অর্থনীতি

তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি কে করবে ?

ভেজাল ও মানহীন পণ্যে সয়লাব বাজার। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফলমূল, কসমেটিকসসহ মানুষের জীবন ধারণে ব্যবহৃত অধিকাংশ পণ্য ভেজালে ভরা। মানহীন তো বটেই। এমনকি বিষাক্ত কেমিক্যাল থাকা যেন সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এসব যাদের দেখার কথা তাদের দায় ও দায়িত্ব নিয়েই রয়েছে এন্তার প্রশ্ন। যদিও এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দেওয়া হয় দায়সারা জবাব। গৎবাঁধা অজুহাত থাকে-জনবল সংকট। অনেক সময় পর্যাপ্ত আইন না থাকার বিষয়টিও সামনে আনা হয়।

এদিকে এত্তসব প্রশ্নের বোঝা মাথায় নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে ৫৬তম বিশ্বমান দিবস। দিনটি পালনে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য : ‘সমন্বিত উদ্যোগে টেকসই উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে মান।’ বাস্তবতা হলো-এগুলো কাগুজে ভাষা। কাজের কাজ তেমন কিছুই হয় না। দিবস আসলে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে ফাঁকা আওয়াজ তোলা হয়। ব্যর্থতার কথা স্বীকার না করলেও কাছে বিএসটিআই তাদের সাফল্য সম্পর্কে দাবি জানিয়ে বলেছে, গত এক বছরে প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ১০২টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএসইটিআইর পরিচালক (সিএম) মো. সাইফুল ইসলাম রোববার বলেন, পণ্য ও সেবার মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই কাজ করছে। কিন্তু অসৎ ব্যবসায়ীদের নিত্যনতুন কৌশলের কাছে তাদের হার মানতে হচ্ছে। এ অবস্থা উত্তরণে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিদেশি ভেজাল স্ক্রিন কেয়ার পণ্য অবৈধভাবে দেদার দেশে আসছে। এগুলো ঠেকানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিদেশি অন্যান্য কসমেটিকসজাতীয় পণ্যও বেশি আসে। এসব পণ্যে অতিরিক্ত পরিমাণ হাইডোকুনান ও মার্কারিজাতীয় কেমিক্যাল থাকে, যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সাইফুল ইসলাম বলেন, বৈধভাবে এসব পণ্য এলে তা পরীক্ষা করে মান নিশ্চিতের মাধ্যমে বিএসটিআইর লোগো ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো পাচার হয়ে অবৈধভাবে দেশে আসে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিএসটিআইর লোগো ব্যবহারের জন্য আবেদন করতে হয়। এরপর পণ্যের মান যাচাই-বাছাই করে আমরা অনুমোদন দিয়ে থাকি।

বিএসটিআই আইন-২০১৮ এর ইনস্টিটিউশনের কার‌্যাবলিতে বলা আছে, স্থানীয় ব্যবহার, রপ্তানি বা আমদানি, যাহোক না কেন, পণ্যসামগ্রী, মালামাল, উৎপাদিত পণ্য এবং খাদ্যসামগ্রীসহ অন্যান্য দ্রব্যের গুণগত মান প্রত্যয়ন করা বিএসটিআইয়ের অন্যতম কাজ। প্রয়োজনের তুলনায় এই আইনের প্রয়োগ অত্যন্ত কম। এক্ষেত্রে বিএসটিআইর নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিদ্যমান আইন অনুসারে দেশে কোনো পণ্য বাজারজাত করার আগে বিএসটিআইর অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। সংস্থাটির প্রধান কাজ হলো-বিভিন্ন পণ্য, সেবা, প্রক্রিয়া, ওজন এবং পরিমাপের মান নিয়ন্ত্রণ করা। এর মধ্যে রয়েছে-শিল্পপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং কৃষিজাত পণ্যের জন্য জাতীয় মান তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, প্রণীত মান অনুযায়ী পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করা। মানসম্মত পণ্যকে গুণগত মান সনদ এবং লাইসেন্স প্রদান করা। এছাড়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়তা করা এবং তাদের কার্যক্রম তদারকি করে এ প্রতিষ্ঠান।

খাদ্য : দেশে বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্যে ভেজাল পাওয়া যাচ্ছে। ভেজাল খাদ্য তৈরিতে রাসায়নিক থেকে শুরু করে ভারী ধাতব পদার্থের মতো এমন উপাদান মেশানো হচ্ছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সরকারি তিনটি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান-পরবর্তী খাদ্যমান ও বিশুদ্ধতা যাচাই পরীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মাঠ পর্যায়ে সঠিক ও নিয়মিত তদারকির অভাবে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত ক্ষতিকর উপাদান মিশিয়ে ভেজাল খাদ্য তৈরি করছে, যার একমাত্র লক্ষ্য অতিমুনাফা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেজাল খাদ্যে থাকা রাসায়নিক ও ধাতব পদার্থের প্রভাবে কিডনি-লিভারসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেখা দিচ্ছে ক্যানসারের মতো জটিল রোগ। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য অনুযায়ী খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ভেজাল মেশানো হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বলা হচ্ছে, খাদ্যে ভেজাল মেশানো ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তারা বিচার ও শাস্তির ঊর্ধ্বে থেকে যাচ্ছে বলে ভেজাল রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

কসমেটিকস : দেশে কিছু অসাধু চক্রের সমন্বয়ে নকল, ভেজাল ও মানহীন কসমেটিকস পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে নকল কসমেটিকস তৈরির কারখানা। চরম গোপনীয়তার সঙ্গে এসব কারখানায় চলে নকল পণ্য উৎপাদনের মহোৎসব। এরপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় ঢাকাসহ সারা দেশে। পুরান ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রায়ই এসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু বন্ধ হয় না। অপরদিকে বিদেশ থেকে চোরাইপথে দেশে বিপুল পরিমাণ মানহীন প্রসাধনী প্রবেশ করছে। অবৈধভাবে কিংবা লাগেজে যেসব পণ্য আসছে, তাতে কোথাও আমদানিকারকের কোনো তথ্য থাকে না, থাকে না বিএসটিআইর লোগো। বিএসটিআই জানায়, গত এক বছরে সারা দেশে ১ হাজার ১০২টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় ২ কোটি ৫৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ঢাকায় শুধু প্রধান কার্যালয় থেকে ২২৩টি মামলা পরিচালনা করা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয় ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।

বিশ্বমান দিবস : বিশ্বমান দিবসকে সামনে রেখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এ বছর জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ১৭-কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে বিএসটিআই বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-আলোচনা সভা, প্রচার-প্রচারণা এবং মোবাইল ফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড লাগানো হয়েছে। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আজ সেমিনার করবে বিএসটিআই। সেখানে শিল্পসচিব ও ব্যবসায়ী নেতাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

বিএসটিআইর প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়েও পালিত হবে নানা কর্মসূচি। বিএসটিআই থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যকে (এসডিজি) প্রাধান্য দিয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত একই প্রতিপাদ্যে মান দিবস পালিত হবে। বিশ্বায়নের যুগে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূলে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ব্যবস্থা, রোবোটিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এ ধরনের প্রযুক্তি মানুষের জীবনব্যবস্থাকে করেছে আরও উন্নত, সহজতর, নিরাপদ ও সুরক্ষিত। এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য ও সেবা নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই।

অর্থনীতি

স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৬১৮ টাকা। ফলে এখন এক ভরি স্বর্ণে দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। একই সঙ্গে বেড়েছে রুপার দাম।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গত ০৯ অক্টোবর স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয় দুই লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে সেই রেকর্ড ভেঙে গেলো।

নতুন দাম অনুযায়ী, ভালোমানের ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৬১৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৪০৯ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৬৭৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ২১৯ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকা।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৬ হাজার ৯০৬ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ০৯ হাজার ১০১ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৬ হাজার ৫৯০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৯৯ হাজার ৫৯৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৬৫৭ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭১ হাজার ৮৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৮২৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৪২ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তার আগে ৮ অক্টোবর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৪৬৯ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ০২ হাজার ১৯৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৩৯৯ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৯৩ হাজার ০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২০১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৬৫ হাজার ৪৩০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ২৭ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৭২টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এরআগে ৭ অক্টোবর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৫০ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭২৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১০ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৯১ হাজার ৬০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৬৪ হাজার ২২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৩৬ হাজার ৪৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এরআগে গত ৫ অক্টোবর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৯৯ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৯৬ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৬১ হাজার ৬৫১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ৩৪ হাজার ২৫৩ টাকা নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি রুপার দামও বাড়ানো হয়েছে৷ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রূপার দাম ১ হাজার ২২৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২০৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ১৬৭ টাকা বাড়িয়ে ৫ হাজার ৯১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ৩ টাকা বাড়িয়ে ৫ হাজার ৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপার দাম ৭৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এরআগে গত ৯ অক্টোবর ভালোমানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৩২৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৯৮০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৩০৩ টাকা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৭৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২৬৯ টাকা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৭১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১৯৮ টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৫৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থনীতি

চলতি অক্টোবরের ১১ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশের মুদ্রায় ১২ হাজার ২৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২১.৭৫ টাকা)।

রোববার (১২ অক্টোবর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অক্টোবরেও প্রবাসী আয়ের উচ্চ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

অক্টোবরের ১১ দিনে প্রতিদিন প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮২ হাজার ৭২৭ ডলার। আগের বছরের অক্টোবরে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৩৬ হাজার ডলার। আর আগের মাস সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৯ হাজার ৩৩৩ মার্কিন ডলার।

প্রবাসীদের পাঠানো ১১ দিনের প্রবাসী আয়ের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যেমে এসেছে ২০ কোটি ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার; রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ৭০ হাজার ডরার; বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৮ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশে ব্যবসারত বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নাম ও লোগো ব্যবহার করে ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার ভুয়া প্রলোভন দেখাচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সতর্কতা জারি করে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ ও ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল’-এর নাম ও লোগো ব্যবহার করে https://dbbloan.com
, https://bblloan.com এবং https://www.bdloan71.com

নামের কিছু ভুয়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপ চালানো হচ্ছে। এসব প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বা আইএমএফ–এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এই সব অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশনের সময় ব্যবহারকারীর নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ নানা সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে করে সাধারণ মানুষ আর্থিক প্রতারণার শিকার হতে পারেন বা আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনসাধারণের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া বা দেওয়ার উদ্দেশ্যে অনলাইন বা অফলাইন যেকোনো প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা আইনত দণ্ডনীয়।

পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন, ২০২৪-এর ১৫(২) ধারা অনুযায়ী, এই ধরনের প্রতারণার জন্য কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

সাধারণ জনগণকে এ ধরনের ভুয়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান বা আর্থিক লেনদেন না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অর্থনীতি

“বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ব্যাংকাদের চেয়ে তারা বেশি স্মার্ট বলেই এত অর্থপাচার করতে পেরেছেন।”

স্বচ্ছ আর্থিক প্রতিবেদন না করা, নিরীক্ষকদের দায়িত্ব যথাযথ পালন না করা ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ব্যাংকারদের চেয়ে অর্থ পাচারকারীরা ‘বেশি স্মার্ট’ হওয়ায় দেশে অনেক ‘তেলেসমাতি’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিয়ে সোমবার অর্থনীতি বিষয়ক সংবাদকর্মীদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সেমিনার ও ইআরএফ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইআরএফ কার্যালয়ে ‘ফাইন্যান্সিয়াল ট্রান্সপারেন্সি ইন করপোরেট সেক্টর’ শীর্ষক সেমিনারে অর্থউপদেষ্টা বলেন, “অর্থপাচার হয় অনেক লেয়ার তৈরি করে। অনেকবার হাতবদল হয়ে শেষ পর্যায়ে নির্দিষ্ট স্থানে যায়। তারা অনেক বেশি স্মার্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ব্যাংকাদের চেয়ে তারা বেশি স্মার্ট বলেই এত অর্থপাচার করতে পেরেছেন।

“তারা স্মার্ট হওয়ায় আর্থিক খাতে অনেক তেলেসমাতি হয়েছে, আমি এখন টের পাই, কী যে হচ্ছে, না হচ্ছে। এজন্য নিরীক্ষকদের আরো বেশি দায়িত্ববান ও স্বচ্ছ হতে হবে। সাংবাদিকদের সোশাল অডিটটা করতে হবে, দেখবেন সবাই ঠিকঠাক কাজটি করছে কি না। আপনারা অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে দেখবেন সব তথ্য দেওয়া হচ্ছে কি না।”

শুধু ঘটনা প্রবাহ নয়, আর্থিক খাত নিয়ে সঠিক ও নির্ভুল বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন সরকার প্রত্যাশা করে মন্তব্য করে অর্থউপদেষ্টা বলেন, “আমাদের হাতে ম্যাজিক নেই। আমরা নেগেটিভ-পজেটিভ মিলিয়ে অর্থনীতি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সব যে ভালো করছি তা নয়, কিন্তু অনেক বিষয়ে ভালো হয়েছে।”

সালেহউদ্দিন বলেন, “এক অনুষ্ঠানে একজন অন্তর্বর্তী সরকারকে অথর্ব-টথর্ব বলে অনেক কথা বলেছে। দিস ইজ দ্যা ন্যারেটিভ অব সাম পিপল হু আর হেল্পিং দ্য ফ্যাসিস্টস। এটা ফ্যাসিস্টদের বয়ান। এই ন্যারেটিভগুলো বলে ফ্যাসিস্টকে আরও উৎসাহ দিচ্ছে।

“পড়ে তিনি আবার বলেছেন, এই সরকার টাকা পয়সা মারেনি, ব্যাংককে আরও স্টেবল করেছে, রিজার্ভ বেড়েছে। কিন্তু এভাবে তো সরকারের বিষয়ে খারাপ বার্ত দিচ্ছে ।”

দেশের বাইরে এখন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ‘অত্যন্ত ভালো’ দাবি করে সালেহউদ্দিন বলেন, “আমি অনেক অনেক দাতাগোষ্ঠী ও বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে কথা বলি। তারা বাংলাদেশকে ভালো বলছে।

“বাংলাদেশের মানুষ পরিশ্রমী, কর্মঠ। সবাই প্রত্যাশা করে, আগামীর দিনে অর্থনীতি আরো এগিয়ে যাবে।”

সাধারণভাবে কেউ চাইলে ১০০ ডলারের সমপরিমাণ অর্থও বিদেশে পাঠাতে পারেন না। কিন্তু অর্থপাচারকারিরা শত কোটি টাকা দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিতে পেরেছে। সেই প্রসঙ্গ ধরে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, “আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা আনার প্রথম দলিল হচ্ছে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন। অর্থপাচারকারীরা কি জাদু জানেন? আমি বুঝি না। তারা যে কোনো পরিমাণের অর্থ পাচার করতে পারে।”

কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদন স্বচ্ছ ও সঠিক হলে ‘কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না’ মন্তব্য করে এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “নিরীক্ষা প্রতিবেদন সঠিক হলে শেয়ার বাজারের কোনো শেয়ারের দর আকাশে উঠবে না, আবার পাতালে নামবে না। বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। ব্যাংক সঠিকভাবে ঋণ দিতে পারবে। ব্যাংক ও এফআরসি সৎভাবে কাজ করলে আর্থিক খাতের উন্নতি হবে, শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।”

পরে অর্থউপদেষ্টা ইআরএফ এর প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সংগঠনটির সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি এন কে এ মবিন উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের একটি ব্যাংকে থাকা আট কোটি ১০ লাখ ডলার বাজেয়াপ্তের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি বিশেষ আদালত। গত বৃহস্পতিবার আদালত এ আদেশ দেন। এই আদেশ ফিলিপাইনের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে আদালত থেকে এ আদেশের অনুলিপি সংগ্রহ করেছে সিআইডি। এটি তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটি ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ওই দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবে। পাশাপাশি এটি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দায়ের করা মামলার পক্ষের সহায়ক দলিল হিসাবে নিউইয়র্কের আদালতেও পাঠানো হবে।

রোববার সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ জানান, সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রাপ্ত তথ্য ও আলামত, ফিলিপাইন সরকারের সরবরাহকৃত পারস্পরিক আইনি সহায়তা অনুরোধের মাধ্যমে এ অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, সংগৃহীত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বিশেষ আদালত মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনে (আরসিবিসি) থাকা আট কোটি ১০ লাখ ডলার বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। তারা সেটি ফিলিপাইনের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। ফলে রিজার্ভের চুরি হওয়া টাকা ফেরত পেতে সহায়ক হবে। রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পক্ষে নিউইয়র্কের আদালতে রিজার্ভ চুরি মামলার শুনানির সময় ফিলিপাইনের নিয়োগ করা আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশের আদালতে একটি মামলা চলমান। ওই মামলার তদন্ত রিপোর্ট বা আদালতের আদেশের কপি মামলার বিষয়ে বড় একটি উপকরণ হতে পারে। তারা সেটি আদালতে উপস্থাপন করার আবেদন করেছিলেন। ফলে আদালত বাংলাদেশে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন বা আদালতের আদেশ চেয়েছিলেন। এতদিন সেটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন ঢাকার আদালতে রায় হওয়ার কারণে এটি দেওয়া সম্ভব হবে। এটি নিউইয়র্কের আদালতে দিলে তারা সেটি মামলার উপকরণ হিসাবে আমলে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে নিউইয়র্কের আদালতের রায় বাংলাদেশে অনুকূলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

একই কপি ফিলিপাইনেও পাঠানো হবে। তবে ফিলিপাইনে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন এ বিষয়ে কাজ করা বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তারা। কারণ ফিলিপাইনের আরসিবিসি দাবি করে আসছে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকজন জড়িত। এ হিসাবে তারা গত সরকারের আমলে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করেছে। তারা ওই তদন্ত প্রতিবেদনটি চেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে তা দেওয়া হয়নি। কারণ বলা হয়েছে, এটি বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়।

২০২৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিউইয়র্ক শাখায় থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলংকায় যায় দুই কোটি ডলার। সেটি বাংলাদেশ ওই সময়ই ফেরত পেয়েছে। ফিলিপাইনে যায় আট কোটি ১০ লাখ ডলার। এর মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে। বাকি ছয় কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংক থেকে ক্যাসিনোতে চলে গেছে। ফলে ওই অর্থ আর ফেরত পায়নি। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, ফিলিপাইন এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা ফিরিয়ে দেবে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী বলেন, দেশের আদালতের রায়টি পিলিপাইন বা আরও অন্য কোনো স্থানে পাঠানোর বিষয়ে আমরা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি। এখন তারা আদালতের রায় বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেবে।

সংবাদ সম্মেলনে ছিবগাত উল্লাহ বলেন, তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে আরসিবিসি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সিইও লরেঞ্জো ট্যান, জুপিটার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মাইয়া সান্তোস ডিগুইতো এবং ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও জুপিটার ব্রাঞ্চের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা পাঁচটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে চুরি হওয়া অর্থ পাচারে সরাসরি জড়িত ছিলেন। ফিলিপাইনের আদালত ইতোধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরসিবিসিকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা আশা করি দ্রুত সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে সঠিক চ্যানেলের মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে ফিরিয়ে আনতে পারব। এই রিজার্ভ চুরির সঙ্গে দেশি-বিদেশি যারা জড়িত তাদের সবার বিরুদ্ধে আমাদের তদন্ত চলমান আছে। আমরা দ্রুত এই মামলার চার্জশিট দিব। রিজার্ভ চুরির সঙ্গে শেখ হাসিনার পরিবারের কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তদন্তের শেষ পর্যায়ে আছি। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে দেশি-বিদেশি যারাই জড়িত থাকবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

অর্থনীতি

দখল ও লুটপাটের কারণে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। জুন প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আরও দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ পাঁচ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এভাবে খেলাপি ঋণ বেড়ে আগামীতে মোট ঋণের মধ্যে খেলাপির হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট আরও বেড়ে যাবে। কিছু দুর্বল ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের টাকা তুলতে আরও বেগ পেতে হবে। ব্যাংক খাতের এ সংকট আরও দীর্ঘ সময় থাকবে। এখন কার্যত ১২টি ব্যাংক দেউলিয়ার পর্যায়ে চলে গেছে। তারা আমানতকারীদের টাকা দিতে পারছে না। ১৫টি ব্যাংক অতিমাত্রায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার আটটিতেই (অর্ধেকের বেশি) লুটপাট হয়েছে।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ব্যাংক খাত নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএপি) ও জার্মানির ওটিএইচ অ্যামবার্গ ওয়েইডেন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বক্তব্য দিয়েছেন ব্যাংকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধের খসড়া গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মাহমুদ ওসমান ইমাম। বক্তৃতা দেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন ও ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসেন প্রমুখ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, এস আলম একাই পুরো ব্যাংক খাত ধ্বংস করে দিয়েছেন। আর তার সহযোগীরা আরও ধ্বংস করেছেন। এ খাত ঘুরে দাঁড়াতে আরও অনেক সময় লাগবে। ব্যাংক খাতে সংস্কারের যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো ইতিবাচক। কিন্তু সংস্কার হলেও রাজনৈতিক সরকার এসে সংস্কারকে আর চলমান রাখে না। পাশাপাশি যেসব সংস্কার সম্পন্ন হয়, সেগুলোরও ধারাবাহিকতা বজায় রাখে না। ফলে ব্যাংক খাতের অবস্থা আগের পর্যায়ে চলে যায় বা আরও অবনতি ঘটে।

বক্তারা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাত থেকে আওয়ামী লীগ সরকার একটি শক্তিশালী ব্যাংক খাত পেয়েছিল। কিন্তু তারা এর সুফল ধরে রাখতে পারেনি। বরং তারা সংস্কারগুলো আগের অবস্থায় নিয়ে যায়। যার ফলে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের লুটপাট হয়েছে। লুটপাটে ব্যাংক খাত ধ্বংস হয়েছে।

সেমিনারে ব্যাংক খাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা আরও বলেন, লুটপাটের টাকা বেশির ভাগই পাচার হয়ে গেছে। যে কারণে সেগুলো আদায়ের সম্ভাবনা নেই। ফলে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট বেড়েছে। এ সংকট আরও থাকবে।

সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যে দেশের প্রবৃদ্ধির জন্য বিদেশি বিনিয়োগ অপরিহার্য। সে দেশে বিশেষ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ আসতে পারে। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কম আসছে। বিনিয়োগ বাড়লে প্রবৃদ্ধি যেমন বাড়বে, তেমনি কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে। সংস্কারের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাতে সংস্কার চলছে। এটি চালিয়ে যাবে সরকার। ধরে রাখার দায়িত্ব নতুন সরকারের। বিগত সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে যেসব লুটপাট হয়েছে তাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ খাতকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো চ্যালেঞ্জিং।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, একজন মাত্র ব্যক্তি যেমন একটি ব্যাংক ধ্বংস করে দিতে পারে। উলটোভাবে এক দুজন সৎ পরিচালকও একটি ব্যাংকের সফলতার জন্য যথেষ্ট। দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ কোটি টাকা সমস্যাগ্রস্ত ঋণ। এসব ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত নেই। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাংকের সংখ্যা ৬০টি। বিদেশি ব্যাংক বাদ দিয়ে স্থানীয় ব্যাংক রয়েছে ৫০টি। এর মধ্যে কমবেশি ৪০টি ব্যাংকই মানসম্মত নয়। এগুলোর মধ্যে প্রায় ১৫টি ব্যাংককে বলা হচ্ছে একেবারে জম্বি ব্যাংক (অতিমাত্রায় দুর্বল)। এসব ব্যাংকের অর্ধেকেই সরাসরি লুটপাট হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ায় ৫০ শতাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক থাকার কথা বলা হয়েছে। একটি পরিবার একটি ব্যাংকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার রাখতে পারবে। তবে পরিবারের সংজ্ঞায় বিভিন্ন ধরনের আত্মীয়স্বজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাস্তবে দেশের ব্যাংক খাতে বড় লুটপাট হয়েছে বেনামি নামে, বৈধ শেয়ার মালিকানার কারণে নয়। বেনামিতে ব্যাংক লুটপাট বন্ধ করতে আইনি কাঠামো দরকার।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ব্যাংক খাতে সংকট এখনো কাটেনি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়ায় চার লাখ ২০ হাজার কোটি টাকায়। ২০২৫ জুনের হিসেবে খেলাপি ঋণ আরও দেড় লাখ কোটি টাকা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এভাবে খেলাপি ঋণ বাড়লে বিতরণ করা মোট ঋণের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। এর পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে অনেক আমানতকারী প্রয়োজনের সময় টাকা তুলতে পারছেন না। যা ব্যাংক খাতের অন্যতম বড় সংকট।

ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসেন বলেন, স্বতন্ত্র পরিচালক ও ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মৌলিক নীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। একইভাবে রেটিং এজেন্সিগুলোর জবাবদিহি বাড়াতে হবে। বর্তমানে ১২টি ব্যাংক কার্যত দেউলিয়া। তারা আমানত ফেরত দিতে পারছে না। প্রশ্ন হলো, রেটিং এজেন্সিগুলো আগে কী বলেছিল? কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরীক্ষা প্রতিবেদনগুলো কী বলছে? প্রায়ই শোনা যায়, ব্যাংকের ব্যবস্থাপকেরা চাকরি হারানোর ভয়ে বাধ্য হয়ে অনিয়মে সায় দিয়েছেন।

তিরি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা কাগজ-কলমে নয়, বাস্তবেও তা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো, যেগুলো বড় অনিয়মের জন্য দায়ী, সেগুলোর ওপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। শুধু পরিদর্শন নয়, অনিয়ম হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তাৎক্ষণিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।

মূল প্রবন্ধে মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, আর্থিক খাত সংস্কার জটিল ও ব্যয়বহুল। দেশে যেমন কয়েকটি ভালো ব্যাংক আছে, আবার দুর্বল ব্যাংকও আছে। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার মোট বিতরণ করা ঋণের ৯০ শতাংশের উপরে। দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকর স্বাধীনতা দিতে হবে। ব্যাংক খাতের পর্ষদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে এক পরিবারের সর্বোচ্চ দুজন পরিচালক বোর্ডে থাকতে পারবেন। বোর্ড সদস্যদের মেয়াদ ১২ বছর থেকে কমিয়ে ছয় বছর করতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারম্যান ও নির্বাহী চেয়ারম্যানও মালিকপক্ষের বাইরের কেউ থাকা উচিত। এতে ব্যাংক পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়বে।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৭৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

গত বছর একই সময়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৪৩০ মিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা ৬ হাজার ৬৬৯ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫ হাজার ৫৬৮ মিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতি

কোটি টাকার বেশি রয়েছে এমন হিসাবে জুন শেষে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা।

দেশের ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা জমা রাখা হিসাবের সংখ্যা জুন প্রান্তিক শেষে আগের তিন মাসের চেয়ে বেড়েছে প্রায় ছয় হাজারটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ বিষয়ক হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে এক কোটি টাকা স্থিতি রয়েছে এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টি।

তিন মাস আগে মার্চ প্রান্তিক শেষে এমন হিসাব ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি। এ হিসাবে তিন মাসে বেড়েছে ৫ হাজার ৯৭৪টি ব্যাংক হিসাব।

কোটি টাকার বেশি ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে বেড়েছে এগুলোতে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণও। জুন শেষে এসব হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ বা আমানত দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। তিন মাস আগে যা ছিল ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা।

সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন শেষে দেশে ব্যাংক খাতে মোট হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। তিন মাসে মোট ব্যাংক হিসাব বেড়েছে ৩২ লাখ ৯৫ হাজার। গত মার্চ শেষে তা ছিল ১৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮২১টি।

ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে আমানতের পরিমাণও বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসে আমানত বেড়েছে প্রায় ৭৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।

কোটি টাকার হিসাবের তথ্য দিলেও এসব হিসাবের মালিকানা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কতটি সে তথ্য দেয় না বাংলাদেশ ব্যাংক।

এছাড়া এক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একাধিক ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করার সুযোগ থাকায় কোটি টাকা জমা রাখা গ্রাহকের সংখ্যা কত সেটিও প্রকাশ করা হয় না।

অর্থনীতি

মানুষ এখন আওয়ামী লীগকেই সবচেয়ে বড় রাজাকার মনে করে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফারুকী বলেন, ‘রাজাকারের আক্ষরিক অর্থের বাইরে রাজনৈতিক অর্থটা কী? রাজনৈতিক অর্থ হইলো এই যে, রাজাকার সেইসব ব‍্যক্তি যারা নিজের দেশ এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে অ‍ন‍্য দেশের হয়ে কাজ করে। এই সূত্র ধরে আগাইলে এই সময়ে কাদেরকে রাজাকার মনে হয়? জ্বি, যাদের ভাবছেন তারাই। ’

‘কিছুদিন আগে আমার একটা লেখায় লিখছিলাম মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক নেতৃত্বদানকারী দলটা কী করে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হয়ে উঠলো এটা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রদের কাছে একটা ইন্টারেস্টিং থিসিসের বিষয় হতে পারে। ’

ফারুকী বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মানেটা কী? মানে যারা নিজের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অন‍্য কারও পায়ের নিচে বিকিয়ে দেয়। এই ১৬ বছরের মতো পরাধীন বাংলাদেশ আর কবে ছিল? ফলে মানুষ এখন আওয়ামী লীগকেই সবচেয়ে বড় রাজাকার মনে করে। এই বাস্তবতায় রাজাকার কার্ডের পুরনো ব‍্যবহার যে খারিজ হয়ে গেছে এটা চব্বিশের ১৪ জুলাই সেটেলড হয়ে গেছে। ’

‘৪৭-এর নায়ক ৭১-এ ভিলেন, আবার ৭১-এর নায়ক ২৪-এর ভিলেন হয়ে যেতে পারে, কারণ সমসাময়িক বাস্তবতাই নায়ক বা ভিলেন নির্ধারণ করে দেয়। ৭১-এ যার যা ভূমিকা সেটা ওইরকমই থাকবে। কিন্তু ৭১ দিয়ে ২৪ এবং তৎপূর্ববর্তী ষোলো বছরের পাপ ঢাকা যাবে না। ৭১-এর শহীদেরা ২৪-এর খুনিকে বাঁচাতে আসবে না’, যোগ করেন ফারুকী।