আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র উপভোগ করছে।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) মহাসচিব ইন্দ্র মনি পাণ্ডে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণকে তার অন্যতম শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, সরকার সবসময় গ্রামীণ উন্নয়নে জোর দেয়।

তিনি বলেন, তিনি গ্রামীণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং খাদ্য উৎপাদন ব্যতিরেকে এক ইঞ্চি আবাদি জমি ফেলে না রাখার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করছেন।

‘আমি সবাইকে অনুরোধ করেছি যেন খাদ্য উৎপাদনে নিয়োজিত হন, যে যা পারেন,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে।

ভারত সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন, ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য করেছিল এবং প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

বিমসটেক মহাসচিব ইন্দ্র মনি পাণ্ডে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।

বিমসটেকের সঙ্গে বাংলাদেশের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিমসটেক বাংলাদেশের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে।

তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন, স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গ্র্যাজুয়েশনে প্রধানমন্ত্রীর দিকদর্শনের প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সপ্তম শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতাদের উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ প্রস্তাবিত বিমসটেক সচিবালয় ভবনের নির্মাণ কাজ তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন বিমসটেক সহযোগিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত এবং বাংলাদেশ এ খাতে নেতৃত্ব দেওয়া দেশ।

তিনি বলেন এবং আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী বিমসটেক সম্মেলনের পর বাংলাদেশ যখন সভাপতিত্ব করবে, তখন বিমসটেকের কার্যক্রম আরও জোরদার করবে।

প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক প্রক্রিয়াকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন।

শেখ হাসিনা পুনর্ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ বিমসটেক প্রক্রিয়ায় আরও দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত রয়েছে, যেহেতু ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের পর গ্রুপের সভাপতিত্ব বর্তাবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

মেঘলা দিনের সূর্য আর পাকিস্তানের রাজনীতি- আচারে, স্বভাবে দুই-ই সমান! ক্ষণে উজ্জ্বল, ক্ষণে ম্লান। এই ঝকঝকে তো পরক্ষণেই ঘোলাটে! উচ্ছন্নে যাওয়া জুয়াড়ির আকাশ-কুসুম স্বপ্নের মতোই-সকালে হৈ হৈ করে লাফিয়ে বিকালেই চিৎপটাং! গিরগিটির মতোই নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে রং পালটাচ্ছে নেতারা।

একদিন আগেও যে প্রধানমন্ত্রীর গদি দখল পুরো পাকিস্তান এফোঁড়-ওফোঁড় করছিল, দিন ফুটতেই সেই আবার ‘মহাহাতেম তাঈ’। গত তিন দিনের দড়ি টানাটানি শেষে হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর ভাগ ছেড়ে দিয়ে সেই খেলাই দেখালেন দেশটির সরকার গঠন কারিশমার মধ্যমণি পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলটির পোস্ট-সেন্ট্রাল এক্সিকিউটিভ কমিটির (সিইসি) অধিবেশনের পরে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থিতা তিনি চান না। কারণ পিপিপির ফেডারেল সরকার গঠনের ম্যান্ডেট নেই।

তবে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী করতে অকুণ্ঠ সমর্থন দেবে তার দল। কিন্তু নওয়াজ সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকবে না তার দল। জিইও নিউজ, ডন।

বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নিজ শর্ত বহাল রেখে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে হাত মেলানোর কথা থাকলেও আচমকাই এ খেলায় ‘দাবার পাশা’ উল্টে দিলেন বিলাওয়াল। তবে প্রধানমন্ত্রিত্ব না চাইলেও প্রেসিডেন্ট পদ চেয়েছে দলটি।

প্রতিবেদন অনুসারে, পিপিপির বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, তিনি তার বাবা আসিফ আলী জারদারিকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান।
আরও বলেছেন, ‘আমি এটা বলছি না কারণ তিনি আমার বাবা। আমি এটা বলছি কারণ দেশ এই মুহূর্তে এক বিশাল সংকটের মধ্যে রয়েছে।
বিলওয়াল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ পদের জন্য তার বাবাই একমাত্র যোগ্য প্রার্থী। এদিকে একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফ। শুরু থেকেই ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ের আশা থাকলেও হেরে গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানের কাছে। এরপরই যেন অমঙ্গলের ছায়া পড়েছে তার (নওয়াজের) দলে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোটের দৌড়ে নেমেও লাভ হলো না কোনো। শেষ ভরসা বিলওয়ালও এখন হাতছাড়া। সব মিলিয়ে সেনাবাহিনীর আশীর্বাদেও পার পেলেন না নওয়াজ।

এরই মধ্যে একাই সরকার গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য পদে প্রার্থী নির্বাচনের কথা জানিয়েছে।

এছাড়া পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সরকার গঠনের জন্যও প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক চক্রান্ত মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি।

মঙ্গলবার পিটিআইয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, দলটি ইতোমধ্যেই কেন্দ্র, পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়াতে সরকার গঠনের লক্ষ্যে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।

পূর্ণাঙ্গ ফলাফল অনুসারে, এবারের নির্বাচনে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে পিটিআই। স্বতন্ত্র ১০১টি আসন পেয়েছে। যার মধ্যে পিটিআই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছে ৯৩টি আসন। পিএমএল-এন ৭৫টি এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪টি আসন পেয়েছে।

তবে মঙ্গলবার পাকিস্তানের সাবেক ফেডারেল মন্ত্রী ও পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহার দাবি করেছেন, পিএমএল-এন মাত্র ১৭টি এনএ আসন এবং ৩০-৪০টি পাঞ্জাব বিধানসভা আসন জিতেছে।

পিএমএল-এনের সভাপতি শাহবাজ শরিফ বলেছেন, পিটিআই সরকার গঠন করতে পারলে তাদের স্বাগত জানানো হবে। মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেছেন, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংসদের নিম্নকক্ষে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তার দল (পিএমএল-এন) সংসদে বিরোধী আসনে বসতে প্রস্তুত।

১৮টি আসনে নির্বাচন কারচুপির বিরুদ্ধে পিটিআইয়ের দায়ের করা পিটিশন খারিজ করেছে লাহোর হাইকোর্ট (এলএইচসি)। রোববার দেশটির সংবাদমাধ্যম সামা টিভির খবরে বলা হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল।

এদিকে নতুন সরকারের তোড়জোড়ের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার আগেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারে দেশটিতে।

দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। অপরদিকে জাহাঙ্গীর খান তারিন সম্প্রতি গঠিত ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টির (আইপিপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। নির্বাচনের ঝড় শেষ হতে না হতেই রাজনীতির পথ ছেড়ে দিলেন তিনি। সোমবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি সেই দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানোর সুযোগ না-ও পেতে পারেন। কারণ নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগেই আলভির উত্তরসূরি নির্বাচিত হতে পারে।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন ডাকার শেষ সময়ের তিন দিন আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রাদেশিক পরিষদের নতুন সদস্যরা শপথ নিতে পারেন পরদিন।

জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া কোনো ব্যক্তি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য থাকবেন না।

গতকাল সোমবার দ্য নিউজকে একটি সূত্র জানায়, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের ৫৩ সদস্যের নির্বাচন ৮ মার্চের আগে হতে হবে। সিনেটের চেয়ারম্যান, ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনও এ সময়ের মধ্যে হতে হবে। এছাড়া ৮ মার্চের আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে হবে।

সূত্র জানায়, এক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলে আলভি আর নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানোর সুযোগ পাবেন না। সেক্ষেত্রে নতুন প্রেসিডেন্ট দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়াবেন।

সূত্র বলছে, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যরা শপথ নেওয়ার পর তারা সিনেট সদস্য নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্য হবেন।

জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ২৬ ফেব্রুয়ারি ডাকা হতে পারে। প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন একই দিন বা পরের দিন ডাকা হতে পারে। তবে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকার শেষ সময় ২৯ ফেব্রুয়ারি।

সিনেট নির্বাচনে সময় লাগবে চার দিন।

সিনেট সদস্যদের শপথ গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) চলমান সংঘর্ষের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। আরাকান আর্মির তাড়া খেয়ে বিজিপির প্রায় ৫৮ জন সদস্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রথম দফায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ১৪ জন সীমান্তরক্ষী। এর পরে বিকেল ৪টায় আরও পাঁচজন এবং এরপরে কয়েক দফায় মিলে মিয়ানমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৫৮ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এই সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার কথা জানিয়েছেন সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিরা। বিজিপির আরও সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে প্রবেশ করা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পে রয়েছেন। তাদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করার কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি চলছিল। রোববার ভোর থেকে লাগাতার গোলাগুলি, মার্টারশেল নিক্ষেপ ও রকেট লান্সার বিস্ফোরণে বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রুর বিস্তীর্ণ এলাকা। শুধু তাই নয়, গুলির সিসা ও রকেট লান্সার উড়ে এসে পড়ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে।

এদিকে হঠাৎ করে গোলাগুলি বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সীমান্তের এলাকাবাসী। আতঙ্ক, উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে তারা। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেও পারছেন না অভিভাবকরা। কৃষক কৃষি ক্ষেতে যেতে এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা দৈনন্দিন কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। অনেকে আবার নিজ এলাকা ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন।

এদিকে সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন। তিনি জানান, এ ঘটনায় আমরা সীমান্তের কয়েকটি সড়ক সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছি এবং সীমান্ত লাগোয়ো পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছি।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে ফ্রান্স এবং জার্মানি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে আজ  সৌজন্য সাক্ষাতে এসে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি ম্যাসদুপুই এবং জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।  দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথমে ফ্রান্স ও পরে জার্মানির রাষ্ট্রদূত নবনিযুক্ত মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আসেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মান চ্যান্সেলরের অভিনন্দন বার্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন দুই রাষ্ট্রদূত।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন,“ফ্রান্স ও জার্মানি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। স্বাধীনতার পরপরই যে দেশগুলো আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল, এই দেশ দু’টি তাদের  অন্যতম। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার হচ্ছে জার্মানি। ফ্রান্সও আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওপরের দিকে। সম্পর্ক গভীর করতে আমাদের ‘বিজনেস বাস্কেট’ বিস্তৃত করা নিয়ে আলোচনা করেছি।”  তিনি জানান, ‘ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরে এটি আলোচনা হয়েছিল। আমাদের ইকোনোমি যখন পারমিট করবে, তখন আমরা পারব।’

জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের যুদ্ধশিশুদের নিয়েছিল জার্মানি। ফ্রান্সও কিছু নিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার কারণেই ওই শিশুদের জন্ম হয়েছিল। জার্মানি ওই সময় অনাথ হয়ে যাওয়া শিশুদেরকে ব্যাপক হারে নিয়েছিল। আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধাও পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন। তাদের বেশিরভাগকেই চিকিৎসা দিয়েছিল জার্মানি। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।

প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর সফরে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় -এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ আমাদের একটা অগ্রাধিকার। বিশেষ করে, আবহাওয়া বার্তা পাঠানোর জন্য, নিরাপত্তা ইস্যুতে এটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে সেপ্টেম্বরে এমওইউ হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের নির্বাচন ছিল। নিশ্চয়ই কাজটি দ্রুত এগুবে।

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফেব্রুয়ারিতে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দিতে জার্মানি যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সাইডলাইনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা চলছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনাই দুই দেশের রাষ্ট্রদূত তোলেননি,  বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুণনির্বাচিত হওয়ায় জার্মানির চ্যান্সেলর ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন বার্তার হার্ডকপি আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন দুই রাষ্ট্রদূত।

আন্তর্জাতিক

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দিতে দুদিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে পৌঁছেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার নয়াদিলি­র ‘কর্তব্যপথে’ কুচকাওয়াজে হাজির থাকার পাশাপাশি দিলি­প্যারিস দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পাঁচ মাস পর, ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সংবিধান গ্রহণ করে ভারত। তারপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে পালন করে আসছে দেশটি। টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রথমে রাজস্থানের জয়পুরে অবতরণ করেন ম্যাক্রোঁ। সেখান থেকে যান ‘গোলাপি শহরের’ অন্যতম দর্শনীয় স্থান ‘আম্বর ফোর্ট’ দেখতে। হেঁটেই দুর্গে ওঠেন তিনি। এরপর যান জয়পুরের ‘বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র’ যন্তর মন্তর। সেখানেই মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার। দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বে কোনো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে এটিই মোদির শেষ বৈঠক। গত জুলাই মাসে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ফ্রান্সের জাতীয় দিবস অর্থাৎ বাস্তিল দিবসের উদ্যাপন অনুষ্ঠানের বিদেশি অতিথি হিসাবে ছিলেন তিনি। এবার ম্যাক্রোঁ এলেন ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হয়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু হোয়াইট হাউজ আগেই জানিয়েছিল যে, বাইডেন আসতে পারছেন না।

কূটনৈতিক মহলের মতে, কাশ্মীর সমস্যা, পরমাণু পরীক্ষা বিতর্ক বা চীনের সঙ্গে সংঘাতের মতো অনেক পরিস্থিতিতে বহু দশক ধরেই ফ্রান্সকে পাশে পেয়েছে ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের সমর্থনে ফ্রান্সই প্রথম এগিয়ে এসেছিল। তা ছাড়া ১৯৭৪ এবং ১৯৯৮ এই দু’বছরে ভারতের পরমাণু শক্তি পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ পশ্চিমা দেশগুলো যখন নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাতে যোগ দেয়নি ফ্রান্স। শুধু তা-ই নয়, ২০২০ সালে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদের সময় ফ্রান্সই প্রথম ভারতকে সামরিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল।

ম্যাক্রোঁর দু’দিনের ভারত সফরে আরও দৃঢ় হবে সেই মৈত্রীর বন্ধন। রাশিয়ার পর ফ্রান্সই ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমরাস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। সম্প্রতি ফ্রান্স থেকে ২৫টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান এবং তিনটি স্করপিয়ন সাবমেরিন ক্রয় নিয়েও প্যারিসের সঙ্গে আলোচনা চলছে দিল্লির।

আন্তর্জাতিক

প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২৪। একেক দিনে একেক ইস্যুতে উত্তাল দুই বিরোধী শিবির ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান। সোমবার ছিল গর্ভপাত নিয়ে। দেশটির সবচেয়ে বিতর্কিত ও স্পর্শকাতর বিষয়টিতে শুরু থেকেই দুদলই দুই মেরুতে।

গর্ভপাতে রাজি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাট দল। অন্যদিকে বিরুদ্ধে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান। আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পকে নারী ভোটারদের কাছে ধরাশায়ী করতে গর্ভপাতকেই প্রচার এজেন্ডা হিসেবে বেছে নিল ক্ষমতাসীন ডেমেক্র্যাট। এএফপি।

যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতকে বৈধ করতে সুপ্রিমকোর্টের ঐতিহাসিক ‘রো বনাম ওয়েড’ সিদ্ধান্তের ৫১তম বার্ষিকীতে সোমবার এই বিষয়ে দেশব্যাপী সফর শুরু করছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। সোমবার প্রথমদিনেই আসেন উইসকনসিনে। নারীদের প্রজনন অধিকার নিয়ে বক্তৃতা দিতে আজ যাবেন ভার্জিনিয়ায়। একটি বড় সমাবেশে অংশ নেবেন। কমলা হ্যারিসের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও থাকবেন সেখানে। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন এবং হ্যারিসের স্বামী ‘সেকেন্ড জেন্টলম্যান’ ডগলাস এমহফও।

রো বনাম ওয়েড ৪১০ ইউ.এস. ১১৩ (১৯৭৩), মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। ‘যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সাধারণত গর্ভপাতের অধিকারকে রক্ষা করে’ এ সম্পর্কিত একটি রায় দেওয়া হয়েছিল সেসময়। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে ট্রাম্প সুপ্রিমকোর্টের তিন বিচারপতিকে মনোনীত করেছিলেন যারা রো বনাম ওয়েডকে বাতিল করার জন্য ভোট দিয়েছিলেন।

নিউউয়র্ক টাইমসরে প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদালতের সিদ্ধান্তের পর থেকে ১৪টি মার্কিন রাজ্য গর্ভপাতের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আর অন্য সাতটি রাজ্য সময়সীমা আরোপ করেছে।

ভার্জিনিয়ার সমাবেশে বাইডেন এবং অন্য বক্তারা ২০২৪ সালে ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গর্ভপাতের নিষিদ্ধের হুমিকসহ ‘প্রজনন স্বাধীনতা কি ঝুঁকির মধ্যে আছে’ তা নিয়ে কথা বলবেন। এর আগে শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে হ্যারিস বলেছিলেন, ‘ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচিত হলে তিনি প্রতিটি রাজ্যে গর্ভপাতের এই আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ টেকসই উন্নয়নের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে দক্ষিণ বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি ঐক্যবদ্ধ সংহতি ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় ৭৭ জাতি গ্রুপ ও চীনের তৃতীয় দক্ষিণ শীর্ষ সম্মেলনের সাধারণ বিতর্কসভায় (জেনারেল ডিবেট) তিনি এ আহবান জানান।

দক্ষিণ বিশ্বের দেশগুলো শক্তিশালী দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, ঋণ সঙ্কট এবং ক্রমবর্ধমান সুরক্ষাবাদের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও সক্ষম হবে, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ড. হাছান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে স্মরণ করে বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর সমতা ও মানবিক মূল্যবোধের বাণী এখনও প্রাসঙ্গিক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়তে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দেন যার মধ্যে রয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন বাস্তবায়নের জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ, বর্তমান আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামো সংস্কার, প্রযুক্তিগত বিভাজন মোকাবেলা, নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করা এবং দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে যুব জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন।

ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তববাদী উন্নয়ন নীতির ফলে গত দেড় দশকে বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তার ভাষণে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের অধিকার অর্জনের সংগ্রামের সমর্থনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

এর আগে এ দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় দেশগুলো, ইসরায়েল, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ব্যতীত এশিয়া মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড বাদে ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশগুলো নিয়ে দক্ষিণ বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলনের নতুন চেয়ার উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনি দু’দিন ব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস, চীনের রাষ্ট্রপতির বিশেষ প্রতিনিধি লিউ গুওঝং এবং ২য় দক্ষিণ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোলতান বিন সাদ আল মুরাইখি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও জাতিসংঘে দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, কেনিয়া ও উগান্ডায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মুহাম্মদ প্রমুখ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক

তুরস্কের সামরিক বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দিশ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছে। রাতভর হামলায় ২৩টি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হয় বলে মঙ্গলবার জানায় তুরস্কের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

খবর আল জাজিরার।

এ অভিযান তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্তজুড়ে উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যুক্ত করল। আর গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের মধ্যে আঞ্চলিক উত্তেজনা তো অব্যাহত রয়েছেই।

শুক্রবার উত্তর ইরাকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে নয় তুর্কি সেনা নিহত হওয়ার পর সংঘর্ষের সূচনা হয়। আঙ্কারা উত্তর সিরিয়ার পাশাপাশি ওই এলাকায় বিমান হামলা ও সামরিক অভিযানের মাধ্যমে এর জবাব দিল।

সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে তুরস্কের সামরিক বাহিনী ইরাকের উত্তরাঞ্চলে মেটিনা, গারা হাকরুক ও কান্দিলের পাশাপাশি সিরিয়ার উত্তরে হামলা চালায়। তুরস্কের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের অভিযান সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং হামলা ঠেকাবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ব্যবহার করা গুহা, আশ্রয়স্থল, সুরঙ্গ, অস্ত্র গুদাম ও সরবরাহ সামগ্রীসহ ২৩টি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিংয়ে আরও গ্রাহক বাড়ানোসহ স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে পলক বলেন, আমেরিকা আমাদের সফটওয়্যার ও ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিংয়ের সবচেয়ে বড় গন্তব্য। যে ৬০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রপ্তানি করি, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় আমেরিকায়। কীভাবে এটা আরও বাড়াতে পারি, সে বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে রূপকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, সেটা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়েও কথা হয়েছে। আমাদের আলোচনার মূল তিনটি উদ্দেশ্য ছিল।

১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসোর্স ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন করার বিষয়েও কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকার তাতে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের ডাক বিভাগের সঙ্গে আমেরিকার কীভাবে জি-টু-জি সহযোগিতা হতে পারে এবং আমেরিকার যে কোম্পানিগুলো আছে, বিশেষ করে আমাজন, স্টারলিং, স্পেসএক্স, গুগল ও ফেসবুকের বিনিয়োগ কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি হতে পারে, সেগুলো নিয়েও কথা বলেছি।

পলক বলেন, সব মিলিয়ে বলতে পারি, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পেতে পারি এবং একই সঙ্গে কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি, রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে কথা বলেছি।

সর্বশেষ সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন, সে বিষয়েও আলাপ হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।