আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে ফোনালাপে কথা বলেছেন। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এ ফোনালাপে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র দফতর।

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিস্থিতির উন্নতি এবং সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তারা।

সোমবার (২৬ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতি বলা হয়েছে, দুই নেতার মধ্যে বেশ কিছু আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। এতে উঠে আসে মোদির সাম্প্রতিক ইউক্রেন সফর ও কোয়াড ইস্যুও।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দো-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্বের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গভীর প্রতিশ্রুতির জন্য তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সোমবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) বাইডেনের সঙ্গে আলাপের বিষয়টি তুলে ধরেছেন মোদি।

বাইডেনের সঙ্গে ফোলালাপ নিয়ে তিনি লিখেন, ‘আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে। এ সময় ইউক্রেন পরিস্থিতিসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা বিষয়ে আমরা বিশদে মতবিনিময় করেছি।’

‘বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি এবং দেশটিতে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু—বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতেই রয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

পরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এবং দ্য প্রিন্টের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়, সরকার পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করেন হাসিনা। এমন আবহে বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানায় হোয়াইট হাউস।

আন্তর্জাতিক

ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লাসহ বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসব এলাকায় বিপুল পরিমাণ ত্রাণ যাচ্ছে। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এবং পর্যাপ্ত নৌযানের অভাবে দূর-দূরান্তে আটকেপড়া বানভাসিদের কাছে খাবার পৌঁছানো যাচ্ছে না। অনেকেই মূল সড়কের পাশে ত্রাণ বিতরণ করে ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন।

সমন্বয়হীনতার কারণে শহরের আশপাশের কেউ কেউ কয়েক দফা ত্রাণ পেলেও অনেকে কিছুই পাচ্ছেন না। লাখো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি। তারা বাড়ির ছাদ বা উঁচু স্থানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। এর মধ্যেই তাদের খাবার ও বিশুদ্ধ পানি শেষ হয়ে গেছে। ত্রাণ না পেয়ে সীমাহীন কষ্টে দিন কাটছে তাদের।

এদিকে অনেক এলাকায় পানিবাহিত নানা রোগব্যাধিও ছড়িয়ে পড়েছে। ফেনী, চৌদ্দগ্রামসহ কয়েকটি স্থানে আশ্রয়কেন্দ্রে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা গেছে। কিছু এলাকায় বন্যার পানি কমলেও যেসব এলাকা দিয়ে পানি নামছে ওইসব এলাকায় পানি বাড়ছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, বন্যায় অনেকের বাড়িঘর ভেঙে গেছে, ঘরের আসবাবপত্র ভেসে গেছে, ভিজে নষ্ট হয়েছে অনেক সরঞ্জাম। এ কারণে খাবার, বিশুদ্ধ পানি, শুকনা কাপড়, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের পাশাপাশি বাড়িঘর মেরামতে তাদের নগদ অর্থও প্রয়োজন।

শনিবার সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল ইসলাম বলেছেন, দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় এ পর্যন্ত ৪৯ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে।

ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

ফেনী ও সোনাগাজী: ফুলগাজী, পরশুরাম, নতুন রানীর হাটের দক্ষিণে অবস্থিত সোনাপুর, দক্ষিণ আবুপুর, এলাহিগঞ্জ, কুমিরাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ত্রাণের দেখা নেই। জেলার বাইরে থাকা স্বজনরা বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে এসব এলাকায় সামান্য কিছু খাবার-পানি পৌঁছেছে। তবে অনেকে ত্রাণ নিয়ে এলেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এবং নৌযানের অভাবে দুর্গম এলাকায় যেতে পারছেন না। তাছাড়া ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীতাও দেখা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে যারা ত্রাণ নিয়ে আসেন তাদের প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ তারা হঠাৎ করে এসে জেলার কোন এলাকায় যাবেন এ নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তাছাড়া প্রত্যন্ত এলাকায় যাওয়ার জন্য নৌযান প্রয়োজন। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন না। ফলে শহরের আশপাশের এলাকায় ত্রাণ দিয়ে চলে যাচ্ছেন অনেকে। সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্গতদের কেউ কেউ কয়েক দফা ত্রাণ পেলেও অনেকে কিছুই পাচ্ছেন না।
ফেনী জয়কালী মন্দির, সরকারি মডেল প্রাইমারি স্কুল, নাহার গার্ডেন সিটি, ফেনী মডেল হাইস্কুল ও সেন্ট্রাল হাইস্কুলসহ বিভিন্ন ভবনে হাজারো বানভাসি আশ্রয় নিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে জানিয়েছেন তারা কোনো ত্রাণ পাচ্ছেন না।

এদিকে জেলায় নৌযান দিয়ে মানুষকে উদ্ধার করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কিছু নামধারী স্বেচ্ছাসেবী। শুক্রবার প্রবাসী সালাউদ্দিন ও তার দশ বছরের ছেলে ইকবালকে ৩০ টাকা রিকশা ভাড়ার দূরত্ব থেকে শহরে পৌঁছে দিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করে তারা।

কুমিল্লা, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও তিতাস: বুড়িচং উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও এর আশপাশের প্রায় ১৭০টি গ্রাম বন্যাকবলিত। দুর্গতদের ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসছে। কিন্তু এসব ত্রাণ থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নৌকা ও স্পিডবোটের অভাবে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যেতে পারছে না বিভিন্ন দাতা সংগঠনের লোকজন।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ভরাসার বাজার, ইছাপুরা, মহিষমারা ও বুড়বুড়িয়া এলাকায় শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক পিকআপ। এতে পাঁচ থেকে সাতটি গ্রামের মানুষ পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সহায়তা ও খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছে। এসব এলাকার কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী জমা পড়ে আছে। কিন্তু দুর্গত এলাকার প্রায় ১৫০টি গ্রামে কোনোভাবেই যাচ্ছে না ত্রাণ।

দুর্গত এলাকার লোকজনের অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উপজেলার কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা এখনো ত্রাণসামগ্রী পাইনি। সবাই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে চলে যায়।

তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নে কলাকান্দি থেকে কদমতুলি সড়কে নির্মিত ১৮ ফুট দৈর্ঘ্যরে কালভার্টটি বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে পানির তোড়ে বিলীন হয়েছে সড়কের কিছু অংশ। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার শত শত মানুষ। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অনেক গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বন্যার কারণে আড়িয়ল ও খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর দুটি বাঁধসহ অন্তত ৮টি স্থানে সড়ক ধসে পড়েছে। এতে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখনো বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। পাশাপাশি আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়েও যাত্রী পারাপারও বন্ধ রয়েছে।

এদিকে আখাউড়ার আনন্দপুর, সাতপাড়া, কেন্দয়াই, খলাপাড়াসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। আবদুল­াহপুর আশ্রয়কেন্দ্রে হনুফা বেগম নামে এক নারী বলেন, আমাদের অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এখন আমাদের ত্রাণের পাশাপাশি নগদ টাকাও দরকার।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে। বাসাবাড়ি থেকে পানি সরে যাচ্ছে। এদিকে কসবায় সীমান্তবর্তী বায়েক ও গোপিনাথপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি থেকে বেরোতে পারছে না তারা। খাবারের অভাবে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, ইতোমধ্যে ১০ মেট্রিক টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি ও রামগড়: জেলা সদরের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। তবে দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের বেশির ভাগ এখনো পানিবন্দি। অন্তত ২০টির বেশি গ্রাম পানির নিচে। মেরুং হেডকোয়ার্টার এলাকায় সড়ক থেকে পানি না নামায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে লংগদুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

শনিবার বিকালে কাবুল্যা কার্বারীপাড়ায় রুষা চাকমা নামে এক কিশোরী পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদিকে রামগড়ে অনেক দুর্গত বাসিন্দা ঘরের চালে, বড় বড় গাছ ও উঁচু টিলায় আশ্রয় নিয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

চট্টগ্রাম ও মীরসরাই: জেলার ১১ উপজেলায় ২ লাখ ৬২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো পানিবন্দি রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে ফটিকছড়ি, মীরসরাই ও হাটহাজারী উপজেলায়। এই তিন উপজেলায় ২ লাখ ৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ১ হাজার ৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে ৪৫৫ মেট্রিক টনের বেশি চাল বিতরণ করা হয়েছে।

মীরসরাই উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে ১১ হাজার ৬৩ জন মানুষ। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আশ্রয় দিয়েছে আরও প্রায় ৫ হাজার মানুষ। এসব মানুষ পর্যাপ্ত খাবার ও পানির অভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।

কমলনগর ও রামগতি (লক্ষ্মীপুর): কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা, তোরাবগঞ্জ, চরলরেন্স এবং রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা, চরবাদাম, চররমিজ ও বড়খেরী এই সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকার বহু বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে।

ডুবে গেছে আমন ধানের বীজতলা, শাকসবজির মাঠ। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সুচিত্র রঞ্জন দাস জানান, পানিবন্দি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

নোয়াখালী: জেলার ৮২ ইউনিয়ন ও ৭টি পৌরসভা বন্যাকবলিত। অন্তত ৩৬ হাজার মানুষ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও ধনী ব্যক্তিদের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছে। সরকারি তালিকাভুক্ত আশ্রয়ণকেন্দ্র রয়েছে ৫০২টি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শনিবার বিকাল পর্যন্ত ২০০টিতে প্রয়োজনীয় খাদ্য পৌঁছেনি বলে জানা গেছে।

কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া (মৌলভীবাজার): শত কষ্টের মধ্যেও শনিবার কমলগঞ্জে মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ রোদ উঠেছে এবং বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হচ্ছে। প্লাবিত এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। তবে পানি যত কমছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বন্যাদুর্গত মাছুম মিয়া বলেন, বন্যায় সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ঢলের স্রোতে এবং ঢেউয়ে ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। এখন এগুলো কীভাবে মেরামত করব, সেই চিন্তায় আছি। আমাদের নগদ অর্থের প্রয়োজন। সাজিনা বেগম বলেন, বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, যেন আমাদের ঘরে থাকার উপযোগী করতে সহায়তা করে।

হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাট : জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। চুনারুঘাটে এক হাজার ৮৮০ হেক্টর বোনা আউশের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি পুরোপুরি না নামায় এসব জমির ধানগাছ পুরোপুরিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র তার বিরোধী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

কেনেডি জুনিয়র শুক্রবার দেশটির অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্স শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি সমাবেশের আয়োজন করেন। কেনেডি জুনিয়র এতে যোগ দিয়ে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বি ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

কেনেডি জুনিয়র যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কেনেডি পরিবারের সদস্য। তার রাজনৈতিক জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কেটেছে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে। তবে দীর্ঘদিনের এ রাজনৈতিক সমর্থন ছেড়ে এবার রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে কেনেডি জুনিয়র বলেছেন, ‘নির্বাচনে আমার জয়লাভের কোনো বাস্তবসম্মত উপায় আছে বলে আমি আর মনে করি না।’

এ সময় ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে কমলা হ্যারিসকে বেছে নেওয়ায় তিনি দলটির সমালোচনাও করেন। কেনেডি জুনিয়র মনে করেন, প্রার্থিতার জন্য দলের প্রাইমারিতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়নি কমলাকে। এর নিন্দা জানান এফ কেনেডি জুনিয়র।

ডেমোক্রেটিক দলের প্রতি নানা অসন্তোষের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘এসব কারণেই আমি ট্রাম্পকে সমর্থন দেব।’

এছাড়া ট্রাম্পকে সাহায্য করার আপাত প্রচেষ্টায় এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের কাছ থেকে ভোট দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কেনেডি জুনিয়র ভোটের হিসাব ডেমোক্র্যাটিক দলের দিকে ঝুঁকে থাকা রাজ্যগুলোতে ব্যালটে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে নানা জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের চেয়ে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন কমলা।

আন্তর্জাতিক

এ হামলায় নিহতদের অধিকাংশই একই পরিবারের সদস্য এবং তাদের মধ্যে ৮ শিশু ও চারজন নারী রয়েছেন।

ফিলিস্তিনের ছিটমহল গাজার মধ্যাঞ্চলীয় শহর জাওয়াইদায় ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও বহু আহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য কমর্কর্তারা জানিয়েছেন, শনিবারের এ হামলায় নিহতদের অধিকাংশই একই পরিবারের সদস্য এবং তাদের মধ্যে আট শিশু ও চারজন নারী রয়েছেন।

নিহতদের প্রতিবেশী আবু আহমেদ হাসান বলেন, “তারা তাদের বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বাড়িতে আঘাত হানে। সেখানে কোনো ধরনের সামরিক তৎপরতা ছিল না।”

ওই বাড়ির মালিক একজন পরিচিত বণিক ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এমন একটি এলাকায় সামরিক লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে যেখান থেকে তাদের সেনাদের ওপর রকেট ছোড়া হচ্ছিল। সেখান থেকে বেসামরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল তারা। তবে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি পর্যালোচনা করে দেখছে তারা।

শনিবার সামাজিক মাধ্যম এক্স এ আরবিতে করা এক পোস্টে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র গাজার মধ্যাঞ্চলের কয়েকটি অংশের বাসিন্দাদের সরে নির্ধারিত মানবিক এলাকায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি জানিয়েছিলেন, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ওই এলাকাগুলো থেকে রকেট ছুড়ছে আর সামরিক বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জাওয়াইদার নিকটবর্তী মাগাজি এলাকাও ওই নির্দেশিত এলাকার মধ্যে পড়েছে। তবে জাওয়াইদার কোনো এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছে কি না বা ওই এলাকার লোকজন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এ ধরনের কোনো নির্দেশনা পেয়েছিলেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

মাগাজির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাজার হাজার মানুষ এলাকাটি থেকে সরে যাচ্ছেন।

ইসরায়েলি বাহিনী মানবিক জোন হিসেবে ঘোষণা করেছিল তাতে খান ইউনিস শহরের দক্ষিণাংশের দুটি অংশও আছে, কিন্তু এখন সেই অংশ দুটোকে বিপজ্জনক বলে মনে করছে তারা। ওই অংশ দুটো থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা নিয়মিতভাবে রকেট ছুড়ছে এমন অভিযোগ করে শুক্রবার সেখান থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়কের দপ্তর (ওসিএইচএ) বলেছে, ইসরায়েলের শুক্রবারের আদেশে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আগামী অধিবেশনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে।এদিকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের উৎখাতের পর সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কী ধরনের সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করবে সে সম্পর্কেও আলোকপাত করতে পারেন। এ সময় বিদেশি কূটনীতিকদের প্রশ্নের জবাব দেবেন তিনি।

অন্যদিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের সুযোগে প্রধান উপদেষ্টা ওয়াশিংটন গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে পারেন বলে জানা গেছে। তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে আগামী ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর ফিউচার সামিট অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনেও অংশ নেবেন নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মূল বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।

এতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসাবে প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দেবেন। এছাড়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি আরও অনেক ইভেন্ট হবে। এসব ইভেন্টের অনেকগুলোতে প্রধান উপদেষ্টা যোগ দেবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অনেক দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদানের বিষয়ে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বে খুব জনপ্রিয়। তিনি জাতিসংঘ অধিবেশনের সুযোগে গণতন্ত্রায়নের পথে কী ধরনের সংস্কার করতে যাচ্ছেন সেটা তুলে ধরবেন।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর নিয়োগসহ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ আজ এক গুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে বৈঠকে শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের শূন্য পদে নিয়োগের সুপারিশের জন্য মুসলিম চৌধুরী, আহসান এইচ মনসুর ও নজরুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সকল আহত আন্দোলনকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে এবং তাদের চিকিৎসার খরচ সম্পূর্ণভাবে সরকার বহন করবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী সকল হাসপাতালকে নির্দেশ দেবে। সরকার নিহত আন্দোলনকারীদের পরিবারকেও সহায়তা করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবিলম্বে বাংলাদেশী ছাত্র এবং জনগণের সমর্থনে প্রতিবাদ করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত এবং দন্ডিত ৫৭ বাংলাদেশীদের মুক্তির জন্য আলোচনা শুরু করবে। প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন।

সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যদিও কিছু বিতর্কিত চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করা হবে, বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে।

সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

কোথাও কোথাও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধরনের জঘন্য হামলা সমাধানের উপায় খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে প্রতিনিধি সংস্থা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে বসবে।

মেট্রোরেল ১৭ আগস্ট, ২০২৪ (শনিবার) থেকে চালু হবে। তবে মেরামত না হওয়া পর্যন্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনে রেল থামবে না।

আন্তর্জাতিক

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার ঘটনায় আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করেছিলেন। এ অবস্থায় তাদের অনেককে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। সেই সব প্রবাসীদের মুক্তির বিষয়ে সে দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

রোববার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময়ের শুরুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনের সমর্থনে বেশ কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। তার মধ্যে আরব আমিরাতে বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়, এমনকি জেলও দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে দেখছি। তারা কিছুতেই যেন সাফার না করে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি আজ বা কালকের মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। যাতে তারা সহায়তা পেতে পারে। অন্তত কোনো শাস্তি ছাড়া যেন তাদের মুক্তি দেয়া হয়। তারপর বাকিটুকু না হয় আমরা সহায়তা করার চেষ্টা করলাম।
তিনি (ড. ইউনূস) নিজেই উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন, চেষ্টা করবেন তাদের যেন শাস্তির সম্মুখীন হতে না হয়।

তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা হয়তো স্থানীয় আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। সে কারণে আমরা সেই দেশকে দোষারোপ করতে পারি না। তাদের যে আইন আছে সে অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তাদের (প্রবাসী) সেন্টিমেন্ট যেটার কারণে তারা এটার পক্ষে এসেছে তখন তারা হয়তো সেই আইন-কানুনও ভুলে গেছে অনেকে। আমরা চেষ্টা করব তাদের যেন মুক্ত করতে পারি।

এ সময় প্রবাসীদের জন্য সেবার মানোন্নয়নে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের জন্য আরও উন্নত সেবা নিশ্চিতের বিষয়টিতে লক্ষ্য রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে আমিরাতের বেশ কয়েকটি রাস্তায় গত ১৯ জুলাই জমায়েত করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ সময় দাঙ্গা উসকে দেওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় দেশটির আদালত।

এছাড়া অবৈধভাবে সেদেশে প্রবেশ এবং ‘সমাবেশে’ অংশ নেওয়ায় আদালত আরও ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন। আদালত তাদের কারাবাসের মেয়াদ শেষে নির্বাসন এবং জব্দ করা সমস্ত ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেন।

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার জেরে ২০২১ সালে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তিন বছর পর এবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্তের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, আকাশ থেকে ভূমিতে হামলা চালানোর মতো কিছু গোলাবারুদ সৌদিতে বিক্রি-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। প্রচলিত অস্ত্র হস্তান্তর নীতির আলোকে ধাপে ধাপে এসব গোলাবারুদ সৌদির কাছে হস্তান্তর করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের পর ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই সৌদিতে অস্ত্র পাঠানো শুরু করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। যেই লক্ষ্যে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

হঠাৎ সৌদির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কারণ, সৌদিকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ২০২২ সালের মার্চে সৌদি ও হুথিরা জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে গেছে। ইয়েমেনে আর কোনো হামলা চালায়নি তারা।

এদিকে গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর সৌদির কাছে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রেক্ষিতেই এবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

আন্তর্জাতিক

গাজার একটি স্কুলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ১শ জনের বেশি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি সরকারী বার্তা সংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের হামলা চালিয়েছে।

এর আগে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছিলেন, গাজা শহরের আল-সাহাবা এলাকায় আল-তাবাই’ইন স্কুলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় চল্লিশজন শহীদ এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।

এই হামলার আগে গাজায় আরেকটি ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়, যার মধ্যে খান ইউনিসের ১৯ জন রয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ৬০ থেকে ৭০ হাজার লোককে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে ইতিমধ্যেই ঘনবসতিপূর্ণ আল-মাওয়াসি এলাকার দিকে সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরসহ অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে ফের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছে দখলদার ইসরায়েল। মধ্যস্থতাকারী এসব দেশ হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের ১৫ আগস্ট থেকে আবারও আলোচনা শুরুর জন্য চাপ দেয়।

আন্তর্জাতিক

দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শনিবার রাতে সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

তিনি বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হবে। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ হাইকোর্ট বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ছিলেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উপদেষ্টা মরহুম ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ছেলে।

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এদিকে আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সরে যাওয়ার পর মো. আশফাকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি করার যে খবর চাউর হলে তা আন্দোলনকারীদের ‘প্রত্যাখ্যান’ করে। পরে জানা যায় ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি নিয়োগের তথ্যটি ‘বিভ্রান্তিকর’।

পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফ থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে শিক্ষা চত্বরে কর্মসূচি থেকে এ আলটিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা আগামীকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ রিফাত আহমেদকে নিয়োগ না দিলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’