জাতীয়

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত অনুযায়ী কর অব্যাহতি-প্রণোদনা কমিয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই ধারাবাহিকতায় এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে বৈষম্য কমিয়ে আনতে সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়িভাড়া ও অন্য ভাতায় করারোপের চিন্তা করছে সংস্থাটি। এছাড়া শিল্প খাতে কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ নির্দিষ্ট করাসহ আয়কর আইন সংস্কারে একগুচ্ছ পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা আগামী বাজেটে অর্থবিলের মাধ্যমে আয়কর আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

জানা গেছে, কর অব্যাহতি-প্রণোদনা যৌক্তিক করতে কর আপিল ও অব্যাহতি অণুবিভাগের সদস্য ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল কাজ করছে। ২০ মার্চ সেই টিম এনবিআর চেয়ারম্যানকে কর প্রণোদনার প্রেক্ষাপট, বিদ্যমান ব্যবস্থার বিস্তারিত তুলে ধরে একটি উপস্থাপনা দেয়।

উপস্থাপনায় কর অব্যাহতি-প্রণোদনার বিদ্যমান ব্যবস্থা ও পদ্ধতি, নেতিবাচক দিক, প্রয়োজনীয়তা, অপব্যবহার, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে আয়কর আইন সংস্কারের মাধ্যমে কর প্রণোদনা যৌক্তিকীকরণে একগুচ্ছ সুপারিশ করা হয়।

উপস্থাপনায় বলা হয়, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, দেশীয় বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ, রপ্তানিমুখী সেবা ও শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া, সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা দেওয়া, গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহ দেওয়া এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে শ্রমঘন প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে কর প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। মোট ৩১৮টি প্রজ্ঞাপন ও বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ১৫টি শিল্প খাত ও ব্যক্তি খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া আছে। এর মধ্যে ৪৫টি প্রজ্ঞাপন সময় দ্বারা সীমাবদ্ধ হলেও প্রায় ২৭৩টি প্রজ্ঞাপনের সময়ের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তবে কর প্রণোদনার ফলে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যায়। ফলে সরকার অন্য প্রয়োজনীয় খাত যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে পারে না।

এতে আরও বলা হয়, কর প্রণোদনার অপব্যবহারও হয়ে থাকে। কর ফাঁকি দিতে একই ব্যক্তি বা গ্রুপর করযোগ্য সত্তার আয় কম দেখিয়ে কর প্রণোদনার সত্তার আয় বাড়িয়ে দেখানো হয়ে থাকে। কর প্রণোদনা পরিপালন ব্যয় বৃদ্ধি করে, দুর্নীতি ও অনিয়ম বেড়ে যায়। অপরিকল্পিত কর প্রণোদনার ক্ষেত্রে প্রকৃত কর ব্যয় এবং কর ব্যয়ের সফলতা বা সুবিধা সুনির্দিষ্টভাবে পরিমাপযোগ্য হয় না। তাছাড়া অনিয়ন্ত্রিত প্রণোদনা ব্যবসার অসম প্রতিযোগিতাকে বাড়িয়ে দিয়ে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, কর প্রণোদনা যৌক্তিক করতে এবং অপব্যবহার রোধে আয়কর কর্মকর্তাদের একটি টিম বিদ্যমান কাঠামো পর্যালোচনা করছে। কর প্রণোদনায় শৃঙ্খলা আনতে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। ভবিষ্যতে সেই নীতিমালার আলোকে কর অব্যাহতি, প্রণোদনা বা ছাড় দেওয়া হবে। আগামী বাজেটে নীতিমালাটি আয়কর আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, কর অব্যাহতির পরিমাণ যৌক্তিক করতে এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে বৈষম্য দূর করতে সরকারি চাকরিজীবীদের ভাতায় কর আরোপের পরিকল্পনা আছে। বর্তমানে বেসরকারি চাকরিজীবীদের মূল বেতন, বোনাস, বাড়িভাড়া, যাতায়াত ভাতাসহ মোট আয়ের দুই-তৃতীয়াংশের ওপর (এক-তৃতীয়াংশ বা সাড়ে ৪ লাখ টাকার নিচে যেই অঙ্ক কম, সেই অঙ্কে করছাড় রয়েছে। অর্থাৎ করমুক্ত) নির্ধারিত হারে আয়কর দিতে হয়। পক্ষান্তরে সরকারি চাকরিজীবীরা শুধু মূল বেতন ও বোনাসের ওপর আয়কর দেন।

এছাড়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানিক করদাতারা বিভিন্ন খাতে দানের পরিপ্রেক্ষিতে যেই পরিমাণ করছাড় পেয়ে থাকেন, সেগুলোও পুনর্বিন্যাস করার উদ্যোগ থাকছে। যেমন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদিত বালিকা বিদ্যালয় বা মহিলা কলেজ, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিক্ষা উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে দান করতে করছাড় পাওয়া যায়। এসব ক্ষেত্রে করছাড় যৌক্তিক করার পাশাপাশি প্রণোদনার সম্ভাব্য অপব্যবহার রোধে দাতব্য এবং জনকল্যাণমূলক ট্রাস্টের কর্মপরিধি সুনির্দিষ্ট করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, আগামীতে শিল্প খাতকে অনির্দিষ্টকাল বা অসীম সময়ের জন্য কর অব্যাহতি বা প্রণোদনা দেওয়া হবে না। শিল্পকে উৎসাহিত করতে কর প্রণোদনা বহাল থাকবে। তবে সেটি সময়াবদ্ধ হবে, সর্বোচ্চ ৫ বছর করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে কর অব্যাহতি বা প্রণোদনা পেয়েছে, সেগুলো নতুন করে সুবিধা দেওয়া হবে না। ব্যবসা ক্ষেত্রে অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করে, এমন সব প্রণোদনা বাতিল করা হতে পারে।

এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, সেনাবাহিনী বা যেসব প্রতিষ্ঠানের আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা নেই, কিন্তু করযোগ্য আয় রয়েছে, তাদের গ্রসপ্রাপ্তির সংবলিত একটি বার্ষিক রিপোর্ট দালিল এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর কর পরিশোধের বিষয় আয়কর আইনে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একইভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের করযোগ্য প্রাপ্তির ওপর করারোপের সুস্পষ্ট বিধান করার পরিকল্পনা আছে।

এ বিষয়ে সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আয়কর আইনে বেশকিছু বৈষম্য আছে। এর মধ্যে একটি হলো সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন-ভাতা করমুক্ত রাখা এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর করারোপ করা। একই আইনে চাকরিজীবীদের ওপর দ্বৈতনীতি কাম্য হতে পারে না। সরকারি কর্মকর্তারা নিজেরা আইন করেছেন বলে নিজেরা সুবিধা নিয়ে নেবেন, আর বেসরকারি চাকরিজীবীদের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন, সেটি যৌক্তিক হতে পারে না। সব শ্রেণি-পেশার চাকরিজীবীর সমান সুবিধা দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, কর অবকাশ সুবিধা যৌক্তিকীকরণ করা উচিত। কোনো সুবিধাই আজীবনের জন্য দেওয়া উচিত নয়। এতে শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় না, বরং অপব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যেমন আইটিইএস সার্ভিস ১৫ বছর ধরে কর অবকাশ সুবিধা ভোগ করছে; কিন্তু নতুন অনেক শিল্পোদ্যোগের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া দরকার, তারা সুবিধা পাচ্ছে না। আয়কর আইনে যেসব শিল্পকে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া আছে, সেগুলো পুনর্বিন্যাস ও যৌক্তিক করা জরুরি। মোদ্দা কথা, বাংলাদেশের কর ব্যয় আরও স্বচ্ছতার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত।

৫-১৩ মার্চ আইএমএফের ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ‘কর ব্যয়’ ওপর ওয়ার্কশপে অংশ নেয়। তারা কর অব্যাহতি কমিয়ে আনতে ২০২৪ সাল অর্থ আইনের মাধ্যমে আয়কর আইনে কী পরিবর্তন আনতে হবে, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী ব্যবসায় সক্ষমতা ধরে রাখতে মধ্য মেয়াদে ২০২৫ সালে এবং দীর্ঘমেয়াদে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে আইনে কী ধরনের সংস্কার আনতে হবে তার সুপারিশ করেছে। আইএমএফের সুপারিশের মধ্যে আছে-সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন এবং বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ সব ধরনের ভাতা করের আওতায় আনা, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের অব্যাহতি সুবিধা বাতিল (বর্তমানে মোট আয়ের এক-তৃতীয়াংশ অথবা সাড়ে ৪ লাখ টাকার মধ্যে যেটি কম সেই অঙ্কের করছাড় পায় করদাতারা), করমুক্ত আয়সীমা ও ন্যূনতম করহার বৃদ্ধি এবং শিল্প খাতে প্রদত্ত কর অব্যাহতি পুনর্মূল্যায়নের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

কোন খাতে কত কর ব্যয় : এনবিআরের তথ্যমতে, ক্ষুদ্রঋণ খাতে সবচেয়ে বেশি কর ব্যয় হয়, ১৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। এরপরের অবস্থানে আয়ে যথাক্রমে বৈদেশিক আয় খাতে ১১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৮ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, অর্থনৈতিক অঞ্চল বা হাইটেক পার্কে ৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকা, তৈরি পোশাক/টেক্সটাইল মিল/এক্সেসরিজ শিল্পে ৩ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা, আইটি/সফটওয়্যার খাতে এক হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা, শেয়ার মূলধনী মুনাফা ৯৬৫ কোটি টাকা এবং মৎস্য চাষ ও হাস-মুরগির খামারে ১৪৩ কোটি টাকা কর ব্যয় হয়।

প্রত্যক্ষ কর ব্যয় বলতে কর রেয়াত, ছাড়, প্রণোদনা, অব্যাহতি, হ্রাসকৃত হারে করারোপ এবং মোট করযোগ্য আয় পরিগণনা হতে আয় বাদ দেওয়াকে বোঝায়। এটি এক ধরনের ভর্তুকি। এই ভর্তুকি যদি কর হিসাবে আয়দায় হতো তা হলে মোট আদায়কৃত করের সঙ্গে এটি যুক্ত হতো এবং করের পরিমাণ বৃদ্ধি পেত। প্রত্যক্ষ কর ব্যয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রণোদনা, সামাজিক সাম্যাবস্থা ও শিল্প সহায়তার সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। চলতি বছরের বাজেটে প্রত্যক্ষ কর ব্যয়ের একটি ধারণা দেয় এনবিআর, যা অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়।

এনবিআরের হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রত্যক্ষ কর ছাড়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে করপোরেট পর্যায়ে ৮৫ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ও ব্যক্তিপর্যায়ে ৪০ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়। সামগ্রিকভাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রত্যক্ষ কর ব্যয় ছিল জিডিপির ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপির আকার বিবেচনায় প্রত্যক্ষ কর ব্যয় হবে এক লাখ ৭৮ হাজার ২৪১ কোটি টাকা।

জাতীয়

সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জিল্লুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

১৯২৯ সালের ৯ মার্চ বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জিল্লুর রহমান। মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। সে সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের জিএস ছিলেন। দেশের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম ও ক্রান্তিলগ্নে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। দল-মত নির্বিশেষে তিনি সবার কাছে সমভাবে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরব-কুলিয়ারচর আসন থেকে তিনি ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

জিল্লুর রহমান দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ২০১৩ সালের ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার গঠন হলে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া স্বাধীনতার পর তিনি তিনবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী বেগম আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী ছিলেন এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দলীয় জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে পরে ২৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তাদের একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন বর্তমানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি।

জাতীয়

আগের বছর দেশ হিসেবে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ ছিল শীর্ষে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ু মান প্রতিবেদন ২০২৩’–এ এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বায়ুদূষণের অন্যতম উপাদান পিএম ২.৫ বা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপাদান ধরেই বায়ুর মান নির্ণয় করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। সেখানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের চেয়ে অন্তত ১৫ গুণ বেশি।

বৈশ্বিক বায়ু মানের ষষ্ঠ বার্ষিক এ প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ, অঞ্চল এবং অঞ্চলগুলোর সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরিতে ১৩৪টি দেশ, অঞ্চলের সাত হাজার ৮১২টি স্থানের ৩০ হাজারেরও বেশি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

বায়ুদূষণে বাংলাদেশের পরই ছিল পাকিস্তানের অবস্থান। দেশটিতে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ছিল ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের চেয়ে অন্তত ১৪ গুণ বেশি। এরপর যথাক্রমে তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসোর অবস্থান।

২০২৩ সালে সবচেয়ে দূষিত আঞ্চলিক রাজধানী শহরের তালিকায় শীর্ষে ছিল নয়াদিল্লি। সেখানে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ছিল ৯২ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। এরপরই ঢাকার অবস্থান। ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ছিল ৮০ দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম।

১২৪টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে মোট ১২৪টিই (৯২ দশমিক ৫) ডব্লিউএইচওর বেঁধে দেওয়া মানদণ্ড অতিক্রম করেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে উত্তর ভারতের বিহার রাজ্যের পাঁচ লাখ লোকের শহর বেগুসরাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর। এ শহরে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ছিল ১১৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া মানদণ্ডের চেয়ে অন্তত ২৩ গুণ বেশি। এরপর রয়েছে আসামের গুয়াহাটি, দিল্লি ও পাঞ্জাবের মুল্লানপুর।

২০২২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের দূষিত বাতাসের দেশের তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে ছিল। আর বাতাসে পিএম ২.৫–এর উপস্থিতি ছিল ৬৫ দশমিক ৮।

জাতীয়

সড়ক-মহাসড়কে লক্কর-ঝক্কর বাস, পণ্যবাহি গাড়িতে যাত্রী চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এ ধরনের যানবাহন রাস্তায় দেখামাত্র কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন হাইওয়ে পুলিশ প্রধান শাহাবুদ্দিন খান।

মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে পরিবহণ মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ার দেন। হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (অপারেশনস) শ্যামল কুমার মুখার্জীর সঞ্চালনায় এতে সড়ক পরিবহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা অংশ নেয়।

সভায় গুরুত্বপূর্ণ ৫টি মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে কোথায়, কেমন যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে, তা তুলে ধরেন যাত্রী কল্যাণ সংশ্লিষ্টরা। নিরাপদ সড়ক চাইয়ের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ছোট গাড়িগুলো হাইওয়েতে চলে আসা একটা বড় সমস্যা। এটাই যানজট ও দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।’ এদিকে ঈদ যাত্রায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি যাতে চলতে না পারে, সে বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে পরিবহণ মালিক সমিতি। তারা জানায়, নেওয়া হবে না বাড়তি ভাড়া। পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা বলেন, ‘আমি জানি। আমি একেবারেই ওয়াকিবহাল। কোনো কোনো জায়গায় নেওয়া হয়। যাতে না নেওয়া হয় সে ব্যবস্থাই আমরা করব এবার।’

হাইওয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, বডি ওর্ন ক্যামেরা ছাড়া হাইওয়ে পুলিশের কোনো সদস্য মহাসড়কে ডিউটি করতে পারবে না। তিনি বলেন, পণ্য পরিবহণে মালিক-শ্রমিক পক্ষ যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়, এ বিষয়ে সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির পরিচালক এফবিসিসিআই কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ বখতিয়ার যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জাতীয়

ভোজ্যতেল, আটা-ময়দা, পেঁয়াজ ও রসুনসহ ১০ পণ্যের দাম কমেছে। এক মাসের ব্যবধানে পণ্যমূল্য হ্রাসে ভোক্তারা কিছুটা স্বস্তিও পাচ্ছেন। তবে রমজানে অধিক ব্যবহৃত ছোলা, বেসন, খেজুর, সব ধরনের মাংস ও ফল এখনো বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু পণ্যের দাম কমলেও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দুই মাস আগে থেকে এসব পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করে আসছিল। এখন দাম কমিয়ে সরকারসংশ্লিষ্টরা ক্রেডিট নিচ্ছে। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে জানা যায়, এদিন প্রতিকেজি প্যাকেট আটা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগে ৬৫ টাকা ছিল। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা, যা আগে ৭০ টাকা ছিল। প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৩-১৬৫ টাকায়। যা আগে ১৭৩-১৭৫ টাকা ছিল। প্রতিকেজি মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। যা আগে ১৮০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকায়, যা এক মাস আগে ২৫০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি হলুদ ২৫০-২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৩০০-৩৫০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। যা আগে ৯৫০-১০০০ টাকা ছিল। রুই মাছের কেজি ৩৫০ টাকা, যা ৪৫০ টাকা ছিল।

এদিকে ভারত থেকে আমদানির খবরে অবৈধভাবে মজুত পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৭০ টাকায়। যা এক মাস আগে ১২০ টাকা ছিল।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সরকারের একাধিক তদারকি সংস্থা বাজারে কাজ করছে। এতে করে কিছু পণ্যের দাম রোজায় কমাতে শুরু করেছে। তবে দেখা গেছে, যেসব পণ্যের দাম কমছে-তা রোজার আগেই দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন বেশি দামে বিক্রি করে বাড়তি মুনাফা করে এখন দাম কমানো হচ্ছে। এছাড়া বাজারে এখনো অনেক পণ্য অযৌক্তিক দামে বিক্রি হচ্ছে। তদারকির মাধ্যমে সেগুলোর দামও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এতে ক্রেতার স্বস্তি ফিরবে।

খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে মান ও দামভেদে সাদা মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। যা রোজার আগে ৭০ টাকা ছিল। মান ও বাজারভেদে প্রতিকেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকায়। যা আগে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হতো। এছাড়া ইফতারে শরবত তৈরিতে ব্যবহৃত ইসবগুলের ভুসি, ট্যাং, রুহ-আফজা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ইসবগুলের ভুসি রোজার আগে ১ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ২ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি প্যাকেটজাত ট্যাং বিক্রি হয়েছে ৮৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৮০০ টাকা। বড় সাইজের রুহ-আফজা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়। যা আগে ৩৫০ টাকা ছিল। ছোট সাইজের রুহ-আফজা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। যা আগে ২০০ টাকা ছিল। সোমবার প্রতিলিটার খোলা সরিষার তেল বিক্রি হয়েছে ২৬০-২৭০ টাকায়। যা আগে ২৫০-২৬০ টাকা ছিল।

খুচরা বাজারে প্রতিকেজি লাল আপেল ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ২৬০-২৭০ টাকা ছিল। কমলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি। যা আগে ২৮০-৩০০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি আনার বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা। যা আগে ৩১০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি বরই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। যা আগে ৭০-৮০ টাকা ছিল। পেয়ারার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। যা আগে ৬০-৭০ টাকা ছিল।

এদিকে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী খুচরা পর্যায়ে গরুর মাংস কেজিতে সর্বোচ্চ ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা এবং খাসির মাংস ১০০৩ টাকা ৫৬ পয়সায় বিক্রি করতে হবে। কিন্তু খুচরা বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে রাজধানীর দু-একটি দোকানে ৫৯৫ টাকা কেজিদরে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গরুর সব স্থানের হাড় ও মাংস মিলিয়ে বিক্রেতারা বিক্রি করছেন। তাই ক্রেতার লাভের তুলনায় লোকসানই গুনতে হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ ও ৩৫০ টাকা। দেশি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকা।

জাতীয়

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম হেলালের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিমকে রাষ্ট্রীয় সম্মান গার্ড অব অনার জানানো হয়। পরে সেখানে নামাজে জানাজা শেষে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিকরা ফুল দিয়ে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। এ সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং পরিবারের সদস্যরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।

রোববার সন্ধ্যা ৮টার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন।

ইহসানুল করিম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবং রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি ১৯৪৯ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সাংবাদিকতায় ¯œাতকোত্তর ডিপ্লোমা ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর হয়ে পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধে অংশ নেন।

ইহসানুল করিম ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সংবাদ সংস্থার বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের নয়া দিল্লিতে বাসস’র ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন।

তিনি বাসস থেকে অবসর গ্রহণের পর, একই বছরের ২০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৫ জুন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে প্রথমে এক বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তার চুক্তির মেয়াদ দুই বার-তিন বছর করে বৃদ্ধি করা হয়।

জাতীয়

বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আজ মঙ্গলবার থেকে রমজান মাস গণনা শুরু হবে।

১১ মার্চ সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে এ কথা জানান ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

সে হিসেবে আজ রাতেই এশার নামাজের পর ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা তারাবির নামাজ আদায় শুরু করবেন এবং শেষরাতে সাহরি খাবেন।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।

এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি মো. ফরিদুল হক খান।

সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

সভা শেষে ঘোষণা দেয়া হয়, শাবান মাস শেষ হচ্ছে আজ। সে অনুযায়ী দেশে সোমবার তারাবি এবং মঙ্গলবার রোজা শুরু হবে।

জাতীয়

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের নির্বাচনে সভাপতি পদে সমান ৮১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাজ্জাদ আলম তপু।

দুজন সমান ভোট পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন দুই বছরের কমিটি পরিচালনার জন্য টসের উদ্যোগ নেয়। টস অনুযায়ী প্রথম বছর দায়িত্ব পালন করবেন সোহেল হায়দার চৌধুরী ও পরের বছর দায়িত্ব পালন করবেন সাজ্জাদ আলম খান তপু।

নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ফরিদ হোসেন সোমবার রাতে এ ফল ঘোষণা করেন। সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

সাধারণ সম্পাদক পদে আকতার হোসেন ৬৩৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এ জিহাদুর রহমান জিহাদ পেয়েছেন ৫৯২ ভোট। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে গোলাম মুজতবা ধ্রুব সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৯৪৭ ভোট।

অন্য পদে বিজয়ীরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খলিল খোকন, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান মিঞা, কোষাধ্যক্ষ সোহেলী চৌধুরী, আইনবিষয়ক সম্পাদকে আসাদুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ মামুন শেখ, দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী, কল্যাণ সম্পাদক শাহজাহান স্বপন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, নারী বিষয়ক সম্পাদক সুমি খান।

নির্বাহী পরিষদ সদস্য পদে বিজয়ীরা হলেন- জি এম মাসুদ ঢালী, নাসরিন বেগম গীতি, এ এম শাহজাহান মিয়া, আনোয়ার সাদাত সবুজ, সাজেদা হক, আহমেদ মুশফিকা নাজনীন, রারজানা সুলতানা ও অনজন রহমান।

জাতীয়

দাগী অপরাধী, অ-বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া একটি চক্রের ২৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কে. এন. রায় নিয়তি জানান, অপরাধী, অ-বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া একটি চক্র শনাক্ত করেছে ডিবি।

বিপুল পরিমাণ ডকুমেন্টস, আনসার সদস্য, রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও দালালসহ এ চক্রের ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

জাতীয়

মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল বরাত সারা দেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। প্রতিটি মসজিদ দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে।

এশার নামাজে ছিল মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। বাবা, চাচা, মামার সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে আসে ছোটরাও।

তাদের কেউ কেউ নিয়ে আসে নিজের জায়নামাজও। বড় বড় মসজিদ, মাজার, দরগা, খানকাহকে ঘিরে বসেছে আতর, টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, পাঞ্জাবি, নামাজ শিক্ষা, দোয়া দরুদসহ ইসলামি বই, আগরবাতি, মুখরোচক খাবার, চা, পিঠা, খেজুর ও শরবতের স্টল।

কিছু মসজিদে বাড়তি মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদের ছাদ, বারান্দা ও সড়কের একপাশে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। এশার নামাজের পর মসজিদে মসজিদে ছিল পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা। এরপর মিলাদ মাহফিল, দরুদ, জিকির, কিয়াম, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত।

সরেজমিন ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও নগরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশের বেশিরভাগ মসজিদ সাজানো হয়েছে বর্ণিল বাতি দিয়ে। বেশি মানুষ যাতে মাগরিব ও এশার জামাতে অংশ নিতে পারেন তার জন্য বাড়তি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হাটহাজারীর হজরত শেরে বাংলা (র.) মাজার ও মসজিদের আলোকসজ্জা অনেক দূর থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল পথচারীদের। চশমা হিলের মসজিদের দৃষ্টিনন্দন সাজও দূর থেকে নজর কাড়ছিল নগরবাসীর। আলোকসজ্জা করা হয়েছে  বিশ্ব মসজিদ খ্যাত দামপাড়ার জমিয়তুল ফালাহ মসজিদেও। এ মসজিদের উত্তর-পশ্চিম পাশের সড়ক ও ফুটপাতে অর্ধশতাধিক অস্থায়ী স্টল বসেছে।

শবে বরাতকে ঘিরে বিকেল থেকে চাঙা হয়ে ওঠে ইফতারির দোকানগুলো। সারা দিন যারা নফল রোজা রেখেছিলেন তাদের জন্য ইফতার কিনছিলেন স্বজনরা। চট্টগ্রামের রেওয়াজ হিসেবে, অনেকে আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী বিশেষ করে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া রুটি, মাংস, পরোটা, উন্নতমানের খাবার বিলি করেছেন। এর জন্য কয়েকদিন ধরে বাজার সওদা করেছেন তারা। তাই চাঙা ছিল মুরগি, গরু, ছাগল, মহিষের মাংসের বাজারও। সওয়াবের আশায় অনেকে গরিব, মিসকিনদের দান-সদকা দিতে দেখা গেছে। নামাজ ও মোনাজাতের পর মুসল্লিরা ছুটে যান স্বজনদের কবর জেয়ারতে। অনেকে বিভিন্ন আউলিয়ার মাজার জেয়ারত করেন এ সময়।

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে নামাজ শেষে চৈতন্য গলি বাইশ মহল্লা কবরস্থানে যাচ্ছিলেন রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি শবে বরাতে বাবা-মা, মুরুব্বিরা সারা রাত নফল এবাদত করতেন, স্বজনদের কবর জেয়ারত করতেন, কোরআন তেলাওয়াত করতেন। গরিব ও স্বজনদের খাওয়াতেন। এখন বাবা-মা কবরের বাসিন্দা। জেয়ারতের জন্য ছেলেকে নিয়ে কবরস্থানে যাচ্ছি। এ রাত গুনাহ মাফ চাওয়ার রাত। এ রাত ভাগ্য বণ্টনের রাত। এ রাত ভালো কাজ করার রাত।