আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি সপ্তাহে তিনি মধ্য এশিয়ার ছোট দুটি দেশ সফর করবেন বলে জানা গেছে।

দেশ দুটি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ছিল। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে শেষের দিকে মস্কোর এই আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়াতেই ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন আক্রমণের আদেশ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি সপ্তাহেই তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মধ্য এশিয়ার দু’টি দেশ সফর করবেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন রসিয়া-১ এর ক্রেমলিন প্রতিনিধি পাভেল জারুবিন বলেছেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট এ সপ্তাহে তাজিকিস্তান ও তুর্কমিনিস্তান সফরে যাবেন। সফর থেকে ফিরে এসে তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর সঙ্গে মস্কোতে বৈঠক করবেন। ’

জারুবিন আরও বলেছেন, ‘তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে তাজিক প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমোনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পুতিন। ’ ইমোমালি দীর্ঘদিন ধরে তাজিকিস্তান শাসন করছেন এবং তিনি রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া পুতিন তুর্কমিনিস্তানের রাজধানী অন্যদিকে আশগাবাতে আজারবাইজান, কাজাখস্তান, ইরান এবং তুর্কমেনিস্তানের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রেসিডেন্ট।

শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান ক গত ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ বিদেশ সফরে চীন যান পুতিন। ওই অনুষ্ঠানে যোগদানের কয়েক ঘণ্টা আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্ব চুক্তি করেন পুতিন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।

 

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোলাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্টমন্ত্রী মাইক পম্পেওর দাবি, ইরানের সরকার কিছু ‘শয়তান ধর্মশাসক’-দের নিয়ে তৈরি। যাদের লক্ষ্য হলো ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করা।

সৌদি আরবের গণমাধ্যম আল আরাবিয়ার সঙ্গে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন মাইক পম্পেও।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতিরও সমালোচনা করেন।

ইরানের শাসকদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত এ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি ইরানের শাসক কে। এগুলো হলো ‘শয়তান ধর্মশাসক’ যাদের লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের ধ্বংস করা।

ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে হওয়া একটি পারমাণবিক চুক্তি নতুন করে করতে চাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। এই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে সরে এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বাইডেন কেন নতুন করে এ চুক্তিটি করতে চাচ্ছেন সেটির সমালোচনা করেছেন পম্পেও। তার দাবি এর মাধ্যমে ইরান ক্ষণস্থায়ী সময়ের জন্য তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরিধি বাড়ানো থেকে বিরত থাকবে।

তার দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র প্রোগ্রাম থেকে বিরত থাকার কথা দিলেও সেটি তারা মানেনি। ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাধ্য হয়ে চুক্তি থেকে সরে এসেছিল।

আন্তর্জাতিক

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের বিস্ময় দেখে আমরাও বিস্মিত। শুক্রবার (১৭ জুন) যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আয়োজিত এমটকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সেখানে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন, বাণিজ্য এবং দু’দেশের জনগণের মধ্যেকার সম্পর্কসহ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে আমরা র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। তারপর অনেকবার শুনেছি যে বাংলাদেশ এতে অনেক অবাক হয়েছে। সম্ভবত আমরাও বিস্মিত তাদের বিস্ময় দেখে। কারণ ২০১৮ সালেই আমরা র‍্যাবকে প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধ করেছিলাম। কেননা মানবাধিকার নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিল। প্রতি বছর মানবাধিকার প্রতিবেদনে আমরা উদ্বেগগুলো প্রকাশ করেছি। আমরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও বিষয়টি তুলে ধরেছি। ফলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিস্ময় হিসেবে এলেও আমাদের যে উদ্বেগ ছিল সেটি নিয়ে বিস্ময় থাকার কথা নয়।

তিনি বলেন, অনেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, এতে করে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কি না। আমি তখন বলি, এতে আমাদের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। কেননা আমাদের অনেক বিস্তৃত ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে আমরা সহযোগিতা করছি। তবে র‍্যাব ও অন্যান্য ইস্যু সমাধানে আমাদের আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, জিএসপি ও ডিএফসি পেতে যা যা করতে হয়, দুর্ভাগ্যজনক বাংলাদেশ এখনো সেসব পূরণ করেনি। কিন্তু তারা ক্রমাগতভাবে জিএসপি বাধা তুলে নিতে বলছে। জিএসপি ও ডিএফসি ফিরে পেতে আমরা উদ্যোগ অব্যাহত রাখব।

তিনি বলেন, অংশীদারিত্বের বিষয়টিকে বাংলাদেশ যত দ্রুত এগিয়ে নেবে, আমরাও ঠিক ততটা দ্রুত এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

আন্তর্জাতিক

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির উল্লেখ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু মহলের জল্পনা খন্ডন করে বলেছেন, সামষ্টিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার দিক থেকে বাংলাদেশ “অত্যন্ত ভালো” করেছে।

কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ মূলত শ্রীলঙ্কা নয়। বাংলাদেশ কার কাছ থেকে এবং কোন শর্তে অর্থ ধার করবে সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে”।

হাস বলেন, চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণ নেয়ার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ঢাকা বৈদেশিক অর্থায়নের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), বিশ্বব্যাংক গ্রুপ এবং জাপানকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়।

রাষ্ট্রদূতের বিশ্লেষণ অনুসারে বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যা এখন শ্রীলঙ্কায় প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ বাংলাদেশে বর্তমানে যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে।

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ডিসিএবি) এখানে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সাথে সংলাপের অংশ হিসাবে “ডিসিএবি টক” শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

হাস আরো বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের তুলানায় এটি মূলত ভিন্ন প্রকৃতির। মার্কিন দূত কিছু সমালোচকের বিশ্লেষণ উল্লেখ করেন যারা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির পতনের কারণ হিসাবে চীনের “ঋণ-ফাঁদ’ নীতিকে দায়ী করেছেন। তবে, অন্য অনেকের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

বাংলাদেশের সরকারের সমালোচক এবং বিরোধী রাজনীতিকদেরও আশঙ্কা ছিল বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতো পতন প্রত্যক্ষ করবে। যদিও নিরপেক্ষ আর্থিক বিশ্লেষকরা দুই দেশের বাস্তবতা ভিন্ন বলে জল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

চীন বিরোধী “ঋণ ফাঁদ কূটনীতি” প্রচারনা সত্ত্বেও, বেইজিং দৃশ্যত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে ছোট ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশাল মুনাফা লাভের পাশাপাশি একটি ভূ-রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা অব্যাহত রেখেছে।

চীন বরাবরই এ ধরণের অভিযোগ নাকচ করে বলেছে যে, “ঋণ ফাঁদ” একটি মিথ।

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালিয়ে রাশিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড়ে পড়া এবং কিইভে বিদেশি সামরিক সহায়তার ঢেউ শুরু হওয়ার তিনমাস পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিষ্কার করে জানালেন, যুক্তরাষ্ট্র মস্কোয় শাসন ক্ষমতা পরিবর্তন করতে চাইছে না।

‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকার মতামত কলামে এক লেখনীতে বাইডেন বলেছেন, “যদিও আমি (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির) পুতিনের সঙ্গে একমত নই, আর তার কর্মকাণ্ডও ভয়ানক মনে করি…তারপরও যুক্তরাষ্ট্র মস্কোয় তাকে উৎখাতের চেষ্টা করবে না।”

“যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্ররা যতক্ষণ পর্যন্ত আক্রান্ত না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সরাসরি সংঘাতে জড়াব না; ইউক্রেইনে যুদ্ধ করতে মার্কিন সেনা পাঠব না কিংবা রুশ বাহিনীকে আক্রমণও করব না। আমরা নেটো জোট এবং রাশিয়ার মধ্যেও সংঘাত চাই না,” বলেন বাইডেন।

ইউক্রেইনকে আরও নিখুঁতভাবে মূল নিশানাগুলোতে আঘাত হানতে সক্ষম করে তোলার জন্য ওয়াশিংটন থেকে সদ্যই দেশটিকে আরও অত্যাধুনিক রকেট সিস্টেম ব্যবস্থাপনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তিনি মস্কোকে এই বলেও আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি ইউক্রেইনকে এই অস্ত্র তাদের ভূখন্ডের বাইরে ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করবেন না।

ইউক্রেইনকে সুনির্দিষ্ট কোনও অস্ত্র ব্যবস্থা দেওয়ার বিষয়টি বাইডেন নাকচ না করলেও সেই অস্ত্র ব্যবহারের ব্যাপারে শর্তারোপ করছেন বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। “কেবল রাশিয়াকে যন্ত্রণায় ফেলতে আমরা যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে চাই না,” বলেছেন বাইডেন।

‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ জানায়, বাইডেন লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য খুবই সোজাসাপ্টা: আমরা একটি গণতান্ত্রিক, স্বাধীন, সার্বভৌম এবং সমৃদ্ধশালী ইউক্রেইন দেখতে চাই। আরও কোনওরকম আগ্রাসন থেকে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখার উপায়ও তাদের হাতে থাকা চাই।”

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যেমনটি বলেছেন, শেষপর্র্যন্ত এই যুদ্ধ “কেবল কূটনীতির মধ্য দিয়েই শেষ হতে পারে।” প্রতিটি আলোচনাতেই মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটছে। আমরা দ্রুতই ইউক্রেইনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিতে তৎপর হয়েছি। যাতে তারা রণক্ষেত্রে লড়তে পারে এবং আলোচনার টেবিলে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারে।

“সে কারণেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা ইউক্রেইনকে আরও অত্যাধুনিক রকেট ব্যবস্থা এবং অস্ত্র দেব, যাতে করে তারা ইউক্রেইনের ভেতরে রণক্ষেত্রের মূল নিশানাগুলোতে আরও সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানতে পারে”, লেখেন বাইডেন।

পুতিনকে নিয়ে বাইডেন এবার যে মন্তব্য করেছেন, তাতে রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বাইডেনের আরও আগে করা একটি মন্তব্যেরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা বেরিয়ে এসেছে। ইউক্রেইনে হামলা করায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ক্ষমতায় থাকতে পারেন না’ বলে গত মার্চে পোল্যান্ডে এক ভাষণে মন্তব্য করেছিলেন বাইডেন।

সেই সময় বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, বাইডেনের এমন মন্তব্য ‍যুদ্ধের আগুনে আরও ঘি ঢেলে দেবে। রাশিয়া সরকারের এক মুখপাত্র একে ‘বিস্ময়কর’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। আর হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা তখন চটজলদি বিষয়টিকে হালকা করারও চেষ্টা নেন।

বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা তখন যুক্তি দেখিয়ে বলেছিলেন, “প্রেসিডেন্ট বাইডেন আসলে এটাই বলতে চেয়েছেন যে, পুতিনকে রাশিয়ার প্রতিবেশীদের ওপর কিংবা ওই অঞ্চলের ওপর ক্ষমতা জাহির করতে দেওয়া যাবে না।”

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেইনকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এই সহায়তা দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘আগুনে ঘি ঢালছে’।

রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, “এ ধরনের অস্ত্র সরবরাহ করলে কিইভ শান্তি আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী হবে না। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে রাশিয়া শেষ ইউক্রেইনীয় নাগরিকটির সঙ্গেও লড়াই করুক।”

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে প্রিসিশন গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ৭০ কিলোমিটার (৪৫ মাইল) দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানা সম্ভব।

ইউক্রেইন এই অস্ত্র রাশিয়ার ভূখন্ডে কোনও নিশানায় হামলার জন্য ব্যবহার করবে না- এমন নিশ্চয়তা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র কিইভকে তা দিতে রাজি হয়। ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আশ্বস্ত করে বলেছেন, তার দেশের ওইরকম হামলা চালানোর ‘কোনও অভিপ্রায় নেই’।

কিন্তু ইউক্রেইনের হাতে এমন অস্ত্র আসাকে রাশিয়া ঝুঁকি হিসাবেই দেখছে। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ আরও আগেই বলেছিলেন, ইউক্রেইনে এইসব নতুন অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি রিয়াবকভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিল, “যে কোনও অস্ত্র সরবরাহ চলতে থাকলে…ওই ধরনের ঘটনা ঘটার ঝুঁকি বাড়বে। এটি নজিরবিহীন, এটি বিপজ্জনক।”

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন যে কীভাবে তারা রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কিনেছে।

ভারতের আসাম থেকে ফিরে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আসামে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ভারত জ্বালানি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (ভারত) এটি টেকনিক্যালি করেছে। আমরা ভারতের কাছ থেকে এ বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছি… তারা বড় দেশ, তারা ম্যানেজ করতে পারে। আমরা ছোট দেশ, আমাদের ওপর মাতুব্বরি বেশি।

তিনি জানান, জয়শঙ্করের সঙ্গে তিনি ভারতের গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা নিয়েও আলোচনা করেছেন। জয়শঙ্কর তাকে বলেছেন যে বাংলাদেশের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়।

তিনি আরও বলেন,এমনকি বেসরকারিভাবেও ভারত থেকে গম আমদানি করা যাবে, যদি তা তৃতীয় কোনো দেশের জন্য না হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী আঞ্চলিক সংগঠন চাই। আমরা বহুপাক্ষিকতার প্রবক্তা। আমরা এটাকে দুর্বল করতে চাই না।

এদিকে, বাংলাদেশকে জ্বালানি তেল ও গম দিতে চেয়েছে রাশিয়া। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার ভয়ে আমরা তা নিচ্ছি না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রাশিয়ার প্রস্তাব সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (রাশিয়া) আমাদের বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে…শর্তগুলো অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।

গত ২৮-২৯ মে আসামের গুয়াহাটিতে আন্তর্জাতিক নদী সম্মেলনের পাশাপাশি তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সোমবার ফোনে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।

এই ফোনালাপের পর একটি বিবৃতি দিয়েছে তুরস্ক।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান জানিয়েছেন তারা রাশিয়া, ইউক্রেন এবং জাতিসংঘের সঙ্গে ইস্তানবুলে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন এবং যদি দুই পক্ষ রাজি হয় তাহলে সম্ভাব্য পর্যবেক্ষন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে।

এছাড়া এরদোগান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন যুদ্ধের নেতিবাচক দিকগুলো যেন কম থাকে সেদিকটি নিশ্চিত রাখতে তিনি যেন পদক্ষেপ নেন।

এরদোগান পুতিনকে আরও বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য।

এদিকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা সর্বশেষবার ২৯ মার্চ তুরস্কে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া সে আলোচনায় কোনো ফলাফল আসেনি।

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বার্তা সংস্থা এএফপি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে দুই দেশের মধ্যকার আলোচনা প্রক্রিয়ায় ‘নাশকতা’ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন। অস্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে পুতিন এই অভিযোগ করেন বলে ক্রেমলিন শুক্রবার জানিয়েছে।

পুতিন নেহামারকে আরও বলেন, রাশিয়া আজভ এবং কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, তিনি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি বৈঠকের আয়োজন করার জন্য বারবার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু রাশিয়া এখনও গুরুতর শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে না।

জেলেনস্কি আরও বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলাটা হয়ত অনেকেই পছন্দ করবে না। কিন্তু ইউক্রেনকে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনের সঙ্গেই সরাসরি কথা বলতে হবে।

এ ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়ার একটি থিংক ট্যাংকের সঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার নেতার সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমি আপনাকে বলছি না যে আমাদের দেশের জনগণ তার (পুতিন) সঙ্গে কথা বলতে মুখিয়ে আছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে যেখানে এখন আমরা আছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা এ বৈঠক থেকে কি চাই…আমরা আমাদের জীবনগুলো ফিরে পেতে চাই। আমরা পুনরায় আমাদের একটি সার্বভৌম দেশের জীবন ফিরে পেতে চাই আমাদের নিজেদের দেশে।

আন্তর্জাতিক

শান্তিরক্ষায় জীবন উৎসর্গের জন্য দুই বাংলাদেশিসহ ১১৭ জন শান্তিরক্ষীকে ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ সম্মাননা দিয়েছে জাতিসংঘ।

শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশসহ ৪২ দেশের স্থায়ী প্রতিনিধির হাতে এ পদক তুলে দেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সম্মাননাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫৫ জন সামরিক, দুইজন পুলিশ এবং ৬০ জন বেসামরিক শান্তিরক্ষী রয়েছেন।

গেল বছর মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা অবস্থায় নিহত হন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম মাহমুদুল হাসান। একই বছর দক্ষিণ সুদানে প্রাণ দিতে হয় ল্যান্স কর্পোরাল মো. রবিউল মোল্লাকে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের পদক গ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী রাবাব ফাতেমা।