অর্থনীতি

রাজধানীতে এবার ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করবে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিসিবি জানায়, প্রতি কেজি আলু ৪০ টাকা করে বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন।বুধবার থেকে ঢাকায় সাধারণ ভোক্তাদের জন্য এসব আলু বিক্রি শুরু হবে।

এই কার্যক্রম বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় টিসিবি ভবন থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় নিম্ন আয়ের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল ও ডাল) সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি চলছে। এই কার্যক্রমের পাশাপাশি ঢাকার ৫০টি ও চট্টগ্রামের ২০টি ট্রাকে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির তেল, ডাল এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আলু।

এতে আরও বলা হয়, প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং ৩০ টাকায় চাল পাওয়া যাবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ দুই লিটার তেল, দুই কেজি মসুর ডাল এবং পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন।

অর্থনীতি

৩ মাসেই বেড়েছে ৭৩,৫৮৬ কোটি টাকা * প্রকৃত খেলাপি ৭ লাখ কোটি টাকার কম হবে না -ড. মইনুল ইসলাম

দেশের ব্যাংকগুলোতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। ৩ মাসেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, তা এখন খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। ফলে ব্যাংক থেকে বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশই বর্তমানে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

তবে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের অঙ্ক আরও বেশি। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হিসাবে অবলোপন করা ও আদালতের আদেশে স্থগিত থাকা ঋণ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এছাড়া বিপুল অঙ্কের ঋণ পুনঃতফশিল করা আছে। সেগুলোও এই হিসাবে নেই। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র আগামী দিনে আরও বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, খেলাপি ঋণের এই তথ্য ভুয়া। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর নিজেই বলেছেন খেলাপি ঋণ ৬ লাখ কোটি টাকা। এছাড়া একটা গণমাধ্যমেও বলা হয়েছে প্রকৃত খেলাপি প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকা। মূলত কৌশলগত কারণে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৭ লাখ কোটি টাকার কম হবে না। কারণ এখানে ঋণ অবলোপন, অর্থঋণ আদালতে মামলা, আদালতে স্থগিতাদেশ ও ঋণ পুনঃতফসিল করা বিপুল অঙ্কের টাকার হিসাব নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তখন দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল খেলাপি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এরপর থেকে খেলাপি ঋণের অঙ্ক বেড়েই চলছে। অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, তৎকালীন সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে, যার একটা বড় অংশই পাচার হয়েছে বিদেশি।

এ প্রসঙ্গে এনসিসি ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ নুরুল আমিন যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে এটা এখন পর্যন্ত প্রকৃত তথ্য। আগের মতো তথ্য গোপন, লুকোচুরি, কারচুপির সুযোগ নেই। আশঙ্কা হচ্ছে, ধীরে ধীরে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যাবে। যা আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ যে কয়েকটি ব্যাংকে লুটপাট হয়েছে এবং যারা লুটপাট করেছে তারা এখন নানাভাবে পলাতক বা গা-ঢাকা দিয়েছে। তাদের ব্যবসা আর ভালোভাবে চলবে না। ফলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। এটা হলো দুশ্চিন্তার বিষয়। যা ব্যাংক খাতের জন্য অশনি সংকেত।

জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এই দ্বিতীয়বার খেলাপি ঋণের তথ্য পাওয়া গেছে, ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। সাবেক সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের ঋণ দিতে নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখাতে নেওয়া হয়েছিল একের পর এক নীতি। সরকার পরিবর্তনের পর সেই নীতি থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বাড়াতে সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এই সময়ে সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৪৯ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।

বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত ব্যাংকগুলো ঋণের প্রকৃত চিত্র দেখাতে শুরু করেছে। এদের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, থার্মেক্সসহ আরও কিছু বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এতেও বেড়েছে খেলাপি ঋণ।

এদিকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। সরকার পতনের পর এই ঋণের একটি অংশ এখন খেলাপিতে পরিণত হবে।

তারা বলেন, শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসাবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণীর তথ্য গোপনীয়তার স্বার্থে সিলগালা করা খামে কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিল করতে হবে। সম্পদ বিবরণী দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর।

রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ছকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে। ছকটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

দুর্নীতির লাগাম টানতে বছর বছর সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হিসাব বিবরণী দেওয়ার কথা থাকলেও এ বছর তা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দিতে বলেছে মন্ত্রণালয়। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯, যা ২০০২-এ সংশোধনী এনে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী পাঁচ বছর পরপর দেওয়ার বিধান করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ১ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা দেয়।

কে কোথায় দাখিল করবেন- ক্যাডার বা নন-ক্যাডার (নবম বা তদূর্ধ্ব গ্রেড) কর্মকর্তা তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন।

গেজেটেড বা নন-গেজেটেড কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা (১০ম থেকে ২০তম গ্রেড) নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন।

অর্থনীতি

পবিত্র রমজান মাসে চাহিদা বাড়ে এমন ১১ ধরনের পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পণ্যগুলো হচ্ছে– চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর।

রোববার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা বলছে, এসব পণ্য আমদানিতে এখন থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এলসি মার্জিন ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শীঘ্রই এ নির্দেশনা কার্যকর হবে এবং ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে।

অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানি ঋণপত্র খুলতে অগ্রাধিকার প্রদানের জন্য পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে বেশি ব্যবহৃত পণ্যগুলো আমদানির ক্ষেত্রে আগের বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। এখন থেকে চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর আমদানির এলসি খুলতে শতভাগ মার্জিন লাগবে না। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সাধারণত ৫ থেকে ২০ শতাংশ মার্জিন নেওয়া হয়, উল্লেখিত পণ্য আমদানি ক্ষেত্রেও এখন থেকে মার্জিনের এই হার নির্ধারণ করা যাবে।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে পবিত্র রমজান মাসে চাহিদা বাড়ে এমন ১১ ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের অনুমতি দিয়ে নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে এসব খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানি করা যাবে। এক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলার সময় আমদানিকারকদের কোনো অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকে জমা দিতে হবে না। এতে এসব খাদ্যপণ্য দ্রুত ও সহজে আমদানি করা যাবে।

যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো– চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর। এসব পণ্য বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য জাহাজে ওঠানোর ৯০ দিন পর পর্যন্ত ব্যাংকের বিল পরিশোধ করা যাবে।

সরকারের এ সব উদ্যোগের ফলে রমজানে ব্যবহৃত পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থনীতি

বাংলাদেশে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে নেপাল। ভারতের পর তৃতীয় কোনো দেশ হিসেবে বাংলাদেশে প্রথমবার বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে ‘হিমালয়কন্যা’খ্যাত রাষ্ট্রটি।

যদিও এ বছর একদিনই মিলবে নেপালের বিদ্যুৎ।

চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে ভারতের সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে বাংলাদেশে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানসহ তিন দেশের কর্মকর্তারা কাঠমান্ডুতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে দুপুরে সুইচ চেপে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্বোধন করেন।

গত অক্টোবরে নেপালে এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র চন্দন কুমার ঘোষ বলেন, চুক্তি অনুসারে এ বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে কেবল একদিনই বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে নেপাল। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি আবার শুরু হবে ২০২৫ সালের ১৫ জুন।

ওই চুক্তি মোতাবেক, পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতি বছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত নেপাল বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। অর্থাৎ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নেপালের বিদ্যুৎ মিলবে বাংলাদেশে।

দুদেশের মধ্যে সরাসরি বৈদ্যুতিক সংযোগ নেই বিধায় ভারতের সঞ্চালন লাইন হয়ে আসছে এই বিদ্যুৎ।

চন্দন কুমার ঘোষ জানান, বাংলাদেশের গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত ভারতের গ্রিডে সঞ্চালন সক্ষমতা সীমাবদ্ধ থাকায় নেপাল মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাতে পারছে। আরও সঞ্চালন লাইন তৈরি হলে সামনের বছরগুলোতে আরও বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহের সুযোগ আছে।

বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত জলবায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে নেপাল। সেজন্য ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ভারতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে তারা।

অর্থনীতি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নামলো ১৮ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন এক হাজার ৮৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার ডলারে (বিপিএম৬)।

একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪১৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর সেপ্টেম্বর–অক্টোবর দুই মাসের এক দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার দায় পরিশোধ করার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামলো। অবশ্য ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা ওপরে।

আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে এর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে থাকে।

গত সপ্তাহর শেষে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম-৬) ডলার। আর মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার, বা দুই হাজার ৫৭২ কোটি ৮৮ লাখ ২০ হাজার ডলার।

রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামা দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, রিজার্ভ চলমান একটি বিষয়। একবার কমবে, আবার বাড়বে। তবে এখন প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ইতিবাচক আছে, সাময়িকভাবে কমলেও আবার বাড়বে রিজার্ভ।

অর্থনীতি

দেশের বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চালের শুল্ক প্রত্যাহার, টাস্কফোর্স গঠন, আমদানির অনুমোদন, কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়াসহ সরকারের নানা উদ্যোগেও ভোক্তার স্বস্তি মিলছে না। চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতিতে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে।

সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি এবং ভারতসহ উজানের দেশগুলো থেকে আসা ঢলে আমনের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ধান ও চালের মজুত গড়ে তুলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে।

একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে চালের দাম দেশের বাজারের তুলনায় বেশি। এসব কারণে গত ১৫ দিনে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

সম্প্রতি দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম সহনীয় রাখতে চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করে সরকার। ফলে ১৯ মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।

এরইমধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হলেও কমছে না চালের দাম। এদিকে ভারতও চালের ওপর শুল্ক কমিয়েছে। তাতেও আমদানিতে আগ্রহী নন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

দেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল যদি আমদানি করা হয়, তবে বর্তমানে দেশের বাজারের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে ক্রেতাদের কিনতে হবে। শুল্ক কমানো হলেও এ মুহূর্তে দেশে চালের দামে প্রভাব পড়বে না। আর যে চাল আমদানি করা হয়েছে, তাও বাজারে আসতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ কাজে আসছে না। শুল্ক কমানোর পর এর সুবিধা একটি পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে, ভোক্তারা পাচ্ছেন না। সরকারের নজরদারিতে ঘাটতি রয়েছে, তদারকি আরও বাড়াতে হবে।

তারা বলছেন, সরকার এখন শুধু খুচরা পর্যায়ে তদারকি করছে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য উৎপাদক, করপোরেট, মিল, পাইকারি ও খুচরা— সব স্তরেই তদারকি করতে হবে, যা হচ্ছে না।

তারা আরও বলছেন, যেভাবেই হোক, বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সরকার বাজার সংস্কারের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না নেওয়ায় শৃঙ্খলা ফিরছে না। বাজার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ তাদের।

মঙ্গলবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চালের দাম কমেনি। অথচ চালের দাম কমাতে গত অক্টোবরে দুদফায় শুল্ক সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে দুই শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এরপরও কমেনি।

খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে চিকন চাল দেশি বাসমতির কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭২ থেকে ৮২ টাকা, মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাঝারি মানের বি আর ২৮, ২৯ নম্বর চাল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা এবং গুটি, স্বর্ণা, চায়না ইরিসহ মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায়।

সূত্রাপুর বাজারের মেসার্স আদনান অ্যান্ড আরাফাত ট্রেডার্সের মালিক মো. ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, আমদানির চাল এখনো বাজারে আসেনি। চাল ঢুকলে দাম কমতে পারে। চালের বাজার একটু দেখছি। ভারতে থেকে চাল এনে লাভ করতে পারব না। কারণ সেদেশেই চালের দাম বেশি, ডলার রেট ও পরিবহন খরচও বেশি। তাই আমাদের বাজারে দাম কমার সুযোগ কম।

এদিকে পাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চাল প্রতি কেজি দেশি বাসমতি চাল প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৮ টাকায়। মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

মাঝারি মানের বি আরের কেজি ২৮ চাল ৬০ টাকা। বি আর ২৯ চালের কেজি ৫৮ টাকা। পাইজামের কেজি ৫৭ থেকে ৬১ টাকা। মোটা চাল গুটি স্বর্ণা মানভেদে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড ধানের চাল (গুটি) বা সব চেয়ে মোটা চালের কেজি ৪৯ টাকা।

রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন চালের দাম সাত থেকে ১০ শতাংশ বেশি। এক মাসে বেড়েছে দুই শতাংশ পর্যন্ত। বাজারে এখন মোটা চালের কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।

মাঝারি মানের চালের কেজি ৫৮ থেকে ৬৩ টাকা। সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া গত সপ্তাহে মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে যায় প্রায় এক শতাংশ। গত মাসে বাড়ে প্রায় দুই শতাংশ।

বার্ষিক হিসাবে চিকন চালের দাম বেড়েছে নয় দশমিক শূন্য নয় শতাংশ। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মোটা চালের দাম বেড়েছে সাত দশমিক ১৪ শতাংশ।

এদিকে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাল উৎপাদন ব্যাহত হয়। পর্যাপ্ত সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল রপ্তানিতে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ এবং কোনো কোনো মানের চালের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির সরকার।

তবে গত ২৩ অক্টোবর ভারত সরকার টনপ্রতি ন্যূনতম রপ্তানি দাম ৪৯০ ডলার তুলে দিয়ে বাসমতি ছাড়া অন্য চালের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। ভারত সেদ্ধ চালের ওপর ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক তুলে নেওয়ার একদিন পর এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এসব উদ্যোগ আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কমাতে সহায়তা করতে পারে। তবে স্থানীয় আমদানিকারকেরা বর্তমান দাম বিবেচনায় আমদানির কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

মেসার্স রশিদ রাইস এজেন্সির মালিক বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে বাজারে চালের সরবরাহ কম। সরবরাহ বাড়লে দাম এমনিতেই কমে যাবে। কয়েকদিন পর আমন উঠবে। তখন মোটা চালের দাম কমবে। আর সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমদানির চাল বাজারে আসতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে আমদানি করা চালের দাম দেশি চালের চেয়ে বেশি হলেও তা মানুষ খাবে। কারণ চালের মান ভালো। যারা ভালোটা খান, তাদের কাছে দাম কোনো বিষয় নয়। আমরা আশা করছি, চালের দাম শিগগিরই কমে যাবে।

বাবুবাজারের চালের আড়ত মেসার্স ফেমাস রাইস এজেন্সির বিক্রয়কর্মী মো. সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, ভারতে চালের দাম বেশি। মিনিকেট আনলে দাম পড়বে ৭৪ টাকা। আর দেশি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়। চিকন চাল এনে লাভ হবে না।

তিনি বলেন, মোটা চাল আনলে দাম একটু কমবে। আমনের মোটা চাল উঠলে দাম কমবে। চিকন চাল বৈশাখ মাসের আগে আসবে না। তার আগে আর চালের দামও কমবে না।

হাজী রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, গত ১৫ দিনে মোটা চিকন সব ধরনের চালে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। চাল আমদানি হয়েছে শুনেছি। কিন্তু বাজারে এখনও আসেনি। মনে হয় না তেমন কোনো লাভ হবে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারেও চালের দাম বেশি।

তিনি বলেন, নভেম্বরের শেষে বাজারে নতুন আমন চাল এলে মোটা চালের দাম একটু কমবে। আর এ সময়ের মধ্যে আমদানি করা চালও বাজারে আসবে। মোটামুটি বলা যায়, ডিসেম্বর থেকে চালের দাম কমে যাবে।

গত অক্টোবরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারের কাছে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এর আগে বলা হয়েছিল, চাল আমদানি বাড়াতে শুল্ক-কর পুরোপুরি তুলে নেওয়া দরকার। চাল সরকারের জন্য একটি সংবেদনশীল পণ্য। গরিব মানুষের খাদ্য ব্যয়ের একটি বড় অংশ যায় চালের পেছনে।

ওই প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারের একটি চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছর আগের তুলনায় এখন চালের দাম ১১ শতাংশ কম। গত এক মাসে তা ৪ থেকে ৫ শতাংশ কমেছে। কিন্তু তারপরও আমদানি করতে গেলে খরচ অনেক পড়বে।

কমিশন বলেছিল, থাইল্যান্ডের চালের দাম পড়বে ৬৬ টাকা কেজি। এর সঙ্গে শুল্ক-কর ও অন্যান্য খরচ যোগ করলে দেশে দাম পড়বে ৯২ থেকে ৯৫ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করতে গেলে প্রতি কেজির দাম পড়বে ৫৪ টাকা। এর সঙ্গে শুল্ক-কর ও অন্যান্য খরচ যোগ করে দাম পড়বে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের মত ছিল, এ দামে চাল আমদানি কঠিন। তাই শুল্ক-কর তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে সরকার ২০ অক্টোবর এক দফায় চালের শুল্ক-কর সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামায়। শুল্ক কমানোর ফলে প্রতি কেজিতে আমদানি খরচ ১৪ টাকা ৪০ পয়সা কমে। তবে এরপরও আমদানির ঋণপত্র বাড়েনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শুল্ক-কর প্রথম দফায় কমানোর পর সেই পর্যন্ত মাত্র ২৬ টন চাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়। ট্যারিফ কমিশন বাকি শুল্ক-করও তুলে নেওয়ার সুপারিশ করে। তবে সুনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। ৩১ অক্টোবর এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) চালের শুল্ক পুরোপুরি তুলে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এদিকে খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মাসের শেষ দিকে তাদের গুদামে চালের মজুত ১০ লাখ টনের নিচে নেমে যায়, যা ১৫ আগস্ট ছিল প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টন। সরকারিভাবে বিতরণ বাড়ানোয় মজুত কমে যাওয়ার ব্যাখ্যা দেওয়া হয় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। এরপর আমদানিতে উৎসাহ দেওয়ার পরামর্শ আসে।

সে কারণে রপ্তানিকারক দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘জি টু জি’ ভিত্তিতে (সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি) চাল আমদানির বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে সরকার পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২ লাখ টনের বেশি চাল আমদানি করেছিল। পরের বছর আমদানি হয় এক হাজার টনেরও কম।

ইতোমধ্যে ভারত থেকে আমদানি করা চাল আসা শুরু হয়েছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১১ নভেম্বর ভারতীয় দুটি ট্রাকে চাল আমদানির প্রথম চালান দেশে প্রবেশ করে। ইতোমধ্যে মোট ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ ২৫ হাজার টন সেদ্ধ ও এক লাখ ৬২ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এলসির বিপরীতে বরাদ্দপ্রাপ্তরা চাল আমদানি করতে পারবেন।

খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমদানিকারকরা চাল আমদানি শুরু করেছেন। এরইমধ্যে হিলি বন্দর দিয়ে দেশে চাল এসেছে। সামনের দিনগুলোতে আরও চাল আসবে। আগামী সপ্তাহে বাজারে আমন চাল আসবে। আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে দাম কিছুটা হলেও কমবে।

আমদানির চাল দেশি চালের থেকে দামে বেশি হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা- এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাভ না হলে তো আমদানিকারকেরা আর আমদানি করবেন না। আমদানি করা চালের দাম দেশি চালের থেকে দুই এক এক বেশি ঠিক আছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্যে হলো বাজারে চালের সরবরাহ বাড়িয়ে দাম স্থিতিশীল রাখা। এজন্য আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর বাজারে সরবরাহ রাড়লে দাম এমনিতেই কমে যাবে। আমাদের উৎপাদন খরচটাও মাথায় রাখতে হবে।

সচিব বলেন, আমদানি ছাড়াও চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আছে। টিসিবির মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। তা বাড়ানো হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চালের বার্ষিক চাহিদা তিন কোটি ৭০ লাখ থেকে তিন কোটি ৯০ লাখ টন। গত অর্থবছরে তিন কোটি ৯০ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল উৎপাদন হয়েছিল। তারপরও বাজারে চালের দাম বেশি ছিল।

এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তবে দেশে আমদানি করা চাল আসছে। তারপরও কেন দাম কমছে না সে বিষয়ে সরকারকে কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকারের নজরদারিতে ঘাটতি রয়েছে, তদারকি আরও বাড়াতে হবে। সরকার এখন শুধু খুচরা পর্যায়ে তদারকি করছে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য উৎপাদক, করপোরেট, মিল, পাইকারি ও খুচরা— সব স্তরেই তদারকি করতে হবে, যা হচ্ছে না।

বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটা গোষ্ঠী কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে কৃষকের কাছে কোনো ধান নেই। করপোরেট পার্টিগুলো সব কিনে নিয়ে গুদাম ভরে রেখেছে। বিভিন্ন করপোরেট গুদামে গিয়ে মনিটরিং করতে হবে।

তার পরামর্শ, বাজারে সরবরাহ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া শুল্ক কমানোর পর এর সুবিধা একটি পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে, ভোক্তারা পাচ্ছেন না। এজন্য যেভাবে হোক বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এখন আমনের মৌসুম। সেই চাল বাজারে এলে দাম একটু কমবে বলে আশা করেন তিনি।

গত ৩১ আগস্ট বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ হয়। এ মৌসুমে ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, হয় ১১ লাখ ২৫ হাজার টন। আতপ চালও এক লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ হাজার টন বেশি হয়। তবে ধানের সংগ্রহ কম হয়েছে। আর বর্তমান আমন মৌসুমে ১০ লাখ মেট্রিক টন ধান চাল সংগ্রহ করা হবে।

অর্থনীতি

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও চাকরিপ্রত্যাশী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সব সনদ অনলাইনে সত্যায়ন নিশ্চিত করা গেলে বছরে কমপক্ষে ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ইউজিসি অডিটরিয়ামে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত ডিগ্রি নিয়ে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সনদ অনলাইনভিত্তিক অ্যাপোস্টিল প্ল্যাটফর্মে সত্যায়ন শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম।

ইউজিসির ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন এবং ট্রেনিং বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) ড. শাহ মোহাম্মদ তানভীর মনসুর।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, মন্ত্রিসভায় অ্যাপোস্টিল কনভেনশন স্বাক্ষরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিদেশগামী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন সনদ, দলিল, হলফনামা চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ১২৭টি দেশে পুনরায় সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না। অ্যাপোস্টিল পদ্ধতিতে বছরে প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজারের অধিক সার্টিফিকেট অনলাইনে সত্যায়ন করা সম্ভব হবে এবং এতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া, অ্যাপোস্টিল পদ্ধতিতে সার্টিফিকেট সত্যায়ন করা হলে শিক্ষার্থীদের সময় ও শ্রম সাশ্রয় হবে এবং ভোগান্তি কমে আসবে বলে তারা জানান।

কর্মশালায় বক্তারা আরও জানান, অনলাইনে সত্যায়ন করা হলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে এবং সত্যায়নে নকল প্রবণতা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য রোধ করা যাবে। অ্যাপোস্টিল পদ্ধতিতে প্রতিদিন ১০ হাজারের অধিক সনদ সত্যায়ন করা যাবে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়নে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘অ্যাপোস্টিলমাইগভ’ (apostille.mygov.bd) প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এটুআই এবং ইউজিসি উচ্চশিক্ষা স্তরের সার্টিফিকেট অনলাইনে সত্যায়ন বাস্তবায়ন করবে।

অনুষ্ঠানে ৪৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আইটি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. ফেরদৌস জামান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভূইয়া, জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান, স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং, কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স বিভাগের পরিচালক ড. দুর্গা রানী সরকার, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক মো. রেজাউল করিম হাওলাদারসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এটুআই এবং ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অর্থনীতি

নভেম্বরের প্রথম নয় দিনে প্রবাসী আয় এলো ৬৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাত হাজার ৮৬০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে)।

নভেম্বরের শুরুর নয় দিন প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছে সাত কোটি ২৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৮ ডলার। রোববার (১০ নভেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তথ্য অনুযায়ী, আগের মাস অক্টোবরে প্রতিদিন প্রবাসী আয় আসে সাত কোটি ৯৮ লাখ ৩৬ হাজার ডলার। আগের বছরের নভেম্বর মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় আসে ছয় কোটি ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬৭ ডলার।

আগের মাস অক্টোবরে সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছিল। অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর সেপ্টেম্বর মাসে আসে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার।

তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নভেম্বর মাসের ৯ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আসে ১৯ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার। কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আসে তিন কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪২ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে।

একক ব্যাংক হিসেবে সর্বোচ্চ প্রবাসীয় আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে, ১০ কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন আড়াই লাখ করদাতা

চলতি ২০২৪-২০২৫ করবর্ষে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজার। একই সময়ে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন ১০ লাখ ৫০ হাজার করদাতা।

রোববার (১০ নভেম্বর) বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন।

তিনি বলেন, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করদাতারা কর পরিশোধ করতে পারছেন এবং দাখিল করা রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, টিআইএন সনদ ডাউনলোড ও প্রিন্টের সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া পূর্ববর্তী বছরের দাখিল করা ই-রিটার্ন ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারছেন।

চলতি ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিল ও কর পরিশোধ পদ্ধতি গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা দিতে এনবিআর একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। অফিস চলাকালীন যে কোনো সময়ে কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে করদাতারা তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন বলে জানান এনবিআরের এই কর্মকর্তা।

এ ছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা ই-মেইলের মাধ্যমে জানাতে পারছেন, যা দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করছেন আয়করকারী গ্রাহকরা। একইসঙ্গে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বিষয়ক একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েব পেজ (www.nbr.gov.bd), ইউটিউব চ্যানেল www.youtube.com/@nbr.bangladesh এবং ফেসবুক পেজ www.facebook.com/nbr.bangladesh-এ পাওয়া যাচ্ছে।

আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ মেলার পরিবেশে করদাতাদের সব ধরনের সেবা দিতে ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কর তথ্যসেবা মাস। চলতি নভেম্বর মাসজুড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৪১টি কর অঞ্চলের ৮৬৯টি সার্কেলে অফিস চলাকালীন সময়ে পাওয়া যাবে করসেবা।

এর আগে তথ্য প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলগুলোর অধিক্ষেত্রভুক্ত সব সরকারি কর্মচারী, সব তফসিলি ব্যাংক, সব মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের পরিধি বাড়ছে।

অর্থনীতি

“তারা আমাদের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে। আশা করি, এ বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা সিদ্ধান্ত নেবে,” বলছেন নগর সংস্থার প্রধান নির্বাহী।

চার ব্যাংকে রাখা ২৯ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হলেও ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে থাকায় মুনাফাসহ সেই অর্থ তুলতে পারছে না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

এ পরিস্থিতিতে নগর সংস্থার তরফে গভর্নরের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

ওই চার ব্যাংক হচ্ছে- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর খায়রুল আলম বলেন, “ডিপোজিট ম্যাচিউরড হওয়ার পর সেটার জন্য এসব ব্যাংকে আমরা আবেদন করেছি। কিন্তু তারা আমাদের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে।

“আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি যে- এসব ব্যাংক আমাদের টাকা দিতে পারছে না। তবে এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। আশা করি, এ বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা সিদ্ধান্ত নেবে।”

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।

চিঠিতে ডিএনসিসি লিখেছে, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পান্থপথ মহিলা শাখা ও উত্তরা শাখায় ৪ কোটি টাকার এফডিআর ছিল।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কুড়িল বিশ্ব রোড শাখায় এফডিআর ছিল ১০ কোটি টাকার। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের প্রগতি সরণি শাখায় এর পরিমাণ ছিল ৫ কোটি টাকা। আর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখায় ১০ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিল ডিএনসিসি।

সংস্থাটি বলছে, স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় মুনাফাসহ টাকা উত্তোলনের জন্য জুলাইয়ের শুরুতে আবেদন করা হয়। তবে কাঙ্ক্ষিত সেই অর্থ পাওয়া যায়নি।

মুনাফাসহ সর্বসাকুল্যে পাওনার পরিমাণ কত তা ডিএনসিসির সিইও মীর খায়রুল আলম জানাতে পারেননি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখার ব্যবস্থাপক জাফরিন খন্দকারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোও ফোন কলে সাড়া দেয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এসব ব্যাংকে আমানতের বিপরীতে উচ্চ মুনাফার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। সে কারণে অন্য ব্যাংকে আমানত না রেখে এসব ব্যাংকে আগ্রহী ছিল অনেকেই।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে শেখ হাসিনার আমলে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

এসব দুর্বল ব্যাংককে সহায়তার প্রশ্নে সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ না দিয়ে আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সহযোগিতা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এরপর তারা সবল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে; এখন পর্যন্ত ৫টি সবল ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে।