খেলাধুলা

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়ে সিরিজের ফয়সালা শেষ ম্যাচে নিয়ে গেল বাংলাদেশ।

একই উইকেটে ম্যাচ। ম্যাচের চিত্রও প্রায় একইরকম। শুধু বদলে গেল দুই দলের অবস্থান। শারজাহতে দিন আর রাতের পার্থক্য প্রথম ম্যাচে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ, এবার সেই তেতো অভিজ্ঞতা হলো আফগানিস্তানের। সিরিজেও তাই ফিরে এলো সমতা।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়ে সিরিজ জিইয়ে রাখল বাংলাদেশ।

১১৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা নাজমুল হাসান শান্ত। দলের জয়ের ভিত অধিনায়কের হাতেই গড়া। তবে একাদশে যে দুটি পরিবর্তন এ দিন আনে বাংলাদেশ, মহামূল্য ভূমিকা রাখেন সেই দুজনও।

এক বছর পর বাংলাদেশের জার্সিতে নেমে ২৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পাশাপাশি তিন উইকেট শিকার করেন নাসুম আহমেদ। ম্যাচ-সেরা হতে পারতেন তিনিও। ওয়ানডে অভিষেকে তিন ছক্কায় ২৭ বলে অপরাজিত ৩৭ রান করেন জাকের আলি। তার ওই শেষের ঝড়েই বাংলাদেশ ৫০ ওভারে করতে পারে ২৫২ রান।

শারজাহতে পরে ব্যাট করে এই রান তাড়া করা ভীষণ কঠিন। আফগানিস্তানও তা পারেনি। ৩৯ বল বাকি থাকতে তাদের ইনিংস শেষ হয় ১৮৪ রানে।

প্রথম ম্যাচে ২ উইকেটে ১২০ রান থেকে ভয়াবহ ধসে ভেঙে পড়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। এবার আফগানিস্তানের রানও ছিল এক পর্যায়ে ২ উইকেট ১১৮। তার পরই তাদের উল্টো যাত্রার শুরু। বাংলাদেশের মতো ২৩ রানের মধ্যে ৮ উইকেট তারা হারায়নি। তবে এক রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে পথচ্যুত হয় রান তাড়া। পরে ২১ রানের মধ্যে পতন হয় শেষ পাঁচ উইকেটের।

প্রথম ম্যাচে ছয় উইকেট শিকার আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার এ দিন আগে বোলিং করেও বেশ ভালো পারফর্ম করেছেন (১০-০-৩৫-২)। তবে ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে যায় হয়তো ম্যাচ শুরুর আধঘণ্টা আগেই। টস ভাগ্যকে যে এবার পাশে পায় বাংলাদেশ!

আগের ম্যাচের ব্যাটিং ধসকে পেছনে ফেলার বিশ্বাস দলকে এনে দেন তানজিদ হাসান। ফাজালহাক ফারুকির দুই ওভারে তিন বাউন্ডারির পর গাজানফারের ফুল টসকে ছক্কায় উড়িয়ে তিনি। পরের বলেই পুনরাবৃত্তির চেষ্টায় শেষ হয় তার ইনিংস (১৭ বলে ২২)।

শান্ত ক্রিজে গিয়ে সেই গতি ধরে রাখার চেষ্টা করেন। সৌম্য সরকারের শুরুটা ছিল সাবধানী। ৮ ওভার শেষে তার রান ছিল ১৭ বলে ৬। পরে মোহাম্মদ নাবির ওভারে চার ও চোখধাঁধানো এক ছক্কায় তিনিও ছন্দের ফেরার ইঙ্গিত দেন। পরে আজমাতউল্লাহ ওমারজাইয়ের শর্ট পিচ বল আছড়ে ফেলেন তিনি স্টেডিয়ামের বাইরে।

দুজনের এই জুটি থামে ৭১ রানে। সৌম্যকে বিদায় করে দেন রাশিদ খান। তবে ৩৫ রানের ইনিংসটি লম্বা হতো পারত আরও, যদি তিনি রিভিউ নিতেন। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, রাশিদ খানের বল পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে।

সৌম্যর বিদায়ের পর অনেকটাই খোলসে ঢুকে যান শান্ত। উইকেট ধরে রাখতে সাবধানী ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নেন তিনি।

মেহেদী হাসান মিরাজও ঝুঁকি না নিয়ে এক-দুই রান করে নিয়ে ইনিংস গড়ায় মন দেন। তাতে আরেকটি অর্ধশত রানের জুটি গড়ে ওঠে।

রাশিদের দুর্দান্ত এক গুগলিতে মিরাজ বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি।

শান্ত প্রথম ৩৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় করেন ৩০ রান। সেখান থেকে পঞ্চাশে পা রাখেন ৭৫ বলে।

কিন্তু একটি মিনি-ধসে এলোমেলো হয়ে যায় গোছানো ইনিংস। ১০ রানের মধ্যে পড়ে যায় তিন উইকেট। তিনটিই নানগেলিয়া খারোটেকে ব্যাটসম্যানদের উপহার।

স্লগ সুইপে বিদায় নেন হৃদয়। ৪০ ওভার শেষ হতেই হুট করে ধৈর্য হারিয়ে ছক্কার চেষ্টায় সীমানা ধরা পড়েন শান্ত।

দুই বল পরই আবার ছক্কা মারতে গিয়ে উইকেট হারান মাহমুদউল্লাহ। সবশেষ চার ওয়ানডেতে ৩৮ বছর বয়সী ক্রিকেটারের রান ০, ১, ২, ৩!

বাংলাদেশের তখন ২২০-২৩০ রানে। কিন্তু জাকের-নাসুমের হাত ধরে দল পেয়ে গেল আরও বেশি কিছু।

৪১ বলে ৪৬ রানের জুটি গড়েন দুজন। ম্যাচের প্রেক্ষাপটে যে জুটির ভূমিকা বিশাল।

দুই ছক্কায় ২৫ করে নাসুম আউট হন। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কায় দলের রান আড়াইশ পার করান জাকের।

শেষ চার ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৪৭ রান।

মোমেন্টাম, পুঁজি, পরিস্থিতি, সবই ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। প্রথম উইকেটও দ্রুতই ধরা দেয়। আগের ম্যাচের মতোই রাহমানউল্লাহ গুরবাজকে দ্রুত ফেরান তাসকিন আহমেদ।

তবে দ্বিতীয় উইকেটে সেদিকউল্লাহ আটাল ও রেহমাত শাহ গড়েন ৫২ রানের জুটি।

নাসুম বল হাতে নিয়েই ভাঙেন এই জুটি। দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে উইকেটটি অবশ্য দাবি করতে পারেন মিরাজও!

রেহমাত ও হাশমাতউল্লাহ শাহিদি আরেকটি জুটি গড়ে তুলেছিলেন। তবে এই জুটির অর্ধশত হওয়ার আগেই ফেরেন শাহিদি। ওমারজাইকে প্রথম বলেই বোল্ড করে দেন নাসুম। ৫২ করে রেহমাত রান আউট গুলবাদিন নাইবের সঙ্গে কেই প্রান্তে চলে গিয়ে।

ম্যাচের ফল আসলে অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যায় সেখানেই। এরপর নাইব একটু পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন বটে। তবে ২৫ রানেই থামে তার সেই চেষ্টা। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা নাবিকে দারুণ এক টার্নিং বলে বোল্ড করে দেন মিরাজ। ম্যাচ শেষ হতেও এরপর আর বেশি সময় লাগেনি।

ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়ে অনেকটা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন শান্ত। অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটান সতীর্থরা।

শারজাহতে সাত ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশের প্রথম জয় এটি। দ্বিতীয় জয়টি পেয়ে সিরিজ জয়ের আশায় তারা মাঠে নামবেন সোমবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫২/৭ (তানজিদ ২২, সৌম্য ৩৫, শান্ত ৭৬, মিরাজ ২২, হৃদয় ১১, মাহমুদউল্লাহ ৩, জাকের ৩৭*, নাসুম ২৫, তাসকিন ২*; ফারুকি ৭-০-৬৯-০, গাজানফার ১০-০-৩৫-২, নাবি ১০-০-৪৯-০, নাইব ২-০-১০-০, ওমারজাই ৩-০-২৩-০, রাশিদ ১০-০-৩২-২, খারোটে ৮-০-২৮-৩)।

আফগানিস্তান: ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ (গুরবাজ ২, আটাল ৩৯, রেহমাত ৫২, শাহিদি ১৭, ওমারজাই ০, নাইব ২৬, নাবি ১৭, রাশিদ ১৪, খারোটে ৪, গাজানফার ; শরিফুল ৮-০-৪৫-০, তাসকিন ৬-১-২৯-১, মিরাজ ১০-১-৩৭-৩, মুস্তাফিজ ৮-০-৩৭-২, নাসুম ৮.৩-১-২৮-৩, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-৭-০)।

ফল: বাংলাদেশ ৬৮ রানে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজের দুটি শেষে ১-১ সমতা।

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাজমুল হোসেন শান্ত।

খেলাধুলা

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সময়টা সুখকর যাচ্ছে না একদমই। টানা হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে দল।

ফরম্যাট বদলেও স্বস্তি পাওয়া যায়নি খুব একটা। সবশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে হেরেছে বাংলাদেশ।

এ ম্যাচে ২৩৫ রান তাড়া করতে নামে টাইগাররা। শুরুটা ভালো করলেও ২৩ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হেরে যায় বড় ব্যবধানে। শারজাহতে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডে মাঠে নামবে দুই দল। এরপর সোমবার হবে শেষ ওয়ানডে। সিরিজ বাঁচাতে দুই ম্যাচই জিততে হবে বাংলাদেশকে। তবে আপাতত দ্বিতীয় ওয়ানডের দিকেই চোখ রাখছেন মিরাজ।

তিনি বলেন, ‘দেখুন, যেহেতু আমাদের সুযোগ আছে। একটা ম্যাচ হেরেছি, এখনো দুইটা ম্যাচ আছে। আমরা দুইটা ম্যাচ চিন্তা না করে, পরের ম্যাচটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমরা একটু পিছিয়ে আছি। যেহেতু একটা ম্যাচ খেলেছি এখানে, লম্বা সময় পর ওয়ানডে খেলছি; আপনি দেখবেন সাত-আট মাস আগে আমরা খেলেছি। ’

‘সবার ভেতর ওই জিনিসটাও একটু কাজ করছিল যে অনেকদিন পর আমরা ওয়ানডে খেলেছি। প্রস্তুতিটা ওভাবে নিচ্ছি। আশা করি যে, যেহেতু অনেকদিন পর খেলেছি, এই মাঠের একটা ধারণা হয়েছে। ভালো মোমেন্টাম কীভাবে নিতে হবে সেটা নিয়ে আমরা অনুশীলন করছি। ’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ দুই ওয়ানডেতে মুশফিকুর রহিমকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আঙুলের হারে চিড় ধরায় তিনি ছিটকে গেছেন। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের ছিটকে যাওয়া যে ধাক্কা, সেটি মানছেন মিরাজও।

তিনি বলেন, ‘যেটা বললেন, মুশফিক ভাইয়ের কথা। এটা তো অবশ্যই আমাদের জন্য দুঃখজনক। মুশফিক ভাই যে ইনজুরি হয়েছে। উনি দলের ভেতর কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমরা সবাই জানি। কারণ তিনি যেভাবে ক্রিকেট খেলেন, দেশকে সার্ভিস দিয়ে গেছেন এটা অসাধারণ ছিল। ’

খেলাধুলা

ইসরায়েলি ফুটবল সমর্থকদের ওপর হামলাকে ইহুদিবিদ্বেষী বলে মন্তব্য করেছেন দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি ফুটবল সমর্থকদের ওপর হামলার পর তাদেরকে উদ্ধারে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ পাঠাচ্ছে ইসরায়েল।

ফুটবল সমর্থকদের ওপর ওই হামলাকে ইহুদিবিদ্বেষী বলে মন্তব্য করেছেন দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। নিজ দেশের ফুটবল সমর্থকদের ফেরত আনতে শুক্রবার নেদারল্যান্ডসে দুটি উড়োজাহাজ পাঠাচ্ছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, ইসরায়েলের ফুটবল ক্লাব ম্যাকাবি তেল আবিব ও ইহুদি ক্লাব হিসেবে পরিচিত অ্যাজাক্স আমস্টারডামের মধ্যকার খেলার পর ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর খুবই সহিংস ঘটনা ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে উড়োজাহাজ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আমস্টারডামের জোহান ক্রুইফ এরিনাতে বৃহস্পতিবার ম্যাকাবি ও অ্যাজাক্স আমস্টারডামের মধ্যে ইউরোপা লিগের খেলা ছিল। এ খেলায় অ্যাজাক্স আমস্টারডাম জয়ী হওয়ার পর রাতে সেখানে সংঘাত শুরু হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, চলমান সংঘাত থামানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। এর মাঝে কিছু হামলাকারী ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল।

আমস্টারডামের মেয়র ফেমকে হালসেমা বলেছেন, ম্যাকাবি তেল আবিব সমর্থকদের ওপর হামলা এবং গালিগালাজ করা হয়েছে। তাদের দিকে আতশবাজিও ছোড়া হয়েছে। তাদের রক্ষা করতে এবং পাহারা দিয়ে হোটেলে পৌঁছে দিতে দাঙ্গা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। অন্তত ৫ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নেদারল্যান্ডসে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে গেছে। স্থানীয় অনেক ইহুদি সংগঠন ও স্কুল হুমকি ও ঘৃণার ভাষায় লেখা চিঠি পাওয়ার অভিযোগ করেছে।

ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ বলেছেন, ইসরায়েলের নাগরিকদের ওপর ইহুদিবিদ্বেষীদের হামলার ঘটনায় তিনি ভীত সন্ত্রস্ত। এমন হামলা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

শুফ জানান তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, “অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে এবং আইনের আওতায় তাদের বিচার করা হবে।”

খেলাধুলা

২৩৬ রানের লক্ষ্যটা একদিনের ক্রিকেটে আহামরি কিছু নয়। তবে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের এমনই দশা-এই রান করতেই ত্রাহি অবস্থা। আফগান স্পিনারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৯২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।

অথচ শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রানতাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা মন্দ ছিল না। একসময় ১২০ রানে দুই উইকেট তুলে ফেলেছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ক্রিজে অধিনায়ক নিজে ছিলেন, মেহেদী হাসান মিরাজ তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন।

কিন্তু সেখান থেকেই ধসের শুরু। দলীয় রান যখন ১২০, তখন মোহাম্মদ নবীর বলে প্যাডল সুইপের চেষ্টা করেন শান্ত। কিন্তু টাইমিংয়ের গরমিলে তাকে শর্ট ফাইন লেগে হাশমতউল্লাহ শহীদির ক্যাচ হতে হয়। ৪৭ রানে সাঙ্গ হয় তার ইনিংস। শেষ পর্যন্ত এটাই হয়ে থাকে দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।

শান্ত ফেরার পর মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা একে একে নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দেন। ব্যাটিং অর্ডারের শেষ ছয় ব্যাটার মিলে সাকুল্যে করেন ৭ রান।

আফগান বোলারদের মধ্যে নিজের ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নেমে ৬ উইকেট তুলে নেন অফ স্পিনার এএম গাজানফার। তানজিদ তামিমকে ফিরিয়ে শুরু করেন এই স্পিনার, আর শেষটা শরিফুল ইসলামের স্টাম্প গুঁড়িয়ে দিয়ে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। মোস্তাফিজুর রহমান-তাসকিন আহমেদের পেস তোপে ৭১ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসেছিল তারা।

তবে ষষ্ঠ উইকেটে ১০৪ রানের জুটি গড়ে আফগানদের চাপমুক্ত করেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৪ রান করেন নবী, শহীদির ব্যাটে আসে ৫২ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে সমান চারটি করে উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজ ও তাসকিন।

আগামী ৯ নভেম্বর দ্বিতীয় ওয়ানডে এখন বাংলাদেশের জন্য সিরিজ বাঁচানোর লড়াই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

আফগানিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৩৫ (গুরবাজ ৫, সেদিকউল্লাহ ২১, রেহমাত ২, শাহিদি ৫২, ওমারজাই ০, নাইব ২২, নাবি ৮৪, রাশিদ ১০, খারোটে ২৭*, ফাজানফার ০, ফারুকি ০; শরিফুল ৯.৪-০-৩৪-১, তাসকিন ১০-০-৫৩-৪, মুস্তাফিজ ১০-০-৫৮-৪, মিরাজ ১০-০৩০-০, রিশাদ ৮-০-৪৪-০, মাহমুদউল্লাহ ২-০-১১-০)

বাংলাদেশ: ৩৪.৩ ওভারে ১৪৩ (তানজিদ ৩, সৌম্য ৩৩, শান্ত ৪৭, মিরাজ ২৮, হৃদয় ১১, মাহমুদউল্লাহ ২, মুশফিক ১, রিশাদ ১, তাসকিন ০, শরিফুল ১, মুস্তাফিজ ৩*; ফারুকি ৪-০-২২-০, গাজানফার ৬.৩-১-২৬-৬, নাবি ৪.২-০-২৩-১্, ওমারজাই ৪.৪-০-১৬-১, নাইব ১-০-৯-০, রাশিদ ৮-০-২৮-২, খারোটে ৬-০-১৬-০)

খেলাধুলা

গত সেপ্টেম্বরে সারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে শুধুমাত্র একটি ম্যাচ খেলেন সাকিব আল হাসান। সেখানে তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আম্পায়ার।

তাই তার বোলিং অ্যাকশন ঠিকমতো পর্যালোচনার জন্য তাকে পরীক্ষা দিতে বলেছেন ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। যদিও বোলিং করা থেকে এখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি বলে জানিয়েছে ক্রিকেট ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনক্রিকইনফো।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সাকিবের বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা হতে পারে। তবে কোন ল্যাবে পরীক্ষা হবে সেটা এখনো ঠিক হয়নি। তা নিয়ে আলোচনা চলছে সাকিবের সঙ্গে। অ্যাকশন অবৈধ হলে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে আর বোলিং করতে পারবেন না এই অলরাউন্ডার। ফের কোনো ম্যাচে বল হাতে নেওয়ার জন্য অ্যাকশন শুধরে আসতে হবে তাকে।

১৮ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ তোলা হয়েছে। বর্তমানে বেশ ঝামেলার মধ্যেই আছেন তিনি। দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেও নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে তা হয়ে ওঠেনি। মানসিকভাবে বাজে সময় পার করায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজে দলে না রাখার অনুরোধ করেন তিনি।

সরকারের পটপরিবর্তনের পর আর দেশে ফেরা হয়নি সাকিবের। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্যও ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যও ছিলেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নীরব অবস্থানে ক্ষুব্ধ হন অনেকেই। পরে হত্যামামলাও হয় এই অলরাউন্ডারের নামে।

তাই এতোকিছুর মাঝে সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা বিদ্যমান। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় শেষে সারের হয়ে এক ম্যাচ খেলতে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। ১৩ বছর পর কাউন্টিতে প্রত্যাবর্তন ব্যক্তিগতভাবে সুখকরই ছিল তার জন্য। সমারসেটের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করেন ৫ উইকেট। যদিও সেই ম্যাচে তার দল হেরেছে ১১১ রানে।

খেলাধুলা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিপিএলকে আকর্ষণীয় করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এক্ষেত্রে ড. ইউনূসের প্যারিস অলিম্পিকের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতাও কাজে লাগবে বলে মনে করছেন বিসিবি কর্তারা।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে বিপিএলের একাদশ সংস্করণ। এই আসরকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছে বিসিবি। এরই মধ্যে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ক্রিকেট বোর্ড কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সম্প্রচার স্বত্বাধিকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিসিবি।

সোমবার (৪ নভেম্বর) মিরপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেছেন, ‘নিজের উদ্যোগেই কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা এগিয়ে আসছেন। তারা বিশেষভাবে এটা নিয়ে কাজ করছেন। কীভাবে এটিকে আন্তর্জাতিক মানের ব্র্যান্ড করে তোলা যায়, কীভাবে এটাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায়…বিশ্ব যেন দেখে বাংলাদেশের তরুণেরা কী করতে পারে, বাংলাদেশের খেলা কেমন।’

বিশ্বব্যাপী বিপিএলকে ছড়িয়ে দিতে বিদেশি ফুটবলার থেকে হলিউড তারকাদের টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জনিয়ে ফাহিম বলেছেন, ‘যদি প্রফেসর ইউনূস মাঠে আসেন, একটা বক্তব্য দেন…আমরা যদি দেখি বিদেশ থেকে দারুণ নামকরা একজন ফুটবলার, হলিউড থেকে দারুণ একজন অভিনেতা-অভিনেত্রী এখানে আসছে, এটার সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে, এটা নিশ্চয় মিডিয়াতে আসবে। এবং এটা সারা বিশ্বের মিডিয়াতে আসবে।’

তবে কোন তারকাদের নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ এই বিসিবি কর্তা, ‘আমি এখনই নাম বলতে পারছি না বা বলতে চাই না। ক্রিকেট হতে পারে বা বাইরের অন্য স্পোর্টসের হতে পারে। স্পোর্টসের বাইরেও হতে পারে। এমন কাউকে এবার দেখতে পারি।’

খেলাধুলা

ইতিহাস গড়ল নিউজিল্যান্ড। প্রথম দল হিসেবে ভারতের মাটিতে ভারতকেই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ দিল তারা।

বেঙ্গালুরু, পুনের পর মুম্বাইয়েও জয়ের কাব্য লিখল টম ল্যাথামের দল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ভারতকে ২৫ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা।

তিন ম্যাচ সিরিজে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করার অভিজ্ঞতা অবশ্য আগে কখনো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। না ঘরে, না বাইরে। এমনকি প্রথমবারের মতো ঘরের বাইরে টানা তিন টেস্টে জয়ের দেখা পেল কিউইরা। অথচ ভারতে তারা পা রেখেছিল শ্রীলঙ্কার কাছে ধবলধোলাই হয়ে। তার ওপর নিজেদের মাটিতে এক যুগ ধরে কোনো সিরিজ হারের রেকর্ড নেই ভারতের। কিন্তু দিনশেষে দলের সবচেয়ে বড় তারকা কেইন উইলিয়ামসনকে ছাড়াই অবিশ্বাস্য কাব্য লিখে ফিলল নিউজিল্যান্ড।

মুম্বাইয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতে এগিয়ে ছিল ভারতই। আগের দিন ৯ উইকেটে ১৭১ রানে কিউইদের বেঁধে রাখে। আজ শেষ ব্যাটার হিসেবে এজাজ প্যাটেলকে তুলে নিয়ে ফাইফার পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তাতে স্বাগতিকরা পায় ১৪৭ রানের লক্ষ্য। কিন্তু এমন ঘূর্ণি পিচে যে সেই লক্ষ্য পাড়ি দেওয়া কঠিন তা বেশ ভালোমতোই জানত ভারত। কিন্তু সতর্ক থেকেও এড়াতে পারেনি ব্যাটিং ধস। এজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস ও ম্যাট হেনরির সামনে ২৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

সেখান থেকে নিউজিল্যান্ডের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান ঋষভ পন্ত। পাল্টা আক্রমণ করে ভারতের আশাও বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যান তিনি। কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামের রিভিউ না নেওয়ার কারণে এলবিডব্লিউ হয়েও জীবন পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। কিন্তু শেষমেষ তাকে বিদায় নিতে হলো ‘বিতর্কিত’ এক সিদ্ধান্তে। এজাজের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এলেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বেশ হতাশই হন পন্ত। হয়তো তার দাবি ছিল, ব্যাটে বল লাগার কারণে নয়, বরং ব্যাট-প্যাডের সংস্পর্শের কারণেই আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা গেছে।

৫৭ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রানে পন্ত সাজঘরে ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের জয় পেতে অপেক্ষা ছিল কেবল সময়ের। এজাজ ও ফিলিপস মিলে কাজটা বেশ দ্রুততার সঙ্গেই করেন। পন্ত, ওয়াশিংটন সুন্দর ও রোহিত শর্মা বাদে ভারতের কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।  প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া এজাজ এবার ৫৭ রানে শিকার করেন ৬ উইকেট।   প্রায় তিন বছর আগে এই মাঠেই এক ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবার নিউজিল্যান্ডের হয়ে আরও ইতিহাসের জন্ম দিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাতে ফিলিপসেরও আছে অনন্য অবদান। ৪২ রান খরচে তার অর্জন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৩৫/১০ (মিচেল ৮২, ইয়াং ৭১; জাদেজা ৫/৬৫, সুন্দর ৪/৮১)।
ভারত ১ম ইনিংস: ২৬৩/১০ (গিল ৯০, পন্ত ৬০; এজাজ ৫/১০৩)।
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৭৪/১০ (ইয়াং ৫১, ফিলিপস ২৬; জাদেজা ৫/৫৫, অশ্বিন ৩/৬৩)।
ভারত ২য় ইনিংস : ১২১/১০ (পন্ত ৬৪, সুন্দর ১২; এজাজ ৬/৫৭; ফিলিপস ৩/৪২)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ২৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা:এজাজ প্যাটেল (১১উইকেট)।
সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা: উইল ইয়াং (২৪৪ রান)।

খেলাধুলা

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ভর করে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের ফাইনালে উঠার স্বপ্ন পূরণ হলো না।

শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো শেষ চার থেকেই।
হংকং সুপার সিক্সেস টুর্নামেন্টের সেমিতে আজ লঙ্কানদের কাছে ৩ উইকেটে হেরে গেছেন সাইফউদ্দিন-রাব্বিরা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৩ উইকেট হারালেও ১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।

কোয়ার্টার ফাইনালের মতো আজও জিশান ইসলামের ব্যাটে রান আসছিল ভালোই। ১১ বলে ৫ ছক্কায় ৩৬ রান করেছেন এই ওপেনার। আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ আল মামুন ৪ বলে করেছেন ১৬ রান। দারুণ ফর্মে থাকা সাইফউদ্দিন আজও ব্যাটে ঝড় তুলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১২ বলে ২৩ রান করে থেমেছেন তিনি। এছাড়া শেষদিকে ৬ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেছেন আবু হায়দার।

বল হাতে শ্রীলঙ্কার থারিন্ডু রত্নায়েকে ২ ওভারে ৩৩ রান খরচে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এছাড়া ১ উইকেট পেয়েছেন লাহিরু সামারাকুন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ৫৮ রানের জুটি গড়ে ফেলেন দুই লঙ্কান ওপেনার সান্দুন ভিরাক্কডি। ১৬ বলে ৫০ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। আরেক ওপেনার ধনঞ্জয়া লাকশান ৬ বলে ২৪ রান করেন।

মাঝে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ধাক্কা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্পিনার সোহাগ গাজী। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করেন তিনি। কিন্তু বাকিরা কেউ রান আটকাতে পারেননি। এর মধ্যে আগের দুই ম্যাচে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করা সাইফউদ্দিন ২ ওভারে ৪৪ রান খরচে থাকেন উইকেটশূন্য। আবু হায়দার ১টি উইকেট পেলেও ১ ওভারে ২০ রান খরচ করেছেন।

খেলাধুলা

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা প্রদান করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার সকাল ১১ টায় ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিনি এ সংবর্ধনা প্রদান করেন।

এ সময় নারী ফুটবল দলের সদস্যরা তাঁদের স্বপ্ন ও খেলোয়াড় জীবনের প্রতিদিনের সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন।

অধ্যাপক ইউনূস বিজয়ী খেলোয়াড়দের বিভিন্ন দাবি ও কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুতে সপ্তম সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শিরোপ জিতে নেয় বাংলাদেশ দল।

নারী ফুটবলারদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন ‘এই সাফল্যের জন্য আমি পুরো জাতির পক্ষ থেকে তোমাদেরকে অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়, আর তোমরা সেই সাফল্য এনে দিয়েছ।’

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।

তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা পেরিয়ে আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীদের সামগ্রিকভাবে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’

২০০৯ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করা সাবিনা তাঁর আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, আগের প্রজন্ম ফুটবলকে তাঁদের ভালবাসা হিসেবে বেছে নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন।

সাবিনা আরো বলেন, আমাদের অনেকে সাধারণ পরিবার থেকে এসেছে এবং তার পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে হয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বেতন খুব বেশি নয়। এই বেতন দিয়ে পরিবারকে তেমন কোন সাহায্য করতে পারি না।’

এই তারকা স্ট্রাইকার তাঁর কয়েকজন সহযোদ্ধার সংগ্রামের গল্প, যেমন মারিয়া মান্দারের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রামের মারিয়া, যেখান থেকে সাফ বিজয়ী দলের ছয়জন খেলোয়াড় এসেছেন, ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে হারান এবং মা তাকে বড় করেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাঁদের আবাসন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন, আর মিডফিল্ডার মানিকা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার দূরবর্তী লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ফুটবলার হিসেবে উঠে আসার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন।

মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী তাঁর নিজ জেলা দিনাজপুরের রানীশংকৈল উপজেলায় তার গ্রামের দূর্বল অবকাঠামোর কথা বলেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করেন যেন তাঁদের জন্য এশিয়ার বাইরে একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়, বিশেষ করে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বার্সেলোনার সঙ্গে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রত্যেক খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম ও তাদের বিভিন্ন দাবি আলাদাভাবে কাগজে লিখে তাঁর কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য বলেন।

অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘তোমরা যা কিছু চাও তা লিখতে দ্বিধা করো না আমরা তোমাদের দাবিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব। যদি কিছু এখনই করা সম্ভব হয়, আমরা তা করব’।

কোচ পিটার বাটলার এবং ম্যানেজার মাহমুদা আক্তারও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, সুপ্রদীপ চাকমা, অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং নূরজাহান বেগমও উপস্থিত ছিলেন।

খেলাধুলা

দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মাঝপথেই খবর বের হয়, অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে চান নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজই হওয়ার কথা ছিল তার জন্য শেষ।

তবে শান্তকে অধিনায়ক করেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি।
এই সিরিজে সহ অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন মেহেদী হাসান মিরাজ। স্কোয়াডে থাকছেন না লিটন কুমার দাস। জ্বরে ভোগায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশেও ছিলেন না তিনি। ওই অসুস্থতা থেকে সেরে না উঠায় আফগানদের বিপক্ষে নেই এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

টেস্ট স্কোয়াডে বেশ কিছুদিন ধরে নিয়মিত নাহিদ রানা এবার সুযোগ পেয়েছেন ওয়ানডেতেও। এই সিরিজের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে নাসুম আহমেদকে। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এই প্রথম সুযোগ পেলেন তিনি।

আগামী শনি ও রোববার দুই ভাগ হয়ে দুবাইয়ে রওনা হবে বাংলাদেশ দল। ৬, ৯, ১১ নভেম্বর শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ খেলবে দুই দল।

আফগানিস্তান সিরিজের স্কোয়াড: সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ (সহ অধিনায়ক), রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাহিদ রানা ।