আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোনে কথা বলেছেন। সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুই নেতার মধ্যে এ ফোনালাপ হয়।

এদিন ফোনালাপের পর এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। তারা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপসহ আঞ্চলিক অনেক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।

গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প বেশ কিছু অভিবাসন-সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছেন।

সোমবারের ফোনালাপ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আলোচনায় প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, ট্রাম্প ভারতের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বেশি কেনার ওপর জোর দিয়েছেন এবং দুই দেশের মধ্যে ‘ন্যায্য’ বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

ফোনালাপ নিয়ে এক্স (আগের টুইটার) হ্যান্ডলে মোদি ট্রাম্পকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে লেখেন, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। আমরা পারস্পরিক লাভবানযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য অংশীদারত্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের জনগণের কল্যাণ এবং বৈশ্বিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার দিকে একসঙ্গে কাজ করব।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত নাগরিকদের শনাক্ত করে দেশে ফিরিয়ে নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সহযোগিতা করতে এবং বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে এই পদক্ষেপ নয়াদিল্লির প্রাথমিক সংকেত।

প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে শনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য ভারত তাদের পরিচয় যাচাই করে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পরিচয় প্রকাশ না করে তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ভারতীয়দের সংখ্যা ১৮ হাজারের অনেক বেশি হতে পারে। কারণ, এটি স্পষ্ট নয় যে কতজন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পশ্চিম ভারতের, বিশেষ করে পাঞ্জাব ও গুজরাট রাজ্যের।

অন্যান্য অনেক দেশের মতো ভারতও ট্রাম্প প্রশাসনকে সন্তুষ্ট করতে এবং তার বাণিজ্য হুমকির প্রভাব এড়াতে পর্দার আড়ালে কাজ করছে। অবৈধ অভিবাসন দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি ছিল।

আন্তর্জাতিক

কূটনৈতিক সেবার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সৌদি আরবের বিদায়ি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলানকে পদক দিয়েছে সরকার।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মঙ্গলবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতকে ‘বাংলাদেশ ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স মেডেল’ প্রদান করেন।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ব্যাপ্তি ও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি দেশটিতে কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া চীন, রাশিয়াসহ ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও ছিলেন।

পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তৌহিদ হোসেন বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। দেশটিতে থাকা ৩০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন রয়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে সৌদি বিনিয়োগ এই বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে। উভয় দেশ বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতির পক্ষে সমর্থন জানানোর ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকেছে।

আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। ‘বাংলাদেশ মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স’ পাওয়ায় সৌদি রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান তৌহিদ হোসেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলান বলেন, মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স প্রদান করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ এখানকার রাষ্ট্রদূতদের কাজে আরও উৎসাহিত করবে। তবে এটা শুধু আমার অর্জন নয়, আমার মিশনের সব কর্মকর্তার পরিশ্রমের ফসল।

পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

বিদেশি ও স্থানীয় কূটনীতিকদের জন্য শেখ হাসিনার সরকার ‘বঙ্গবন্ধু মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স’ চালু করে। অন্তর্বর্তী সরকার বঙ্গবন্ধু শব্দটি বাদ দিয়ে মেডেলটির নতুন নাম দিয়েছে ‘বাংলাদেশ মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স’।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাহায্য কমানোর সিদ্ধান্তকে ‘প্রত্যাশিত’ উল্লেথ করে বলেছেন, ইউএসএআইডি’র সাহায্য সাময়িক স্থগিতকরণ কোনো নির্দিষ্ট দেশের জন্য নয়।

মার্কিন বৈশ্বিক সাহায্য-সহযোগিতা সম্পর্কিত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি কোনো বিশেষ দেশের জন্য নির্দিষ্ট নয়।

আজ বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

সম্প্রতি দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশে সহায়তা কর্মসূচি পর্যালোচনার জন্য মার্কিন সাহায্য সকল দেশের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট দেশ এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য নয়।

আদেশ জারির পর, মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে চলমান সকল প্রকল্প ও কর্মসূচির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে তহবিল স্থগিত করার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে, বাংলাদেশ সরকারকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা হয়নি।

বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তৌহিদ বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে এটি নিশ্চিত করতে পারছি না, কারণ আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য পাইনি। তবে, ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এটা প্রত্যাশিত। তিনি (মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প) নির্বাচনের আগেই বলেছিলেন যে, তিনি এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করবেন। তারা পুনর্বিবেচনার জন্য সময় নিয়েছেন, তারা এটাই বলেছিলেন। ধারণা করা যেতে পারে যে, এই ধরনের তহবিল হ্রাস পাবে; এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে সকলেই উদ্বিগ্ন।’

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বার্ষিক তহবিলের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে তৌহিদ বলেন, ‘আমরা একটি নতুন বাস্তবতায় প্রবেশ করছি, এবং এতে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়।’

উপদেষ্টা বলেন, নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন নীতি চালু করেছেন যা তার পূর্বসূরিদের নীতি থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত ফলাফল দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে এবং সে অনুযায়ী মানিয়ে নিতে হবে। নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিলে আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কৌশলগতভাবে কাজ করতে হবে।’

এদিকে ইউএসএইড বাংলাদেশ অফিসের পরিচালক রিচার্ড অ্যারন আজ ইউএসএআইডির সাথে চুক্তিবদ্ধ সকল স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থাকে অবিলম্বে তাদের ব্যয় বন্ধ করার নির্দেশ সম্বলিত একটি নির্দেশনা জারি করেছেন।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ইউএসএআইডির বাংলাদেশ কার্যালয়ের পরিচালক রিচার্ড বি অ্যারন শনিবার সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সব স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠনের জন্য এ নির্দেশনা জারি করে চিঠি দেন।

এতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির আওতাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির মার্কিন অংশের ব্যয় বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

এ নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস গত ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক নির্দেশের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এদিকে ইউএসএআইডির অধিগ্রহণ ও সহায়তা বিষয়ক কার্যালয়ের পরিচালক ব্রায়ান অ্যারনের পাঠানো চিঠিটির শিরোনাম, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ: যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তার পুনর্মূল্যায়ন ও পুনর্সামঞ্জস্যকরণ।’

চিঠিতে বলা হয়েছে, এই চিঠিটি ইউএসএআইডি-বাংলাদেশের সব বাস্তবায়ন অংশীদারদের প্রতি একটি নির্দেশিকা হিসেবে পাঠানো হচ্ছে। যাতে আপনার সংশ্লিষ্ট ইউএসএআইডি-বাংলাদেশ চুক্তি, কার্যাদেশ, অনুদান, সমন্বিত চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা সরঞ্জাম অধীনে করা কোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ, থামানো বা স্থগিত করা হয়।

এতে অংশীদারদের সঙ্গে যেসব কাজ চলছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচনের জন্য সব যুক্তিসংগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ইউএসএআইডির অর্থায়নে চলমান সব প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য অধস্তনদের নির্দেশ নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত বছর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে মার্কিন দূতাবাস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্যনিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আরও অনেক কিছু মোকাবিলায় ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘ফরেইন অ্যাসিস্ট্যান্স ডট গভ’ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে ২০২১ সালে ৫০০ মিলিয়ন ডলার, ২০২২ সালে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালের ৪৯০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে দেশটি। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে ওয়াশিংটন বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। বিগত কয়েক বছরে মার্কিন সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০—এর মধ্যেই ছিল।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল ও মিসরের জন্য সামরিক সহায়তাকে মার্কো রুবিও নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়েছে। গাজা যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে আরও বড় সামরিক প্যাকেজ দিচ্ছে। মিসর ১৯৭৯ সালে ইসরাইলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় অঙ্কের প্রতিরক্ষা তহবিল পেয়ে আসছে। বাংলাদেশে খুব বেশি না হলেও সামান্য পরিমাণে সহযোগিতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন এই আদেশ অনুসারে, বাংলাদেশে সামরিক সহযোগিতার পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

একই সঙ্গে এই নির্দেশনা অন্তত কয়েক মাসের জন্য মার্কিন সহায়তায় পরিচালিত পিইপিএফএআর কর্মসূচি বন্ধ রাখারও ইঙ্গিত দেয়। পিইপিএফএআর হলো এইচআইভি/এইডসবিরোধী কর্মসূচি, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষ করে, আফ্রিকার দেশগুলোর রোগীদের জন্য অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল ওষুধ সরবরাহ করে।

২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসনামলে চালু হওয়া এই কর্মসূচি প্রায় ২৬ মিলিয়ন মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্য খাতে যে সহায়তা দেওয়া হতো বাংলাদেশে তাও বন্ধ হতে পারে।

ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরেই বৈদেশিক সাহায্যকে তার পররাষ্ট্রনীতির একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়, যা চীনের থেকে আলাদা। কারণ, চীন সাধারণত প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের দিকে বেশি মনোযোগী। ৮৫ দিনের মধ্যে সব বৈদেশিক সাহায্য পুনর্মূল্যায়নের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ডলারের হিসাবে বিশ্বের শীর্ষ দাতা দেশ। তবে ইউরোপের কিছু দেশ, বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো, তাদের অর্থনীতির আকারের আনুপাতিক হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি দেয়। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৬৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বৈদেশিক সাহায্য দিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ৯০ দিনের জন্য বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করেন। তবে এটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা তখনই স্পষ্ট ছিল না। দারিদ্র্যবিরোধী সংগঠন অক্সফাম বলেছে, ট্রাম্প বৈদেশিক সাহায্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের ঐকমত্য থেকে সরে আসছেন।

আন্তর্জাতিক

জ্যোতিষশাস্ত্র সম্ভাবনার কথা বলে। কোনো কিছু নিশ্চিতভাবে হবে কিংবা ঘটবে তা বলে না।

রাশি অনুযায়ী এই সপ্তাহ কেমন যেতে পারে জেনে নিন।

পাশ্চাত্য রাশিচক্রমতে চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহগত অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে চলতি সপ্তাহের বিভিন্ন রাশির জাতক জাতিকাদের নানান বিষয়ের শুভাশুভ পূর্বাভাস ও সতর্কতা জানাচ্ছেন জ্যোতিষশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ ড. গোলাম মাওলা।

মেষ রাশি (২১ মার্চ – ১৯ এপ্রিল) সপ্তাহের শুরুতে আরও ভালো পেশার সম্ভাবনায় গৃহীত সফর বাস্তবায়িত হতে পারে। দূরের আত্মীয়রা যোগাযোগ করতে পারে। কর্মক্ষেত্রে একটি চমৎকার সময় বলে মনে হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়দের সাহায্য করার ক্ষমতা আপনার জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে। সপ্তাহের মাঝদিকে আপনার তরফে বেশি কিছু না করেই অন্যদের নজর আকর্ষণ করার জন্য আদর্শ সময়। আপনার সিদ্ধান্তে অভিভাবকের সহায়তা আপনাকে সাহায্য করবে। সপ্তাহের শেষদিকে দান করার মনোভাব গোপন আশীর্বাদ হতে পারে। হয়ত অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

বৃষ রাশি (২০ এপ্রিল – ২০ মে) সপ্তাহের শুরুতে রাস্তায় থাকার সময় বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও ঝুঁকি নেওয়া ‍উচিত নয়। একটি আনন্দ সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা শক্তি ও আবেগকে আবার নতুন করে তুলবে। আর শিক্ষামূলক হবে। সপ্তাহের মাঝদিকে মানুষ আপনার প্রচেষ্টার জন্য কর্মক্ষেত্রে আপনাকে চিনতে পারবে। যদি কর্মক্ষেত্র থেকে ফোন সরিয়ে না রাখেন তবে খুব ভুল করবেন। সপ্তাহের শেষদিকে স্নেহ মমতা আপনাকে উৎসাহিত করতে পারে। তুচ্ছ বিষয়ে মেজাজ হারানোর উচিত নয়। যেহেতু এটা শুধু স্বার্থেরই ক্ষতি করবে। অতীতের সুখ স্মৃতি ব্যস্ত করে রাখবে।

মিথুন রাশি (২১ মে – ২০ জুন) সপ্তাহের শুরুতে খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীদের জন্য সময় ভালো। কারণ অপ্রত্যাশিত লাভ অর্জন করতে পারেন। সঙ্গীর সঙ্গে জীবনের সব থেকে রোমান্টিক সম্পর্ক হবে। সঙ্গী পৃথিবীতেই স্বর্গের সুখ উপলব্ধি করাতে পারে। রক্তচাপের রোগীরা নিয়মিত ওষুধ গ্রহণের প্রতি লক্ষ রাখা উচিত। সপ্তাহের মাঝদিকে একটি আনন্দ সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা ভ্রমণ ও শিক্ষামূলক এবং আপনার সচেতনতাকে বাড়িয়ে তুলবে। প্রেম ঘটিত যোগাযোগ বাড়াবে। সপ্তাহের শেষদিকে কর্মক্ষেত্রে একজন অসাধারণ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হতে পারে। সামঞ্জস্যপূর্ণ কঠর পরিশ্রম এ সময় সত্যি ভালো ফল দিতে পারে।

কর্কট রাশি (২১ জুন – ২২ জুলাই) সপ্তাহের শুরুতে মিশ্র আবেগ দেখা দেবে যা আপনাকে উত্তেজিত রাখবে। তবে বেশি চিন্তার প্রয়োজন নেই, কারণ হতাশার চাইতে সুখ বেশি আনন্দ দেবে। যৌথ ব্যবসায়ে ও সন্দেহজনক আর্থিক স্কিমে বিনিয়োগ করবেন না। পরিবার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, পরিবারের সঙ্গে সময় উপভোগ করতে পারবেন। সপ্তাহের মাঝদিকে রাস্তাপার করার সময় সতর্ক থাকুন। বিশেষত লাল সিগনালে। কারও অবহেলা আপনাকে আহত করতে পারে। যৌথ উদ্যোগ ও অংশহীদারিত্ব থেকে দূরে থাকুন। সপ্তাহের শেষদিকে ধারণা শক্তি বেশ ভালো। বিমূর্ত বিজ্ঞানের অনুসন্ধানে রত হওয়ার যোগ। অন্তর্নিহিত সত্য সন্ধানে সদা ব্যাকুল। বিদেশ ভ্রমণের মাধ্যমে লাভবান।

সিংহ রাশি (২৩ জুলাই – ২২ অগাস্ট) সপ্তাহের শুরুতে ভালোবাসার জীবনে সত্যি সত্যি অসাধারণ কিছু বয়ে আনবে। অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা থেকেই মনটি আঘাত প্রাপ্ত। বড় ধরনের পরিকল্পনা বাদ দিন। ছোটখাট ব্যাপারে নিজেকে লিপ্ত রাখলে লাভবান হবেন বেশি। সপ্তাহের মাঝদিকে জনগনের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ হতে পারে। যেখানে বিচরণ সেখানেই জনপ্রয়তা। কারও একটা জীবন আপনার জীবনের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। সপ্তাহের শেষদিকে দীর্ঘ ভ্রমণের সময় বিপদ হতে পারে। জন সম্মুখে বেশ রটনা রটতে পারে। কোনো জাতীয় দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়বার সম্ভাবনা। উচ্চ রক্তচাপের কোনো সমস্যা থাকলে সাবধান।

কন্যা রাশি (২৩ অগাস্ট – ২২ সেপ্টেম্বর) সপ্তাহের শুরুতে বন্ধুদের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ করতে পারবেন। গার্হস্থ্য জীবনে বেশ আগ্রহ দেখা দেবে। জানতে পারবেন যে, ভালোবাসার সঙ্গী-ই একমাত্র জন, যিনি অনন্তকাল পর্যন্ত আপনাকে ভালোবাসবে। সপ্তাহের মাঝদিকে দুশ্চিন্তার ভাবনাগুলো আপনার খুশিকে নষ্ট করতে পারে। এটি হতে দেবেন না। কারণ এটি শুধু ধ্বংসাত্মক ঘটনাকেই মেনে চলে। সপ্তাহের শেষদিকে ব্যবসায়ে নতুন বিনিয়োগ বেশ লাভজনক হবে। বিয়েকে এ সময় একটি চমৎকার পর্যায়ে পাবেন। সত্যিই বৈবাহিক জীবনের ওপর আসা বিষয়গুলো অবিশ্বাস্য হবে।

তুলা রাশি (২৩ সেপ্টেম্বর – ২২ অক্টোবর) সপ্তাহের শুরুতে সেই সব আত্মীয়দের কৃতজ্ঞতা জানান যারা বিপদের সময় আপনাকে সাহায্য করেছে। পারিবারিক শান্তি বজায় থাকবে। এসময় বাড়ির লোকজনের মধ্যে ভাতৃত্ব ও পারস্পরিক ভালোবাসা স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। সপ্তাহের মাঝদিকে শিশুদের সমস্যা মোকাবিলা করতে কিছু সময় ব্যয় করুন। নতুন সম্পর্কগুলো দীর্ঘস্থায়ী ও অত্যন্ত লাভদায়ক হবে। ফোন কল দীর্ঘ করার জন্য রোমান্টিক সঙ্গীকে জ্বালাতন করবেন। সপ্তাহের শেষদিকে কিছু শারীরিক সমস্যা পীড়া দিতে পারে। স্বাস্থ্য হল আসল সম্পদ। অলসতা থেকে মুক্তি পান ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করুন। গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিশেষ যত্নের সময়।

বৃশ্চিক রাশি (২৩ অক্টোবর – ২১ নভেম্বর) সপ্তাহের শুরুতে যদি বাড়তি উপার্যনের উপায় খোঁজেন তবে নিরাপদ আর্থিক পরিকল্পনাগুলোতে বিনিয়োগ করুন। বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয়রা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। সপ্তাহের মাঝদিকে কোনো পুরানো বন্ধুর সঙ্গে পুনঃমিলন উদ্দীপনা বাড়িয়ে তুলবে। আর্থিক ক্ষেত্রে উন্নতি আপনার পক্ষে জরুরি। সম্পত্তি সংক্রান্ত কারবার বাস্তবায়িত হবে। আর অবিশ্বাস্য লাভ এনে দেবে। সপ্তাহের শেষ দিকে সঙ্গীর থেকে দূরে সরে থাকা অত্যন্ত কঠিন হবে। প্রেমে ধীরে ধীরে কিন্তু নিয়মিতভাবে পুড়তে থাকবেন।

ধনু রাশি (২২ নভেম্বর – ২১ ডিসেম্বর) সপ্তাহের শুরুতে ক্ষিপ্রগতিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান হবে। নির্দিষ্ট কিছু জরুরি পরিকল্পনা নির্বাহিত হওয়াতে নতুন অর্থনৈতিক লক্ষ্য এনে দেবে। সপ্তাহের মাঝদিকে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে সামাজিক বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করতে পারেন। অনেক বেশি অতিথির আগমন আপনার সপ্তাহান্তের মেজাজ নষ্ট করে দিতে পারে। সপ্তাহের শেষদিকে কাজে সম-মানসিকতার বন্ধুদের সাহায্য নিন। তাদের সময়োচিত সাহায্য আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও লাভদায়ক হবে। আর দুর্দান্ত সময় হতে চলেছে।

মকর রাশি (২২ ডিসেম্বর – ১৯ জানুয়ারি) সপ্তাহের শুরুতে বুঝে খরচ করুন। আজেবাজে খরচ না করতে চেষ্টা করুন। আর্থিক সীমাবদ্ধতা এড়াতে বাজেটে আটকে থাকুন। একটি বিশেষ সময় যেহেতু ভালো স্বাস্থ্য আপনাকে লক্ষ্যনীয় কিচু করতে সক্ষম করবে। সপ্তাহের মাঝদিকে তাড়াহুড়া করে সিদ্ধান্ত নেবেন না। বিশেষ করে বড় আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে। রক্ষণশীল বিনিয়োগ করে আরও বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সপ্তাহের শেষদিকে চমক দিয়ে ভাই/বোন আপনাকে উদ্ধার করতে আসবে। একে অপরকে খুশি করার জন্য প্রয়োজন সমর্থন করার আর ঘনিষ্ট সহযোগিতায় কাজ করা।

কুম্ভ রাশি (২০ জানুয়ারি – ১৮ ফেব্রুয়ারি) সপ্তাহের শুরুতে পরোপকার ও সামাজিক কাজের দিকে আকৃষ্ট হবেন। ভালো কাজের সময় দিয়ে জীবনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনতে পানে। আকস্মিক অপ্রত্যাশিত খরচ আর্থিক চাপ প্রয়োগ করতে পারে। সপ্তাহের মাঝদিকে এমন পরিবর্তন করুন যা আপনার উপস্থিতিকে উন্নত করে আর সম্ভাব্য সঙ্গীদের আকর্ষণ করে। নতুন ধারণা পরীক্ষা মূলক প্রয়োগের আদর্শ সময়। সপ্তাহের শেষদিকে পরিচিত মানুষদের মাধ্যমে উপার্জনের নতুন উৎস সৃষ্টি হবে। ভালো ধারণায় পূর্ণ থাকবেন। আর পছন্দের ক্রিয়াকলাপ প্রত্যাশ বহির্ভূত লাভ দেবে।

মীন রাশি (১৯ ফেব্রুয়ারি – ২০ মার্চ) সপ্তাহের শুরুতে মোবাইল ফোন কর্মক্ষেত্রে ঝামেলা সৃষ্টি করতে পারে। এটাকে বেশি ব্যবহার করবেন না। ভালোবাসার উচ্ছাসে স্বপ্ন ও বাস্তবতা এ সময় মিশে যাবে। মানসিক শান্তির জন্য কিছু দান ও দাতব্য কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। সপ্তাহের মাঝদিকে পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন শপিং সেন্টারে যেতে পারেন। তবে এটি আপনার ব্যয়কেও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সপ্তাহের শেষদিকে লক্ষ্যের প্রতি নীরব কাজ করে যান। সাফল্যে পৌঁছানোর আগে উদ্দেশ্যগুলো প্রকাশ করবেন না। কামদেব জীবনে প্রেমের ঝরনা বওয়াতে অগ্রধাবন করবেন।

আন্তর্জাতিক

ক্ষমতার মসনদে বসেই একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিশ্র“তি পূরণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। এবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেল তার কণ্ঠে।

ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না করলে শুল্ক আরোপের পাশাপাশি আরও বেশি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে রাশিয়া। ফলে যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যেই চাপে থাকা রাশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে বেশ উদ্বেগেই আছেন পুতিন। রয়টার্স।

নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনকে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে না হলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বুধবার ট্রাম্প এই প্রথমবার পুতিনকে নিয়ে মুখ খুললেন।

তিনি বলেছেন, ‘এখনই মীমাংসা করুন, এই হাস্যকর যুদ্ধ থামান। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আপনি যদি চুক্তি না করেন, তাহলে রাশিয়া ও যুদ্ধে অংশ নেওয়া অন্য দেশের বিরুদ্ধে চড়া হারে কর, শুল্ক বসানো ও আরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছাড়া আমার সামনে কোনো বিকল্প থাকবে না।’

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে এই যুদ্ধ শুরুই হতো না। চুক্তি করার জন্য এটাই সেরা সময়। আর কোনো জীবন যেন নষ্ট না হয়। নির্বাচনি প্রচারের সময় ট্রাম্প অবশ্য বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলে যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ হবে তা তিনি বলেননি। এখন আরও নিষেধাজ্ঞা বলতে ট্রাম্প কী বোঝাচ্ছেন সেটাও স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউক্রেন অভিযানের কারণে একগাদা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত দুবছরে তেল, গ্যাস ও খনিজ রফতানি নির্ভর রুশ অর্থনীতির আকার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সামলাতে উচ্চ সুদহারে একদিকে যেমন অভ্যন্তরীণ ব্যবসার গতি কমে গেছে, তেমনি কর্মী সংকটে দৈনন্দিন কাজ কর্মও চালানোও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সোমবার হোয়াইট হাউজে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন ট্রাম্প।

প্রচারণার সময় থেকেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দ্রুত অবসান ঘটানোর অঙ্গীকার করে আসছেন তিনি। ট্রাম্প পুতিনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সমঝোতায় রাজি না হলে রুশ অর্থনীতি বড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।

তিনি প্রয়োজনে মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দিতে দ্বিধা করবেন না। তবে আলোচনায় বসার জন্য নির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব রাশিয়া এখনো পায়নি বলে মঙ্গলবার দাবি করেছেন ক্রেমলিনের এক কর্মী।

এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছেন পুতিন। তবে তার শর্ত হচ্ছে, পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের খায়েশ ইউক্রেনের ত্যাগ করতে হবে এবং দেশটিতে ইতোমধ্যে রাশিয়ার কব্জায় আসা এলাকার দাবি ছেড়ে দিতে হবে।

আন্তর্জাতিক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়ানো বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগের সাথে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ধনী ব্যক্তি এবং রাজনীতিবিদরা তার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের লাখ লাখ ডলারের সম্পদ লুট করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন এই ব্যক্তিরা তাদের সম্পদ ব্যবহার করে বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে।’

নিক ক্লেগ ইংল্যান্ডের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন-বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফেসবুক বাংলাদেশে তথ্য যাচাই এবং ডিজিটাল যাচাই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের তথ্য যাচাই বন্ধের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ এবং ইউরোপের দেশগুলোতে প্রযোজ্য হবে না।

ক্লেগ আরও বলেন, ফেসবুক বাংলাদেশে তাদের ডিজিটাল যাচাই কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে এবং ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করার পথ খুঁজবে, যা উইকিপিডিয়ার কার্যক্রমের অনুরূপ।

প্রায় ত্রিশ মিনিটের এই বৈঠকে নিক ক্লেগ মেটার পক্ষ থেকে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদানের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে বিপুল অভিজ্ঞতা রয়েছে।’

মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন, সম্প্রতি চালু হওয়া কোম্পানির ওপেন সোর্সড লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল এআই, এলআইএএমএ স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে। তিনি আশা প্রকাশ করেন এটি বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে এলআইএএমএ’র ওপর এক মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের তরুণদের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করবে।’

বৈঠকে মেটার পলিসি প্ল্যানিং ডিরেক্টর প্রবীর মেহতা, বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

চীনে সরকারি সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন আজ ন্যায়সঙ্গত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা এবং আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন।

আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংহাইয়ের সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (এসআইআইএস)-তে “শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি” শীর্ষক এক সেমিনারে মূল বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

হোসেন বিশ্ব শান্তির জন্য একটি ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন এবং টেকসই উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার ভিত্তি হিসেবে অর্থনৈতিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দেন।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করে বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা হচ্ছে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব যা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রতিনিধিত্বহীন গোষ্ঠী বিশেষ করে যুব ও মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর আরও বেশি জোর দেওয়ার দাবি করে।

রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে, তৌহিদ হোসেন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরির উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “সংঘাতের সমাধানে বাংলাদেশ ও চীন উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ রয়েছে এবং সমাধানে আমাদের অবশ্যই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।”

উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক তুলে ধরেন, যা প্রাচীনকাল থেকে শুরু হয়েছে এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ সম্পর্ক একটি গতিশীল অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনের উন্নয়ন সহায়তা ও বিনিয়োগের রূপান্তরমূলক ভূমিকার উপর জোর দেন, যা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

হোসেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মতো বাংলাদেশের সফল সামাজিক উদ্যোগগুলি তুলে ধরেন, যা গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন করেছে, সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে তুলেছে। তিনি যুবসমাজের উন্নয়নে অনুরূপ রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য, তিনি বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালীকরণ, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, জনগণের সঙ্গে জনগণের আদান-প্রদান আরও গভীর করা এবং বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

এসআইআইএস সভাপতি ডঃ চেন ডংশিয়াওয়ের স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তিনি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঐতিহাসিক ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের উপর আলোকপাত করেন। তিনি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অ্যাকাডেমিক ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এবং বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে দুই দেশের ভূমিকা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন পণ্ডিত, কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, তরুণ গবেষক, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, এসআইআইএস-এর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব ও বিশেষজ্ঞবৃন্দ এবং সাংহাই পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে মূল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এসআইআইএস -এর অ্যাকাডেমিক উপদেষ্টা বোর্ডের পরিচালক ডঃ ইয়াং জিমিয়ান বক্তব্য রাখেন এবং ছয়জন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞের উপস্থাপনা ছিল উল্লেখযোগ্য।

বিশেষজ্ঞরা অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। পরবর্তী অধিবেশনে সমৃদ্ধ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলামের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী ৪৬০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য হারিয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় রুশ মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী ৪৬০ জনের বেশি সেনা, চারটি ট্যাংক, চারটি ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল, একটি সাঁজোয়া কর্মী পরিবহন যান, ৯টি সাঁজোয়া যুদ্ধ যান, ৫৭টি যানবাহন, পাঁচটি আর্টিলারি সিস্টেম, একটি মর্টার, একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ স্টেশন, একটি সাঁজোয়া পুনরুদ্ধার যান, চারটি ইউএভি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং একটি গোলাবারুদ ডিপো হারিয়েছে।

এ নিয়ে কুরস্ক অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেন মোট ৫৩,৩৩০ জনের বেশি সেনা এবং ৩০৮টি সামরিক যান হারিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এদিন আরেকটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশেষ সামরিক অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সেনারা দুটি সম্প্রদায়কে মুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সক্রিয় যুদ্ধ অভিযানের ফলে ব্যাটলগ্রুপ ওয়েস্টের ইউনিটগুলো লুগানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের নভোয়েগোরোভকা বসতি মুক্ত করেছে। অন্যদিকে ব্যাটলগ্রুপ সেন্টারের ইউনিটগুলো শত্রুর প্রতিরক্ষার গভীরে অগ্রসর হতে থাকে এবং দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের শেভচেঙ্কোর বসতি মুক্ত করেছে। সূত্র: তাস

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আবার হোয়াইট হাউজে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা) শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

এরপর জাতির উদেশে ভাষণ ট্রাম্প। বলেন, ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে রাখার কারণ আছে। তিনি বলেন, শিগগিরিই পরিবর্তন আসবে।

ট্রাম্প জানান, সোমবারই মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হবে।

প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের শপথ উপলক্ষ্যে সোমবার ওয়াশিংটনের সর্বত্রই ছিল সাজসাজ রব। নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল পুরো শহর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ২৫ হাজার সদস্য এ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করেন। ৪ বছর পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের আয়োজন খোলা স্থানেই করা হয়। কিন্তু তীব্র ঠান্ডার কারণে কংগ্রেস ভবনের ভেতরে এবার অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয়বারের মতো কংগ্রেস ভবনের রোটুন্ডায় করা হয় পুরো আয়োজন। ভয়াবহ ঠান্ডার কারণে এমনটি করা হচ্ছে বলে শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন। কংগ্রেস ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবার বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ার সুযোগ ছিল না। সেখানে মাত্র ২০ হাজার অতিথির বসার স্থান রয়েছে। যারা ভেতরে ঢোকার টিকিট পাননি, তারা ন্যাশনাল মলে বড় স্ক্রিনে অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করেছেন। শপথের পর ট্রাম্প ক্যাপিটল থেকে হোয়াইট হাউজে একটি জমকালো প্যারেডের মাধ্যমে যাত্রা করেন। ট্রাম্পের সম্মানে ক্যাপিটল রোটুন্ডায় কুচকাওয়াজও আয়োজন করা হয়। এর আগে ১৯৮৫ সালে ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের পর ১২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরাজয়ের পর দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফিরলেন।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতি : ট্রাম্পের এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি জগতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের উপস্থিতি ছিল বড় চমক। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ এবং টিকটকের প্রধান নির্বাহী শৌ চিউসহ আরও অনেকে এই অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসনে ছিলেন। বিদায়ি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামাও উপস্থিত ছিলেন। অন্য প্রেসিডেন্টদের স্ত্রীরা উপস্থিত থাকলেও মিশেল ওবামা অনুষ্ঠানে ছিলেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিনটন এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থি নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টি অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে।