জাতীয়

পৌষের আগেই শীতের দাপটে কাবু দেশের মানুষ। উত্তরের হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। অনুভূত হচ্ছে কনকনে শরীর কাঁপানো শীত। তীব্র ঠান্ডায় গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। হাসপাতাল এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে রোগীদের লম্বা লাইনও চোখে পড়ছে। ৭ ঘণ্টা পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৭ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

ঢাকা: বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই রাজধানীর আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণ কমলেও বিকাল থেকেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। রাজধানীতে এতটা কুয়াশা এই প্রথম। এটাই শেষ নয়- আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের ভাষ্য, সময় যত বাড়বে, কুয়াশার পরিমাণও বাড়তে পারে। আজও কুয়াশা থাকবে। রাজধানীতে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি। কুয়াশা ও শীতের এমন দাপট আরও কয়েকদিন টানা থাকতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নবজাতক ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, যেভাবে শীত হানা দিচ্ছে, তাতে শিশু এবং বৃদ্ধরা খুব সহজেই কাবু হচ্ছে। নবজাতক ও শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।

কুড়িগ্রাম ও রৌমারী: কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বুধবারের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও কনকনে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গত তিন দিন ধরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় দেখা মেলেনি সূর্যের। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, কয়েক দিনের ঠান্ডায় এখানকার চরের মানুষজন ভীষণ কষ্টে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র পাইনি।

পঞ্চগড়: বুধ ও বৃহস্পতিবার সারা দিনই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। দিনের বেলাতেও গরম কাপড় পরে বের হতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। শীতার্ত মানুষেরা সামর্থ্য অনুযায়ী এসব দোকান থেকে গরম কাপড় কিনছেন। গ্রামীণ জনপদের অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ: বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। বুধবার রাত ৩টা থেকে নদীতে কুয়াশার পরিমাণ বেড়ে গেলে রাতেই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাঝ নদীতে ছোট বড় মিলে দুটি ফেরি আটকা পড়ে। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফের ফেরি চলাচল শুরু করা হয়। ফেরি বন্ধ থাকায়   গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ১ কিলোমিটার ক্যানেল ঘাট এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কে ট্রাকের সারি আটকে থাকে। পরে আস্তে আস্তে সেগুলো পারাপার করা হয়।

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ): চা বাগান ও পাহাড়বেষ্টিত চুনারুঘাট উপজেলা কাঁপছে শীতে। বিশেষ করে চা বাগান এলাকাগুলোতে বেড়েছে শীত। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রিতে ওঠানামা করলেও বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৯ ডিগ্রি। দিনে সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় প্রয়োজনের বাইরে কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শীতজনিত নানা রোগে বিভিন্ন বয়সিরা হাসপাতালে আসছেন।’

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): জেলার চা বাগান ও টিলা অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলা। উপজেলায় বেড়েছে শীতের প্রকোপ। গত কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শেরপুর: জেলা শেরপুরে গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে শীত ও ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছ। রাতে এবং সকালে বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। শীতের দাপটে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক ও মহাসড়কে ধীরগতিতে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।

আগৈলঝাড়া (বরিশাল): বুধবার রাত থেকে প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। এখন পর্যন্ত উপজেলায় শীতার্তদের জন্য সরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র আসেনি।

হাজীগঞ্জ ( চাঁদপুর): কনকনে শীত। সূর্যের দেখা নেই। প্রচণ্ড শীতে কাঁপছিল মানুষ। স্থবিরতা এসেছে কাজকর্মে। এই ছিল চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার চিত্র। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছিল কুয়াশা।

জাতীয়

২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন বা সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ১০ এপ্রিল বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে এই পরীক্ষা শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি এই রুটিন প্রকাশ করে।

রুটিন অনুযায়ী, প্রতিটি লিখিত পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে একই বছরের ৮ মে। এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।

এর আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ করা হয়। বুধবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ওয়েবসাইটে কেন্দ্র ও কেন্দ্রওয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এদিকে ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফি পরিশোধ করা যাবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১ ডিসেম্বর থেকে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন:

জাতীয়

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের পর এবার আখাউড়া সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন বিজেপি সমর্থকরা। এ কর্মসূচি ঘিরে সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সকাল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করায় সীমান্তে উভয় দেশ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এদিকে, আগরতলায় বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে আগরতলায় কোনো বাংলাদেশি যাত্রীকে হোটেল ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। হোটেল থেকে তাদের জোর করে বের করে দেওয়া হচ্ছে।

হয়রানি ও মারধরের অভিযোগও করেছেন দেশে আসা যাত্রীরা। মার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়ে তারা উলটো হয়রানির শিকার হন। দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

আখাউড়া সীমান্তের ওপারে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন ও ভারতীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ব্যানার-প্ল্যাকার্ডসহ মিছিল নিয়ে মিছিলকারীরা আগরতলা-আখাউড়া সড়ক হয়ে আগরতলা ইমিগ্রেশন সীমান্তে সমাবেশ করার কথা থাকলেও তারা তা করতে পারেনি। আগরতলা রবীন্দ্র ভবনের সামনে বিক্ষোভকারী অবস্থান নিয়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করলেও সীমান্তে আসতে দেওয়া হয়নি। আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দুই কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি বাঁশের বেড়া দিয়ে তারা তাদের বাধা দেয়। ত্রিপুরার হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের জরুরি সভায় রাজ্যের সব হোটেল বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অ্যাসোসিয়েশেনের সচিব সৈকত ব্যানার্জি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন এবং বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে রাজ্যের সব হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশিদের পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের কোনো ধরনের পরিষেবা দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে ভারত থেকে আসা কয়েকজন বাংলাদেশি যাত্রী যুগান্তরকে জানান, যারা আগরতলায় গেছেন তাদের শহরের ভেতরে কোনো হোটেল ভাড়া দেওয়া হয়নি। অনেকেই বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে গিয়ে স্বজনদের বাড়িতে উঠেছেন। মার্কেটে কেনাকাটা করতে গেলেও বাংলাদেশি পরিচয় পেলে কিছু বিক্রি করা হচ্ছে না, উলটো হয়রানি করা হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ভ্রমণরত বাংলাদেশিরা। এছাড়া আগরতলা ইমিগ্রেশনেও বাংলাদেশি যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, আগরতলা ও শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে তিনি জামদানি শাড়ির স্টল দিয়েছিলেন। সোমবার রাতে একদল যুবক আগরতলার মেলায় তার দোকানে ঢুকে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে দোকান ভাঙচুর করে এবং ক্যাশ লুট করে। এরপর দোকান কর্মচারীদের মেলা থেকে বের করে দেয়। এরপর দোকান কর্মচারীদের নিয়ে তিনি হোটেলে চলে আসেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের হোটেল থেকেও বের দেওয়া হয়। বলা হয় হোটেলে থাকলে আমাদের মেরে ফেলবে। তোমরা চলে যাও। এরপর হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে সারা রাত পার করি।

সোমবার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় যান কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ফরিদ মিয়া। তিনি জানান, সেখানে গিয়ে তিনি বিপাকে পড়েন। বাংলাদেশি ও মুসলিম হওয়ায় হোটেল ভাড়া নেওয়ার এক ঘণ্টা পরই তাকে হোটেল থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হোটেল থেকে বের করে দিলেও ফেরত দেওয়া হয়নি ভাড়ার টাকা। তিনি জানান, পরে বাধ্য হয়ে শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়ে দিনভর চেষ্টার পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরে আসেন।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাইরুল আলম জানান, ভারত ফেরত যাত্রীদের অভিযোগ তাদের হোটেল ভাড়া দেওয়া হয়নি এবং ইমিগ্রেশনেও হয়রানি করা হয়েছে। এসব কারণে মঙ্গলবার যাত্রী পারাপার সীমিত ছিল। বিষয়গুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এএম জাবের বিন জব্বার জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতে সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে সর্তকাবস্থায় রয়েছে বিজিবি।

জাতীয়

জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে এক দল থেকে আরেক দলে ডিগবাজির পথ বন্ধের সুপারিশের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’। সেখানে দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেতে হলে ওই দলের অন্তত তিন বছর সদস্যপদ থাকার বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রস্তাব করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার জন্য তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সুপারিশও থাকতে হবে। এজন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) এর ১২ ধারা সংশোধনীর সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে এ কমিশনের। এ বিধান যুক্ত হলে নির্বাচনে এক দলের মনোনয়ন না পেয়ে আরেক দলে যোগ দিয়েই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বন্ধ হবে। এতে মনোনয়ন কেনাবেচায় টাকার খেলাও কমবে। কমিশনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

আরও জানা গেছে, নির্বাচন এলেই দল ভাঙাগড়ার খেলা শুরু হয়। এজন্য চলে টাকার খেলাও। এই খেলায় যুক্ত হন রাজনীতিক, সরকারি আমলা ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অনেকটা ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল। ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগ মুহূর্তে বিএনপি থেকে হঠাৎ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠী-১ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। ওই নির্বাচনে তিনি জয়ীও হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা এ ধরনের খেলা বন্ধের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।

সূত্র জানায়, নির্বাচন ব্যবস্থায় অন্তত ১৫-১৬টি বিষয়ের ওপর সংস্কার প্রস্তাব করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে কমিশন। বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে ওইসব বিষয়ের ওপর মতামতও নিচ্ছে। এসব বিষয়ের অন্যতম হচ্ছে-নির্বাচনে অটোপাশ বন্ধ করা। বর্তমানে কত শতাংশ ভোট পড়লে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে-তার কোনো মান নির্ধারণ করা নেই। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারির সময়ে অনুষ্ঠিত ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে মাত্র সোয়া ৫ শতাংশ ভোট পড়ে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন মাত্র ১৫ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ভোটারের অংশবিহীন এমন নির্বাচন বন্ধে সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য ভোট পড়ার ন্যূনতম একটি হার নির্ধারণ করে এর কম ভোট পড়লে তা বাতিলের সুপারিশ করবে। ওই হার ৫০ শতাংশ হবে নাকি আরও কম হবে-তা চূড়ান্ত হয়নি।

অন্যান্য বিবেচনাধীন সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে-আরপিওতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করা, ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনা, নির্বাচন এবং প্রার্থিতা বাতিলে ইসির ক্ষমতা বাড়ানো, পোস্টাল ব্যালট কার্যকর করা এবং সংসদীয় নারী আসনের সংখ্যা বাড়ানো ও নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা। আরও রয়েছে-রাজনৈতিক দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা, প্রার্থী, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের নির্বাচনি অপরাধের সাজা সুনির্দিষ্ট করা, নির্বাচনি ব্যয়ের রিটার্ন অডিট করা, হলফনামার তথ্য যাচাই করা, নির্বাচনি অভিযোগ দাখিল ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া, নির্বাচনি মামলা নিষ্পত্তিতে সময় বেঁধে দেওয়া ও ইসির ভূমিকা, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত বিধিবিধান সংস্কার করা।

জানতে চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা অনেক বিষয়ে সংস্কারের জন্য সুপারিশ করার লক্ষ্যে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। তবে কোনো বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার পর বিষয়গুলো চূড়ান্ত করব। তবে যেসব বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি তার মধ্যে প্রার্থী হতে দলের ৩ বছর সদস্যপদ থাকা, না ভোট যুক্ত করা, সংসদের উচ্চকক্ষের প্রবর্তন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আমাদের সংলাপে যেসব মতামত আসছে, সেগুলোর ভিত্তিতে সুপারিশ চূড়ান্ত করা হবে। আমাদের নিজস্ব কোনো এজেন্ডা নেই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই একটি ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। জানা গেছে, এই কমিশন গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩০টি বৈঠক করেছে। এর মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, নারী প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকও রয়েছে। বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ও চার কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। নির্বাচন ও আইন বিশেষজ্ঞ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে কমিশনের। চলতি মাসেই সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের পর নির্বাচন ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে। ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন নির্বাচনি আইন ও বিধিমালায় ব্যাপক সংশোধনী এনেছিল। ওই আইনে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সংস্কারের অনেক কিছুই বাদ দিয়ে আরপিও পাশ করে। সর্বশেষ কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন অনিয়ম বা ক্ষমতা প্রভাব বিস্তারের কারণে যেকোনো সময়ে নির্বাচন বাতিলে ইসির যে ক্ষমতা আরপিওর ৯১এ ধারায় ছিল তা বাতিলের সুপারিশ করেছিল। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বাদ পড়া ওইসব বিধান আবারও ফিরিয়ে আনতে চায়। আরও জানা গেছে, সংবিধানের ১১৮-১২৬ ধারা নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। সেখানেও কিছু সংস্কারের সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে সহায়তা করার সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য অংশে সংশোধনীর প্রস্তাব করা হবে। সেখানে নির্বাহী বিভাগ কি কি সহায়তা করবে তা সুনির্দিষ্ট করার প্রস্তাব করার বিষয়ে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া একজন পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে যাতে থাকতে না পারেন-সেই বিষয়ে সুপারিশ আসতে পারে।

জাতীয় সংসদের আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনে সংশোধনীর সুপারিশ করবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। ওই আইনে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের যুক্তের প্রস্তাব করা হতে পারে। প্রবাসীদের ভোটার করা এবং তাদের ভোট প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে এই কমিশন। এক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালটের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী, ভোটগ্রহণে নিয়োজিত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকসহ জরুরি পেশার মানুষদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করবে নির্বাচন সংস্কার কমিশন।

কমিশনের একাধিক সদস্য জানান, নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান চালু হলে নির্বাচনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার অংশগ্রহণ বাড়বে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে এ বিধান চালুর ক্ষেত্রে সদস্যরা নীতিগত একমত হয়েছেন। ‘না’ ভোট চালু হলে একক প্রার্থী হিসাবে জয়ী হওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ ওই প্রার্থীর চেয়ে ‘না’ ভোট বেশি পড়লে সেখানে আবারও নির্বাচন হবে। তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের প্রার্থী দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে। আওয়ামী লীগ যেভাবে ইচ্ছামতো বিভিন্ন ব্যক্তিদের নির্বাচনে প্রার্থী করে জয়ী করে এনেছে, সেই সুযোগ বন্ধ হবে।

আগামী বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ

 ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে আগামী বছর ২ মার্চের পর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের তথ্য সংগ্রহ করবে। ওই বছরের ২ মার্চ হালনাগাদ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি।

তবে এর আগে চলতি বছরের হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে আগামী ২ মার্চ।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন গঠনের পর এটাই প্রথম বৈঠক। এতে চার কমিশনার, ইসি সচিব শফিউল আজিমসহ ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। বৈঠকে সিইসি কর্মকর্তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার যন্ত্রপাতি ও ফরম মুদ্রণে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রমে অনিয়ম পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আরও জানা গেছে, সভায় ইসি সচিবালয় ১৮ বছরের কম বয়সিদের আগাম তথ্য সংগ্রহের একটি প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়। ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনাররা বলেন, হালনাগাদ কার্যক্রম এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে যেন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসি সময়ক্ষেপণ করছে এমন ধারণা তৈরি না হয়। ইসির কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ-অবিশ্বাস তৈরি না হয়, সেদিকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সতর্ক করেন তিনি। সভায় চার কমিশনারের নেতৃত্বে চারটি কমিটি গঠন করা হয়।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, নতুন ভোটার হিসাবে যুক্ত হওয়ার জন্য ইসির কাছে ১৭ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহে রয়েছে। ২০২৫ সালের ২ মার্চ যে চূড়ান্ত হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হবে, সেখানে তারা যুক্ত হবেন। এই ১৭ লাখ নাগরিকের মধ্যে ১৩ লাখের তথ্য নির্বাচন কমিশন ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছিল। বাকি নাগরিকরা নিজেরা ইসির কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধিত হয়েছেন। তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছর ৪৫ লাখের মতো নাগরিকের নতুন ভোটার হিসাবে যুক্ত হওয়ার কথা। সে হিসাবে ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিক এ বছর এখনো ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হননি। এই বাস্তবতায় কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশের পর শুনানি, দাবি-আপত্তির পর ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ইসি চায়, যারা বাদ পড়েছেন, তারা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হোক। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বাদ পড়া ভোটাররা ছাড়াও ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের তথ্যও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হবে। তিনি জানান, একই সঙ্গে যেসব ভোটার মারা গেছেন, তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তন করার জন্য তথ্য নেওয়া হবে। এ ছাড়া দ্বৈত ভোটার বা অন্য কোনো জটিলতা আছে কি না, সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কবে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে ইসি সচিবালয় থেকে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। তবে তারা আশা করছেন, আগামী ২ মার্চের পর এই কাজ শুরু করতে পারবেন।

মো. সানাউল্লাহ বলেন, কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখনই কোনো একটি নির্বাচন সামনে আসবে, চেষ্টা থাকবে তফশিল ঘোষণার আগে একটা সময় পর্যন্ত যেন ভোটার হওয়ার যোগ্যদের তালিকাভুক্ত করা যায়। এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইসির বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

চার কমিটি গঠন : বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান মাছউদের নেতৃত্বে আইন ও বিধি সংস্কার কমিটি, বেগম তাহমিদা আহমদের নেতৃত্বে নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটি, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, জাতীয় এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের প্রস্তুতি, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতি ও তদারকি কমিটি এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহের নেতৃত্বে জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনা তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জাতীয়

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১টি পদ শূন্য রয়েছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরির এই শূন্য পদগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আজ সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনার চিঠি সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান ২০২৩ অনুযায়ী বর্তমানে সরকারের অনুমোদিত শূন্য পদের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১টি। সম্প্রতি বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) ৪৭তম বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৮৮টি শূন্যপদ পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।’

বিপিএসসি শুধু ১ম শ্রেণি নন-ক্যাডার এবং সীমিত পর্যায়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ করে থাকে। সরকার থেকে অনুমোদিত অন্যান্য পদগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধীন দপ্তর/সংস্থা/করপোরেশন/ কোম্পানি থেকে পূরণ করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ এবং শিক্ষিত তরুণদের বেকারত্ব লাঘবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে বিপুলসংখ্যক শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও তা পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

চিঠিতে মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধীন দপ্তর/সংস্থা এবং মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে অনুমোদিত শূন্য পদগুলো বিধি মোতাবেক পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

এছাড়াও শূন্যপদ পূরণে কি কি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, সে সকল তথ্যাদি ওয়ার্ড ফাইলসহ পত্র প্রাপ্তির ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

জাতীয়

নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে জেলায় উদযাপিত হচ্ছে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৭ তম বর্ষপূর্তি।

আজ সোমবার সকালে জেলা পরিষদের আয়োজনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের হলরুমে শান্তির পায়রা উড়ানো হয় । পরে কেক কাটা হয়।

এসময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজয়নের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মেহেদী হাসান।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ,জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম মঞ্জুরুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাড. মাধবী মারমা।

কেক কাটা শেষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এর আগে বান্দরবান সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসুচীর আয়োজন করে জেলা পরিষদ।

এদিকে সকাল ১০ টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আয়োজনে, জেলার রাজার মাঠে গণসমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় বক্তারা বলেন, দ্রুত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির সব ধারা বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে, পাহাড়ে অশান্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।

সমিতির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চরিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সুমন মারমা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চরিক পরিষদের সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সালিম রেজা নিউটন।

এছাড়াও পাহাড়ের অন্যতম সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর আয়োজনে সদরের একটি হোটেলের সভাকক্ষে আয়োজন করা হয় এক আলোচনা সভার। পরে বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।

জাতীয়

বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বক্তব্য রেখেছেন তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে অবিলম্বে এই ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার রাতে লন্ডন থেকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমের কাছে দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘সকালে কয়েকটি পত্রিকায় একটা সংবাদ দেখলাম, যে ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে মুখমন্ত্রী যে উক্তি করেছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে সে বিষয়ে আমি বক্তব্য না রেখে পারছি না। তিনি (মমতা বন্দোপাধ্যায়) যে উক্তি করেছেন বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের, এটা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি একটা হুমকিস্বরূপ এবং আমরা মনে করি এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেতৃবর্গের যে দৃষ্টিভঙ্গি তা কিছুটা হলেও প্রকাশিত হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি মনে করি, পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উচিত অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করা। এই ধরনের কোনো চিন্তাও তাদের মধ্যে আসা উচিত হবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে এবং সম্প্রতি একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তারা গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছে; এদেশের মানুষ যেকোনো মূল্যে এই ধরণের চক্রান্তকে রুখে দাঁড়াবে।

সোমবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপও চেয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ হওয়া বা বিপন্ন হওয়ার যে অলীক কাহিনী ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে তা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা বার বার বলেছি, এখানে পশ্চিম বাংলা ও ভারতের অনেক নামকরা সাংবাদিক এসেছিলেন তারাও দেখেছেন বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো পরিস্থিতি নেই। অথচ ভারতবর্ষের মিডিয়া ও তাদের নেতৃবর্গ যেভাবে সম্পূর্ণ একটা মিথ্যাকে প্রচার করছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দিচ্ছেন তা কোনো মতেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে, অতি সম্প্রতি ইসকনকে (বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিয়ে যে এখানে (বাংলাদেশে) নতুন করে চক্রান্ত শুরু হয়েছে তা বাংলাদেশের মানুষ কখনই গ্রহণ করবে না।

এটা খুব পরিষ্কার যে, ইসকনের সাম্প্রতিক ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক, রহস্যজনক এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকিস্বরূপ।

জাতীয়

প্রতিনিয়তই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে চলছে। সিন্ডিকেট, আমদানি জটিলতা ও তদারকির অভাবে এসব নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে চলছে বলে জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। এজন্য বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা ও বাজার তদারকি কার্যক্রম বৃদ্ধি করাসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কর্তৃক আলু, পেয়াঁজ ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানান নেতারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষত আলু, পেঁয়াজ এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু মান ভেদে এখনো ৭৫-৮০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১১৫-১৩০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫-১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে তারা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে এমন চড়া দামে আলু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। মূলত সিন্ডিকেটের কারণেই এবার আলুর দামের এমন অবস্থা। বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে মজুদ থাকায় ও আমদানি জটিলতার কারণে এবার আলুর দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। অবশ্য দাম নিয়ন্ত্রণে বা আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নেই যথাযথ তদারকি। হিমাগার পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর তদারকি না থাকায় আলুর দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। একইসঙ্গে আলুর মতো নিয়ন্ত্রণে আসেনি পেঁয়াজের দাম। দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি থাকা পেঁয়াজের দামও এখনও কেজিপ্রতি ১১৫-১৩০ টাকা।

তারা বলেন, কৃষক পর্যায় থেকে নামমাত্র মূল্যে আলু কিনে মজুত করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন থেকে এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ঘটনা বারবার ঘটছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও বেশি সজাগ ও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।

এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে তারা ৮ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, অসাধু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে; বাজার অভিযান/মনিটরিং বৃদ্ধি করতে হবে; টিসিবির ট্রাকসেল বাড়াতে হবে; ভোজ্যতেল খোলাবাজারে বিক্রেতাদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে; ভোক্তা স্বার্থ দেখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা বিভাগ বা কনজুমারস মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে; সরকার ১ কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপণ্য দিচ্ছে এর সংখ্যা দেড় কোটি করতে হবে এবং আইনে নিষিদ্ধ থাকা বাজারে খোলা ভোজ্যতেল (ড্রামে) বিক্রেতাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এ সময় বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শওকত আলী খান, বাহাদুর সাজেদা আক্তার, ক্যাবের সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

জাতীয়

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। সোমবার রাত সাড়ে আটটায় রাজধানীর আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে শুরু পল্টন মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে এসে এ বিক্ষোভ শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলিমের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে ইতিহাস রয়েছে তা পরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করছে মোদি সরকার। সম্প্রতি আগরতলায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনে উগ্রবাদী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে থেকে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তা এ দেশের জনগণ রুখে দেবে।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, ভারতের কসাই মোদি সরকার যদি বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ না করে, ভারতের নিরাপত্তাও হুমকিতে পরবে। কাজেই তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা নিরাপদ থাকতে চায় কি-না।

সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান বলেন, আগরতলা হামলার ঘটনায় যদি ভারতের কসাই মোদি সরকার হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় না আনে, তবে ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও করবে যুব অধিকার পরিষদ।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, উচ্চতর পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুব অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি রাহুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মুন, অর্থ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক সবুজ সেরনিয়াবাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হিরন। পেশাজীবী সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খালিদ হোসেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।

জাতীয়

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ে ন্যায় ও ন্যায্যতা বিজয়ী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান।

রবিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সত্যের সৌন্দর্য হলো, এটি অনিবার্যভাবে প্রচার এবং ষড়যন্ত্রের ওপর জয়লাভ করে। আমাদের বিশ্বাস দেয়, অবশেষে ন্যায় ও ন্যায্যতা বিজয়ী হয়। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অবসান ঘটাতে এবং ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি, যেখানে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে কারও জীবন বা পরিবার ধ্বংস হবে না।’

তারেক রহমান আরও লেখেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের চেতনাকে সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যা বিশ্বাস এবং মতাদর্শের বৈচিত্র্যের ওপর ভর করে, বাংলাদেশের জনগণকে নির্বাচনী অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়। সেই যাত্রায়, আমরা আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল এবং নিয়মভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা করি।’

সত্যের সৌন্দর্য হলো ষড়যন্ত্রের ওপর জয়লাভ: তারেক রহমান

এর আগে রবিবার বেলা পৌনে ১২টায় বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ২১ আগস্ট কে গ্রেনেড সরবরাহ করেছে তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেননি কোনো তদন্ত কর্মকর্তা। এছাড়া কে গ্রেনেড মেরেছে তাও বলেননি কোনো সাক্ষী।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত ও প্রায় ৩০০ জন আহত হন। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ওই হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পান। এই ঘটনার পর মামলাগুলো দায়ের করা হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) রায় দেন। রায়ে বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে আজ হাইকোর্ট জানায়, বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ এবং তা অবৈধ উপায়ে দেওয়া হয়েছে।