খেলাধুলা

নেতৃত্বের নানা ধরন থাকে। বিভিন্ন ঘরানা থাকে। নিজের মতো করে যুতসই পথ বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেন সব অধিনায়ক। রাসেল ডমিঙ্গোর মতে, তামিম ইকবালের অধিনায়কত্বের বড় শক্তি তার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। নিজে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করায় তামিমের জন্য নেতৃত্ব সহজ হয়ে উঠছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কোচ।

খেলাধুলা

বৃষ্টির কারণে ম্যাচ প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। খেলার মধ্যে আসে দুই বার বৃষ্টি। বৃষ্টি শেষে আবার উঠল রোদ। তবে এবার আর মাঠে ফেরা হলো না ক্রিকেটারদের। দুই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও নিকোলাস পুরানের সঙ্গে কথা বলে ম‍্যাচের ইতি টেনে দিলেন দুই আম্পায়ার!

ভেজা মাঠ ও বৃষ্টির জন‍্য নির্ধারিত সময়ের সোয়া এক ঘণ্টা পর খেলা শুরু হয়। ম‍্যাচের দৈর্ঘ‍্য কমে হয় ১৬। বাংলাদেশ ইনিংসে প্রথম দফায় বৃষ্টিতে ম‍্যাচের দৈর্ঘ‍্য কমে ২ ওভার।

তবে শেষ পর্যন্ত ১৪ ওভার খেলতে পারেনি সফরকারীরা। ১৩ ওভার শেষে বৃষ্টি নামলে তাদের ইনিংস শেষ হয় সেখানেই। টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ৮ ইউকেটে ১০৫ রান।

তখনও বোঝা যায়নি, ম‍্যাচই শেষ হতে যাচ্ছে এখানে। বাংলাদেশ ফিল্ডিং নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে এর আগেই মাহমুদউল্লাহ ও পুরানের সঙ্গে কথা বলে ম‍্যাচের ইতি টেনে দেন দুই আম্পায়ার।

এর আগে প্রথম ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৫৬ রানের দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড়ানো বাংলাদেশ পারেনি ঠিকভাবে নিজেদের ইনিংস এগিয়ে নিতে। বরং এক পর্যায়ে ২১ রানের মধ‍্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে যায় তারা। সেখান থেকে নুরুল হাসান সোহানের ক‍্যামিও ইনিংসে একশ ছাড়ায় বাংলাদেশের রান।

সেটা নিয়ে কতটা লড়াই করা সম্ভব ছিল, সেটা জানতে দিল না বৃষ্টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ১৩ ওভারে ১০৫/৮ (মুনিম ২, এনামুল ১৬, সাকিব ২৯, লিটন ৯, মাহমুদউল্লাহ ৮, আফিফ ০, সোহান ২৫, মেহেদি ১, নাসুম ৭*, শরিফুল ০*; আকিল ৩-০-২২-১, শেফার্ড ৩-০-২১-৩, ম‍্যাককয় ২-০-১৬-১, স্মিথ ২-০-২২-১, ওয়ালশ জুনিয়র ৩-০-২৪-২)

খেলাধুলা

ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরলেন এনামুল

ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরলেন এনামুল

মুখোমুখি হওয়া প্রথম দুই বলে দুই বাউন্ডারি। এনামুল হক বুঝিয়ে দিলেন চড়াও হওয়ার মানসিকতা নিয়েই নেমেছেন তিনি। তবে তার ইনিংস বড় হলে না। ওবেড ম‍্যাককয়ের স্টাম্পের বলের লাইন মিস করে হয়ে গেলেন এলবিডব্লিউ।

আবুল হাসানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের হয়ে দুই টি-টোয়েন্টির মধ‍্যে বছর ও ম‍্যাচের দিক থেকে সবচেয়ে বড় বিরতির রেকর্ড গড়ার দিনে এনামুল তিন চারে ১০ বলে করেন ১৬।

বাঁহাতি পেসার ম‍্যাককয়ের বল শাফল করে লেগে খেলার চেষ্টা করেন এনামুল। বলের লাইনে যেতে পারেননি। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন। তবে বল পিচ করেছিল মিডল স্টাম্পে, আঘাতও হানতো লেগ-মিডল স্টাম্পে। আউট হওয়ার সঙ্গে একটি রিভিউও নষ্ট করে যান এনামুল।

সেই ওভারেই ম‍্যাককয়কে চার মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস।

আগের ওভারে আকিল হোসেনকে ছক্কা ও চার হাঁকানো সাকিব আল হাসান করছেন সহজাত আক্রমণাত্মক ব‍্যাটিং।

৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ ওপেনারকে হারিয়ে ৪০।

শুরুতেই সাজঘরে মুনিম

বাংলাদেশের নতুন চেহারার উদ্বোধনী জুটি টিকল কেবল তিন বল। মুনিম শাহরিয়ারকে কট বিহাইন্ড করে দিলেন আকিল হোসেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ আক্রমণ শুরু করে বাঁহাতি স্পিনারকে দিয়ে। প্রথম বলটি ডট খেলান আকিল। দ্বিতীয় বলে স্লিপের পাশ দিয়ে খেলে দুই রান পান মুনিম। পরের বলেই ড্রাইভ করার চেষ্টায় কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন এই বিস্ফোরক ওপেনার।

অফ স্টাম্পের একটু বাইরে বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি মুনিম। ব‍্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে।

সেই ওভারের ষষ্ঠ বলে স্ট্রাইক পেয়ে চার দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ফেরা উদযাপন করেন এনামুল হক।

১ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৭। ক্রিজে এনামুলের সঙ্গী সাকিব আল হাসান।

২ স্পিনার নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

বাংলাদেশ ৩ স্পিনার নিয়ে খেললেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলছে দুই স্পিনার আকিল হোসেন ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রকে নিয়ে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবশেষ সিরিজের অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। তার জায়গায় নেতৃত্ব পাওয়া নিকোলাস পুরানের অধিনায়ক হিসেবে এটাই প্রথম ম‍্যাচ।

ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ম‍্যাচ খেলা অনেকে স্কোয়াডেই নেই। স্বাভাবিকভাবে একাদশে এসেছে অনেক পরিবর্তন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল: নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), রভম্যান পাওয়েল (সহ-অধিনায়ক), শামার ব্রুকস, আকিল হোসেন, ব্রান্ডন কিং, কাইল মেয়ার্স, ওবেড ম্যাককয়, রোমারিও শেফার্ড, ওডিন স্মিথ, ডেভন টমাস, হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র।

৭ বছর পর টি-টোয়েন্টিতে এনামুল

সেন্ট লুসিয়া টেস্ট দিয়ে এরই মধ‍্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন এনামুল হক। এবার জায়গা পেলেন টি-টোয়েন্টি একাদশেও। এই সংস্করণে দেশের হয়ে সবশেষ তিনি খেলেছিলেন ২০১৫ সালে।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রেকর্ড গড়া এক মৌসুম কাটিয়ে জাতীয় দলে ফেরা এই ডানহাতি ব‍্যাটসম‍্যানের সামনে সুযোগ নিজের রেকর্ড আরও ভালো করার। ৩২ এর বেশি গড়ে ও প্রায় ১১৮ স্ট্রাইক রেটে এই সংস্করণে রান করেছেন তিনি।

দুই পেসার ও তিন স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশে। শেষ সময়ে দলে যুক্ত হওয়া তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান সুযোগ পাননি। জায়গা মেলেনি মোসাদ্দেক হোসেনের।

বাংলাদেশ দল: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, লিটন দাস, এনামুল হক, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ।

১৬ ওভারের ম‍্যাচ

মাঠ তৈরি করতে অনেকটা সময় নষ্ট হওয়ায় কমে এসেছে ম‍্যাচের দৈর্ঘ‍্য। বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ১০ মিনিটে শুরু হতে যাওয়া ম‍্যাচ হবে ১৬ ওভার।

পাওয়ার প্লে ৫ ওভার। একজন সর্বোচ্চ ৪ ওভার বোলিং করতে পারবেন। বাকিরা সর্বোচ্চ ৩ ওভার করে।

টস হেরে ব‍্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

নির্ধারিত সময়ের সোয়া ১ ঘণ্টা পর হলো টস। ভাগ‍্যকে পাশে পেলেন নিকোলাস পুরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক নিলেন বোলিং।

অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ম‍্যাচ হচ্ছে উইন্ডসর পার্কে। উইকেট লম্বা সময় ধরে কাভার দিয়ে ঢাকা। স্বাভাবিকভাবে এই পরিস্থিতিতে আগে ব‍্যাট করতে চাননি পুরান। টস জিতলে তার মতো বোলিং নিতেন বলে জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। টস হারায় এখন দলের কাছে দায়িত্বশীল ব‍্যাটিং চাইলেন তিনি।

সোয়া ২টায় পর্যবেক্ষণ

মাঠের অবস্থা দেখতে স্থানীয় সময় বেলা সোয়া দুইটায় পর্যবেক্ষণে নামবেন দুই আম্পায়ার। মাঠ প্রস্তুতের কাজ চলছে জোরেশোরে। নতুন করে বৃষ্টি না নামলে হয়তো পর্যবেক্ষণের পর দ্রুতই শুরু হবে ম‍্যাচ।

খেলা শুরুতে দেরি

ডমিনিকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার ম‍্যাচে বাগড়া দিয়েছে বিরূপ আবহাওয়া। তাতে পিছিয়ে গেছে টস। স্বাভাবিকভাবেই দেরি হচ্ছে খেলা শুরু করতে।

মাঠের নানা আংশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়, কিছু অংশ এখনও ভেজা। মাঠকর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করছেন মাঠ প্রস্তুত করতে। ওয়ার্ম আপ করতে নেমে দুই দলই।

টস হতে দেরি

বিরূপ আবহাওয়ার জন‍্য যথা সময়ে শেষ করা যায়নি মাঠ প্রস্তুতের কাজ। ফলে নির্ধারিত সময়ে টস করা যায়নি ডমিনিকায়। তাই বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি নির্ধারিত সময়ে শুরু করা নিয়ে জেগেছে শঙ্কা।

নতুন শুরুর আশায় বাংলাদেশ

পাঁচ বছর পর প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম‍্যাচ হতে যাচ্ছে ডমিনিকায়। আট বছর পর হতে যাচ্ছে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। উইন্ডসর পার্কের জন‍্য এটা একরকম নতুন শুরুই। সবশেষ ভারত দল থেকে একগাদা পরিবর্তন এনে নতুন শুরু করতে যাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। স্বাগতিকদের মতো অতো না হলেও বেশ কিছু পরবির্তন আছে বাংলাদেশ দলেও।

টি-টোয়েন্টিতে এখনও নিজস্ব ঘরানা খুঁজে ফেলা দলটিও একরকম নতুন শুরু করতে চায় ক‍্যারিবিয়ানে।

বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়ার কথা ম্যাচটি।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কেমন ব‍্যাটিং প্রয়োজন, সেটা যেন এখনও বুঝে উঠতে পারছে না বাংলাদেশ। তবে শিগগির একটা পথ খুঁজে পাওয়ার আশায় দল। ডট বলের সংখ‍্যা কমিয়ে, বাউন্ডারির সংখ‍্যা বাড়িয়ে, পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ার চেষ্টা করছে মাহমুদউল্লাহর দল। সেটা তারা কতটা করতে পারবেন, এই কৌশল কতটা কার্যকর হবে, সেটার একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে দুইবারের বিশ্ব চ‍্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে।

খেলাধুলা

চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন নাঈম হাসান। বাংলাদেশ টাইগার্সের হয়ে এই অফ স্পিনার পেলেন পাঁচ উইকেটের স্বাদ। ব্যাট হাতে মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও ইমরুল কায়েসের ব্যর্থতার দিনে ফিফটি করলেন সৌম্য সরকার।

খেলাধুলা

সময়, ইনিংস, ম্যাচ বদলে গেল; কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থ হওয়ার গল্পটা থেকে গেল একই। অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে আউট হলেন বেশ কয়েকজন।

তাতে ইনিংস হারের শঙ্কা নিয়েই শেষ করতে হয়েছে সেন্ট লুসিয়া টেস্টের তৃতীয় দিন। মাটি হয়ে গেছে পেসার খালেদ আহমেদের টেস্টে প্রথম পাঁচ উইকেট পাওয়ার উৎসব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে ইনিংস হারের লজ্জা থেকে বাঁচতে এখনও বাংলাদেশকে করতে হবে ৪৩ রান, হাতে আছে ৪ উইকেট। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৩৪ রানে অলআউট হওয়ার পর ৪০৮ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমেও ৬ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৩২ রান।

এদিন ব্যাটিংয়ে হতাশার গল্পের শুরুটা হয় তামিম ইকবালকে দিয়ে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার দলের অন্যতম বড় ভরসা, তিনি জানেন নিশ্চয়ই। কিন্তু তার আউট হওয়ার ধরন তেমন কিছু বলছে না। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে কেমার রোচকে উইকেট দিয়ে এসেছেন তিনি। ৮ বলে ৪ রান করা তামিমকে ফিরিয়ে টেস্টে নিজের ২৫০তম উইকেট পেয়েছেন রোচ।

তামিমের উদ্বোধনী সঙ্গী মাহমুদুল হাসান জয় শুরুতে একটু দেখেশুনে খেলেন। খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে কি না, রোচকে দুই বলে চার মারলেন তিনি। এরপরই হলেন পরাস্ত। গুড লেন্থে পড়া রোচের বেরিয়ে যাওয়া বলে স্লিপে দাঁড়ানো ব্ল্যাকউডের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩ চারে ২১ বলে ১৩ রান করেন জয়।

তিন নম্বরে খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তর আগেই ফিরে যান এনামুল হক বিজয়। এবারও প্রথম ইনিংসের মতো আম্পায়রস কলের স্বীকার হয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান আট বছর পর টেস্ট খেলতে নামা এই ব্যাটার। ৭ বলে ৪ রান করেন তিনি।

শান্তকে শুরুতে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যই মনে হচ্ছিল। কিন্তু তিনিও উইকেট উপহার দিয়ে আসেন একরকম। ৯১ বলে ৪২ রান করে আলজেরি জোসেফের বল তাড়া করে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানও নিজেদের ইনিংসকে লম্বা করতে পারেননি। ৩২ বলে ১৯ রান করে লিটন ও ৩২ বলে ১৬ রান করে আউট হন সাকিব। এরপর কিছুক্ষণ নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং করার পর নামে বৃষ্টি। ১৪ বলে ১৬ রান করে সোহান ও ১৩ বলে ০ রান করে অপরাজিত আছেন মিরাজ।

এর আগে খালেদ আহমেদের ৫ উইকেটের কল্যাণে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করতে পারে বাংলাদেশ। ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৪০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেঞ্চুরি করা মেয়ার্সের ব্যাটে চড়ে দারুণ কিছুর স্বপ্ন দেখছিল তারা। খালেদের উইকেট তখন ছিল দুটি।

দিনের শুরুতে দুই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার জশুয়া ডি সিলভাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এর আগে ১১৫ বলে ২৯ রান করেন তিনি।

এরপর ৯ বলে ৬ রান করা আলজারি জোসেফকে আউট করেন খালেদ আহমেদ। তার শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে দাঁড়ানো লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জোসেফ।

এরপরই সবচেয়ে বড় উইকেটটা নেন খালেদ। সেটাও দারুণ এক বলে। কিছুটা কাটার ধরনের বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করার পথে বাঁধা হয়ে থাকা মেয়ার্স ক্যাচ তুলে দেন শরিফুল ইসলামের হাতে। ২০৮ বলে ১৪৬ রান করে আউট হন মেয়ার্স।

এরপরই শুরু হয় খালেদের পাঁচ উইকেটের অপেক্ষা। শেষ ব্যাটার জেডন সিলসকে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন খালেদ। এর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনবার পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেও টেস্টে পেলেন এই প্রথম।

খেলাধুলা

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে হেরেছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় টেস্টেও হার কেবল সময়ের ব্যাপার। তবে দলের খুব খারাপ অবস্থা, তা মানতে নারাজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। তার মতে, ক্যারিবিয়ায় গতবারের সফরের চেয়ে এবার বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবেই ভালো।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২০১৮ সালের সফরে প্রথম টেস্টে অ্যান্টিগায় প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হেরে যায় ইনিংস ও ২১৯ রানে।

এবারের সফরে প্রথম টেস্টে সেই অ্যান্টিগাতেই প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পরে বোলারদের সৌজন্যে লড়াই কিছুটা করতে পারে দল। যদিও ম্যাচ শেষ পর্যন্ত হেরে যায় ৭ উইকেটে।

অঙ্কের হিসেবে আর ফলাফলের ব্যবধানে তাই এবারের পারফরম্যান্সে উন্নতির ছোঁয়া আছে বটে। তবে বাস্তবে ক্রিকেটীয় মানে কতটা উন্নতি হয়েছে, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের ছাপ খুব একটা দেখা যায়নি। শক্তি-সামর্থ্য আর অভিজ্ঞতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের এবারের দলও বেশ পিছিয়ে। গতবারের দল থেকে জেসন হোল্ডার, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, কাইরান পাওয়েল, দেবেন্দ্র বিশু, রোস্টন চেইসের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবার নেই।

গতবার দ্বিতীয় টেস্টে ১৬৬ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কা এখনও আছে তৃতীয় দিন শেষে।

তবে বিসিবি সভাপতির কোনো সংশয়ই নেই যে দল এবার আগের চেয়ে ভালো করেছে। রোববার রাতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগসহ অন্যান্য লিগের জমে থাকা বেশ কয়েক বছরের ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বললেন দলের উন্নতির কথা।

“এই যে আমাদের দল ওয়েস্ট ইন্ডিজে গেল, আমরা অবশ্যই চাইব আমাদের দল জিতুক। কিন্তু আমরা যদি মনে করি ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে দল হেরে গেলে দলের খুব খারাপ অবস্থা, এটায় কিন্তু আমি একমত নই। সারাজীবন তো হেরেই আসছি! বরং প্রথম টেস্টের কথা যদি বলি, শেষবার যখন গিয়েছি ২০১৮-তে, তার চেয়ে এবারের পারফরম্যান্স ভালো। অবশ্যই এটা আমার কাছে একটা উন্নতি।”

বিসিবি সভাপতি এমন একটি দিনে এই কথা বললেন, যেদিন বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২২ বছর পূর্ণ হয়েছে। তিনি অবশ্য অকপটে স্বীকার করে নিলেন, এই সংস্করণে বাংলাদেশ ভালো দল নয়। তবে অন্যান্য দলের উদাহরণ টেনে বললেন, তাদেরও ভালো করতে সময় লেগেছে।

“আমাদের সবচেয়ে দুর্বল দিক এখনও টেস্ট। সত্যি বলতে, টি-টোয়েন্টিতেও আমরা আহামরি কোনো দল নই। তবে অনেক দেশ, যারা এখন অনেক অনেক ভালো করছে টেস্টে, তাদের ইতিহাস যদি দেখেন, ২০-২২ বছরে তাদের পারফরম্যান্সও ভালো ছিল না।”

“আমাকে যদি ২২ বছরের কথা বলেন, আমরা দেশের মাটিতে জেতা শুরু করেছি। তার মানে সবগুলি যে জিতে যাব, তা নয়। আমরা কয়েকটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছি দেশের মাঠে, শক্তিশালী দলের সঙ্গে। এটা একটা উন্নতি। বিদেশে গিয়েও যে আমরা জিততে পারি, সেটার একটা আভাস পেয়েছি। কিন্তু তাই বলে আপনারা যদি মনে করেন, অলরেডি আমরা ভালো দল হয়ে গেছি, প্রশ্নই আসে না। এখনও অনেক পথ যেতে হবে টেস্টে, অনেক পথ বাকি। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।”

চলতি সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, বাংলাদেশের টেস্ট সংস্কৃতি যেখানে থাকা দরকার, সেখানে এখনও পৌঁছতে পারেনি। টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে না ওঠা নিয়ে আলোচনা আরও অনেকেই অনেক সময় করেছেন।

এই ২২ বছরের প্রায় ১০ বছরই বোর্ড সভাপতি হিসেবে কাজ করে আসছেন নাজমুল হাসান। ২০১২ সালের অক্টোবরে প্রথম দফায় বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব নিয়েই তিনি বলেছিলেন, জোর দিতে চান টেস্ট ক্রিকেটে। প্রায় ১০ বছর পর তিনি এখনও বলছেন, টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে উঠতে সময় লাগবে। এখানেও তিনি আবার টেনে আনলেন অন্য দেশগুলোকে।

“সংস্কৃতি গড়ে উঠতে সময় লাগবে। ভারতের প্রায় ২৬ বছর লেগেছিল প্রথম ম্যাচ জিততে… এত অস্থির হলে হবে না। আপনারা আরেকটা ব্যাপার দেখেন, টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিউ জিল্যান্ড। তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ৮টার মধ্যে মাত্র ২টি সিরিজ জিততে পেরেছে (আদতে সিরিজ নয়, ম্যাচ)। তার মানে কি নিউ জিল্যান্ড খারাপ দল হয়ে গেল?”

আদতে ২৬ বছর নয়, প্রথম টেস্ট জিততে ভারতের সময় লেগেছিল সাড়ে ১৯ বছরের মতো। তবে সেসময় খেলা হতো অনেক কম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর জন্য প্রায় ১০ বছর তারা কোনো ম্যাচই খেলেনি। প্রথম জয়ের ওই সাড়ে ১৯ বছরে স্রেফ ২৫টি ম্যাচ খেলেছিল তারা। বাংলাদেশ ২২ বছরে খেলে ফেলেছে ১৩৪ টেস্ট!

প্রথম টেস্ট জিততে ২৬ বছর লেগেছিল নিউ জিল্যান্ডের। তবে সেটিও ছিল তাদের কেবল ৪৬তম টেস্ট। গত বছর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর তাদের সময়টা ভালো যাচ্ছে না বটে। তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরের উচ্চতায় তো তারা উঠেছে। বাংলাদেশ কখনোই পারেনি ধারাবাহিক হতে।

বাংলাদেশের মতো এত দ্রুত এত বেশি টেস্ট খেলতে পারেনি আর কোনো দলই। সেন্ট লুসিয়া টেস্ট হারলে মাত্র ১৩৪ টেস্ট খেলেই ১০০ হার পূর্ণ হবে বাংলাদেশের। টেস্ট ইতিহাসে এত বাজে শুরু হয়নি আর কোনো দলের।

খেলাধুলা

একের পর এক সুযোগ এলো। তাতে কাজের কাজ অবশ্য হলো না কিছুই।

অল্প পুঁজি নিয়ে খেলতে নেমে যেখানে কাজে লাগানো দরকার হাফ চান্স, বাংলাদেশ সেখানে পারছে না ফুল চান্সও।

অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের চেয়ে ৫৭ রানে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন অবধি ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করেছে তারা। এর আগে ১০৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।

প্রথম দিনের পুরোটা জুড়েই বাংলাদেশের জন্য ছিল শুধু হতাশা। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা হলো আফসোসের। কখনো ক্যাচ মিস, কখনো আবার ব্যাটে লাগলেও ঠিকঠাক আবেদনই করলেন না ফিল্ডাররা।

দিনের শুরুটা মোস্তাফিজুর রহমান ও এবাদত হোসেনকে দিয়ে করান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শুরুটা মন্দ করেননি তারা। বিশেষত এবাদত হোসেন প্রায়ই বিপদে ফেলছিলেন ব্যাটারদের।

এক পর্যায়ে মিলেছিল সুযোগও। ইনিংসের ৫৩তম ওভারের শুরু থেকেই দুর্দান্ত বল করেছেন এবাদত। শেষ বলটি গুড লেন্থে ফেলে রেখেছিলেন স্টাম্পে। ব্যাটেও লেগেছিল এনক্রুমাহ বোনারের।

কিন্তু সেভাবে আবেদনই করেননি বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখে নিশ্চয়ই হতাশাটা বেড়েছে। এরপরও সুযোগ মিলেছিল আরও একটি। সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে আবারও জীবন পান বোনার।

খালেদের ওভারে তার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে গিয়েছিল বল; কিন্তু প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত বা উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা নুরুল হাসান সোহান কেউই নড়েননি। ক্যাচটি অবশ্য ছিল শান্তর। এরপরই ফিফটি তুলে নেন ক্যারিবীয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট।

খানিক বাদেই অবশ্য বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন সাকিব আল হাসান। দুবার জীবন পাওয়া বোনারকে বোল্ড করে দেন তিনি। ৯৬ বলে ৩৩ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন এই ক্যারিবীয়ন ব্যাটার। এরপর আরও কয়েকটি সুযোগ এলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।

খেলাধুলা

বছরখানেক আগে যে মাঠে ইউরো জয়ের উৎসব করেছিল, সেখানে ফেরাটা রাঙাতে পারল না ইতালি। আক্রমণাত্মক ফুটবলে আধিপত্য করল আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে জোড়া গোল করে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ ধরে রাখল দলটি। ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে মুকুটে নতুন পালক যোগ করল লিওনেল স্কালোনির দল।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ফিনালিস্সিমা নামের আলোচিত ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতে এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা। দুটি গোলই হয় প্রথমার্ধে। লাউতারো মার্তিনেস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আনহেল দি মারিয়া।

দুই মহাদেশ সেরার লড়াইয়ের শুরুটা হয় একটু ঢিমেতালে। তবে খানিক বাদেই মেলে গতি, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। প্রথম ২০ মিনিটে দুই দল একটি করে হাফ-চান্স পায়, যদিও তার কোনোটিই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেওয়ার মতো ছিল না।

২৫তম মিনিটে মেসির শট প্রতিহত হয়। তিন মিনিট পর ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নিয়ে হতাশ করেন পিএসজি তারকা।

পরক্ষণেই অসাধারণ নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে নেন মেসি। তিনি গোলদাতা না হলেও মূল অবদান তারই। সতীর্থেরে পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। পুরোটা সময় সঙ্গে লেগে ছিলেন ডিফেন্ডার জিওভান্নি দি লরেন্সো, কিন্তু কিছুই করতে পারেননি তিনি। আরও খানিকটা এগিয়ে গোলমুখে বল বাড়ান মেসি, সেখানে ছোট্ট টোকায় বাকি কাজ সারেন মার্তিনেস।

দুই মিনিট পর পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ পায় ইতালি। কিন্তু নিকোলো বারেল্লা বক্সের বাইরে থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় গোল করে চালকের আসনে উঠে বসে আর্জেন্টিনা।

মাঝমাঠে লিওনার্দো বোনুচ্চির বাধা এড়িয়ে বল পায়ে এগিয়ে কোনাকুনি থ্রু বল বাড়ান লাউতারো মার্তিনেস। সেদিকে ছুটে যান আরেক ডিফেন্ডার কিয়েল্লিনি। কিন্তু তাকে কোনো সুযোগই দেননি দি মারিয়া, চোখের পলকে বক্সে ঢুকে প্রথম ছোঁয়ায় চিপ শটে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন পিএসজিকে বিদায় জানানো এই মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে নিজেদের ভুলে আরেক গোল খেতে বসেছিল ইতালি। ডি-বক্সের মধ্যে থেকে কী বুঝে ব্যকপাস দেন বোনুচ্চি, গোলরক্ষক বরাবরও ছিল না। তবে ভাগ্য ভালো যে গতি ছিল না, একেবারে শেষমুহূর্তে ঠেকান জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

খানিক পর দুই মিনিটে দুবার গোলের সুযোগ তৈরি করেন দি মারিয়া। ৬০তম মিনিটে তার জোরাল শট প্রতিপক্ষের একজয়ের পায়ে লেগে ক্রসবার ঘেঁষে ভিতরে ঢুকতে যাচ্ছিল, কোনোমতে এক হাত দিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গোলরক্ষক। মেসির নেওয়া ওই কর্নারেই বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে বুলেট গতির ভলি মারেন দি মারিয়া। তবে গোলরক্ষক বরাবর ছিল বলে ইতালির রক্ষা।

প্রবল চাপ ধরে রেখে পরের কয়েক মিনিটে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা। সুযোগও আসতে থাকে অনেক। তিন মিনিটের মধ্যে দুই পাশ থেকে নিচু শটে চেষ্টা করেন মেসি, কিন্তু ঠেকিয়ে দেন দোন্নারুম্মা। মাঝে একবার তার বাড়ানো পাস ছয় গজ বক্সে ফাঁকায় পেয়েও পাশের জালে মারেন লাউতারো মার্তিনেস।

৬৯তম মিনিটে আরও একবার মেসিকে হতাশ করেন দোন্নারুম্মা। সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর জোরাল শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।

খেলাধুলা

ফিরে এলো ৩৭ বছর আগের স্মৃতি। ১৯৮৫ সালে সবশেষ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। তিন যুগের বেশি সময় পর ফের তাদের রুখে দিয়েছেন জামাল ভূঁইয়ারা।

বুধবার বান্দুং সি জালাক হারুপাত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ। এই ড্রয়ে র‌্যাংকিংয়ে কিছুটা উন্নতি হতে পারে বাংলাদেশের। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের (১৮৮) চেয়ে ২৯ ধাপ এগিয়ে ইন্দোনেশিয়া (১৫৯)। জয়সম ড্রয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে আজ এশিয়া কাপ বাছাইয়ে খেলতে মালয়েশিয়ায় উড়ে যাবেন জামালরা।

বৃষ্টির কারণে ভারী হয়ে যায় বান্দুং স্টেডিয়ামের মাঠ। যে কারণে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে দুদলের খেলোয়াড়দের। ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধে বাংলাদেশের ফুটবলাররা ছিলেন দুর্দান্ত। চোটের কারণে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় না থাকার অভাবটা বুধবার বুঝতে দেয়নি জামাল ভূঁইয়ার দল। চমক হিসাবে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন লাল-সবুজের জার্সিতে নিজের প্রথম ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন।

দেরিতে আসায় ক্যাম্প থেকে নাবিব নেওয়াজ জীবনকে বাদ দেন কাবরেরা। তার জায়গায় দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া সাজ্জাদ সুযোগ পেলেন প্রথম ম্যাচেই। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের এ ফরোয়ার্ড নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন। তবে প্রথমার্ধ্বে বাংলাদেশের ত্রাতা ছিলেন গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো।

গোলপোস্টের নিচে চীনের প্রাচীর হয়ে ছিলেন। স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়ার সব আক্রমণ একাই প্রতিহত করেন। তার বীরত্বে প্রথমার্ধে জাল অক্ষত রাখে হাভিয়ের কাবরেরার দল। ম্যাচের দুই মিনিটে ইন্দোনেশিয়ার রক্ষণে কাঁপন ধরান রাকিব হোসেন। তবে তার বাঁ পায়ের শট চলে যায় পোস্টের অনেক ওপর দিয়ে।

সেই আক্রমণের জবাব দিতে থাকে ইন্দোনেশিয়া। বারবার বল নিয়ে বাংলাদেশের বক্সে প্রবেশ করার চেষ্টা করে তারা। বাংলাদেশের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের বোকা বানিয়েছেন বেশ কয়েকবার। তবে প্রতিবারই ত্রাতা ছিলেন জিকো। ৬৬ মিনিটে স্টেফানো লিলিপালির হেড দক্ষতার সঙ্গে রুখে দেন জিকো। নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন বাংলাদেশকে। ৮৪ মিনিটে সোহেল রানার দ্রুতগতির শট গ্রিপে নিয়ে নেন ইন্দোনেশিয়ান গোলকিপার নাদেও আরগা। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্রয়েই শেষ হয় প্রীতি ম্যাচটি।

খেলাধুলা

কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে ট্রফি ট্যুরের অংশ হিসেবে আগামী ৮ জুন বাংলাদেশে আসবে বিশ্বকাপ ট্রফি। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফার সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল এই ট্রফি নিয়ে ঢাকায় আসবেন। যাদের মধ্যে থাকবেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী তারকা ক্রিস্তিয়ঁ কাহেম্বু।

বিশ্বকাপ ট্রফি ঢাকায় আসার বিষয়টি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ সোমবার নিশ্চিত করেন। বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের এ স্মারক ৩৬ ঘণ্টা ঢাকায় থাকবে।

বিশ্বকাপ জয়ী দুই তারকা স্পেনের ইকের কাসিয়াস ও ব্রাজিলের কাকার উপস্থিতিতে গত ১২ মে দুবাইয়ে বিশ্বকাপ ট্রফির বিশ্ব ভ্রমণ শুরু হয়। এই আয়োজনের গ্লোবাল পার্টনার কোকা কোলা।

কাতার বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া ৩২ দেশসহ মোট ৫১টি দেশে ভ্রমণ করবে এই ট্রফি।

ফিফা ও কোকা কোলার সঙ্গে এ নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছে বাফুফে। আবু নাইম সোহাগ জানান, ট্রফি ঢাকায় আসবে চাটার্ড বিমানে।

“৮ জুন সকালে ট্রফি ঢাকায় আসবে এবং ৯ জুন চলে যাবে। নির্দিষ্ট করে বললে ৩৬ ঘণ্টা ট্রফি ঢাকায় অবস্থান করবে। ট্রফি আসার পর সেদিনই রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে নেওয়া হবে।”

“পরবর্তীতে আর্মি স্টেডিয়ামে বিভিন্ন ইভেন্টের মাধ্যমে সীমিত সংখ্যক সাধারণ মানুষদের জন্য ট্রফি প্রদর্শন করা হবে। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ট্রফির সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ। ফিফার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি কিংবদন্তি ক্রিস্তিয়ঁ কাহেম্বু ঢাকায় আসবেন।”

৫১ বছর বয়সী কাহেম্বু ফ্রান্সের হয়ে খেলেছেন ৫৩ ম্যাচ। জাতীয় দলের হয়ে একটি গোল রয়েছে এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ পর্যন্ত খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদে।

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ ছাড়াও একটি করে ইউরো কাপ ও কনফেডারেশন্স কাপ জিতেছেন কাহেম্বু। রিয়ালের হয়ে জিতেছেন দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।

বিশ্বকাপ ট্রফি সবশেষ ঢাকায় এসেছিল ব্রাজিল বিশ্বকাপের আগে, ২০১৩ সালে। রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে ট্রফি বাংলাদেশে আসেনি।

এ বছর কাতার বিশ্বকাপ ২১ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ১৮ ডিসেম্বর।