জাতীয়

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন পেয়েছেন ১,৬০,২৯০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী (হাতপাখা) নিয়ে পেয়েছেন ১৩,৪৮৩ ভোট।

বুধবার রাতে রাজশাহী সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন তাকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মোট চারজন প্রার্থী ছিলেন। তবে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী (হাতপাখা) আগেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বাকি তিনজন হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনীত সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টি মনোনীত লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)।

রাজশাহী সিটিতে সাধারণ ৩০টি ওয়ার্ডে ১১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

এবার রাজশাহী সিটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার ৩০ হাজার ১৫৭ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন, নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ৬ জন।

জাতীয়

দেশের নাগরিক শনাক্তকারী অন্যতম দলিল জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ফের এক কোটির বেশি নাগরিককে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে নিতে হবে।

কেননা, ১৫ বছর হওয়ায় তাদের এনআইডির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। এর ভিত্তিতে তখন ৮ কোটি ১০ লাখ নাগরিককে দেওয়া হয় এনআইডি।

আইনে বলা হয়েছে, এনআইডির মেয়াদ হচ্ছে ১৫ বছর। অর্থাৎ সে সময় যারা লেমিনেটিং করা এনআইডি পেয়েছিলেন, তাদের সবার মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছর।

এখন দেশে ভোটার রয়েছে ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। অর্থাৎ ভোটার হয়ে তিন কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জনের মতো নাগরিক পরবর্তীতে এনআইডি নিয়েছেন। এদের মধ্যে যার এনআইডি যখন ১৫ বছর হবে তখনই মেয়াদ শেষ হবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, যারা স্মার্টকার্ড নিয়েছেন, তাদের এনআইডির মেয়াদ আরও পরবর্তীতে শেষ হবে। ইসি ২০০৮ সালের ভোটারদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করছে। এ পর্যন্ত স্মার্টকার্ড ছাপানো হয়েছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ। আর বিতরণ হয়েছে ৭ কোটি ১ লাখ। এই হিসাবে অন্তত এক কোটি নয় লাখ নাগরিককে ফের এনআইডি নিতে হবে সহসাই।

এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বলেন, ১৫ বছর হলেই মেয়াদ শেষ হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফের এআইডি নিতে হবে। প্রথমবার বিনামূল্যে পরিচয়পত্রটি দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয়বার নেওয়ার জন্য নাগরিকদের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, চলতি বছরই অনেকের এনআইডির মেয়াদ শেষ হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে চলতি বছর এ কার্যক্রম আর হাতে নেওয়া হবে না। আগামী বছরের শুরু দিকে কার্যক্রমটি হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

বর্তমানে প্রায় সব সেবা নিতে গেলেই জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলকভাবে প্রদর্শন করতে হয়। কেননা, পরিচয় যাচাই করতে ইসির সঙ্গে চুক্তি করেছে ১৬৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৪৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠান, ছয়টি মোবাইল কোম্পানি, ৬৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ২৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পাঁচটি বিমা প্রতিষ্ঠান, আটটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি এবং অন্যান্য চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সার্ভার ব্যবহার করে থাকে ব্যাংক ও মোবাইল অপারেটরগুলো।

এনআইডির ব্যবহার এত মাত্রায় পৌঁছে গেছে যে, এটি এখন নিত্য ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে যাদের মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, তাদের সেবা পাওয়া বন্ধ হবে কি-না, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই ইসির।

এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এ নিয়ে এখনও কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। যখন কার্যক্রম শুরু হবে, তখন সবদিক আলোচনা-পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জাতীয়

নিহতের ভাতিজার অভিযোগ, ঘের থেকে বাড়ি ফেরার পথে পরিচিত কয়েকজন তার চাচাকে লোহার রড, হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়।

বাগেরহাটে ঘেরে মাছ ধরতে নিষেধ করায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার বিকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

দুপুরে পিরোজপুর-বাগেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে মেরিন ইনস্টিটিউটের সামনে তার ওপর হামলা হয় বলে বাগেরহাট মডেল থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম জানান।

নিহত আনারুল শেখ (৫৫) ওরফে আনা বাগেরহাট পৌর শহরের বাসাবাটি এলাকার প্রয়াত আব্দুল গনি শেখের ছেলে। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন বলে দলটির পৌর শাখার সভাপতি শেখ বশিরুল ইসলাম জানান।

নিহতের ভাতিজা মুরাদ শেখ অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, “ বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুর এলাকায় আমাদের ২১ বিঘার একটি মাছের ঘের আছে। শনিবার সকালে ছোট চাচা আনারুল শেখ সেখানে গিয়ে দেখেন, কিছু লোক ঘেরে নেমে মাছ ধরছেন। মাছ ধরতে নিষেধ করলে তারা আমার চাচাকে গালিগালাজ করেন। এ কথা আমাকে ফোনে জানালে আমি তাকে বাড়ি চলে আসতে বলি। তিনি বাড়ি ফেরার পথে পরিচিত কয়েকজন চাচাকে মেরিন ইনস্টিটিউটের সামনে লোহার রড, হাতুড়ি এবং লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়।

“পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।”

হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন নিহতের স্বজনরা।

এদিকে, আনারুল শেখের মৃত্যু খবরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতারা তার বাড়িতে যান। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

রাতে নিহতের বাড়িতে যান বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক।

হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানা তিনি।

বাগেরহাট থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনায় জড়িতদের নাম-পরিচয় আমরা জানতে পেরেছি। তাদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল অভিযানে নেমেছে।”

শিগগির তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

জাতীয়

রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছে পাওনা ৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। নগদ আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা। খেলাপিরা দিয়েছে মাত্র ৯ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৩ শতাংশ। তবে উলটো চিত্র ছোট এবং মাঝারি খেলাপির ক্ষেত্রে। এসব খেলাপি থেকে ব্যাংকটির পাওনা ৩ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। এখানেও আদায়ের লক্ষ্য ৩৩৫ কোটি টাকা। আদায় ৪৮১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যের ১৪৪%। অর্থাৎ ছোটরা টাকা দিলেও বড় ঋণখেলাপিরা টাকা দিচ্ছেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। এটি রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের ওপর করা ২০২২ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক একটি প্রতিবেদন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছে পাওনা ৪ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। নগদ আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩০০ কোটি টাকা। খেলাপিরা দিয়েছে মাত্র ১১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৪%। বিপরীতে অন্যান্য খেলাপি থেকে ব্যাংকটির পাওনা ৭ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। আদায়ের লক্ষ্য ৭০০ কোটি টাকা। আদায় ৪৩০ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যের ৬১%। অর্থাৎ ছোটরা টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সে তুলনায় শীর্ষ ঋণ খেলাপিদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রবণতা খুবই কম। বাকি দুই ব্যাংকের চিত্রও প্রায় কাছাকাছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণের অংক ১৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকা বা ১০ শতাংশ। কিন্তু ব্যাংকগুলো লক্ষ্যের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি। এই চার ব্যাংক নির্ধারিত সময়ে আদায় করেছে মাত্র ৩১৭ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। তবে চার ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের তুলনায় এই আদায়ের অংক ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। একইভাবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে চার ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকগুলো আদায় করতে পেরেছিল ৫৯১ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৩৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। সেই হিসাবে ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর কম আদায় হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ।

জানা গেছে, সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তদারকি সত্ত্বেও রাষ্ট্র্রায়ত্ত চার ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা যাচ্ছে না। সর্বশেষ ২০২২ সালের সমঝোতা স্মারকের আওতায় ব্যাংকগুলোকে যেসব লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো অর্জন তো দূরের কথা, ধারেকাছেও যেতে পারেনি ব্যাংক চারটি। উলটো খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। বিতরণ করা ঋণের অধিকাংশই কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে মাত্র ৫টি শাখায়। বড় গ্রাহকের সীমাতিরিক্ত ঋণ কমিয়ে আনার শর্তও পরিপালিত হয়নি। শীর্ষ খেলাপিসহ অন্য খেলাপি গ্রাহকদের কাছ থেকে নগদ আদায়ও সন্তোষজনক নয়। এছাড়া ব্যাংকগুলোর মোট আমানতের অর্ধেকের বেশি উচ্চ সুদবাহী হওয়ায় পরিচালন ব্যয়ও কমছে না।

সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণের শর্ত পরিপালন, খেলাপি ঋণ এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনাসহ প্রায় ৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে ২০০৭ সাল থেকে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালেও ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এমওইউ সই হয়। এমওইউতে ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ, ঋণ প্রবৃদ্ধি যথাযথ রাখা, খেলাপি ঋণ ন্যূনতম সীমায় নামিয়ে আনা, শীর্ষ ২০ খেলাপিসহ অন্যান্য খেলাপি থেকে নগদ আদায় জোরদার, লোকসানি শাখা ও পরিচালন ব্যয় কমানো, বৃহদাংক ঋণের এক্সপোজার কমিয়ে আনা এবং ঋণ প্রদানে শীর্ষ শাখা ব্যতীত অন্যান্য শাখার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের শর্তারোপ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো ২০২২ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়নি। এ সময় ৪টি ব্যাংকে প্রকৃত মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৩ কোটি টাকা, যা উদ্বেগজনক। অন্যদিকে, আলোচ্য সময়ে রূপালী ব্যাংক ছাড়া অন্য ৩টি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলকৃত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ঝুঁকিভিত্তিক মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (সিআরএআর) সংরক্ষণ করতে পারেনি। বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি, সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বছরের পর বছর ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতিতে থাকা পুরো খাতের জন্য খারাপ বার্তা। কারণ কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে থাকলে তার আর্থিক ভিত্তির দুর্বলতা প্রকাশ পায়। ফলে ওই ব্যাংকের ওপর গ্রাহকদের আস্থাও কমে যায়। এছাড়া অন্য দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে তাদের অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। তাই ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, সমঝোতা স্মারকের ২০২২ সালের জুনভিত্তিক পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিসেম্বরের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ন্যূনতম ১৩ শতাংশে এবং অন্য ৩টি ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণ ন্যূনতম ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা প্রদান করা হলেও কোনো ব্যাংক সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। সেই সঙ্গে আলোচ্য সময় শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৫ শতাংশ, ১৮ শতাংশ, ২২ শতাংশ এবং ১৭ শতাংশ।

২০২৩ সালের মধ্যে ব্যাংকগুলোর ন্যূনতম মূলধন ১০ শতাংশে উন্নীত করা, ঋণের প্রবৃদ্ধি নির্ধারিত সীমায় রাখতে পরিকল্পিতভাবে ঋণ প্রদান ও আদায়, খেলাপি ঋণের হার এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনা, বড় গ্রাহকের অনুকূলে নতুন করে ঋণ প্রদান বন্ধ রাখাসহ তা সীমার মধ্যে নামানো, খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায় সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করা, উচ্চ সুদবাহী আমানতের হার ৪০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা এবং তাদের কোর ব্যাংকিং সল্যুয়েশন (সিবিএস) শতভাগ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জাতীয়

 সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু একসময় মুদি দোকান চালাতেন নিজ গ্রাম কামালের বার্তিতে। মুদি দোকান চালিয়েই পরিবার নিয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করতেন তিনি।

তারপর ঠিকাদারি লাইসেন্স প্রাপ্ত চাচাতো ভাই ইঞ্জিনিয়ার হারুনের সহযোগিতায় বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার নির্মাণ করে অর্থ উপার্জন শুরু করলে দিন পাল্টে যায় বাবুর।

ছাত্রজীবনে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজের রাজনীতি করলেও পরবর্তীতে ভোল পাল্টে রাজনীতি ছেড়ে নিরপেক্ষতার ভান ধরেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪-৯৫ সালের দিকে জাতীয় ছাত্র সমাজের প্রথম সারির কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন বাবু। ঠিকাদারি করে টাকা-পয়সা কামিয়ে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ভেড়েন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে যেভাবে সারাদেশের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন, ঠিক সেভাবেই।

২০১১ সালে আওয়ামী লীগে ভিড়েই ইউপি নির্বাচনে অংশ নেন বাবু। তবে সেবার জয়ী হতে না পারলেও ২০১৪ সালে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন তিনি।

তারপর থেকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তথা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেন মাহমুদুল আলম বাবু।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় খুব সহজেই ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পান। পরে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দ্রুত নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হন বাবু।

জানা যায়, নারী লোভী বাবু টাকা আর ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে চলতেন।

পুলিশের সাবেক এক ডিআইজির চাচাতো ভাই হিসেবে সর্বস্তরে শক্তি প্রদর্শনের দুঃসাহস দেখাতে থাকেন। আরও বেপরোয়া বাবু হয়ে ওঠেন সাধুরপাড়া ইউনিয়নের অঘোষিত সম্রাট!

২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজয় তার জীবনে যেন চিরস্থায়ী আশীর্বাদ হয়ে ফিরে আসে। কারণ, ২০১৪ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর আর কোনো সম্মেলন হয়নি। তাই পদে থেকে ২০২১ সালে ফের নৌকার মাঝি হয়ে

ফিরে আসেন মাহমুদুল আলম বাবু।

একদিকে নৌকা প্রতীকের দুইবারের চেয়ারম্যান, অন্যদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৯ বছরের সাধারণ সম্পাদক। কে ঠেকায় বাবুকে? ক্ষমতার দম্ভে বাবার মতোই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ছেলে ফয়সালও।

নারী লোভী বাবুর চরিত্র ফাঁস হয়ে যায়, যখন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা আক্তার দৃশ্যপটে আসেন। জানা যায়, সাবিনাকে দুইবার বিয়ে করেন বাবু। দ্বিতীয়বার বিয়ের পর সাবিনার কোলে বাচ্চা আসে। তবে পুনরায় সাবিনাকে অস্বীকার করেন বাবু।

সাবিনা যখন তার অধিকার ফিরে পেতে চান, তখন দুঃসাহসিক সংবাদকর্মী গোলাম রাব্বানী নাদিম একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করতে থাকেন। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নারী লোভী দাপুটে ক্ষমতাশালী চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু।

তার বিরুদ্ধে একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করায় নাদিম ও অন্যদের নামে সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন বাবু। কিন্তু মামলার মেরিট না থাকায় তা খারিজ করে দেন ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক।

আর এই মামলা খারিজের চার ঘণ্টার মধ্যেই হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম।

সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের ধারণা, বাবু হয়তো জানতেন নাদিমকে কোনোভাবেই আটকানো যাবে না। তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে থাকেন, নাদিমকে কীভাবে শায়েস্তা করা যায় তা নিয়ে!

মামলা দিয়েও ব্যর্থ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক নাদিমকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন বাবু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

এরই অংশ হিসেবে বাবু সশরীরে উপস্থিত থেকে হামলার নেতৃত্ব দেন বলে জানিয়েছেন নাদিমের সহকর্মী এবং সহযোগী মুজাহিদ বাবু।

বুধবার (১৪ জুন) রাত ১০টার দিকে অদূরে অন্ধকার গলিতে দাঁড়িয়ে থেকে ছেলে ফয়সাল ও অন্য সহযোগীদের দিয়ে হামলা করান নাদিমের ওপর। হামলার এক পর্যায়ে ইট দিয়ে থেঁতলে নাদিমকে অচেতন করে পালিয়ে যায় তারা।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেল ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যু হয়।

এদিকে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু মাস্টারমাইন্ড বলে মন্তব্য করেছেন জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাসির উদ্দীন আহমেদ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এসপি নাসির বলেন, এই ঘটনার পেছনে যেসব মাস্টারমাইন্ড রয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।

হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘসময় পরও মূল হোতা কেনো আটক হয়নি এবং ওসি বলেছেন, সিসিটিভি ফুটেজে তাকে দেখা যায়নি- এ সম্পর্কে এসপি নাসির বলেন, ওসি সত্যিকার অর্থে ভুল বলেছে। এলআইসি টিম আমার আন্ডারে থাকে। টিম এখন মাঠে আছে। লাইভে বলেছি, লোকেশন দেখেছি, কোনদিকে আছে তারা। পেছন পেছন যাচ্ছে। মাহমুদুল আলম বাবু কিলিং মিশনের নায়ক। সেটা প্রথম থেকেই জানি।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চেয়ারম্যান বাবুর পরিবারের আত্মীয়- এমন অভিযোগের বিষয়ে এসপি নাসির উদ্দীন বলেন, প্রথম থেকে বাবুর নাম আমি বলেছি। সে-ই প্ল্যান মেকার। প্রত্যেকটা জায়গায় বলেছি। আমাদের ব্যাকআপ আছে। আরও মাস্টারমাইন্ড আছে, তারাও বের হয়ে আসবে।

হামলার পেছনে শাহীনা বেগম রয়েছেন- পরিবারের এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের অপরাধ বিজ্ঞান বা আইন বলে ঢাকা থেকে হামলার অংশ হতে পারবে না- এটা সত্য না। যদি নাম আসে আটক করবো, আসামির খাতায় নাম আসলে অবশ্যই আটক করবো। জড়িত থাকলে বা মামলা হলে সবাইকে আটক করা হবে।

জাতীয়

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনায় মূলহোতা স্বপনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।

সোমবার (১২ জুন) রাত পৌনে ৯টায় বাংলানিউজকে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মূল হামলাকারী স্বপনকে আটক করা হয়েছে।

তবে এ ঘটনায় এখনও প্রার্থী বা ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

এর আগে এদিন দুপুরে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালে বরিশালের শহরের চৌমাথা এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনিসহ কয়েকজন রক্তাক্ত জখম হন।

জাতীয়

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট। এনিয়ে তৃতীয়বার খুলনার মেয়র হচ্ছেন তিনি।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়াল  পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট।

সোমবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে তিনি ৯৪ হাজার ভোটে হারান হাতপাখার প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়ালকে।

খুলনায় ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়। বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষের ছয় ঘণ্টার মধ্যে খুলনা নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে সমন্বিত ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন।

খুলনায় মেয়র পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পাটি, লাঙ্গল- ১৮০৭৪ ভোট), এসএম শফিকুর রহমান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি- ১৭২১৮ ভোট), এস এম সাব্বির হোসেন (জাকের পার্টি, গোলাপ ফুল- ৬৯৬ ভোট)।

খুলনা সিটিতে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। তার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন; নারী ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।

মেয়র পদে ৫ জন ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

জাতীয়

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার বিজয় হয়েছে। বেসরকারি ফলাফলে ৫৩ হাজার ৪০৭ ভোট বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত (নৌকা প্রতীক)।

সোমবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন।

বেসরকারি ফলাফলে নৌকার আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ভোট পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৭৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখার সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৪৫ ভোট।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৪ জন। এই সিটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৬টি।

জাতীয়

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছেন, ‘দয়া করে পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হোন। কারণ লোডশেডিংয়ের কারণে ঢাকায় ওয়াসার ১০টি জোনের মধ্যে ৫টি জোনেই পানি সরবরাহে সংকট হচ্ছে। বিদ্যুৎ নিয়মিত না পাওয়ার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে।’ এই পরিস্থিতিতে রাজধানীবাসীকে পানি কম ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার কাওরানবাজারে ওয়াসা ভবনে চলমান পানি সংকট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সহীদউদ্দিন, উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ এম মোস্তফা তারেক প্রমুখ।

তাকসিম এ খান বলেন, পানি প্রোডাকশন আমরা করতে পারছি, কিন্তু এটা সাপ্লাই দেওয়ার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিছুদিন ধরে আমরা ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ফলে আমাদের পাম্পগুলো বন্ধ থাকছে। যেসব এলাকায় পানির সমস্যা হচ্ছে, সেখানে ওয়াসার গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কাজে ঢাকা ওয়াসার ৪৮টি পানির গাড়ি কাজ করছে। ছোট রাস্তার জন্য ১৭টি ট্রলি গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য গাড়িতেও পানি ভরতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, রানিং বা কল ছেড়ে দিয়ে পানি ব্যবহার করলে পানি অপচয় বেশি হয়। সেক্ষেত্রে কোনও পাত্রে প্রথমে পানি নিয়ে এরপর সেটা ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত গরমের সময় অনেকে পানি ছেড়ে অপেক্ষা করেন, কারণ অনেক সময় পানি গরম আসে। দয়া করে এটা করবেন না। গরমের সময় অনেকেই একাধিকবার গোসল করেন, পানি বেশি ব্যবহার করেন, এটা আসলে ঠিক নয়। অন্যদিকে অনেকে পানি পাচ্ছেন না। পানি জমিয়ে রেখে দুইদিনের পানি তিনদিন ব্যবহার করুন। এতে পানির কিছুটা সাশ্রয় হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয়

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পোকা মারার বালাইনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও এমডি ফরহাদুল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুব আহমেদ।

আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই রণপ কুমার ভক্ত গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুই আসামিকে বৃহস্পতিবার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই রফিকুল ইসলাম।

অন্যদিকে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন আসামিদের আইনজীবী হাসনাইন তালুকদার সুজন। আসামিদের আইনজীবী বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের দায় এ ঘটনায় থাকবে কেন? তারা তো এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন না। তারা কিভাবে আসামি হন? পরে গ্রেফতার দুজনের বক্তব্য জানতে চান বিচারক। এ সময় তারা নিরুত্তর থাকেন। এরপর বিচারক তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নতুন বাসার পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য বারিধারার ‘ডিসিএস অরগানাইজেশন লিমিটেড’ পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন বাসাটির মালিক ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন। ওই কোম্পানির কর্মীরা ২ জুন বাসায় বালাইনাশক দিয়ে যান। বাসায় ওঠার পর ওই পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৪ জুন সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মোবারক হোসেনের ৯ বছর বয়সি ছেলে শাহিল মোবারত জায়ান। পরে রাতে মারা যায় তার ভাই ১৫ বছর বয়সি শায়েন মোবারত জাহিন। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা করেন দুই শিশুর বাবা মোবারক হোসেন। সেই মামলায় ৫ জুন রাতে ডিসিএসকর্মী টিটু মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন তাকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।

এরপর বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান এবং এমডি ফরহাদুল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়।