গনের কর্মকর্তা, সংগঠন এবং ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময়ে মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠন ও ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ছিলেন- মাহবুবুল আনাম, রফিকুল ইসলাম বাবু, রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির, নিয়ামুর রশীদ রাহুল, মো. আশরাফুল, হাবিবুল বাশার সুমন, রিয়াজ আহমেদ, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, আবু দাউদ শামসুদ্দোজা চৌধুরী ডন, মাইশিকুর রহমান রিয়াল, ফাহিম সিনহা, কাজী মহিউদ্দিন বুলবুল, সেলিম শাহেদ, সৈয়দ বোরহানুল হোসেন পাপ্পু, আকরাম হোসেন সবুজ, ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।

রাজনীতি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাঠে থাকবে কি না কিংবা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না- সেটি এখন অন্যতম চর্চিত বিষয়। এ নিয়ে আছে নানা মহলের নানাবিধ চেষ্টা-প্রচেষ্টা, বিতর্ক-সমালোচনা। আওয়ামী লীগ নিজেরাই এখন ছন্নছাড়া অবস্থায়। এরই মধ্যে আলোচনায় এসেছে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ বা পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগ নামে দলটির পুনর্বাসন।

কিন্তু আওয়ামী লীগ কি এভাবে মাঠে থাকতে চায়? জবাবে দলটির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগকে রিফাইনের দায়িত্ব যারা নিয়েছেন, তারা কি আওয়ামী লীগ করেন? না করলে তারা কীভাবে আওয়ামী লীগকে রিফাইন করবেন? অতীতে এমন উদ্যোগ অনেকে নিয়েছে, সফল হয়নি। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ। অন্য কারও নেতৃত্ব মানবে না।

বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন জলঘোলা কম হয়নি। সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের আলোচনা ছিল ‘টপ অব দ্য কান্ট্রি’। গত ২১ মার্চ ‘১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২:৩০’ ক্যান্টনমেন্টের এক বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে লেখেন, ‘কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন চৌধুরী, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। আমিসহ আরও দুজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ মার্চ দুপুর ২:৩০ এ। আমাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়, আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদের বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে- তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধীদল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধীদল থাকা নাকি ভালো। ফলশ্রুতিতে আপনি দেখবেন গত দুদিন মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে।’

তিনি লেখেন, ‘আমাদের আরও বলা হয়- রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে। আমাদের এ প্রস্তাব দেওয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন। এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং ‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’।’

এরকমভাবে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ করতে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং জিয়াউর রহমানও চেষ্টা করেছেন। আসলে যেটা থাকার সেটাই থেকে গেছে। আওয়ামী লীগকে কেউ রিফাইন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ রিফাইন্ড করতে হলে আওয়ামী লীগই করবে, কাউন্সিলের মাধ্যমে।- আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

এ স্ট্যাটাসের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনৈতিক অঙ্গন। পরে এ বিষয়ে সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজকে প্রতিক্রিয়া জানায় সেনাবাহিনী সদরদপ্তর। সেনাসদর নিশ্চিত করে, সেনাপ্রধানের সঙ্গেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল। তবে ওই বৈঠক ছাত্রনেতাদের আগ্রহেই হয়।

সেনাসদপ্তর জানায়, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম দীর্ঘদিন যাবৎ সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য ইচ্ছা পোষণ করছিলেন। পরবর্তীসময়ে সারজিস আলম ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখে সেনাপ্রধানের মিলিটারি অ্যাডভাইজরকে ফোন দিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে মিলিটারি অ্যাডভাইজার তাদের সেনাসদরে আসার জন্য বলেন।’

‘অতঃপর ১১ মার্চ দুপুরে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ সেনাসদরে না এসে সরাসরি সেনাভবনে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করেন। পরবর্তীসময়ে সেনাপ্রধান অফিস কার্যক্রম শেষ করে সেনা ভবনে এসে তাদের সঙ্গে দেখা করেন।’

আরও জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো প্রতিষ্ঠিত সুশৃঙ্খল বাহিনীর প্রধান সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের যুগ্ম সংগঠকদের ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছে বা চাপ প্রয়োগ করছে, যা অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার বলে প্রতীয়মান হয়।’

আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। আগামী সরকারবিরোধী আন্দোলন, নির্বাচন সবকিছু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করবে আওয়ামী লীগ। কোনো ধরনের রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো টার্মে আওয়ামী লীগকে খণ্ডিত করার সব ষড়যন্ত্র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মোকাবিলা করবে।- আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া

সেনাসদরের বক্তব্যে বলা হয়, এই দুই ছাত্র সমন্বয়ককে সেনাবাহিনী প্রধান ‘অত্যন্ত স্নেহের দৃষ্টিতে ছেলের মতো’ দেখতেন। তিনি স্নেহবৎসল পরিবেশে তাদের সঙ্গে নানা আলাপচারিতা করেন। প্রাসঙ্গিকভাবে তাদের নতুন দল গঠনের শুভকামনা ও পরবর্তী রাজনৈতিক পথচলার বিষয়ে নানা প্রসঙ্গে আলাপ করেন।’

এ নিয়ে এনসিপি নেতা সার্জিস আলমও স্ট্যাটাস দেন তার ফেসবুক পেজে। তিনি আলোচনার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনার জন্য হাসনাতের সঙ্গে কিছু দ্বিমত পোষণ করেন।

‘সায়’ নেই আওয়ামী লীগের
রিফাইন্ড প্রক্রিয়ায় সায় নেই খোদ আওয়ামী লীগ নেতাদের। তারা বলছেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। সামনে আন্দোলন ও নির্বাচন যাই হবে, সবই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করবে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এরকমভাবে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ করতে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং জিয়াউর রহমানও চেষ্টা করেছেন। আসলে যেটা থাকার সেটাই থেকে গেছে। আওয়ামী লীগকে কেউ রিফাইন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ রিফাইন্ড করতে হলে আওয়ামী লীগই করবে, কাউন্সিলের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগকে কেউ ঠেকাতেও পারবে না। এখন হয়তো তাদের হাতে শক্তি আছে, চাইলে যা কিছু করে দেওয়া যাবে, কিন্তু বাস্তবে তো কেউ মানবে না। এগোতেও পারবে না। আওয়ামী লীগের কেউ গ্রহণ করেবে না।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আদর্শ, নীতি ও লক্ষ্য আছে। আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগ তো কচু পাতার পানি না, বাতাস দিলেই তো টলে পড়বে না। আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি হয়? এখনো তো প্রতিদিনই তারা আওয়ামী লীগের কথা বলে। আওয়ামী লীগ এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির শীর্ষবিন্দুতে আছে। আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলতে পারবে না। বরং, ওরাই মুছে যাবে। দেশের মানুষ দেখবে কার সময় ভালো ছিলাম, শান্তিতে ছিলাম!’

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এগুলো ভুয়া খবর। ওয়েট অ্যান্ড সি।’

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারা। এ দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের কথা যারা বলছে, আমি মনে করি তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। আগামী সরকারবিরোধী আন্দোলন, নির্বাচন সবকিছু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করবে আওয়ামী লীগ। কোনো ধরনের রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো টার্মে আওয়ামী লীগকে খণ্ডিত করার সব ষড়যন্ত্র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মোকাবিলা করবে।’

রাজনীতি

নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এর সংশোধনী পাশসহ উপদেষ্টা পরিষদে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সভায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এর সংশোধনী পাশ হয়েছে। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং সিন্ডিকেট ভাঙতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অধ্যাদেশের সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রাক্কলিত মূল্যের ১০ পার্সেন্টের কম হলে টেন্ডার প্রস্তাব বাতিলের যে বিধান তা বাতিল করা হয়েছে।

পূর্বের কাজের মূল্যায়নের জন্য যে ম্যাট্রিক্স ছিল, যেটা থাকার কারণে একই প্রতিষ্ঠান বার বার কাজ পেতো, তা বদলে নতুন সক্ষমতা ম্যাট্রিক্স করা হবে। এতে করে সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হবে। বর্তমানে ৬৫ শতাংশ কাজের দরপত্র বা টেন্ডার অনলাইনে হচ্ছে। এটিতে শতভাগে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

পরিত্যক্ত বাড়ি বরাদ্দপ্রাপ্তরা পূর্বে নিজ নামে নামজারি করতে পারতেন না। সেই অসুবিধা দূর করতে আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে।

জনসাধারণের সুবিধার্থে ৩ এপ্রিল একদিন ঈদের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। চৈত্র সংক্রান্তিতে নির্বাহী আদেশে তিন পার্বত্য জেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি সাঁওতাল, গারো, খাসিয়া, জৈন্তাসহ সমতলের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও এই ছুটির আওতায় থাকবে।

রাজনীতি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন। বুধবার (১৯ মার্চ) যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক এ কথা জানান।

এদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউকে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

এম এ মালেক জানান, তারা খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলেন ঈদের পর দেশে ফিরতে। বিএনপি চেয়ারপারসন অনুরোধ রেখেছেন। তিনি এখন ঈদের পর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি জানান, চিকিৎসকরা সেই অনুপাতে প্রস্তুতি নিয়ে খালেদা জিয়াকে সেভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে ফ্লাইটেরও একটি বিষয় আছে। ফ্লাইট যদি নির্ধারিত সময়ে না পাওয়া যায়, তাহলে দুই এক দিন এদিক সেদিক হতে পারে। তবে খালেদা জিয়া দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে এম এ মালেক স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের লিডারের দেশে যাওয়ার সময় নিয়ে এখনো নিশ্চিত বলতে পারছি না। ম্যাডাম খালেদা জিয়া যাওয়ার কিছু দিন পরে হয় তো তিনি দেশে ফিরবেন। এক সঙ্গে দুইজন অবশ্যই যাবেন না- এটা আমি বিশ্বাস করি। ’

রাজনীতি

ব্যস্ত সড়কঘেঁষা একটি আলোচিত ভবন। এর অবস্থান ময়মনসিংহ শহরের ফায়ার সার্ভিস রোডে। ভবনটিকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। কারণ, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম সাক্ষী ভবনটি। নাম তার ‘সুন্দর মহল’।

ভবনটি নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত সুতিয়াখালি গ্রামের কন্যা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশনের। একসময় সুন্দর মহলের সঙ্গে ছিল জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয়। বর্তমানে কার্যালয়টির অস্তিত্ব নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, সুন্দর মহলে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় ও কেয়ারটেকার থাকার বাসা ভাঙা। ইটগুলো কোথাও এলোমেলো আবার কোথাও সমানভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দেওয়াল ভাঙার ইটগুলোর পলেস্তারা খুলে পরিষ্কার করা হয়েছে। সুন্দর মহল লেখাটি এখনো জ্বলজ্বলে থাকলেও সঙ্গে ‘দালাল মহল’ লিখে সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখেছে ছাত্র-জনতা। ভবনটি ভাঙচুরও করা হয়েছে।

ভবনজুড়ে দেওয়ালে দেওয়ালে কালিতে লেখা রয়েছে ‘দালাল মহল’। টানানো সাইনবোর্ডে রওশন এরশাদের ছবিতে কালি দিয়ে ক্রস চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছে। ভবনের সামনে একপাশে রয়েছে বাঁধানো কবর। কবরের নামফলকে লেখা, বেগম বদরুন্নাহার। মৃত্যু ১৯৯১। স্বামীর নাম খান সাহেব উমেদ আলী।

দ্বিতল ভবনের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে দেখা গেলো চারপাশ পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে ছাত্র-জনতার ভাঙচুরের দৃশ্য এখনো রয়ে গেছে। রাজনৈতিক ইতিহাসের সাক্ষী ভবনটিতে শুধুই সুনসান নীরবতা।

সুন্দর মহলের ক্ষতচিহ্ন জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন কেয়ারটেকার মোখলেছুর রহমান। কথাবার্তার একপর্যায়ে মুখ ফসকে বলে দিলেন ভবনের বর্তমান অবস্থার কথা। তিনি জাগো নিউজকে জানান, এই ভবন থেকে আর জাতীয় পার্টির রাজনীতি পরিচালিত হবে না। এখানে শুধু হবে খানাপিনা। তবে তা বিনামূল্যে নয়। গুনে গুনে টাকা দিয়ে ইচ্ছেমতো যে কেউ খেতে পারবেন। কারণ, এই সুন্দর মহলে তৈরি হচ্ছে রেস্তোরাঁ। এজন্য মালিকপক্ষের পরিকল্পনা মতো ছাত্র-জনতার ভাঙাচোরা শেষে যা অবশিষ্ট ছিল তা পরিষ্কার করা হয়েছে। ভবনের সঙ্গে থাকা ইটের তৈরি জাতীয় পার্টির কার্যালয়সহ পেছনের অংশের একটি ঘরের দেওয়ালগুলো এরইমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। একসময়ের দৃষ্টিনন্দন দোতলা এই বাড়িটির জায়গাজুড়ে হবে রেস্তোরাঁ। যার নাম হবে ‘কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট’।

ভবনের কেয়ারটেকার মোখলেছুর রহমান বলেন, “ভবনটি রওশনের ভাইয়ের কাছ থেকে বজলুর রহমান মিন্টু নামের একজন ভাড়া নিয়েছেন। তার ‘কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট’ নামের তিনটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। একটির অবস্থান ঢাকায়, একটি ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়ায় ও জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার পৌর শহরে। সুন্দর মহলে এটি তার চতুর্থ শাখা হবে। তাকে ব্যবসায়ী হিসেবেই জানি। রাজনৈতিক কোনো পদবি আছে কি না আমার জানা নেই।”

কাউন্সিল না হলে জাতীয় পার্টি হারিয়ে যেত: রওশন

তিনি আরও বলেন, ‘ভবনের সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করিয়েছেন বজলুর রহমান মিন্টু। তিনি প্রায় তিন মাস আগে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তিতে আমাকে এখানে কেয়ারটেকার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি ভবনটির সবকিছু দেখভাল করছি।’

মোখলেছুর রহমান জানান, দালাল মহলে (সুন্দর মহল) রেস্তোরাঁ হবে জানতে পেরে একদল লোক এসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ বন্ধসহ রেস্তোরাঁ করতে বজলুর রহমান মিন্টুকে নিষেধ করেন। এসময় মিন্টু তাদের বুঝিয়ে বলেন, অহেতুক ভবনটি পড়ে রয়েছে। এখানে রেস্তোরাঁ করে ব্যবসা করা দোষের কিছু নয়। পরে আর বাধা দেওয়া হয়নি।

ভবনটিতে রেস্তোরাঁ করার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা তুঙ্গে। রেস্তোরাঁ চালু হওয়ার আগ মুহূর্তে আবারও হামলা কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার শঙ্কা রয়েছে। ভবনের কেয়ারটেকার মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘জানতে পেরেছি, পরিবেশ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হলে কয়েক মাসের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন করে ভবনটি ‘কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট’ নামে চালু করা হবে। সুন্দর মহলের পেছনের অংশের কর্নারে একটি তিনতলা ভবন করারও কথা রয়েছে। এটিও একই নামে রেস্তোরাঁ হবে। এরইমধ্যে কর্নারে থাকা দেওয়াল ভেঙে ইটগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়েছে। তবে রেস্তোরাঁকে কেন্দ্র করে যদি কোনো প্রভাবশালী লোকজন উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে, তাহলে রেস্তোরাঁ নির্মাণ বন্ধও হতে পারে।

আবারও কেন ভাঙলো জাতীয় পার্টি

এদিকে সুন্দর মহলে রেস্তোরাঁ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতারাও। দলটির নেতারা জানান, সুন্দর মহল থেকেই ময়মনসিংহ জাতীয় পার্টির রাজনীতি পরিচালিত হতো। দলের স্বার্থে স্থানীয় শীর্ষ নেতারা এখানেই হুংকার দিতেন। নেতাকর্মীদের করতেন ঐক্যবদ্ধ। বিভিন্ন স্থান থেকে এই সুন্দর মহলে দলে দলে স্লোগান দিয়ে এসে জড়ো হতেন নেতাকর্মীরা। রওশন এরশাদ এসে থাকতেন এই বাড়িতেই। দলকে চাঙা রাখতে দিতেন নানা দিকনির্দেশনা। কিন্তু দেবর-ভাবির (জি এম কাদের-রওশন এরশাদ) দ্বন্দ্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেগম রওশন এরশাদ অংশ নেননি। ফলে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে যান। নেতাকর্মীরা না আসায় ধীরে ধীরে জৌলুশ হারায় ভবনটি।

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সুন্দর মহলটি ‘দালাল মহল’ আখ্যা দিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এরপর ৩১ অক্টোবর রাতে নগরীর টাউন হল মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রওশন এরশাদের বাসভবন সুন্দর মহল ও জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও করেন বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে সুন্দর মহলের সামনের সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় সুন্দর মহলকে ‘জাতীয় দালাল মহল’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। এছাড়া তারা ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টি সব কার্যক্রম প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে স্বৈরাচারের সহযোগী অভিযোগ করে জাতীয় পার্টিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

তবে একটি সূত্র জাগো নিউজকে বলেছে, রেস্তোরাঁ নামে ভবনটি (সুন্দর মহল) একসময় ধীরে ধীরে দখল হয়ে যেতে পারে। যদিও জাতীয় পার্টির একজন পদধারী নেতা এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম সাক্ষী এই বাড়ি দখলে নেওয়া এত সহজ নয়। কখনো এমনটি হলে, জাতীয় পার্টির নেতারা শক্তি সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে তা আগের রূপে ফিরিয়ে আনবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের অনুসারী ও ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ওয়াহিদুজ্জামান আরজু জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটি বেগম রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়ি। এখানে আনুমানিক ৩০ শতাংশ জায়গা রয়েছে। শুনেছি, রওশনের ভাই সুন্দর মহলটি রেস্তোরাঁ হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন। তবে কে বা কারা ভাড়া নিয়েছেন তা আমার জানা নেই।’

বক্তব্য জানতে ময়মনসিংহ মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়াল সেলিম ও জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু মূসা সরকারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

তবে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুন্দর মহলে রেস্তোরাঁ হওয়ার বিষয়টি আমিও জেনেছি। শুনেছি, ১০ বছরের জন্য চুক্তি করে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। তবে এটি একক মালিকানায় নেওয়া হয়নি। যৌথ মালিকানার বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে কে কে মালিকানায় আছেন, তা এখনো জানতে পারিনি।’

জাতীয় পার্টির এই নেতা আরও বলেন, রেস্তোরাঁ দেওয়ার ক্ষেত্রে বজলুর রহমান মিন্টুর সঙ্গে মালিকানায় স্থানীয় বিএনপির কোনো নেতার কিংবা তার অনুসারীর নাম থাকতে পারে। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খুলছেন না।

ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেন জাতীয় পার্টির শতাধিক নেতাকর্মী

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ‘সুন্দর মহল’ ভাড়া নেওয়া বজলুর রহমান মিন্টুর মোবাইল নম্বরে থেমে থেমে টানা দুই সপ্তাহ কল দেওয়া হয়। এরমধ্যে একবার কল রিসিভ করেন তিনি। কবে সুন্দর মহল ভাড়া নিয়েছেন? মালিকানায় কতজন? কবে রেস্তোরাঁ চালু হবে? জাগো নিউজের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এমন প্রশ্ন করতেই বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। এ নিয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলা হবে।’

এরপর আরও এক সপ্তাহ বিভিন্ন সময় তার নম্বরে কল দিলেও রিসিভ করেনি তিনি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন করা হলেও কোনো কথা বলেননি বজলুর রহমান মিন্টু।

তবে মহলটিতে রেস্তোরাঁ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বজলুর রহমান মিন্টুর ম্যানেজার আল আমিন। তিনি ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়াতে অবস্থিত কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আল আমিন জাগো নিউজকে বলেন, “ঢাকা, ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়া ও জেলার ফুলবাড়ীয়া পৌর শহরে একটি করে ‘কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট’ ও ‘কুটুমবাড়ি মিষ্টি’ নামের রেস্তোরাঁ রয়েছে। এগুলোর মালিক বজলুর রহমান মিন্টু। আমাদের আরেকটি শাখা বাড়ানো হচ্ছে। সুন্দর মহলে হবে ওই রেস্তোরাঁ। এটির মালিকানাতেও আছেন বজলুর রহমান মিন্টু। কবে রেস্তোরাঁটি চালু হবে, তা আমরা বলতে পারবো না।”

তিনি আরও বলেন, আমাদের জানামতে বজলুর রহমান মিন্টু কোনো দলের রাজনীতি করেন না। ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত তিনি।

ফুলবাড়ীয়ায় ‘কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট’ রমজান উপলক্ষে বন্ধ রয়েছে। তবে ‘কুটুমবাড়ি মিষ্টির’ দোকান চালু রয়েছে। এই দোকানের ম্যানেজার এনামুল হক। তিনিও একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুন্দর মহলে কুটুমবাড়ি নামে রেস্তোরাঁ হবে। কুটুমবাড়ি নামে এটি আমাদের চতুর্থ শাখা। তবে এখনো রেস্তোরাঁর কাজ শুরু হয়নি। কতদিন সময় লাগবে তা আমাদের জানা নেই।

এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) ও ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে আছি। বিষয়টি এখনো আমার জানা নেই। বিএনপির কোনো নেতার নামে কিংবা বেনামে সুন্দর মহলের রেস্তোরাঁর মালিকায় আসবে বলে আমার মনে হয় না। এছাড়া এই এলাকায় এবং আলোচিত এই বাসায় (সুন্দর মহল) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁ দিতে অনুমতি দেবে কিনা, তাও সন্দেহ রয়েছে। দেশে এসে বিষয়টি জানতে চেষ্টা করবো।’

১৯৫৬ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদে সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রওশন এরশাদ। এরপর স্বামীর রাজনৈতিক সাহচর্যে এসে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এর ধ্যে ১৯৯৬, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসন থেকে, ২০০১ সালে গাইবান্ধা এবং ২০০৮ সালে শ্বশুরবাড়ির এলাকা রংপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন দেশের এই ফার্স্ট লেডি। বেগম রওশন এরশাদ দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন।

রাজনীতি

সংবিধান সংস্কার কমিশন একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশন সাংবিধানিক সংস্কারে যে সাতটি উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে সুপারিশ করেছে,

১) দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতিশ্রুত উদ্দেশ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আলোকে বৈষম্যহীন জনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।

২) ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো।

৩) রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বস্তরে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা।

৪) ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার উত্থান রোধ। ৫) রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ-নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন।

৬) রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন।

৭) রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক এবং আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা

এই উদ্দেশ্যসমূহ নির্ধারণে কমিশন ১০ এপ্রিল ১৯৭১-এ জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকার অর্থাৎ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেছে।

পাশাপাশি কমিশন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধকে বাংলাদেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যবিরোধী সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করেছে। এই সব আকাঙ্ক্ষা এবং সংগ্রামের মর্মবস্তুকে সাংবিধানিক-প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যেই সংবিধানের সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে কমিশন।

ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানোসহ সংবিধানে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন জমা দেন। সুপারিশের সারসংক্ষেপ পরে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সংবিধানের মূলনীতি ও সংসদের কাঠামোতে পরিবর্তন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো, মৌলিক অধিকারের পরিসর বাড়ানো, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলসহ সংবিধানের নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবর অধ্যাপক আলী রীয়াজকে প্রধান করে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল।

রাজনীতি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রশ্নে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

তিন বলেন, ‘আমাদের ভিন্ন-ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে। কিন্তু গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা ও একটি মানবিক বাংলাদেশ পড়ে তোলার প্রশ্নে আমরা সবাই ঐকমত্য।’

তারেক রহমান আজ মঙ্গলবার বিকেলে ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ‘ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

গুলশান শুটিং ক্লাবে রাজনীতিবিদ ও নাগরিকদের সম্মানে এনডিএম এ ইফতার পার্টির আয়োজন করে।

‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে না পারলে দেশের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে’ উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই মুহূর্তে পত্রিকা খুললে, টেলিভিশনের পর্দায় আমরা দেখি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে কি পরিমাণ দুঃখ-কষ্টে আছে এদেশের অধিকাংশ মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দলগুলো কোনো ডিবেট করছি না যে, জনগণের রায় আমার পক্ষে এলে আমরা কীভাবে এই ব্যবস্থাটিকে পরিচালনা করব কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখব, বাজার ব্যবস্থা সাজাব, উৎপাদন আরও বাড়াব।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি তার পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে মনে করে এই সব বিষয়গুলো অবশ্যই আমাদের জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত। শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক ব্যবস্থা, ভোটের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আরও বেশি আলোচনা হওয়া উচিত মানুষের সমস্যা সমাধান কোন দল কি করবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আসুন জনগণের সমস্যাগুলোর বিষয়ে আমরা চিন্তা করি, কথা বলি। এই ব্যাপারেও আমাদের কি কি সংস্কার আছে সেগুলো সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই একে অন্যের বাস্তবধর্মী সমালোচনা করব। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে যেন সামনে এসে না দাঁড়াই, যেখানে দেশের জনগণের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে আমরা ভুলে যাই। এমন হলে আগামী দিনে দেশ গঠনের সকল সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং সমালোচনার ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হলে অবশ্যই আমাদের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষি উৎপাদন কীভাবে বৃদ্ধি করব? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শুধুমাত্র খাল খননের মাধ্যমে কৃষি জমিতে উৎপাদন বাড়িয়েছিলেন। যে জমিতে এক ফসল হতো সেখানে দুই-তিন ফসল হয়েছে সঠিক সময়ে পানি সরবরহ করার মাধ্যমে। খাল খননের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিলো।’

তারেক রহমান বলেন, ‘২০ কোটি জনসংখ্যার এই দেশের মানুষের একটি প্রাইমারি প্রয়োজন হচ্ছে ন্যূনতম চিকিৎসা ব্যবস্থা। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে আমাদের দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করব সে বিষয়গুলো নিয়ে পরিকল্পনা মাফিক কার্যক্রম কেনো তুলে ধরছি না। সেটি কি সংস্কার নয়? আমি যে বাজার ব্যবস্থা ও উৎপাদন ব্যবস্থার কথা বলেছি সেটি কি সংস্কার নয় ?’

‘শুধু একজন ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধান মন্ত্রী হবেন না’ এটি কী সংস্কার ? এমন প্রশ্ন রেখে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের সমস্যাগুলো সমাধান করার বিষয়গুলোকে নিয়ে সংস্কার হতে পারে না? আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনে করি এগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কার আরও হতে পারে। প্রত্যেকটি দলের কী ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে তা জনগণকে জানানো উচিত। উৎপাদনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। কারণ, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা যদি সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারি তাহলে আমাদের পক্ষে এ দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলা সম্ভব না।’

পরিবেশ দূষণ রোধে সংস্কার প্রস্তাব জরুরি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘পরিবেশ দূষণ অত্যন্ত তীব্র মাত্রায় হচ্ছে। সামগ্রিক ভাবে সমগ্র বাংলাদেশে পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো জাতির সামনে পরিবেশের ব্যাপারে সংস্কার উপস্থাপন করতে পারি, কীভাাবে আমরা আমাদের পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে পারি।’

তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা পরিবেশ দূষণ কমাতে উদ্যোগ নিতে পারি। এক্ষেত্রে পরিবেশ বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ শব্দ, বায়ুসহ বিভিন্ন দূষণের কারণে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ, শিশু অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে শারীরিকভাবে। এই দূষণ থেকে রাজধানীসহ গোটা দেশকে কীভাবে রক্ষা করতে পারি এ ব্যাপারেও আমাদের পরিকল্পনা জাতির সামনে সকল রাজনৈতিক দলের উপস্থাপন করা উচিত।’

শিল্পায়নের পরিবেশ সৃষ্টি, মানুষের খাবার পানি, মানুষের ব্যবহার্য পানি, পরিবেশ-জ্বালানি প্রভৃতি ইস্যুতে করণীয় সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর চিহ্নিত করা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

এনডিএম’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপি’র মাহাদী আমিন, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সারসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা ইফতারপূর্ব এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।