জাতীয়

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় দু’দিনে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিএনপির ১৪ ইউনিয়নের সম্মেলন হয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবার দিনব্যাপী এসব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো—ঢালুয়া ইউনিয়নের ঢালুয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেসাখাল ইউনিয়নের দায়েমছাতি উচ্চ বিদ্যালয় এবং বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের বাঙ্গড্ডা ফাজিল মাদরাসা।

মঙ্গলবার বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের ভোলাইন বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলাইন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটতলী ইউনিয়নের বটতলী এম এ মতিন উচ্চ বিদ্যালয় ও বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ আলিম মাদরাসা ও বক্সগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জোড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জোড্ডা বাজার সিদ্দিকীয়া আলিম মাদরাসা, এবং জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের দুয়ারিয়া জামিউল উলূম কওমী মাদরাসা।

পূর্বঘোষণা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে স্কুলে এসে মাঠে সম্মেলনের মঞ্চ ও শত শত নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখে হতবাক হয়। পরে কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করে। কিছু প্রতিষ্ঠানে মাইকের উচ্চ শব্দ উপেক্ষা করে কয়েক ঘণ্টা পাঠদান চললেও শেষ পর্যন্ত সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপি নাঙ্গলকোটের ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১৪ ইউনিয়নের সম্মেলন ১২ ও ১৩ আগস্ট করার ঘোষণা দেয়।

ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম দিন ৭ ইউনিয়ন এবং পরদিন ৭ ইউনিয়নের সম্মেলন হয়। এর মধ্যে দৌলখাঁড়, আদ্রা উত্তর, রায়কোট দক্ষিণ ও পেরিয়া ইউনিয়নের সম্মেলন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। মৌকরা ও সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের সম্মেলন জেলা বিএনপি স্থগিত করে। বাকি ১০ ইউনিয়নের সম্মেলন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হওয়ায় মোট ১৫টি প্রতিষ্ঠানের পাঠদান ব্যাহত হয়।

বাঙ্গড্ডা ফাজিল মাদরাসার আলিম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাস শুরুর কিছুক্ষণ পর বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে স্লোগান শুরু করেন। পরে শিক্ষকরা ছুটি দেন। পড়াশোনার সময় রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। চাইলে খালি মাঠ বা ছুটির পর অনুষ্ঠান করতে পারতো।

জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেফায়েত উল্লাহ বলেন, মাইকের শব্দ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক নজির আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এভাবে সম্মেলন আয়োজন দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম করার বিধান নেই। যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানাব।

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিন সরকার বলেন, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়
জাতীয়

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও ছয় ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে বুধবার (১৩ আগস্ট) দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।

যাদের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ড.আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার।

ব্যাংক হিসাব তলবের তালিকায় সাবেক ডেপুটি গভর্নররা হলেন, এস কে সুর চৌধুরী, মো. মাসুদ বিশ্বাস, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছের। এদের মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি। মো. মাসুদ বিশ্বাস বিএফআইইউর প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। আবু হেনা মো. রাজী হাসান দীর্ঘদিন বিএফআইইউ’র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. আতিউর রহমানকে আর দেশে দেখা যায়নি। ধারণা করা হয় তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন। ফজলে কবির দায়িত্ব শেষে দেশেই ছিলেন বলে জানা গেছে।

একমাত্র গভর্নর ফজলে কবির, যার জন্য আইন পরিবর্তন করে অতিরিক্ত মেয়াদে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়। তার অবসরের পর দায়িত্বে আসেন আব্দুর রউফ তালুকদার। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে আব্দুর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় গত বছরের ৭ আগস্ট ই-মেইলে পদত্যাগ করেন। তিনি এক বছর ধরে দেশেই গাঁ ঢাকা দিয়ে রয়েছেন।

বিএফআইইউ-এর চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেনের বিস্তারিত বিবরণ, কেওয়াইসি ফরসহ সব তথ্য আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতেবলা হয়েছে। যদি কোনো হিসাব বন্ধ হয়ে থাকে, সেটির তথ্যও জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরআর্থিক কার্যক্রম নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সাবেক সরকারের সময়ে টাকা পাচারের বিভিন্ন ঘটনার। তদন্ত চলছে ক্ষমতার অপব্যবহার, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক সরকারের সময়ের তিন গভর্নর ও ছয় গভর্নরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হতে পারে।

জাতীয়

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করে ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ‘আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান’ ভেস্তে গেছে। যদিও এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ধাপে ধাপে ছিল ভয়াবহ সব নাশকতার ছক। দেশবিরোধী এসব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল দেশপ্রেমিক পেশাদার কর্মকর্তা।

এই টিমে সেনা ও পুলিশ বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বিত টিম নানাভাবে রাত-দিন কাজ করেছে। এর ফলে এখন বলা যায়, ষড়যন্ত্রকারীদের প্রথমদফার অপতৎপরতার ছক একে একে ব্যর্থ হয়েছে। তবে তারা বসেও নেই। ফেব্রুয়ারিতে হতে যাওয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাতে দেশে ফিরতে না পারেন সেজন্য দ্বিতীয় ধাপের ষড়যন্ত্রের ছক হাতে নিয়েছে। যা অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে চায়। পুলিশের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

যেভাবে সক্রিয় হচ্ছে প্ল্যান-২: নির্ভরযোগ্য সূত্রের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারকে ফেলে দিতে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র পরিকল্পনা-২ সক্রিয় করা হচ্ছে। যার প্রধান টার্গেট অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। ৩ মাসজুড়ে সক্রিয় থাকবে। এর আগে সরকারকে অচল করে দিতে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিশেষ কিছু কার্যক্রম শুরু হবে।

এসব গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুবউল আলম হানিফ, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ বেশ কয়েকজন।

অফিশিয়ালি বসে কাজের সমন্বয় করতে ইতোমধ্যে কলকাতা ও দিল্লিতে আওয়ামী লীগের পৃথক গোপন অফিসও খোলা হয়েছে। সেখানে তারা ৫ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করেছেন। এ চক্রের কাজে সহায়তা দিতে বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নেপথ্যে থেকে সক্রিয়ভাবে রসদ জোগাচ্ছেন।

ষড়যন্ত্রকারীদের থ্রি টার্গেট: এ চক্রের প্রধান টার্গেট বা লক্ষ্য তিনটি। এক. আগামী জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুল করে দেওয়া, দুই. যে কোনো উপায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা প্রতিরোধ করা এবং তিন. একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে দেশকে এমন পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া-যাতে সৃষ্ট প্রতিবিপ্লবের অগ্নিগর্ভ পরিবেশে শেখ হাসিনা ফের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই দেশে ফিরে আসতে পারেন।

কেন এই টার্গেট: আওয়ামী লীগের পলাতক নীতিনির্ধারক মহলের বদ্ধমূল ধারণা-টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে তারা ভয়াবহ যেসব অপরাধ করেছেন, তার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে মাঠের রাজনীতিতে পাকাপোক্তভাবে ফিরে আসা সহজ হবে না। ফের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এজন্য তারা উলটো পথে শেখ হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই ক্ষমতায় বসাতে মরিয়া। এজন্য যা যা করার তারা সেটিই করতে চান।

এখন কী করবে আওয়ামী লীগ: প্রথমদফার ষড়যন্ত্র পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের মাস্টারমাইন্ডরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তার অনেক কিছুতে তারা সাফল্যও পেয়েছেন। এখন তারা প্রথমদফার সফলতা ও ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে এবার আরও নিখুঁত অ্যাকশন প্ল্যান সাজাতে চান।

সূত্রমতে, তাদের প্রথম দফার অ্যাকশন প্ল্যানে সফলতার মধ্যে রয়েছে-বিপ্লবী সরকার গঠন হতে না দেওয়া, গণ-অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে থাকা সমন্বয়কদের অনেকের মধ্যে বিভেদ ও সন্দেহ সৃষ্টি করা, একাধিক গ্রুপে বিভক্ত করে ফেলা, নানা পদ্ধতিতে বিতর্কিত করা, রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি, একে অপরকে প্রতিপক্ষ বানানো, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অপেক্ষাকৃত কম বিতর্কিতদের গণ-অভ্যুত্থানের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটানো, আওয়ামী লীগ যেসব ভুল করে ক্ষমতা ছাড়া হয়েছে সেসব ভুলের পথে বিএনপিকে ঠেলে দেওয়া, প্রশাসনের সর্বস্তরে নীরব আওয়ামীপন্থিদের বিশেষ পন্থায় কাজে লাগানো এবং একই ভাবে ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কালচারাল সেক্টরে টিকে যাওয়া চতুর সাইলেন্ট গ্রুপকে ধীরে ধীরে সক্রিয় করে তোলা।

যেভাবে অকার্যকর হলো ‘আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান’: চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ভয়াবহ পতন হওয়ার পর পালিয়ে যেতে সক্ষম হওয়া নেতৃত্ব খুব ধীরস্থিরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। যে কারণে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার প্রথমদিন থেকেই তারা বিভিন্ন মাত্রার ‘ষড়যন্ত্র মিসাইল’ নিক্ষেপ শুরু করে।

গত এক বছরে নানাভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আওয়ামী দোসরদের সহায়তায় অন্তর্ঘাতমূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কোনোটি সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছে, কোনোটি আঁচ করতেও পারেনি। মূলত এভাবে তারা ছয় মাস আগে বছরপূর্তির আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে সরকার উৎখাতের চূড়ান্ত রূপরেখা প্রস্তুত করে। যার অলিখিত নাম দেওয়া হয় ‘আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান’। অর্থাৎ একযোগে আঘাতটা এমনভাবে করতে হবে, যাতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। আর ওই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেশে ফেরানো নিশ্চিত করা।

পুলিশের দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ সূত্র যুগান্তরকে এ প্রসঙ্গে জানান, ‘দেখুন-মানুষ যত পরিকল্পনা করুক না কেন, আল্লাহ মহাপরিকল্পনাকারী। এ কারণে অবিশ্বাস্যভাবে ২০২৪ সালের বর্ষাবিপ্লবে ৫ আগস্ট আল্লাহর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। শেখ হাসিনাকে কিভাবে পালাতে হয়েছে তা সবাই প্রত্যক্ষ করেছে। রুমের এসি পর্যন্ত বন্ধ করার সময় পাননি। রান্না করা খবারও খেতে পারেননি। গুছিয়ে নেওয়া সবকটি স্যুটকেসও সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, ভয়াবহ পতন হলেও আওয়ামী লীগ হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে না। তারা সরকার উৎখাতে নানারকম ধ্বংসাত্মক পথে এগোবেই। সেজন্য আমরা বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার শুরু থেকেই এ বিষয়ে অ্যালার্ট ছিলাম। আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্বস্ত অনেকে যুক্ত ছিলেন এবং এখনো আছেন। কখনো আলাদাভাবে আবার কখনো সমন্বয় করে কাজ করেছি। কেউ কারও সোর্স ওপেন করিনি। উদ্দেশ্য ছিল-দেশকে রক্ষা করা। সবার আগে দেশ। এত মানুষ এভাবে জীবন দিয়ে গেছে। ওদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা এই বাংলাদেশ ভোগ করছি। ফলে এতটুকু বলতে পারি, নানামুখী প্রচেষ্টার একপর্যায়ে আমরা শত্রুপক্ষের ঘরের মধ্যে বিশ্বস্ত সোর্স যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি এবং সেখান থেকে পাওয়া তথ্যগুলো বারবার বিভিন্ন পন্থায় ক্রসচেক করেছি। এরপর সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সমন্বয় করে আমরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকরভাবে নিতে পেরেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে সূত্রটি বলে, ‘পালিয়ে থাকা রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কিছুসংখ্যক লোকের মধ্যে অপরাধবোধ এবং অনুশোচনা কাজ করছে। কেউ কেউ রাজসাক্ষীও হতে চান। ধরে নিতে পারেন, এই শ্রেণির অনেকে সতর্কভাবে সহযোগিতা করায় আমরা ফ্যাসিস্টদের সরকার উৎখাতের প্রথম দফার ষড়যন্ত্র অকার্যকর করে দিতে পেরেছি বলে আপাতত মনে করছি।’

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র প্রতিরোধের অংশ হিসাবে পুলিশসহ জনগণকে কিছুটা সতর্ক করতে ২৮ জুলাই পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। যেখানে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়। আসলে এই চিঠিটি প্রকাশ্যে আনার উদ্দেশ্য ছিল-শত্রুপক্ষকে ভিন্ন একটি বার্তা দেওয়া। যদিও এর অনেক আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ষড়যন্ত্রের অনেক কিছু আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষ হয়তো পুলিশের ব্যর্থতা তালাশ করে। কিন্তু অনেকে জানেনই না, ষড়যন্ত্র ও অপরাধ প্রতিরোধ করতে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা গোপনে কিভাবে রাত-দিন কাজ করেন।

এখন যাদের গুরুদায়িত্ব

সূত্রটি জানায়, জাতীয় নির্বাচন হবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে। তফশিল ডিসেম্বরে। দেশ এখন নির্বাচনের ট্রেনে উঠে গেছে। এটাও সত্য। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। মনে রাখতে হবে, সুযোগ পেলে ষড়যন্ত্রকারীরা যে কোনো সময় সক্রিয় হবে। পালটা আঘাত করবে। ফলে পুলিশ মনে করে, এখন নির্বাচন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং একটি ভালো নির্বাচন সম্পন্ন করতে হলে সবচেয়ে বড় দায় এবং দায়িত্ব হলো গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সব রাজনীতিবিদের। বিশেষ করে বিএনপির মতো বড় দলের জন্য গুরুদায়িত্ব তো বটেই।

তিনি বলেন, সবাই জানে নির্বাচন হলে ফলাফল কী হতে পারে, কারা ক্ষমতায় আসবে। এটা তো প্রশাসনের লোকজন জানে। ফলে যদি সবাই বুঝতে পারে-বিএনপি সরকার গঠন করবে, তাহলে বিএনপির লোকজন এখন কোথাও কোনো অপরাধ করলে পুলিশ তো সেভাবে অ্যাক্ট করবে না। তারা ভাববে আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা। এরাই তো দুদিন পর ক্ষমতায় আসবে। এছাড়া পুলিশ এখনো ট্রমা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। এটিই চরম বাস্তবতা। সবাইকে এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। তাছাড়া আমাদের দেশের দীর্ঘদিনের রাজনীতির যে কালচার, তা তো ওভারনাইট পরিবর্তনও হবে না। তাই আগামী নির্বাচন যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি বিএনপির মতো বড় দলের জন্যও অনেক বড় কঠিন পরীক্ষা। খোলা চোখে যেটা দেখা যায়, সেটাই আসল চিত্র নয়। দলের কেউ চাঁদাবাজি করলে শুধু বহিষ্কার কোনো সমাধান হবে না, আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশের মতো বিএনপিকে আগাম প্রতিরোধমূলক পথে কাজ করতে হবে। অনেক বড় দল হওয়ায় দায়িত্বও বড়। এছাড়া এবার যেহেতু ভোট শতভাগ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে-সেহেতু বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ সব দলকেও সরকারকে এখন থেকে সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে।

পুলিশের এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রতিবেদককে বলেন, আরও একটি বড় দায়িত্ব এখন গণমাধ্যমের। নিউ মিডিয়ার যুগে এখন তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেখবর আর গুজবের ছড়াছড়ি অবস্থা, সেখানে মেইনস্টিমের গণমাধ্যমকে আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অবশ্যই বেশির ভাগ সাংবাদিক সে কাজটি করে যাচ্ছেন। যে কারণে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।

তবে খেয়াল রাখতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য দেশকে ভালোবেসে শতভাগ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে যেন কোনো মিথ্যা বা অপতথ্য প্রকাশ না হয়ে যায়। তাহলে টিম স্পিরিট ধরে রাখা কঠিন হবে। অনেকে তো ষড়যন্ত্র করে ভালো অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে দিতে চাইবে। সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শেষকথা হিসাবে তিনি বলেন, কোনোভাবে গণ-অভ্যুত্থানের ঐক্য বিনষ্ট করা যাবে না। এই ঐক্যই হলো এখন বড় শক্তি। নির্বাচন হবে। মানুষ যাকে খুশি ভোট দিয়ে তার নেতা নির্বাচন করবে। কিন্তু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল ও জনগণের ঐক্য বিনষ্ট হলে বিপদ যে কোনো মুহূর্তে ঘনীভূত হতে পারে।

জাতীয়

এস আলম গ্রুপের ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তির মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্রোক বা জব্দ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ইসলামী ব্যাংকের দায়ের করা একটি মামলায় চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত-১ এর বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।

এর আগে ২ হাজার ২৮০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ইসলামী ব্যাংক।

আদালত সূত্র জানায়, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের কাছ থেকে ২ হাজার ২৮০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানির জন্য এই ঋণ দেওয়া হয় এ কোম্পানিকে। এই ঋণ আদায়ে গত ১৮ জুন অর্থঋণ আদালতে ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। ঋণের টাকা উদ্ধারে ঝুঁকি থাকায় ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার ধানমন্ডি, মিরপুর ও গুলশানের বিভিন্ন স্থানে ৩০৬ শতক জমি ও সূত্রাপুরের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের নামে পূবালী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখায় চেকমূলে লিয়েন থাকা ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ক্রোক করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সবমিলিয়ে ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সম্পত্তি জব্দ করে রাখতে বলেন আদালত।

জাতীয়

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গোটা সাংবাদিক সমাজ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স ও বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় না বিচার, আর এই দায়মুক্তির সংস্কৃতিই উৎসাহ দিচ্ছে নতুন হত্যাকাণ্ডকে। তারা তুহিন হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেন এবং সরকারকে হুঁশিয়ার করেন—এ বিচার না হলে সারা দেশে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবে।

জনকণ্ঠের প্ল্যানিং এডিটর জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘তুহিনের মতো একজন নির্ভীক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিককে যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা শুধু সাংবাদিক সমাজ নয়, পুরো জাতির জন্যই আতঙ্কের। আমরা বারবার বলেছি, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ছাড়া গণতন্ত্র রক্ষা অসম্ভব। আজ তুহিন, কাল আমরা—এবারই শেষবার!’

মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তুহিন হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি ধারাবাহিক দমন-পীড়নের অংশ। সাংবাদিকদের চাকরি হারানো, গুম হওয়া, এমনকি খুন হওয়া—এসব এখন নিত্যদিনের ঘটনা। আমরা আর চুপ থাকব না। সরকার যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেয়, তবে আন্দোলন অনিবার্য।’

জনকণ্ঠের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ইসরাফিল ফারাজি বলেন, ‘প্রতিটি হত্যার বিচারহীনতা নতুন হত্যার পথ খুলে দিচ্ছে। আমরা এর অবসান চাই। তুহিন হত্যার বিচার হতেই হবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- জিআরইউর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক অন্তু মোজাহিদ (কালবেলা), হাসান মাহমুদ (দেশ টিভি), মাহমুদ হাসান ও তাওহিদ (নিউজ টুয়েন্টিফোর), আকরাম (কালবেলা), সাইমুন মুবির পল্লব (বাংলা নিউজ), সাইফুল ইসলাম (ঢাকা পোস্ট), রাজু আহমেদ (বার্তা টোয়েন্টিফোর), নাইম (যায়যায়দিন), সজল (ফেইস দ্য পিপল), আজহারুল ইসলাম (বাংলাদেশ প্রতিদিন), এবং সাদিয়া (ডেইলি ক্যাম্পাস)।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফখরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান।

জাতীয়

কলকাতার লাগোয়া এক উপনগরীর ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকায় যেখানে প্রতিদিন লাখো মানুষের আনাগোনা ও শত শত কমপ্লেক্স দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে কিছু নতুন মুখ, যারা আগে এ এলাকায় আসতেন না।

স্থানীয়দের অনেকেই তাদের চেনেন না, চেনার কথাও নয়।

অথচ মাত্র এক বছর আগেও তারা ছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ ও মধ্যম পর্যায়ের নেতা। এই কমপ্লেক্সেই সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় দপ্তর স্থাপন করেছে।

কলকাতায় আওয়ামী লীগের ‘পার্টি অফিস’ স্থাপনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা, হাস্যরস। কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে বলছেন, আওয়ামী লীগ কি পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন করবে কি না।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে পরে তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীও দেশটিতে গাঢাকা দেন। প্রথম কয়েক মাসে ওই নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বৈঠক বা দপ্তর-সংক্রান্ত কাজ চালাতেন সুবিধামতো অবস্থানস্থলে। বড় বৈঠকের জন্য ভাড়া নিতে হত কোনো রেস্তোরাঁ বা ব্যাংকোয়েট হল।

এ কারণে একটি স্থায়ী ‘পার্টি অফিস’-এর প্রয়োজন বোধ করছিলেন তারা। এখন সেই অফিসটি পাওয়া গেছে উপনগরীর এক বাণিজ্যিক ভবনের পেছনের দিকে। লিফটে উঠে আট তলায় বাঁ দিকে গেলে সারি সারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দপ্তর চোখে পড়ে।

করিডরের দুপাশে হালকা বাদামি রঙের দরজার সারি, যার একটি দরজার আড়ালেই আওয়ামী লীগের নতুন ‘পার্টি অফিস’। ঘরটি প্রায় ৫০০-৬০০ বর্গফুটের। তবে বাইরে থেকে যেমন-তেমন, ভেতরে উঁকি দিলেও বোঝা যাবে না এটি কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয়। কোথাও নেই সাইনবোর্ড, নেই শেখ হাসিনা কিংবা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি।

এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধু বা নেত্রীর কোনো ছবি, সাইনবোর্ড কোনো কিছুই আমরা রাখিনি খুবই সচেতনভাবে। আমরা চাইনি যে এই ঘরটার পরিচিতি প্রকাশ করতে। এমনকি একটা দলীয় দপ্তরে যেসব ফাইল থাকে, সেগুলোও এখানে রাখা হয় না। নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ, বৈঠক ইত্যাদির জন্য একটা ঘর দরকার ছিল, এটা পাওয়া গেছে। এটাকে আমরা পার্টি অফিসই বলি, কিন্তু আদতে এটি বাণিজ্যিক অফিস। আগে যে সংস্থা কাজ করত এখানে, তাদেরই ছেড়ে যাওয়া চেয়ার, টেবিল এসবই আমরা ব্যবহার করি।

তিনিই জানান, ৩০-৩৫ জনের বৈঠক এই দপ্তরেই হয়ে যায়, কিন্তু একটু চাপাচাপি করে বসতে হয়। ছোটখাটো বৈঠক বিভিন্ন নেতাদের বাসাবাড়িতে এখনো হয়। তবে বড় বৈঠকের জন্য কোনো ব্যাংকোয়েট হল বা কোনো রেস্তোরাঁর একটি অংশ ভাড়া নিয়ে নেওয়া হয়।

কারা যাতায়াত করেন পার্টি অফিসে?

গত বছরের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বহু শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী, পেশাজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কলকাতা ও আশপাশে ভাড়া বাসায় থাকছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, অন্তত ৭০ জন এমপি, জেলা সভাপতি-সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়রসহ প্রায় ২০০ শীর্ষ নেতা এখানে অবস্থান করছেন। কেউ সপরিবারে, কেউ বা কয়েকজন মিলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন, আবার কারও কারও পরিবার সময়-সময় বাংলাদেশ থেকে এসে কিছুদিন কাটিয়ে যান।

এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, এখন যে সংখ্যাটা খুব বেশি বেড়েছে তা নয়। বর্তমানে দ্বাদশ সংসদের ৮০ জনের মতো এমপি এবং তারও আগে এমপি ছিলেন, এমন ১০-১২ জন নেতা আছেন এখানে। আবার এমনও কয়েকজন এসেছেন, যারা কলকাতায় এসে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্যান্য দেশে চলে গেছেন। সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাও থাকেন কলকাতার আশেপাশেই। কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বাস করছেন, তাদের প্রায় সবাই পার্টি অফিসে যাতায়াত করে থাকেন।

ওই নেতা বলেন, অফিস খোলার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যেরকম প্রয়োজন, সেরকমই আসেন নেতারা। আবার রোজই যে সবাই আসেন, তাও নয়। আসলে প্রয়োজনীয়তা ছিল একটা নির্দিষ্ট জায়গা গড়ে তোলা, সে জন্যই এই পার্টি অফিস।

আওয়ামী লীগের এই নতুন দপ্তরের বিষয়ে ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করা সাধারণ মানুষ যে কিছু জানবেন না, সেটাই স্বাভাবিক। দলেরও কোন স্তরের নেতা-কর্মীরা এই দপ্তরের বিষয়ে কতটা জানেন, সেটা জানা যায়নি।

কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ভারতীয় গোয়েন্দারা এই দপ্তরের বিষয়ে জানেন এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ স্তরের অনুমোদন ছাড়া এই দলীয় দপ্তর থেকে আওয়ামী লীগের কাজকর্ম চলতে পারত না।

যেভাবে দল চলছে এক বছর ধরে

গত এক বছরের কিছুটা কম সময় ধরে ভারত থেকেই আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে। দলটির নেত্রী শেখ হাসিনা দিল্লির কাছাকাছি কোথাও থাকেন, আর বড় অংশ থাকেন কলকাতা সংলগ্ন অঞ্চলে।

যদিও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, এই ধারণাটা ঠিক নয় যে ভারত থেকে দল চলছে। মূল দল বা সহযোগী সংগঠনগুলোর কতজন নেতা-ই বা ভারত অথবা অন্যান্য দেশে রয়েছেন? বেশিরভাগ তো এখনও বাংলাদেশেই আছেন।  কিন্তু দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ ভারতে আছেন বলে সেখান থেকেই যে রাজনৈতিক দিশা-নির্দেশ দেওয়া বা দলীয় অবস্থান চূড়ান্ত হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবুও দু সপ্তাহ আগে পর্যন্তও শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি দেখা হয়নি দল-নেত্রীর।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ভারতে অবস্থান করছেন গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে।

অর্থায়ন কীভাবে হচ্ছে?

ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে দলীয় প্রচার প্রচারণার জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না ঠিকই, কিন্তু খরচ তো আছে। আবার যে নেতাকর্মীরা ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের ব্যক্তিগত খরচও চালাতে হয়। কীভাবে সেসবের জন্য অর্থের সংস্থান হচ্ছে?

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিবিসি বাংলাকে বলেন, দেশে, বিদেশে থাকা শুভাকাঙ্ক্ষীরাই তাদের খরচ চালাচ্ছেন।

দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে আগস্টের পরে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, সেই অন্ধকার অতিক্রম করা কঠিন কাজ। যে নেতা-কর্মীরা দেশে বা বিদেশে আছেন, তারাই এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসছেন, অর্থ সাহায্য করছেন। ’

কতদিন থাকবেন তারা দেশ ছেড়ে? ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দিনক্ষণ ঠিক করে ওভাবে তো রাজনৈতিক লড়াই হয় না, আবার লড়াই ছাড়া উপায়ও নেই। ’

জাতীয়

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বর বলেছেন, ‘দ্বীপটির জন্য একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। এর পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প আয়ের উপায় নির্ধারণের কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, দ্বীপটির প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য (দ্বীপের প্রকৃতির ক্ষতি কমিয়ে আবার সুস্থ ও জীবন্ত করে তোলার লক্ষ্যে) সেখানে পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত এক বছরে পরিবেশ সুরক্ষা, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় মন্ত্রণালয় বেশ কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছে। দূষণ কমাতে সারা দেশের শপিংমলগুলোতে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। পলিথিন উৎপাদন কারখানা, কাঁচাবাজার ও অন্যান্য স্থানে এর ব্যবহার রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান চলছে। পাশাপাশি পলিথিনের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যে পাটের ব্যাগ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি যৌথ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া ৮৩০টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং ঢাকার সাভার ও আশুলিয়াকে ‘দূষিত বায়ুমণ্ডল’ এলাকা হিসেবে ঘোষণার প্রক্রিয়া চলছে। অবৈধ সীসা কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে তরুণদের যুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাজীপুরের গাছা খাল দূষণকারী নয়টি কারখানার সংযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং সব পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের জন্য নতুন কর্মসূচি অনুমোদিত হয়েছে এবং এর নিজস্ব ৩৭টি অফিস ভবন নির্মাণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। পাহাড় সংরক্ষণের জন্য ১৬টি জেলার তালিকাভুক্ত পাহাড়ের তথ্য অনলাইন ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং নিয়মিত নজরদারি চলছে।জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় ৩৫১ কোটি টাকার ৪১টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ চূড়ান্ত হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর আলোকপাত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কক্সবাজার ও সোনাদিয়ায় বিভিন্ন কাজে বরাদ্দকৃত ১০ হাজার ৩২২ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। পূর্বাচলে ১৪৪ একর এলাকাকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গত এক বছরে বেদখল হওয়া ৫ হাজার ৯৩ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে আবার বনায়ন করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা উৎপাদন ও রোপণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মধুপুর শালবন পুনরুদ্ধারে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাতির চলাচলের পথ তৈরি এবং জীববৈচিত্র্য বাড়ানোর জন্য চুনতি ও শেরপুরের বন পুনরুদ্ধারের কাজও চলছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানব-হাতি সংঘাত কমাতে ১৫৯টি ‘এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি)’ গঠন করা হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ময়ূর ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বিপন্ন প্রজাতিগুলোকে সুরক্ষিত করা হচ্ছে, জলাভূমিগুলোকে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ও ২৯৩টি বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন অভিযানে ৫ হাজার ৬৮৪টি প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। জাতীয় উদ্যান ও ইকোপার্কগুলোতে প্লাস্টিক ব্যবহার ও পিকনিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী আইন আধুনিকীকরণ এবং নতুন আইন, বিধি ও নির্দেশিকা প্রণয়নের কাজও চলছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের এসব উদ্যোগ দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এগুলো একটি জলবায়ু প্রতিরোধী ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

জাতীয়

গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় মসজিদ মার্কেটে প্রকাশ্যে মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) নামে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে মো. আসাদুজ্জামান তুহিন নিজ ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে লেখেন ‘যেমন খুশি তেমন রাস্তা পার হওয়ার দৃশ্য। গাজীপুর চৌরাস্তা’। এরপর এরপরই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত আসাদুজ্জামান তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার ভাটিপাড়া এলাকার হাসান জামালের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সপরিবারে বসবাস করতেন আসাদুজ্জামান তুহিন। রাতে তিনি মসজিদ মার্কেটের সামনে একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন যুবক প্রকাশ্যে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই আসাদুজ্জামান তুহিনের মৃত্যু হয়।

গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন খান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কে বা কার কি কারণে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তা এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জাতীয়

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চূড়ান্ত হয়েছে দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘তফশিল ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভোটার হবেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।’

‘পোস্টাল ব্যালোটে ভোট দেবেন প্রবাসী ভোটাররা’ উল্লেখ তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভোটারদের ভোট দিতে হলে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’

সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রবাসী ভোটারদের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে আজ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘সভার শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- ৫ আগস্ট আমার প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ থেকে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।’

এর আগে বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির রমজানের আগেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলেছে।

এ চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরকারের অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে। ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে ডিপফেইক, মিথ্যা, পক্ষপাতমূলক, অপপ্রচারমূলক, কুৎসা ও মানহানিকর কনটেন্ট (যেমন, এডিট ভিডিও, অডিও, বানোয়াট খবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। এমনকি প্রার্থী ও দলীয় নেতাদের চেহারা বিকৃত করে কোনো প্রচার চালানো যাবে না। কেউ এসব কার্যক্রম করলে তার বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা বা ডিজিটাল আইনে মামলা হবে। এমন নতুন বিধান যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

আরও জানা গেছে, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির মতামত নিয়ে এ আচরণ বিধিমালার খসড়া তৈরি করেছে ইসি। গত ২৯ জুন নির্বাচন কমিশন যে খসড়া আচরণ বিধিমালা প্রকাশ করেছিল, সেখানে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ওই খসড়ায় শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের কথা উল্লেখ ছিল। বিএনপিসহ একাধিক মতামতের ভিত্তিতে আচরণ বিধিমালায় এআই’র অপব্যবহারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারের বিষয় বেশ কিছু নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খসড়া বিধিমালায় নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটগ্রহণের দিন ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।