জাতীয়

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টিকারী হিসেবে অভিযুক্ত মো. হানিফ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি অন্যান্য জড়িতদের শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

এতে বলা হয় , গত ২২ জুন রোববার আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের রোড-১/এ, বাসা-২৯ এর সামনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদাকে আনুমানিক ৬-৭ জন ব্যক্তি ঘিরে ফেলে। তারা প্রকাশ্যে সাবেক সিইসি’র গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং ঘটনাটি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করাসহ ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবেক সিইসি’র বিরুদ্ধে মামলা থাকায় বিষয়টি সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও, তাদের সামনেই সাবেক সিইসিকে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সাবেক সিইসিকে ডিবি পুলিশের হেফাজতে হস্তান্তর করে।

এদিকে ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট সেনা ক্যাম্পের নজরে আসলে সেনাবাহিনী দ্রুত অভিযানে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ জুন ২০২৫ তারিখে বর্ণিত ঘটনায় মব ভায়োলেন্স সৃষ্টিকারী হিসেবে অভিযুক্ত মো. হানিফ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইতোমধ্যে অন্যান্য জড়িতদের শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর এবং এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জাতীয়

সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তবে এ সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: তাপমাত্রা নিয়ে দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৪৪১টি নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৪৭৩ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি। সোমবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়।

জাতীয়

ড. আম্বিয়া পারভিন, জন্ম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে। ২০১২ সাল থেকে ইউরোপ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও নিজ দেশ মিয়ানমারে সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের আন্দোলন করছেন।

রোহিঙ্গা মেডিকসের কো-ফাউন্ডার ড. পারভিন ইউরোপীয় রোহিঙ্গা কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে সোচ্চার ছিলেন। আম্বিয়া পারভিন রোহিঙ্গা কনসালটেটিভ কাউন্সিলেরও কেন্দ্রীয় সদস্য।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন ও সমসাময়িক আরাকান ইস্যুতে আম্বিয়া পারভিনের সঙ্গে কথা বলেছেন  ইউরোপীয় রোহিঙ্গা কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আম্বিয়া পারভিন

 বাংলাদেশে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের কি কোনো অগ্রগতি হয়েছে?

আম্বিয়া পারভিন: অর্থপূর্ণ কোনো অগ্রগতি হয়নি। শুধুই প্রতীকী। বর্তমানে অর্থনৈতিক সহায়তা বজায় থাকলেও প্রত্যাবাসন বা অন্যান্য অধিকার রক্ষার রাজনৈতিক কোনো অগ্রগতি নেই। এটাই আসলে বেশি প্রয়োজন।

 সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি শুধুই মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করেছিলেন, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল?

আম্বিয়া পারভিন: সেই সময় বেশ কিছু গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু মানবিক কারণে নয় বরং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার আশায়, এমনকি নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জনের সম্ভাবনাতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ছাড়াই বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছিলেন। যদিও সে সময়ে সংকটের ভয়াবহতা ও জরুরি মানবিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অনেকেই এসব গুজবে গুরুত্ব দিতে চাননি। তার সময় সত্যিকার অর্থে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে তেমন উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। অনেকে এখন তার রোহিঙ্গা বিষয়ে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপগুলোকেও নতুনভাবে বিচার ও বিশ্লেষণ করছেন।

আপনি কি এখনো রোহিঙ্গাদের সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে (আরাকান) ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী?

আম্বিয়া পারভিন: হ্যাঁ, আমি এখনো আশাবাদী। কারণ আশা ছেড়ে দেওয়া মানেই ন্যায়ের পথ থেকে সরে যাওয়া। সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এখনও সম্ভব—যদি মিয়ানমারের পক্ষ থেকে আইনগত সুরক্ষা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির অনিচ্ছা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনাগ্রহ এবং রাখাইন রাজ্যে চলমান গণহত্যার কারণে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তারপরও, আন্তর্জাতিক মেকানিজম, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর উদ্যোগ ও কঠোর জবাবদিহিই একমাত্র রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের পথ তৈরি করতে পারে।

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর বর্তমান অবস্থা কেমন?

আম্বিয়া পারভিন: আমি সরাসরি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে না থাকলেও ক্যাম্পের রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। সবশেষ আমি এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেই বাংলাদেশ সফর করি। তখনকার অভিজ্ঞতা ও তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি গত এক বছরে মারাত্মকভাবে অবনতি হয়েছে। ২০২৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সাহায্য তহবিলও কমে গেছে। যার কারণে, খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টির হার ২০২৪ সালের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেড়েছে (উৎস: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ)। অনেক স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু এনজিও বিভিন্ন সেবা সীমিতও করেছে। শিশু ও তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যও এখন ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।

কিছুদিন আগে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। এ পরিদর্শন কি আশার বার্তা বহন করে?

আম্বিয়া পারভিন: যদি প্রতীকী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে অবশ্যই আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ২০২৫ সালের মার্চে কক্সবাজার সফরে এসে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মানবিক সহায়তা কমানোর বিষয়টিকে ‘অপরাধ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন এবং সহায়তা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর উপস্থিতি আমাদের নিজ দেশে ফেরার মনোবল বাড়িয়েছে। কিন্তু প্রতীকী এসব কথাবার্তা ছাড়াও আমাদের এখন দরকার জরুরি বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ, মিয়ানমারের ওপর আরও আন্তর্জাতিক চাপ, ক্যাম্পগুলোতে মানবিক সাহায্য বৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পথ খুঁজে বের করা। সেটার কিছুই হচ্ছে না।

 আরাকান আর্মি এখন রাখাইন বা আরাকানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে—এমন খবর আসছে। আরাকান কি মিয়ানমার থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে?

আম্বিয়া পারভিন: হ্যাঁ, আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য রিপোর্ট আছে এবং এর লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। আরাকান আর্মি রাখাইনকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাস্তি রাষ্ট্র বা ‘ডি ফ্যাক্টো’ স্বাধীন রাষ্ট্র করতে যাচ্ছে। কিন্তু এই রাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হবে কি না, তা নির্ভর করবে যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর। আমার ভয় হয়, যদি এই স্বায়ত্তশাসন বা নতুন রাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে করা হয়, তবে তা আমাদের আরও রাষ্ট্রহীন ও অস্তিত্ব সংকটে ফেলে দেবে।

এই নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাহলে রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কী?

আম্বিয়া পারভিন: পুরোটাই নির্ভর করছে আরাকান আর্মির ওপর। তারা কি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি গ্রহণ করবে নাকি রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার নীতি গ্রহণ করবে—এটার ওপর সব কিছু নির্ভর করছে। যদি তারা রোহিঙ্গাসহ সব সম্প্রদায়কে সমান অধিকার দেয়, তবে আশার আলো আছে। কিন্তু যদি তারা বাদ দেওয়ার পথেই থাকে, তাহলে রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রহীন, উদ্বাস্তু ও এমন নিপীড়িতই থাকবে।

আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানায় কেন?

আম্বিয়া পারভিন: এটা আসলে ঐতিহাসিক বিদ্বেষ। রাখাইন জাতীয়তাবাদ, রাখাইন জনগণের চাপ—এসবই মূল। এ অবস্থান পরিবর্তনের জন্য সাহসী আভ্যন্তরীণ আলোচনা-সমঝোতা ও আন্তর্জাতিক চাপ দরকার।

এই সমস্যা সমাধানে আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে কী আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে?

আম্বিয়া পারভিন: হ্যাঁ, ব্যাক চ্যানেলে ও স্থানীয় উদ্যোগ রয়েছে। উদ্দেশ্য হলো—অধিকারভিত্তিক সংলাপ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরি করা। তবে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনার সম্মতি মেলেনি।

তাহলে রাখাইনে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রত্যাবর্তনের পথ কি বন্ধ করে দিল নাকি আশার আলো আছে?

আম্বিয়া পারভিন: এখনই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্বান্তে আসা কঠিন। যদিও তারা (আরাকান আর্মি) কিছু অংশে সামরিক জান্তাকে হটিয়েছে কিন্তু তাদের রোহিঙ্গাদের প্রতি অবস্থান আগের মতোই অস্পষ্ট। আরাকান আর্মি মূলত আরাকানের রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর বাহিনী এবং তারা শুরু থেকে আজ পর্যন্ত কখনোই রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় আন্তরিক ছিল না। বরং রোহিঙ্গা গণহত্যায় তারা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখনও তারা নির্মমভাবে রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে। রাখাইন জনগোষ্ঠী, আরাকান আর্মি ও তাদের রাজনৈতিক দল ইউএলএ-এর নিষ্ঠুর ও নির্মম সহযোগিতা ছাড়া মিয়ানমার সরকারও এই ভয়াবহ গণহত্যা চালাতে পারতো না। তাই এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গাদের ফেরা বা স্বীকৃতি পাওয়ার ইতিবাচক সম্ভাবনা আছে বলে আমি মনে করি না।

 তাহলে রোহিঙ্গাদের কি সহসাই ফেরা হচ্ছে না?

আম্বিয়া পারভিন: না ফেরার মূল কারণগুলো তো এখনো অপরিবর্তিত। মিয়ানমার আমাদের নাগরিকত্ব ও পূর্ণ আইনি অধিকার দিচ্ছে না। নিরাপত্তারও কোনো বিশ্বাসযোগ্য নিশ্চয়তা নেই। রাখাইনে সহিংসতা ও অস্থিরতা এখনও বিদ্যমান। আরাকান আর্মিরও তো মনোভাব একই। এই মূল সমস্যাগুলোর সমাধান না হলে প্রত্যাবাসন অনিরাপদ ও স্থবিরই থেকে যাবে। একটা কথা সবার মনে রাখা উচিত, আমাদের প্রত্যাবাসন কোনো দান বা দয়া নয়—এটা আমাদের জন্মগত অধিকার।

আপনি বলছিলেন, ব্যাক চ্যানেলে আরাকান আর্মি বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এই যোগাযোগের জন্য রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে কি কোনো নির্দিষ্ট নেতৃত্ব রয়েছে?

আম্বিয়া পারভিন: দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের একক বা নির্দিষ্ট নেতৃত্ব নেই। আসলে দীর্ঘদিনের গণহত্যা, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলতে থাকা ট্রমা, দেশের বাইরেও রোহিঙ্গা নেতৃত্বের বিভাজন—এসব মিলিয়ে রোহিঙ্গাদের নেতৃত্ব খুবই দুর্বল। এই বিভক্তিই রাজনৈতিক আলোচনায় আমাদের অবস্থানকে দুর্বল করে।

তাহলে এখন আপনাদের বা রোহিঙ্গাদের পক্ষে এখন কে বা কারা যোগাযোগের ভূমিকা পালন করছে?

আম্বিয়া পারভিন: আমাদের কমিউনিটির অনেক নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ও সংগঠক রয়েছে বিভিন্ন দেশে। যেমন ERC, FRC, ARU, BROUCK। আমরা জাতিসংঘের সঙ্গেও কাজ করছি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এখনো কোনো পূর্ণাঙ্গ বা বৈধ প্রতিনিধি আমাদের নেই। এমনকি উখিয়া ক্যাম্পেও নেই।

 মানে প্রত্যাবাসন ইস্যুতেও রোহিঙ্গা সমাজ বিভক্ত যেহেতু বৈধ রাজনৈতিক প্রতিনিধি নেই।

আম্বিয়া পারভিন: বেশিরভাগ রোহিঙ্গা ফিরে যেতে চায়। বিভাজনটা মূলত সময় ও আস্থাকে কেন্দ্র করে। কেউ কেউ নিরাপত্তা ছাড়া ফিরতে চায় না। আবার কেউ কেউ ক্যাম্পের কষ্টের জীবন থেকে যেনতেনভাবে মুক্তি চায়। তবে আমি বলব, আমরা একমুখী, আমাদের উদ্দেশ্য এক। আমরা ঐক্যবদ্ধ না থাকলে কীভাবে আমাদের সমস্যা নিয়ে সবাই একসঙ্গে কথা বলব?

তে এই ভিন্নমত কি আপনাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকেই আরও বিলম্বিত করছে না?

আম্বিয়া পারভিন: হ্যাঁ, সত্যিকথা বলতে এই ভিন্নমত আমাদের অবস্থানকে দুর্বল করছে। তবে এই বিভক্তি বা ভিন্নমত ইচ্ছাকৃত নয়—বরং এটা দীর্ঘদিনের নিপীড়নের ফল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বাংলাদেশ আমাদের নেতৃত্বকে আস্থায় নিলে ও সহযোগিতা করলে আমরা ঐক্য গড়তে পারব।

 বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে একজন হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ নিয়োগ দিয়েছে। এই প্রতিনিধি নিয়োগ কি আপনাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে সহায়ক হতে পারে?

আম্বিয়া পারভিন: এই উদ্যোগ খুবই সম্ভাবনাময় ও ইতিবাচক পদক্ষেপ। যদি তিনি শুধু রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ না করে আন্তরিকভাবে রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট সব গূরুত্বপূর্ণ পক্ষগুলোর মতামত শোনেন তাহলে ইতিবাচক ও টেকসই পরিবর্তন হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা মাঠ পর্যায়ে তার কার্যক্রমের কোনো বিশেষত্ব দেখিনি, যা আমাদের আশান্বিত করবে।

এই নিয়োগের পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যু তোলা হচ্ছে, এটা তো সত্যি…

আম্বিয়া পারভিন: ওনার আগ্রহ কিছুটা দেখা যাচ্ছে, তবে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ, রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান ও অর্থায়ন ফিরিয়ে আনা, মিয়ানমার ও আরাকান আর্মিকে রাজনৈতিক চাপ দেওয়া—এখন এগুলো প্রয়োজন। যার কোনোটিই হচ্ছে না। আসলে ফোকাস হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন। এটাই দরকার, যা হচ্ছে না।

মিয়ানমারের জান্তা ও চীন সরকারের সম্পর্ক গভীর। এ অবস্থায় চীনের ভূমিকা আপনারা কীভাবে দেখেন বা আপনাদের প্রত্যাশা কী?

আম্বিয়া পারভিন: আসলে রাখাইন রাজ্যে চীনের কৌশলগত ও বিপুল অর্থনৈতিক বিনিয়োগ রয়েছে। চীন স্থিতিশীল রাখাইন চায়, এজন্য তারা মানবাধিকারের চেয়ে রাষ্ট্রের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। যদি চীন অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করতো, তাহলে তারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারতো। কিন্তু তা না করায় ও তাদের এই ভূমিকা রাখাইনে উল্টো নেতিবাচক ফল বয়ে আনছে।

 আপনারা কি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের কোনো ভূমিকা প্রত্যাশা করেন?

আম্বিয়া পারভিন: আসলে ভারত মূলত তাদের প্রাদেশিক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বেশি চিন্তিত। তারা কিছু মানবিক সহায়তা দিলেও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ ও ভূমিকা খুবই কম। যুক্তরাষ্ট্র আগে সবচেয়ে বেশি অনুদান ও সাহায্য দিতো। কিন্তু ২০২৫ সালে ট্রাম্প প্রশাসন তহবিল কমিয়ে দেওয়ায় রোহিঙ্গা কাম্পের সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের জোরালোভাবে যুক্ত হওয়া দরকার। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসের জন্য জাতিসংঘকে অবশ্যই নেতৃত্ব দিতে হবে। মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মিকে জবাবদিহির পথ তৈরি করতে হবে এবং কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। রোহিঙ্গা সংকট এখন দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়েছে, অনেকটা এশিয়ার ‘প্যালেস্টাইন সংকট’-এ পরিণত হয়েছে। তাই খণ্ডিত নয়, সবার সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।

তাহলে জাতিসংঘ বা যুক্তরাষ্ট্র মানবিক সহায়তা একেবারে বন্ধ করে দিলে কী হবে বা রোহিঙ্গারা তখন কী করবে?

আম্বিয়া পারভিন: তখন মানবিক বিপর্যয় শুরু হবে। খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ছাড়াও আসিয়ানভুক্ত অন্য দেশগুলো থেকে সাহায্যের কোনো অগ্রগতি হয়েছে?

আম্বিয়া পারভিন: দুর্ভাগ্যজনকভাবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আসিয়ান অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সাহায্য ও বিভিন্নভাবে কিছুটা সংহতি দেখালেও কূটনৈতিক নেতৃত্ব দরকার। যেটা একেবারেই অনুপস্থিত।

ওআইসি‘র পক্ষ থেকে…

আম্বিয়া পারভিন: শুধু বিবৃতি দেওয়া হয়। আমরা শক্তিশালী ও কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করি।

তাহলে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ কী আসলেই নেওয়া হয়নি বা হচ্ছে না?

আম্বিয়া পারভিন: মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আর্জেন্টিনার মাধ্যমে ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন এবং আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিকে) মামলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে ফেরার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এটাই দরকার ছিল।

রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে রাখাইনে মানবিক সহায়তার জন্য মানবিক করিডোরের অনুরোধ কী করা হয়েছে?

আম্বিয়া পারভিন: হ্যাঁ। রাখাইনে থাকা কমিউনিটি নেতৃত্ব ও বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন ও সাহায্য সংস্থা বারবার মানবিক সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছে। কিন্তু রাখাইনের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রিত। রাখাইন সম্প্রদায়, আরাকান আর্মির ব্যাপকভাবে রাজনীতিকীকরণের কারণে সেখানে কী হচ্ছে, তা আমরা জানি না। আগের মতোই সেখানে রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু হয়েছে, এমন খবরও আমরা পাচ্ছি।

মানবিক করিডোর কি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক হতে পারে?

আম্বিয়া পারভিন: মানবিক করিডোর রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক হবে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তবে যদি তা নিরপেক্ষ, নিরাপদ ও সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকে তাহলে এর সুফল রোহিঙ্গারা পেতে পারে। তবে এটা যেন দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধানের বিকল্প না হয়ে ওঠে, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। রোহিঙ্গা সংকট শুধুই মানবিক নয়—এটা রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত। মিয়ানমার সংকট ও রোহিঙ্গা সংকট এবং সমাধান একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

যদি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়, রোহিঙ্গারা কী ধরনের রাজনৈতিক অধিকার ও মর্যাদা চায়?

আম্বিয়া পারভিন: আমরা পূর্ণ নাগরিকত্ব, সমান অধিকার ও সাংবিধানিক সুরক্ষা চাই। আমরা স্বায়ত্তশাসন চাই না—আমাদের লক্ষ্য হলো সম্মান, নিরাপত্তা এবং আমাদের জাতিগত অধিকার প্রতিষ্ঠা।

জাতীয়

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পুরোনো প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ পুনরায় বরাদ্দ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া তাদের নিবন্ধনও পুনর্বহাল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমদের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নামীয় দলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে দলের নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ পুনর্বহাল করা হলো। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংবিধানের সঙ্গে গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণ দেখিয়ে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।

আখতার আহমেদ বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক পুনর্বহাল করা হয়েছে। এর অর্থ দলটি আবার নির্বাচন করার সুযোগ পেল।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছিল, এক যুগ পর গত ১ জুন তা বাতিল করে দেয় আপিল বিভাগ।

সর্বোচ্চ আদালত আদেশে বলেছিলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

আদালতের আদেশের পর জামায়াতের নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কুরবানির ঈদের আগে ৪ জুন কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

সভা শেষে সেদিন ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত পাবে। তবে দলীয় প্রতীকটি ফেরতের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে।

এর তিন সপ্তাহের মাথায় প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করল ইসি সচিবালয়।

জাতীয়

সবচেয়ে বেশি ঘুস দিতে হয় বিআরটিএ অফিসে; এরপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, পাসপোর্ট ও ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে * নিজ বাড়ির আশপাশে সন্ধ্যার পর একা চলাফেরা করতে ভয় পান ১৫ শতাংশ মানুষ

গত এক বছরে যেসব নাগরিক সরকারি সেবা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬৭ শতাংশ ঘুস-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৮ দশমিক ৬২ এবং নারী ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ। সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত বিআরটিএ। এখানে ৬৩ দশমিক ২৯ শতাংশ মানুষকে ঘুস দিতে হয়েছে। এরপরই রয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (৬১.৯৪), পাসপোর্ট অফিস (৫৭.৪৫) এবং ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস (৫৪.৯২ শতাংশ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সিটিজেন পারসেপশন সার্ভের (সিপিএস) প্রাথমিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সন্ধ্যার পর নিজ এলাকায় একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন না প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ। আর নিরাপদ বোধ করেন ৮৪ দশমিক ৮১ শতাংশ নাগরিক। বৃহস্পতিবার জরিপ (সার্ভে) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস অডিটোরিয়ামে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিবিএস-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) ড. কাইয়ুম আরা বেগম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে প্রকল্পের পরিচালক রাশেদ-ই-মাসতাহাব। প্রশ্নোত্তর-পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্মসচিব দীপঙ্কর রায়। জরিপটি পরিচালনা করেছে বিবিএস। ফেব্রুয়ারিতে দেশব্যাপী এ জরিপ পরিচালিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি শিক্ষাক্ষেত্রেও কম হচ্ছে না। আমি দেখেছি, বদলি নিয়ে রীতিমতো ঘুস বাণিজ্য চলে। গোয়েন্দা দিয়ে আমি দেখেছি, এখানে এত মাধ্যম ব্যবহার করা হয় যে আসল দুর্নীতিবাজকে ধরা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক বৈষম্য নেই। জরিপে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, ৮৪ দশমিক ৮১ শতাংশ নাগরিক সন্ধ্যার পর নিজ এলাকার আশপাশে একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন। তবে পুরুষদের (৮৯.৫৩ শতাংশ) তুলনায় নারীরা (৮০.৬৭ শতাংশ) কম নিরাপদ বোধ করেন। শহরাঞ্চলের নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ (৮৩.৭৫ শতাংশ) গ্রামীণ এলাকার নাগরিকদের তুলনায় কিছুটা কম (৮৫.৩০ শতাংশ) পরিলক্ষিত হয়।

২৭ দশমিক ২৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন, তারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করতে পারেন। ৭২ দশমিক ৭৬ শতাংশ মনে করে, তারা মতামত দিতে পারে না। ২১ দশমিক ৯৯ শতাংশ নাগরিক মনে করেন তারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। এ হার নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১৭ দশমিক ৮ এবং ২৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৪৭ দশমিক ১২ শতাংশ নাগরিক এক বছরের মধ্যে অন্তত একবার সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা গ্রহণ করেছেন। সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৮২ দশমিক ৭২ শতাংশ নাগরিকের মতে, ওই স্বাস্থ্যসেবা সহজে প্রাপ্তিযোগ্য এবং স্বাস্থ্যসেবার খরচ সামর্থ্যরে মধ্যে ছিল।

শিক্ষাক্ষেত্রে দেখা যায়, ৪০ দশমিক ৯৩ শতাংশ নাগরিকের কমপক্ষে একটি শিশু সরকারি প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। অন্যান্য সরকারি সেবার (পরিচয়পত্র/নাগরিক নিবন্ধন) ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ১২ শতাংশ সেবার প্রাপ্যতা ও ৮৬ দশমিক ২৮ শতাংশ সেবাপ্রাপ্তি ব্যয় সামর্থ্যরে মধ্যে ছিল বলে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই বছরে ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ নাগরিক কোনো না কোনো বিবাদ বা বিরোধের মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৬০ শতাংশ নাগরিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিচারব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেয়েছেন। জরিপ অনুযায়ী, গত এক বছরে দেশের ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ জনগণ কোনো না কোনো ধরনের বৈষম্য বা হয়রানির শিকার হয়েছেন। নারীদের মধ্যে এই হার কিছুটা বেশি, যা ১৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে তা ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। শহরাঞ্চলে বৈষম্যের হার (২২.০১) গ্রামাঞ্চলের (১৮.০৭) তুলনায় বেশি। নিজের পরিবারের মধ্যে (৪৮.৪৪), গণপরিবহণ/উন্মুক্ত স্থানে (৩১.৩০) এবং কর্মস্থলে (২৫.৯৭ শতাংশ) বৈষম্য/হয়রানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এর মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ ভুক্তভোগী এসব ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট করেছেন বলেও জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতীয়

বাংলাদেশকে জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ুর মান উন্নত করতে ৬৪ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বুধবার এ ঋণ অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটির বোর্ড। বৃহস্পতিবার ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে এনার্জি সিকিউরিটি ও এয়ার কোয়াািলিটি উন্নত করতে সাহায্য করতে এ ঋণ দিচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ুর মান বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নূয়ন অগ্রাধিকার। কেননা গ্যাস সরবরাহ সীমাবদ্ধতা এবং নগর বায়ুু দূষণের মূল কারণগুলি মোকাবেলা করা দরকার। এ দুটি প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃৃদ্ধি বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।

জ্বালানি খাত নিরাপত্তা বৃদ্ধি প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫ কোটি ডলার। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল ও গ্যাস কোম্পানি পেট্রোবাংলার জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা উন্নত করতে সহায়তা করবে।

প্রকল্পটি নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য সাত বছরে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বেসরকারি মূলধন সংগ্রহের জন্য আইডিএ গ্যারান্টি ব্যবহার করবে। আইডিএ গ্যারান্টির সমর্থন এলএনজি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পেট্রোবাংলার ঋণযোগ্যতা উন্নত করবে।

বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৯ কোটি ডলার বায়ু দূষণ মোকাবেলায় একটি ব্যাপক পদ্ধতি গ্রহণ করবে। বাংলাদেশে, বায়ু দূষণের কারণে ১ লাখ ৫৯ হাজারেও বেশি অকাল মৃত্যু হয়। ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন দিনের অসুস্থতা ঘটেছে, যার আনুমানিক স্বাস্থ্য ব্যয় ২০১৯ সালে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮ দশমিক ৩ শতাংশের সমান। ঢাকা এখনও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলির মধ্যে একটি। যেখানে বার্ষিক সূক্ষ্ম কণা পদার্থের পরিমাণ সহনীয় মানের নির্দেশিকা অনুসারে ১৮ গুণ বেশি। এই প্রকল্পটি পরিবেশ বিভাগের বায়মান পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ককে নতুন এবং উন্নত স্টেশন দিয়ে শক্তিশালী করবে।

জাতীয়

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

বৈঠকে মূলত সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ এবং নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও, আগের দিনের অসমাপ্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনাটিও এদিন পুনরায় তোলা হয়।

অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কীভাবে হবে তা চূড়ান্ত না হলেও বর্তমান বিধান পরিবর্তনে সবার একমত হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটার কারা হবেন, তা নির্ধারণের জন্য সংসদের কাঠামো স্পষ্ট হওয়া জরুরি বলে আলোচনায় উঠে এসেছে।

এদিন জাতীয় সংসদে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট কাঠামোর প্রস্তাবেও অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সমর্থন রয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ নির্ধারণের বিষয়েও বেশিরভাগ দল সম্মত হয়েছে।

অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে যেহেতু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ব্যবস্থার সঙ্গে সংসদের ধরন জড়িত, তাই সংসদ কেমন হবে তা নির্ধারণ করাই এখন অগ্রাধিকার। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংসদ দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছে।

তবে এখনো এসব বিষয়ে চূড়ান্ত একমত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করতে চাই, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে মত দিয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়েও একই অবস্থা- বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দুই মেয়াদের কথা বলেছে, তবে চূড়ান্ত ঐকমত্য গড়তে আরও আলোচনা প্রয়োজন।

তিনি আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে কেউ দ্বিধান্বিত নয়। আলোচনা সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশেই চলছে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো জাতীয় সনদে স্বচ্ছতার সঙ্গে উল্লেখ করা হবে। আমরা জানি সব বিষয়ে ঐকমত্য সম্ভব নয়, তবে তা হলে ভালো হতো। তারপরও দলগুলোর পক্ষ থেকে ঐকমত্য গঠনে সর্বাত্মক সহযোগিতা রয়েছে।

আগামী রোববার (২২ জুন) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোতে ঐকমত্য গড়ার প্রচেষ্টায় আবারও কমিশন আলোচনায় বসবে।

জাতীয়

পাঁচজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ৫টি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

অবসরে যাওয়া পাঁচজন হলেন—জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব) সুকেশ কুমার সরকার, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) মো. সহিদ উল্যাহ, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক কাজী এনামুল হাসান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সচিব) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তাদের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং সরকার জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর করা প্রয়োজন মর্মে বিবেচনা করে বিধায় তাদের সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে।

তারা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধাদি পাবেন বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনগুলোতে জানানো হয়েছে।

জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত দেড় দশকে সংঘটিত গুমের ঘটনাগুলোর তদন্তে জাতিসংঘের যেকোনো ধরনের সহযোগিতা বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম, জাতিসংঘ আমাদের চলমান তদন্ত প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হোক। এতে প্রক্রিয়াটি আরও শক্তিশালী হবে।’

সোমবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের গুম বা নিখোঁজ বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের (ডব্লিউজিআইডি) ভাইস-চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোস্কা এবং সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিয়ো পেরেজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি একথা বলেন।

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা গুমের ঘটনা প্রতিরোধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত উদ্যোগ, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ সনদে (আইসিপিপিইডি) বাংলাদেশের সংযুক্তির প্রশংসা করেন। তবে এ ক্ষেত্রে এখনো অনেক কিছু করার রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

তাঁরা গুমের ঘটনা তদন্তে সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের কাজ এবং প্রতিশ্রুতিকেও সাধুবাদ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার ডিসেম্বর পর্যন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়াচ্ছে।

তিনি বলেন,‘তাঁদের নানাভাবে হুমকি দেয়া হলেও কমিশন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে। তাঁরা যখন সর্বশেষ প্রতিবেদন জমা দিল, আমি বলেছিলাম, দর্শনার্থীদের জন্য একটি ‘ভয়ের জাদুঘর’ থাকা উচিত। আপনাদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। আমাদের সহায়তা ও একসঙ্গে কাজ করার দরকার।’

তিনি আরও বলেন, “আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে ১৩ বছর পর আমরা জাতিসংঘের একটি দলকে এখানে স্বাগত জানাতে পারছি। আমরা চাই আপনারা আমাদের কমিশনের কাজকে সহায়তা করুন এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত থেকে দিকনির্দেশনা ও শক্তি জোগান।”

বারানোস্কা জানান, ২০১৩ সাল থেকে তাঁরা বাংলাদেশে গুম ইস্যুতে কাজ করার চেষ্টা করছেন এবং তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন,‘তদন্ত কমিশন ও এর কাজ আপনার সরকারের এক বিশাল প্রতিশ্রুতি। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এটি আমাদের জন্য এক বিশাল সম্মান।’

তিনি আরও জানান, তাঁরা ঢাকার বাইরে গিয়ে ভুক্তভোগী, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

জাতীয়

বাংলাদেশ বিমানবাহিনী মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কন্টিনজেন্টের ১২৫ জন সদস্য প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছে।

সোমবার বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বিমানবাহিনী সদর দপ্তরে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রগামী কন্টিনজেন্ট সদস্যদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।

সোমবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্যগুলো জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমানবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সততা, পেশাদারি ও আন্তরিকতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী তথা দেশের সুনাম বয়ে আনতে কন্টিনজেন্ট সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

পরিশেষে তিনি মিশনের সাফল্য কামনায় আয়োজিত এক বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বিমানবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, ঢাকার দুই বিমানঘাঁটির এয়ার অধিনায়ক, বিমান সদর ও ঘাঁটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সমরাস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম এবং নাইট ভিশন প্রযুক্তিসমৃদ্ধ তিনটি এমআই-১৭১ হেলিকপ্টার ও বিভিন্ন গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিযুক্ত রয়েছে।