আন্তর্জাতিক

জেফ্রি এপস্টাইন ও গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল দম্পতির মানবপাচার মামলা সম্পর্কিত নথির তৃতীয় অংশ ফাঁস হয়েছে। শুক্রবার ফাঁস হওয়া নথিতে বাদী ভার্জিনিয়া জিউফ্রে ও জোহানা জোবার্গের দেওয়া সাক্ষ্যে ‘১৩ ক্ষমতাধর সাক্ষীর’ মধ্যে সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনের নামও উঠে এসেছে। খবর এনডিটিভির।

জিউফ্রে এপস্টাইন ও ম্যাক্সওয়েল পাচারকৃত অসংখ্য অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে একজন। ২০১৫ সালে জিউফ্রে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মানবপাচারের শিকার হওয়া নিয়ে মামলা করেন।

নতুন প্রকাশিত নথিতে এপস্টাইনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাক্ষ্যের উদ্ধৃতি রয়েছে। এ বন্ধুরা তাকে মানবপাচার কারবার পরিচালনা করতে সাহায্য করেছিলেন। জিওফ্রে ও জোবার্গের অধিকতর জবানবন্দিতে এপস্টাইন ও ম্যাক্সওয়েলের মানবপাচারের কারবারে কিভাবে কিশোরীদের ফাঁদে ফেলা হতো তা নিয়ে আরও বিস্তারিত রয়েছে।

নতুন এ নথি অনুসারে, ভার্জিনিয়া জিউফ্রের উল্লেখিত ১৩ জন নির্দিষ্ট সাক্ষীর মধ্যে হিলারি ক্লিনটনও রয়েছেন। আদালতে দাখিল করা এ নথিতে অবশ্য তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।

যৌন ব্যবসায়ী এপস্টেইনের সঙ্গে ক্লিনটন, ট্রাম্পসহ যাদের নাম জড়িয়ে গেলযৌন ব্যবসায়ী এপস্টেইনের সঙ্গে ক্লিনটন, ট্রাম্পসহ যাদের নাম জড়িয়ে গেল
এপস্টাইনের সাবেক গৃহপরিচারিকা হুয়ান অ্যালেসি বলেন, প্রিন্স অ্যান্ড্রু প্রায়ই এপস্টাইনের পাম বিচ হোমে থাকতেন। সেখানে তিনি প্রত্যেকদিন ম্যাসাজ নিতেন। নথিতে আরও বলা হয়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এপস্টাইনের সাউথ ফ্লোরিডার বাড়িতে যেতেন। তবে, ট্রাম্প কখনোই ওই বাড়িতে অবস্থান করেননি উল্লেখ করেন জুয়ান।

পেডো আইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত ফাঁসকৃত নথি অনুসারে, যৌনদাসী হিসেবে আনা প্রত্যেক মেয়ের বিনিময়ে ২০০ ডলারে চুক্তি করতেন এপস্টাইন। বেশ কিছু মেয়ে তাকে ম্যাসেজ করার বিনিময়ে টাকা পেয়েছে।

গত বুধবার থেকে মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত ১৮০ টিরও বেশি নথি ফাঁস হয়েছে। ২০১৯ সালে জুলাইয়ে এপস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌন দাসত্ব ও মানবপাচারের অভিযোগ আনা হয়। তবে বিচারকার্য শুরু হওয়ার আগেই তিনি ম্যানহাটনের কারাগারে আত্মহত্যা করেন। একই অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন ম্যাক্সওয়েল।

মার্কিন আদালত বলছে, ধনসম্পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এপস্টাইন কিশোরীদের যৌন নিপীড়ন করতেন।

আন্তর্জাতিক

 

বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৯৯টি আসনের ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ হবে। এদিন ৩০০টি আসনে ভোট নেওয়ার কথা থাকলেও একজন চূড়ান্ত প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ এ ভোট বাতিল করা হয়েছে।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ১৯৬৯ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৯৬ জন নারী ও দুজন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া), বাকি সব পুরুষ। এ নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। বিএনপিসহ ১৬টি রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্যে এ নির্বাচন শেষ হতে যাচ্ছে।

ইসি জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৩৪টি দেশের ১২৬ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন (অ্যাক্রিডিটেশন) পেয়েছেন। এ ছাড়া ইসির আমন্ত্রণে ৩২ জন পর্যবেক্ষক সাড়া দিয়েছেন।

সূত্র জানিয়েছে, বিদেশি পর্যবেক্ষক অনুমোদন পাওয়া সবাই আসেননি। ৭০-৮০ জন ঢাকায় এসেছেন।  ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য মিশন যথাক্রমে তাদের ২৯ এবং ১০ জন কর্মীর পর্যবেক্ষণের অনুমতির জন্য আবেদন করে। পরে ওই দুটি মিশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না বলে ইসিকে জানিয়ে দেয়।

এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশিদের তালিকায় সংখ্যার শীর্ষে আছে কমনওয়েলথ। সংস্থাটির ১৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এরপর এনডিআই এবং আইআরআইয়ের ১২ জন, আফ্রিকার ইলেক্টোরাল অ্যালায়েন্সের ১০ জন এবং ইইউর চারজন প্রতিনিধি যুক্ত থাকবেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে। বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মধ্যে ঢাকায় জাপান দূতাবাসের ১৬ জন কর্মী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

আন্তর্জাতিক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘শেনজেন এরিয়া’ বা সীমান্ত-মুক্ত অঞ্চল। বাধা-ধরা নিয়ম ছাড়াই চলাচল করা যায়। হোক সেটা স্থল, সমুদ্র বা আকাশপথ। নির্দিষ্ট এই এলাকায় বর্তমানে ২৭টি দেশের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মানুষ অবাধে যাতায়াত করতে পারেন। তবে মুক্ত সীমান্তে চলাচলের এই সুযোগ পেতে যুক্ত হচ্ছে আরও দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া। ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে ইউরোপের সীমান্তহীন শেনজেন ভ্রমণ অঞ্চলে আংশিকভাবে যোগ দেয় দেশগুলো। রাজনৈতিক চুক্তিটি রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়াকে শুধু আকাশ ও সমুদ্রপথে চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। স্থল সীমান্তের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আরও আলোচনার প্রয়োজন। তুর্কি এবং পশ্চিম বলকান রুটে দিয়ে ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমনের উদ্বেগের কারণে অস্ট্রিয়া দেশ দুটিকে শেনজেনে প্রবেশে বাধা দিচ্ছিল। অবশেষে আংশিকভাবে তাদের চুক্তিটিতে যুক্ত করা হয়। ইউরো নিউজ, রয়টার্স।

রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এ মুক্ত-সীমান্ত অঞ্চলে প্রবেশাধিকার চাইছিল। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী মার্সেল সিওলাকু বলেছেন, ‘তেরো বছর পর, রোমানিয়া অবশেষে সেনজেনে যোগ দেবে- আমাদের একটি রাজনৈতিক চুক্তি হয়েছে। নতুন বছরের মার্চ পর্যন্ত, রোমানিয়ানরা আকাশ ও সমুদ্রপথে শেনজেন এলাকার সুবিধাগুলো থেকে উপকৃত হতে পারেন। আমি এও নিশ্চিত যে, ২০২৪ সালে আমরা স্থল সীমান্তে আলোচনায়ও একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাব।’ বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোলাই ডেনকভ বলেন একটি ‘জটিল আলোচনার’ পরে চুক্তিটি হয়েছ। তিনি আরও বলেন, ‘খুব বেশি অগ্রগতি ছাড়াই ১২ বছর পর, আজ আমরা বুলগেরিয়ার এই অবিসংবাদিত সাফল্যের জন্য নিজেদের অভিনন্দন জানাতে পারি।’

ইউরোপীয় কমিশন ২০১১ সাল থেকে উভয় দেশকে শেনজেন যোগদানের জন্য প্রস্তুত বলে বিবেচনা করেছিল, কিন্তু ইইউ রাজ্যগুলো আইনের শাসন এবং অভিবাসন বৃদ্ধির আশঙ্কায় চুক্তিটি অবরুদ্ধ করেছিল।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অরিন্দম বাগচী বলেন, বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে ভারত সেদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় এবং একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল জাতি হিসেবে বাংলাদেশের স্বপ্নকে সমর্থন করে যাবে।

ভারত সরাসরি ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন করছে এবং আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে’ বলে বিএনপির মুখপাত্রের সাম্প্রতিক অভিযোগের বিষয়ে বাগচী এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা তৃতীয় কোনো দেশের নীতির বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের ভারতে সাম্প্রতিক বহুল আলোচিত ‘সফর’ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাগচী জানান, তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ভারত সফর নিয়ে মিডিয়া রিপোর্ট দেখেছেন।

তিনি বলেন, এটি একটি ব্যক্তিগত সফর হতে পারে। কিন্তু আমি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না। তাই আমার কাছে এই মুহূর্তে বলার কিছু নেই।

আন্তর্জাতিক

তুরস্কের সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদান প্রোটোকল অনুমোদন করেছে। ফলে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটি ইউরো-আটলান্টিক জোটে অন্তর্ভুক্তির পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার তুরস্কের সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি এ অনুমোদন দেয়।

মূল ভোটের আগে, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুরাক আক্কাপার সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ প্রক্রিয়ার বিষয়ে কমিটিকে ব্রিফ করেন এবং আইনপ্রণেতারা প্রস্তাবটির ওপর গুরুত্ব দেন।

অক্টোবরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান সুইডেনের ন্যাটো যোগদান প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেন এবং এটি সংসদে জমা দেন।

সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম এ খবরটিকে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ বলেছেন, আমরা তুরস্কের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ আবেদনের অনুমোদনকে স্বাগত জানাই।
পরবর্তী ধাপে এ বিষয়ে সংসদে ভোট হবে। আমরা সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।

ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন রাশিয়ার কাছাকাছি বা সীমান্তবর্তী দেশ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর উভয় নর্ডিক দেশ ন্যাটো সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। তুরস্ক এ মার্চে জোটে ফিনল্যান্ডের সদস্যপদ অনুমোদন করেছে।

ন্যাটোর যেকোন নতুন সদস্যকে অবশ্যই বর্তমান সদস্যদের দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। তুরস্ক ছাড়াও সুইডেনের ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবে সমর্থন দেয়নি হাঙ্গেরী।

আন্তর্জাতিক

সৌদি আরবে দুই প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এক ভারতীয় নাগরিককে হত্যার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তারা। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হত্যার ঘটনায় আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ওই দুই প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত আর্থিক বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিক। আর তাদের হাতে খুন হওয়া ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক। ঘটনার দিন ওই ভারতীয় ব্যক্তিকে গাড়িতে করে একটি খোলা মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়।

ওই ব্যক্তিকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর পেছন থেকে কাপড়ের টুকরো দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এমনকি ওই ব্যক্তির মুখে কীটনাশক ছিটিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিহত ব্যক্তির লাশও পুঁতে ফেলেন অভিযুক্তরা।

তবে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর পর আদালতে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও আগের রায় বহাল রাখা হয়। এমনকি রাজকীয় আদেশ জারির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের রায় চূড়ান্ত বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জাজান অঞ্চলে ওই ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

আন্তর্জাতিক

গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-তুয়াম এলাকায় মেশিনগান দিয়ে লড়াইয়ে ইসরাইল স্পেশাল ফোর্সের অন্তত ১১ সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডস।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।

এর আগে বৃহস্পতিবার হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত তিন দিনে তাদের হামলায় ২৫ ইসরাইলি সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবরে শুরু হওয়া হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বেশি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের তথ্য অফিসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁয়েছে। নিহতদের মধ্যে চার হাজার শিশু এবং ছয় হাজার ২০০ নারী রয়েছেন। এ ছাড়া এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ফিলিস্তিনের ৫৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

এদিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, গাজায় এখন পর্যন্ত তাদের ১৩৭ সেনা নিহত হয়েছেন। তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি বলে দাবি হামাসের।

এ ছাড়া ইসরাইলের হিব্রু ভাষার এক সংবাদমাধ্যম কয়েক দিন আগে এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজায় যুদ্ধ করতে গিয়ে অন্তত পাঁচ হাজার সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩ হাজার জনের হাত-পা গুরুতর জখম হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী, দুই হাজার সেনা যুদ্ধ করার সক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়েছেন। এ ছাড়া ইসরাইলের হিসাব অনুযায়ী, আল কাসেম ব্রিগেডের ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রায় এক হাজার ১৪০ ইসরাইলি প্রাণ হরিয়েছিল।

আন্তর্জাতিক

গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা জোরদার করা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার ভোটাভুটি করেছে। দুই সপ্তাহের আলোচনা ও ভোটাভুটি নিয়ে কয়েক দিনের বিলম্ব শেষে প্রস্তাবনায় উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনার পরে এতে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ওয়াশিংটন গাজা যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সর্বশেষ খসড়া প্রস্তাবনা সমর্থন করতে প্রস্তুত। খসড়া প্রস্তাবটি ‘খুবই জোরালো’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক প্রস্তাব যেটি আমরা সমর্থন করতে পারি।’

তবে প্রস্তাবনার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেবে নাকি ভোটদানে বিরত থাকবে তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। এছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যরা, বিশেষ করে রাশিয়া প্রস্তাবনায় আনা সংশোধনীগুলো মেনে নেবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে প্রস্তাবে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে, তা নিয়ে এরই মধ্যে আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ।

বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) গাজায় যুদ্ধ না থামলে ছয় মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করেছে। এমন আশঙ্কার মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গত ১৫ ডিসেম্বর গাজা নিয়ে খসড়া প্রস্তাবনা পেশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

সেই প্রস্তাবনায় গাজায় লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে অবাধে ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয় এতে। পাশাপাশি সব জিম্মিকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্র প্রথমত এ প্রস্তাবনায় লড়াইয়ের ‘অবসান’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি তোলে। ফলে এটি পরিবর্তন করে লড়াই ‘স্থগিত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

দ্বিতীয়ত ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি তুলেছিল। কারণ এতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ খর্ব হওয়ার আশঙ্কা ছিল (গাজায় ত্রাণ এবং জ্বালানি সরবরাহ ও বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ইসরাইল)। যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে সেটিও পরে সংশোধন করা হয়।

এসব সংশোধনীর পর, বিশেষ করে ‘লড়াই অবিলম্বে অবসানের’ আহ্বান বাতিল হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা হয়। এতে খসড়া প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার আশা জেগে ওঠে।

৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের হামলার পর থেকে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধের দুই মাস পেরিয়েছে। এখন যুদ্ধ তীব্রতম পর্বে প্রবেশ করেছে।

এ পরিস্থিতিতে গাজায় হামলা বন্ধ করা এবং গাজাবাসীর জন্য আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করা হচ্ছে না। তবে যারা সন্ত্রাসী, যারা মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালায়, জনগণের সম্পত্তি জ্বালায়, যারা মানুষকে মারছে তাদের শাস্তির আওতায় নিচ্ছি।

কাতার সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নাগরিক পরিসর সংকুচিত হওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিশ্বের ছয়টি সংগঠন। রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের (আরএফকেএইচআর) ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করছি না, নির্যাতন করছি না। যারা সন্ত্রাসী, যারা মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালায়, জনগণের সম্পত্তি; বিশেষ করে, বাস, ট্রেন, ট্রাক জ্বালায়, যারা মানুষকে মারছে তাদের আমরা শাস্তির আওতায় নিচ্ছি। আমরা কোনো রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করছি না। আমরা যাদের গ্রেপ্তার করছি তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। আমরা আহ্বান করবো- যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছেন, সেটা পরিহার করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যাদের আমরা ধরেছি, তাদের সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পেয়েছে বলে ধরেছি। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের হয়রানি করছি না।

বিবৃতিতে মানবাধিকার ইস্যুতে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন রাখা হলে দ্বিতম পোষণ করে মন্ত্রী বলেন, আমি প্রতিবেদন দেখিনি। আপনি অন্যান্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করেন, আমরা একটা আদর্শ দেশ। গাজায় কী ধরনের মানবাধিকার হচ্ছে? এমনকি অন্যান্য উন্নত দেশেও লোকজন ক্লাবে-স্কুলে মেরে ফেলে। আমাদের এখানে বিনা বিচারে কাউকে মারে না।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছ থেকে অন্যান্যদের মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের বিষয়ে শিক্ষা নেওয়া দরকার।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইল ও হামাসের চলমান যুদ্ধে অবরুদ্ধ গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ৪১২ জনে পৌঁছেছে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫০ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ২০৭ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৪৫০ জন। ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় উপত্যকাজুড়ে ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে আরও অসংখ্য মানুষ আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষাবাহিনী (আইডিএফ) বলছে, গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনী ৭ হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, গাজা উপত্যকায় টানা বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে বোমা হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে ইসরাইলি বাহিনী। মিসরীয় সীমান্তের কাছে রাফাহ ক্রসিংয়ের দক্ষিণে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। হামাস কর্মকর্তারা বলছেন, ওই এলাকায় ইসরাইলের বিমান হামলায় মঙ্গলবার অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় গাজার বেশিরভাগ হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানকার এক তৃতীয়াংশেরও কম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা আংশিকভাবে চালু আছে।

ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান গাজা উপত্যকা পরিদর্শনের পর বলেছেন, গাজার লোকজন ‘পৃথিবীতে নরক’ সহ্য করছেন। জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইলের অবিরাম হামলায় বেশিরভাগ ভূখণ্ডেই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। এতে ইসরাইলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকারে অক্টোবরের শেষের দিকে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। গাজায় স্থল অভিযান পরিচালনার সময় এখন পর্যন্ত ইসরাইলের অন্তত ১০৫ সৈন্য নিহত হয়েছেন।