জাতীয়

‘কথা ছিল একটি পতাকা পেলে/আমি আর লিখব না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা/কথা ছিল একটি পতাকা পেলে/ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস/ব্যর্থ চল্লি­শে বসে বলবেন, ‘পেয়েছি, পেয়েছি’/কথা ছিল একটি পতাকা পেলে/পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে/ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।’ কবি হেলাল হাফিজ যে পতাকা ও স্বাধীনতার কথা বলেছেন সেই স্বাধীন দেশের পতাকা, সেই স্বাধীনতা এসেছে এ বাংলায়। সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে আজ আমরা স্বাধীনতার ৫১ বছরে।

১৯৭১ সালের আজকের দিনে হাজার বছরের পরাধীনতার শেকল ভেঙে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি। আর সেই ঘোষণার পথ ধরেই ৩০ লাখ শহিদ আর চার লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশ। এ অর্জন কালের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার। এ গর্ব বাঙালির।

বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দেশ। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিশ্বের বুকে এক স্বনির্ভর রাষ্ট্র। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার প্রতীক। শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিল্প, কৃষি, মানব উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ প্রগতির মডেল। তাই স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাঙালি আজ শ্রদ্ধায় স্মরণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার দেখানো সোনার বাংলার স্বপ্নের পথ ধরেই আজকের বাংলাদেশ। যার নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজকের দিনে জাতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী বীর সন্তানদের। স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের। জাতি স্মরণ করে দেশের জন্য, বাংলা ভাষার জন্য, স্বাধিকারের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা প্রতিটি মানুষকে।

বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকরা শোষণ এবং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীনতার ঘোষক, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীরশহিদদের। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সমর্থক, বিদেশি বন্ধু এবং সর্বস্তরের জনগণকে- যারা অধিকার আদায়ে ও মুক্তিসংগ্রামে বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শকে মুছে ফেলার পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা চিরতরে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাঙালি বীরের জাতি। কোনো কিছুই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বরং বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন মহামৃত্যুঞ্জয়ী। তাই নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বোঝাতে হবে- আজ তারা যে পথটি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা তৈরি করে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভবিষ্যতেও তার দেখানো পথই হবে উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হোক, মহান স্বাধীনতা দিবসে এটাই আমার প্রত্যাশা।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, দেশে উন্নয়নের যে গতি সৃষ্টি হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ অচিরেই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। বাণীতে তিনি সব বাংলাদেশিকে ভেদাভেদ ভুলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে লালন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।

স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা’ পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেওয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’। কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।

কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে পৃথিবীর ইতিহাসের নিষ্ঠুর গণহত্যা। সেই কালরাত থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রু সেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।

আজকের দিনে সারা দেশের মানুষ বারবার স্বাধীনতার মর্মবাণীটি অনুধাবণ করবে। আরও একবার শপথ নেবে সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে চলার।

জাতীয়

করোনাভাইরাস মহামারীতে আরও একটি মৃত্যুহীন দিন পার করল বাংলাদেশ, তিন দিন পর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে এল ফের একশর নিচে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৯২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে নতুন করে কোনো কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর আসেনি।

গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শুন্য দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুর দিকে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ শনাক্তের হার ছিল শুন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। এরপর শনাক্তের হার এর চেয়ে নিচে আর নামেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নতুন রোগীদের নিয়ে মহামারীর মধ্যে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৭২ জন হয়েছে। নতুন কারও মৃত্যুর খবর না আসায় মহামারীতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৮ জনই আছে।

বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীদের মধ্যে ৬৭ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। আর তাদের মধ্যে ৫৬ জনই ঢাকা জেলার।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সেরে উঠেছেন আরও এক হাজার ১১৪ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

গতবছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে সংক্রমণ কমে এলেও অতি সংক্রামক ওমিক্রন ধরনের দাপটে এ বছরের শুরুতে তা আবার বেড়ে যায়। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে তা আবার কমতে শুরু করে।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বরের পর গত ১৬ মার্চ একদিনে কারও মৃত্যু না হওয়ার খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই সময় টানা তিনদিন কারও মৃত্যু হয়নি।

এরপর ১৮ মার্চ দুজন, ২০ মার্চ ৩ জনের মৃত্যুর খবর আসে করোনাভাইরাসে। সোমবার এবং মঙ্গলবার দিন কারও মৃত্যু হয়নি, বুধবার একজনের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার আরও একটি দিন করোনাভাইরাসে মৃত্যুহীন কাটল।

মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৭ কোটি ৫৯ লাখের বেশি।

জাতীয়

রাজধানীর শাহজাহানপুরের রাজপথে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু মহিলা কাউন্সিল ডলির স্বামী।

বৃহস্পতিবার রাতে মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ডলি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর। নিহত জাহিদুল সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ডলির স্বামী। এছাড়া তিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তিনি আরও জানান, একদল সন্ত্রাসী রাতে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে জাহিদুল ও প্রীতি নামে এক নারী নিহত হন। এছাড়া জাহিদুলের গাড়িচালকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নিহত প্রীতির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে সিআইডি ক্রাইম সিনসহ আমরা পরিদর্শন করেছি। তদন্তের স্বার্থে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা দরকার আমরা তা করেছি।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনের সড়কে দুর্বৃত্তরা টিপুকে লক্ষ্য করে এ গুলি চালায় বলে জানান স্থানীয়রা।

নিহতদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪) মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। নিহত অপরজনের নাম সামিয়া আরেফিন প্রীতি (২৪)। তিনি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী ছিলেন। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম মুন্না। তিনি নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর গাড়িচালক বলে জানা গেছে।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এর আগে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১১৭ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১২১ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৬ জন।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৩৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ জন।

সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৭৮টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১০ হাজার ৯৭৪টি এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৯৪৯টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ৮৩টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার এক দশমিক ১১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ২৯ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৪৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৪৩ হাজার ২০৪ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ আট হাজার ৩৯৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩৪ হাজার ৮০৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন কতটা আইন ও বিধি প্রয়োগ করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দেশের কয়েকজন বিশিষ্টজন। তারা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে আগামী সংসদ নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে কয়েকজন বক্তা এসব কথা বলেন।

সংলাপে বক্তারা সিইসি ও কমিশনারদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, কমিশনারদের এখন পাওয়ার বা হারানোর কিছু নেই। সেটি বিবেচনায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিশিষ্টজনদের এসব বক্তব্যের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আপনারা ঠিকই বলেছেন- আমাদের হারানোর আর কিছুই নেই। যেই বয়স হয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই। আমাদের পাওয়ারও কিছু নেই। আপনাদের পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এখন ইতিবাচক কিছু করতে পারি, সবার অংশগ্রহণের নির্বাচনটা অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায় তাহলে সেটাই আমাদের সফলতা হতে পারে। শতভাগ সফলতা হয়ত হবে না; কেউ কেউ বলেছেন ৫০-৬০ শতাংশও যদি গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে সেটাও বড় সফলতা।

সংলাপে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, এই কমিশন ওই কমিশন কোনো ফ্যাক্টর না। সবই নির্বাচন কমিশন। আমাদের ব্যর্থতা কোথায় ছিল সেটা দেখতে হবে, যাতে সেই ব্যর্থতা সামনে না আসে।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবীব খান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি নেই। আমরা সবাই মিলে সহযোগিতা করলে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারব।’

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমার চাওয়ার, পাওয়ার ও হারানোর কিছু নেই। সততার দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে চাই।’

দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে নির্বাচন ভবনে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এ সংলাপ চলে। এতে সভাপতিত্ব করেন সিইসি নিজেই। সংলাপে দেশের ১৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক অংশ নেন। যদিও ৩৭ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এতে তিনজন নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান দেশের বাইরে থাকায় তিনি অংশ নেননি।

এর আগে গত ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। ওই সংলাপে ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানালেও ১৩ জন অংশ নেন।

আজকের সংলাপে যে বিশিষ্ট নাগরিকরা অংশ নিয়েছেন, তারা হলেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সেন্টার ফর আরবার স্টাডিজের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইনডিজিনাস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিনহা এমএ সাঈদ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গভর্নেন্স অ্যান্ড রাইট সেন্টারের প্রেসিডেন্ট জহুরুল আলম, ঢাবির অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক এসএম শামীম রেজা।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি। একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১১৬ জন।

সোমবার (২১ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।

জাতীয়

করোনা মহামারি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ছয় কোটি ১০ লাখ টিকা বাংলাদেশকে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনে আরও টিকা দেবে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডকে নিয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২২ কোটি ডোজের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফাইজার এবং মডার্নার তৈরি ৬ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

‘এসব টিকা আমরা জনগণকে দিয়েছি। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) জানিয়েছেন, আগামীতে আরও টিকা লাগলে তারা দেবেন।’

টিকা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং কারিগরি সহায়তার বিষয়টিও তুলে ধরেন জাহিদ মালেক।

মন্ত্রী জানান, টিকা পরিবহণের জন্য ১৮টি ফ্রিজার ভ্যান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, প্রশিক্ষণের জন্য সহায়তা করেছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফয়জুল কবীর, বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

আওয়ামী লীগ বাঘা উপজেলা শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দুপক্ষের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার শাহদৌলা সরকারি কলেজ মাঠে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে মঞ্চে আমন্ত্রিত অতিথিরা আসন গ্রহণ করেন। এর পর কুরআন তিলাওয়াত, গীতা পাঠ ও নেতাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। তার পর সংঘর্ষ শুরু হয়।

জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাস আলীর সমর্থকরা মঞ্চের সামনে আক্কাস ভাই আক্কাস ভাই বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপির সমর্থকরা। এতে উভয়ের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

এ সময় মঞ্চের ওপরে চেয়ার ছুড়ে মারা, চেয়ার ভাঙচুর, কাঠের বাটাম, দেশীয় অস্ত্র, বাঁশের লাঠি ব্যবহার করা হয়। সংঘর্ষ চলে প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী।   এ সময় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ঢাকা থেকে আগত এক নেতার প্রেস সহকারী এমএসএ রেজা, বাঘা পৌর আ’লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সরকার, শাহরিয়ার হোসেন, সিরাজুর ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মুরাদ হোসেন, লিটন ভুঁইয়া, আলম হোসেন, সুজন আলীসহ অন্তত পক্ষে ২০ জন।

এর মধ্যে সাইফুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। ঘণ্টাখানেক পর পরিস্থিতি শান্ত হলে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপির সভাপতিত্বে সম্মেলন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সদস্য বেগম আখতার জাহান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, রাজশাহী জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা (সাবেক এমপি), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু প্রমুখ।

এ ঘটনায় শাহরিয়ার আলম এমপি ও আক্কাস আলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শান্ত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

জাতীয়

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা কেটে গেলে বুধবার থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আহাওয়া অধিদপ্তর।

রোববার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিম্নচাপটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়ছে।

সাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি সোমবার গভীর নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এটার বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা।

জাতীয়

ঢাকার কল্যাণপুরের নতুন বাজার এলাকায় বেলতলা বস্তিতে আগুন লেগে পুড়েছে ২০০ ঘর। তবে কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

রোববার রাত পৌনে ৯টায় ওই এলাকার ৯ নম্বর বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। বস্তির ঘরগুলো পাশাপাশি হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট রাত ৯টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে আরও ইউনিট সেখানে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।

১৪টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই বস্তিতে একশর বেশি ঘর ছিল, তার প্রায় সবই আগুনে পুড়ে গেছে।

ব্রিগেডিয়ার সাজ্জাদ বলেন, “আমরা স্থানীয়ভাবে জেনেছি প্রায় ১২শ ঘর এই বস্তিতে রয়েছে। পুড়ে গেছে প্রায় ২শ ঘর।”

হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

বস্তিটির পথ দুর্গম হওয়ায় আগুন নেভাবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের যেতে বেশ সমস্যা হয়েছিল বলে জানান বাহিনীর মহাপরিচালক।

কীভাবে আগুন লেগেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা তদন্ত না করে বলা যাবে না।

ঢাকার কল্যাণপুরের বেলতলা মাঠ সংলগ্ন ৯ নম্বর বস্তিতে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভালেও তার আগে শতাধিক ঘর পুড়ে যায় বলে স্থানীরা জানিয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভিঢাকার কল্যাণপুরের বেলতলা মাঠ সংলগ্ন ৯ নম্বর বস্তিতে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভালেও তার আগে শতাধিক ঘর পুড়ে যায় বলে স্থানীরা জানিয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
আগুন নেভানোর পর পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে আহাজারি করছিলেন সর্বস্ব হারানো নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।

তিনটি সেলাই মেশিন নিয়ে স্থানীয়ভাবে পোশাক তৈরির কাজ করেন বেবি আক্তার। তার সব কাপড় পুড়ে গেছে আগুনে।

“আগুনে আমার একটি মেশিন পুড়ে গেছে, অর্ডার করা বেশ কিছু পোশাক, নতুন কাপড়, নগদ টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”

বেবি জানান, আগুন লাগার পর শিশুপুত্রকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি, আর বস্তিবাসীর সহায়তায় দুটি সেলাই বের করে আনেন।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান করে বেড়ানো জাহাঙ্গীর আলম ২ হাজার টাকা ভাড়ায় বস্তির একটি ঘরে থাকতেন।

আগুনে তার গান-বাজনার সব যন্ত্র পুড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্ত্রী-সন্তান বাসা থেকে বের হতে পারলেও ঘরে থাকা কিছুই বের করতে পারেনি।

কিছুদিন আগে কলেজের ক্লাস শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আসমা আক্তারের। তার কলেজের নতুন পোশাক, ব্যাগের সঙ্গে বই-খাতাও পুড়েছে।

“কলেজ যাওয়ার আমার স্বপ্ন পুড়ে ছাই করে দিল,” মাকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন আসমা।

আগুন লাগার খবর পেয়ে রেড ক্রিসেন্টের মাঠ কর্মীরা ছুটে আসেন। প্রায় ৪০জন কর্মী আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করা ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাদের মালামাল নিরাপদে সরিয়ে নিতে সাহায্য করেন।