রাজনীতি

উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য, আমি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবো, আমার একজন থাকবে তাকে জেতানোর জন্য গোটা প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করবো, এটা হতে পারবে না। যে উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যটা কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত করা যাবে না।’

সেতুমন্ত্রী আজ আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এই কথা জানান। বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সামনে উপজেলা নির্বাচন। উপজেলা নির্বাচন এবার নতুনভাবে, নতুন পরিবেশে আপনাদের অনুরোধে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা দেখতে চাই এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কতটা প্রতিযোগিতামূলক, প্রতিদ্বন্ধিতামূলক হয়। নির্বাচনে যারা প্রার্থী হতে চায় হবে। আমরা একটা প্রভাবমুক্ত ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন করতে চাই।’

তিনি বলেন, আমরা এবার প্রথম থেকেই আটঘাট বেঁধেনেমেছি। কারণ, প্রথম থেকেই সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার দিকে আমরা নজর দিয়েছি। যার যেমন খুশি যখন তখন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যদেবেন সেটার দায়িত্ব দল গ্রহণ করবে না। একজনের একটা বক্তব্য গোটা দলের শৃঙ্খলার ওপর আঘাত করে, এমন কিছু হলে অবশ্যই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের যেখানে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় ওয়াল আছে তা ভেঙে দিতে হবে।

কাদের বলেন, যে উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্য ব্যাহত করা যাবে না। প্রতিযোগিতা যারা করতে চায় করুক। ইলেকশন সম্পূর্ণভাবে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে চাই। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। নির্বাচন আগের আশঙ্কা, আতঙ্ক ছিল, তা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে। সারা বিশ্ব নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছে। ৮০টি দেশ শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তার সাথে ৩২টি সংস্থা অভিনন্দন জানিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। জেলার সঙ্গে উপজেলা, উপজেলার সঙ্গে ইউনিয়নের সাংগঠনিক সেতু তৈরি করতে হবে। আমাদের যেখানে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় ওয়াল আছে তা ভেঙে দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর এমপি।

রংপুর বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী সভা সঞ্চালনা করেন।

রাজনীতি

অবকাঠামোগত বিনিয়োগে রাস টেনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপরে এই মুহূর্তে অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে হবে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

শনিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনসিটিটিউটে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায় মন্ত্রী একথা বলেন।

শিক্ষায় বিনিয়োগ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের উপর বিনিয়োগ বাড়ছে। যেহেতু অনেক ধরনের অবকাঠামোগত কাজ প্রায় শেষ হয়েছে অনেক জায়গায়, অবকাঠামোগত বিনিয়োগ আমাদের অনেক হয়েছে ইতোমধ্যে হয়েছে। সেগুলোতে কিছুটা রাস টেনে এনে আমরা মনে করি শিক্ষকের ওপরে এই মুহূর্তে অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। আমরা এখনও দেখি প্রশাসনিক ভবনের জন্য অনুরোধ পাই দশতলা, বিশতলা। কিন্তু একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য সেটা সেভাবে দেখা যায় না। শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন না, আমাদের গুণগত উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষকদের সম্মানী-বেতন-সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই সেগুলোতে অনেক পরিবর্তন করতে হবে। এজন্য আমরা বলছি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষকের ভূমিকা সবচাইতে মুখ্য।

তিনি বলেন, অনেক স্তরের শিক্ষক আছে। শিক্ষকদের মধ্যে মানসিক ও পেশাগত দূরত্ব যেন না থাকে। শুধু ক্যাডারভিত্তিক উন্নয়ন হলে হবে না। আমাদের সার্বজনিনভাবে চিন্তা করতে হবে। তাহলে দাবিটা শক্তিশালী হতে হবে।

প্রশাসনে শিক্ষকদের প্রবেশযোগ্যতা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশাসনে শিক্ষক হিসেবে কোন অংশে অংশগ্রহণ করা উচিত, আবার কোন অংশে সুনির্দিষ্ট দক্ষতা বা যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতার কমতি আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রশাসকের জায়গাটাতে কতটুকু হস্তক্ষেপ থাকবে আবার থাকবে না সেগুলোও আলোচনায় আসতে হবে।

কঅনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ, বাংলা একাডেমির ফেলো প্রফেসর রতন সিদ্দিকী, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত হোসেন মোল্ল্যা প্রমুখ।

রাজনীতি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সোয়া ৩টা) তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছিল।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা শনিবার গভীর রাতে গুলশানের বাসায় গিয়ে জরুরি কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রাত আড়াইটার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া।

এদিকে, দলীয় প্রধানের হাসপাতালে যাওয়ার খবরে গভীর রাতেই বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসা ও হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন।

এ সময় নেতাদের মধ্যে ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এর আগে চলতি মার্চ মাসের ১৩ তারিখ খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরদিন মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় ফেরেন।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে ৬ মার্চও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন।

মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশসহ (খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি) সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও তা নাকচ করে দেয় সরকার। বরং আগের মতো দুই শর্তে (বিদেশে যেতে পারবেন না ও ঢাকায় থেকে চিকিৎসা) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর এ বিষয়ে গত বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২৫ মার্চ থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত থাকবে।

গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত এই ভাষণের পূর্ণ বিবরণ নি¤েœ উল্লেখ করা হলো।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় দেশবাসী।
আসসালামু আলাইকুম।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আমি দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের বাইরে বসবাসকারী বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও পবিত্র রমজানের মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

স্বাধীনতা দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব এবং অপরিসীম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। স্মরণ করছি জাতীয় চারনেতা – সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মাবোনকে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সালাম।

আমি গভীর বেদনার সঙ্গে আরও স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকদের বুলেটে নিহত আমার মা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, তিন ভাই – বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ লে. শেখ জামাল, ১০-বছরের শেখ রাসেল- কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, আমার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, বীর মুক্তিযোদ্ধা যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ব্রিগেডিয়ার জামিল এবং পুলিশের এএসআই সিদ্দিকুর রহমান-সহ সেই রাতের সকল শহিদকে। আমি সকলের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

১৯৭৫ পরবর্তী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিহত সকল শহিদকে আমি স্মরণ করছি।
প্রিয় দেশবাসী,

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্ক্রুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার এবং ১৯৭৫-এর পর পঞ্চমবারের মত সরকার গঠন করেছে। একইসঙ্গে আমার দল আমাকে পঞ্চমবারের মত প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব অর্পন করেছে।

দেশবাসীর প্রতি আমার কর্তব্য হিসেবে এবং আমার পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমি বার বার এই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি।

আমি চেষ্টা করেছি সকলের সমর্থন এবং সহযোগিতা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মাধ্যমে তাঁদের মুখে হাসি ফোটাবার। আজকে ২০২৪ সালে স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা কোন অসার বাগাড়ম্বর দাবি নয়। বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা প্রমাণ করেছি রাজনৈতিক সদ্বিচ্ছা এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ দিয়েও একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর অস্ত্রের মুখে সামরিক শাসকেরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে কায়েম করে একনায়কতন্ত্র। স্থবির হয়ে পড়ে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের জাতির পিতার নেওয়া সকল কার্যক্রম। জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের পরিবর্তে ক্ষমতাসীনরা তাদের নিজেদের ভাগ্য বদলাতে বিভোর হয়ে থাকে।

১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একুশ বছরের ইতিহাস এদেশের মানুষের নিপীড়ন আর বঞ্চনার ইতিহাস। এ সময় লুটপাট, দুর্নীতি, ইতিহাস বিকৃতি, মৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মৌল চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর এবং পশ্চাদপদ দেশের তকমা পড়িয়ে দেওয়া হয়। নিদারুণ দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অকাল মৃত্যু এবং শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসার অভাব ছিল এদেশের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। সাধারণ মানুষ এসব বঞ্চনাকে ভাগ্যের লিখন হিসেবে মেনে নিতো। তখন মানুষকে বুঝতেই দেওয়া হয়নি যে, তাদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে কিছু আছে।

১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে জনবান্ধব নীতি গ্রহণ করা শুরু করে।

১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুঃস্থ মানুষের জন্য বয়স্ক ভাতা, দুঃস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, কম্যুনিটি ক্লিনিক, নিরক্ষরতা দূর করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার বিস্তার, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতুসহ ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি আমরা। এই সর্বপ্রথম সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন তাঁদেরও সরকারি সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

প্রিয় দেশবাসী,
আপনাদের ম্যান্ডেট নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিগত পনের বছরের অধিক সময় ধরে সরকার পরিচালনা করছে। এই পনের বছরের অভিযাত্রা একেবারেই কুসমাস্তীর্ণ ছিল না।

প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, মহামারি, যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি দেশি-বিদেশি শক্তির নানা ষড়যন্ত্র আমাদের চলার পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে বার বার। ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডর এবং কয়েক দফা প্রলঙ্কারী বন্যা উপকূলীয় এবং নি¤œাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শুধু আমাদের দেশের নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। সে ধকল কাটতে না কাটতেই ২০২২ সালের গোড়ার দিকে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক অবরোধ-পাল্টা অবরোধ আরোপের ফলে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলি চরম সঙ্কটের মুখে পড়েছে। নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি এসব পণ্যের স্বাভাবিক চলাচলও বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এরসঙ্গে গত বছরের শেষে যুক্ত হয়েছে গাজায় ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলী বাহিনীর গণহত্যা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও জনজীবনে কম দুর্ভোগের কারণ হয়নি। ২০১৩-১৪ সময়ে এবং ২০১৬ সালে বিএনপি-জামাতের দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ, অগ্নি-সন্ত্রাস, অগণিত মানুষ হত্যার মত নৃশংসতা এখনও জনমনে গভীর দাগ কেটে আছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি এবং তার মিত্ররা এবারও হরতাল-অবরোধ, অগ্নি সংযোগের মত সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সূচনা করেছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে এবার তাদের পিছু হটতে বাধ্য হতে হয়। তবুও তাদের হাতে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান এবং কয়েক ’শ কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়।

এসব অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে আমরা দেশের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিগত দেড় দশকে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব রূপান্তর ঘটেছে। অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অভিঘাত মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার, দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ সকল খাতে আজকে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। এক সময়ের দারিদ্র্য-জ্বরাক্লিষ্ট বাংলাদেশ আজ সক্ষম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ।

২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সকল শর্ত পূরণ করেছে। আশা করা হচ্ছে ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ স্থায়ীভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হবে।

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১.৫ শতাংশ হতে হ্রাস পেয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১৮.৭ শতাংশে এবং হতদরিদ্রের হার ২৫.১ হতে ৫.৬ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। আজ খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ং-সম্পূর্ণ। বর্তমানে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৯৩ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে। মাছ-মাংস, ডিম, শাকসবজি উৎপাদনেও বাংলাদেশ স্বয়ং-সম্পূর্ণ। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে এবং ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। অব্যাহত নীতি সহায়তা ও প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে এসব সাফল্য এসেছে। শিশু মৃত্যুর হার নেমে এসেছে প্রতি হাজারে ২১জনে এবং মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৬১ জনে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে।

পদ্মাসেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, বিভাগীয় শহরগুলির সঙ্গে চার বা তারও বেশি লেনের মহাসড়ক চালু, ইত্যাদি অবকাঠামো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে। দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

প্রিয় দেশবাসী,
এবারের রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ আগে থেকেই চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তুলি। একচেটিয়া বাজার তৈরি করে অধিক মুনাফা যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য ভারত হতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ এবং প্রায় সমপরিমাণ আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য রাজধানী ঢাকার অন্তত ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম এবং দুধ সুলভমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারাদেশের ১ কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভমূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলা – এই ৫টি পণ্য বিতরণ করছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর – এই ৬টি পণ্য বিতরণ করছে। ঈদ উপলক্ষে সারাদেশের ১ কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবার বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন।

আমরা এ বছর সরকারিভাবে এবং দলগতভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন নিরুৎসাহিত করেছি। আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠন নির্দেশমত তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছে।

রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ, পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েকদিনের মধ্যেই স¦াভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের কষ্ট লাঘবের।

প্রিয় দেশবাসী,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জন্মের পর থেকেই গণতন্ত্র, মানবিধাকার এবং মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের লড়াই করে আসছে। এসব লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের স্বৈরশাসন, শোষণ-নির্যাতনের নাগপাশ থেকে মুক্তিলাভ করে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের। সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি প্রণয়ন করেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান যেখানে চার মূলনীতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।

১৯৭৫-এর পর আইয়ুব-ইয়াহিয়ার অনুকরণে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করলে আওয়ামী লীগই প্রথম এগিয়ে আসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে। পরের একুশ বছর আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে গণতন্ত্র এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯৮১ সালে ৬ বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসার পর ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাকেও বার বার মৃত্যুর মুখোমুখি এবং কারাবন্দি হতে হয়েছে। আমাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯বার সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়।

হাজারও শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনই ভুলুণ্ঠিত হতে দেবে না। উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ আমরা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছি। দেশের সকল গণতান্ত্রিক দল এবং সাধারণ মানুষকে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য অতদ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের সংবিধানই গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া ও সমুন্নত রাখার সর্বোচ্চ রক্ষাকবচ। সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে বা পদদলিত করে কোন কিছু করার চেষ্টার অর্থ হচ্ছে গণতন্ত্রকে খর্ব করা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই সংবিধানকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে। জাতীয় সংসদকে আমরা রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি। স্থানীয় সরকারের সকল স্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিগণের দ্বারা স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রাণপ্রিয় দেশবাসী,
যুগ যুগ ধরে আমাদের এই ভূখ- ঔপনিবেশিক শক্তির লক্ষ্যবস্তু ছিল। নানা সময়ে বিদেশি শক্তিরা এদেশ নিজেদের কব্জায় নিয়ে শাসন করেছে, সম্পদ লুট করেছে, শোষণ করেছে। কোনদিনই বাঙালি পরিপূর্ণ স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম আর ৯-মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে প্রথমবারের মত সম্পূর্ণভাবে মুক্তিলাভ করে।

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমাদের এই স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে খর্ব করার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র আজও থামেনি। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও ওৎ পেতে বসে আছে কীভাবে বাংলাদেশের অগ্রসরমান অভিযাত্রাকে স্তব্ধ করা যায়।

একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসররা এখনও তৎপর রয়েছে পরাজয়ের বদলা নিতে। সুযোগ পেলেই তারা আঘাত হানবে। তাদের সামনে একমাত্র বাধা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নিচিহ্ন বা দুর্বল করতে পারলেই পরাজিত শক্তির উত্থান অনিবার্য। কাজেই কা-ারি হুঁশিয়ার।

বাঙালি বীরের জাতি। যুদ্ধ করে আমরা এদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় – জাতির পিতা নির্দেশিত এই বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করেই আমরা দেশ পরিচালনা করি। আমাদের কোন প্রভু নেই, আছে বন্ধু। তাই কারও রক্তচক্ষু বাঙালি জাতি কোনদিন মেনে নেবে না। প্রয়োজন হলে বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সম্মান রক্ষা করবে।

প্রিয় দেশবাসী,
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের উপর আবারও আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, যে উন্নয়ন-অগ্রগতি আমরা এখন পর্যন্ত সাধন করেছি, তা আরও এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যে বাংলাদেশ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার ৫৪তম দিবসে আসুন, সকল কুট-কৌশল-ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই।

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী
ভয় নাই ওরে ভয় নাই
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।

মহান আল্লাহ আমাদের সকলের সহায় হোন। সবাইকে আবারও আন্তরিক শুভেচ্ছা।
খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীরবে নিভৃতে থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়া নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে পুরস্কারে সম্মানিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, যাতে অন্যরা অনুপ্রাণিত হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে আহ্বান জানাচ্ছি যারা বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে ও অন্যান্য এলাকায় নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে চলেছেন, তাদের খুঁজে বের করে পুরষ্কার দিয়ে সম্মানিত করার জন্য। তাদের জন্য নয়, বরং জনগণের কল্যাণের জন্য। কারণ, তারা কখনই সামনে আসেন না বা আসতে চান না। নিজস্ব উদ্যোগে বা স্ব-প্রণোদিত হয়ে যারা মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন অবদান রেখে যাচ্ছেন তাদেরকে পুরস্কৃত করতে পারাটাই সবচেয়ে বড় কথা।’

প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ প্রদানকালে প্রধান অতিথি’র ভাষণে একথা বলেন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য যারা স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এই পুরস্কার প্রাপ্তির ফলে মানুষের জন্য কাজ করা ও দেশের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আরো অনেকে অনুপ্রাণিত হবেন এবং দেশের কল্যাণে কাজ করবেন, সেটাই আমরা আশা করি।’

সরকার প্রধান তাঁর ভাষণে বিগত ১৫ বছর দেশ শাসনে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি বাংলাদেশের সেই হারানো গৌরব আমরা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর যে মর্যাদা বাংলাদেশ অর্জন করেছিল এবং ‘৭৫-এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর যা হারিয়ে যায়।

তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় রেখে যান। সেখান থেকে আমরা আরো এক ধাপ উত্তরণ ঘটিয়ে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিতে পেরেছি। ২০২৬ সাল থেকে যা কার্যকর হবে। আজ জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে। ‘জয় বাংলা’ আবার ফিরে এসে এখন আমাদের জাতীয় স্লোগানে পরিণত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতিহাস বিকৃতির যত চক্রান্তই হোক না কেন আজকের নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে চায়, বুঝতে চায়। সেই প্রেরণা নিয়েই সামনের দিকে চলতে চায় এবং জীবনকে গড়ে তুলতে চায়। আর এটাই আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় আশার বাণী।

এরআগে গত ১৫ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বছরের স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

পুরস্কার প্রাপ্তরা হচ্ছেন: স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে কাজী আব্দুস সাত্তার বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসা বিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ, সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিক উজ্জামান, ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজ বা জনসেবায় অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এসএম আব্রাহাম লিংকন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন পুরস্কার বিতরণী পর্বটি সঞ্চালনা করেন এবং পুরস্কার বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪ বিজয়ীদের পক্ষে মোহাম্মদ রফিক উজ্জামান অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, উর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে দেশবরেণ্য কবি-সাহিত্যিক লেখকসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কভিড-১৯ পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে নিষেধাঞ্জা ও পাল্টা নিষেধাঞ্জায় বিশ^ব্যাপী খাদ্য পণ্য ও পণ্য পরিবহনের মূল্যবৃদ্ধিতে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতিতে কৃচ্ছতা সাধন এবং দলের নেতা-কর্মীসহ সামর্থ্যবানদের সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মানুষের যাতে কোন কষ্ট না হয় সেজন্য আমরা এই রমজান মাসে মানুষের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করছি।

আমরা ইফতার পার্টি বাদ দিয়েছি। আমাদের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সকলকে আহ্বান করেছি ইফতার পার্টি না করে ইফতার সাধারণ মানুষের মাঝে আপনারা বন্টন করেন। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইফতার পার্টি করা বড় কথা নয়, মানুষকে দেওয়াই বড় কথা। কাজেই, আমরা খাওয়ার বিষয়টা বাদ দিয়ে দেওয়ার দিকেই মনোযোগ দিয়েছি। মানুষের যাতে কোনো রকম কষ্ট না হয় সেদিকে আমরা লক্ষ রেখেছি। এই সময় ন্যায্যমূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী প্রাপ্তিতে এক কোটি কার্ড করে দেওয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকার প্রধান বলেন, আজ ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের সেই কালরাতে গণহত্যার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, ‘আর যারা সেই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের প্রতি জাতির ঘৃণা প্রকাশ করছি।’

শেখ হাসিনা এসময় ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে। আমরা ফিলিস্তিনিদের সাথে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ মানুষের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনে না। কারণ, যুদ্ধকালীন অবস্থা কী রকম হয় তা আমরা জানি, আমরা ভূক্তভোগী।

তিনি জাতির পিতার রেখে যাওয়া পররাষ্ট্র নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর উল্লেখ করে মিয়ানমারের ১০ লাখের অধিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদান এবং প্রতিবেশির সঙ্গে সংঘাতে না জড়িয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের নিজ দেশে সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টার উল্লেখ করেন।

সরকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তি প্রিয় দেশ। তারপরও দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশের অভ্যন্তরে অনেকে অগ্নিসন্ত্রাস,খুন-খারাবি-অনেক কিছু করে থাকে। কাজেই তাদের সুমতি হোক, সেটাই আমরা চাই। কারণ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে একটি দেশ যে উন্নতি করতে পারে তার প্রমাণ আমরা করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের কাছে সম্মানিত। কারণ, তাঁরা জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছিলেন। কাজেই তাদের সম্মান দেওয়া এবং আমাদের এই গৌরবটা যেন হারিয়ে না যায় আমরা তার ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারদের সদস্যদের ভাতা, গৃহহীনদের জন্য বীর নিবাস তৈরিসহ তাঁর সরকার প্রদেয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘দল মত নির্বিশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীনতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়। দেশবাসীকে স্বাধীনতা ও জাতিয় দিবসের শুভেচ্ছাও জানান প্রধানমন্ত্রী।

রাজনীতি

দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর জনসম্মুখে এলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কারাবরণ ও বিদেশে চিকিৎসা শেষে রাজধানীর নয়াপল্টনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের মাধ্যমে তিনি প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন।

সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এর পরদিন রমনা মডেল থানায় এ ঘটনায় মামলা হয়। এ মামলায় ওই দিনই মির্জা ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাবাসের পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান মির্জা ফখরুল। এ সময়ে তার ছয় কেজি ওজন কমে। কারামুক্তির পর মির্জা ফখরুল ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে অধ্যাপক শামসুল আরেফীনকে দেখান এবং বাসায় থেকে তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন।

চলতি বছরের ৩ মার্চ চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর যান ৭৭ বছর বয়সী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগেও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করিয়েছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের ২৪ আগস্ট তিনি সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন।

এদিকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে কথা বলে এবং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে রাজনীতিতে সক্রিয় ও কর্মসূচিতে অংশ নিবো।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে স্বাধীনতা দিবস এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সম্মিলিত সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন। আজ সকালে ফিতা কেটে বেলুন উড়িয়ে তিনি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রদর্শনী ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে। এতে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী তাদের সমরাস্ত্রসহ সরঞ্জাম প্রদর্শন করে। এ উপলক্ষ্যে বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমানের ফ্লাই-পাস্ট এবং অনুষ্ঠানস্থলে হেলিকপ্টার থেকে সেনা বাহিনীর প্যারাট্রুপারদের সফল অবতরণ প্রত্যক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সমরাস্ত্র সম্পর্কে তাকে ব্রিফ করার সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সৈন্যদের ব্যবহৃত বিভিন্ন হালকা ও ভারী অস্ত্র প্রত্যক্ষ করেন।

প্রধানমন্ত্রী ও অতিথিরা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং পরে তাদের সাথে ফটোসেশনে যোগ দেন।

জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সচিব, বিদেশি রাষ্ট্রদূত, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবীর শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে একটি।

তিনি বলেন, পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, লবণাক্ত পানির কারণে জীববৈচিত্র এবং কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সুপেয় পানির উৎসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সুপেয় পানির সরবরাহ ঠিক রাখাই হবে আমাদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

তিনি আজ রোববার ইউনিসেফ আয়োজিত বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে “শান্তির জন্য পানি” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডরা বার্গ ভন লিনডে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিড ড. রাজেন্দ্র বোহরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে পান করার জন্য পানি সরবরাহ একটি চ্যালেঞ্জ হবে। সেজন্য সরকার এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি অর্থাৎ ভূউপরিভাগের পানি সংগ্রহ করে কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।

মন্ত্রী এ সময় শিল্প কারখানার বর্জ্য পানি এবং পয়:নিস্কাশনের পানি পরিশোধন করার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই দুই উৎসস্থলের পানি অপরিশোধিত হলে তা আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করে এবং সুপেয় পানিকেও তা দূষিত করে।
এদিকে মন্ত্রী আজ রোবার সকালে আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বিদেশী ঋণের বিষয়ে বলেন, আমাদের মিডিয়ায় বিদেশী ঋণ নিয়ে অনেক সমালোচনা করা হয়। কিন্তু ঋণ নিয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয় তার ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের ইনকাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আয় রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প (এসসিআরডিপি) নামক প্রকল্প দুটির অর্থায়ন করে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি জাইকা, এডিবি ও এএফডি। জুন ২০২৮ সাল নাগাদ নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে মোট ৬০২ মিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ হবে এবং ডিসেম্বর ২০২৮ সালে শেষ হয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্পে (এসসিআরডিপি) মোট প্রায় ৩,৬৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

প্রকল্প দুটির উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিকল্পনা অনুযায়ী টেকসই নগরায়ন, নগর পরিচালন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করা, দক্ষিণ চট্টগ্রামের জীবন মানের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. শের আলী, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং, এএফডি বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কট্রিস, জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিডে। এছাড়াও প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রগণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি

ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার করেছে বিএনপি। রোববার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই ইফতারের আয়োজন করেন দলটির নেতারা। এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ইফতারে অংশ নেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে কুশল বিনিময় করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ডের প্রায় চার মাস পরে দলীয় কোনো প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপির চলমান আন্দোলনসহ ‘সরকারের দমন-পীড়নের বিভিন্ন বিষয়’ কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে আমরা গভীরভাবে মূল্যায়ন করি। যার মধ্যদিয়ে প্রকৃতভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটা অর্জন করতে না পারি, ততক্ষণ জনগণের শান্তিপূর্ণ ও অসহিংস আন্দোলন চলবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ গভীরভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে। রাষ্ট্র আবারো ফ্যাসিবাদি শাসনের কবলে পড়েছে। বিশ্ববাসী জানে যে, গত ৭ জানুয়ারি যা হয়েছে, তা কোনো নির্বাচন নয়। বরং জাতির গণতান্ত্রিক প্রত্যাশাকে অপমান করা হয়েছে।’

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপি গভীরভাবে অবহিত বলে উল্লেখ করেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। দুই রাষ্ট্রের কৌশলই এই সংকটের সমাধান হতে পারে।’

কূটনীতিকদের মধ্যে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, অস্ট্রিলিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত নার্দির সিম্পসন, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, জার্মান অ্যাম্বাসেডর আখিম ট্রোসটার, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ ছাড়াও ইফতার অনুষ্ঠানে ছিলেন চীন, ভারত, পাকিস্তান, নরওয়ে, সুইডেন, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। বিএনপির ইফতারে অংশ নিয়েছেন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরাও।

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, মীর নাসির, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সুজা উদ্দিন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জহির উদ্দিন স্বপন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কায়সার কামাল, আসাদুজ্জামান আসাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, শাহ নেসারুল হক, ইশরাক হোসেন, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, অধ্যাপক শহীদুজ্জামান, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, সাবেক ব্যাংকার বখতিয়ার নাসের বখতিয়ার, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব তাজুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি।

ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজেও অংশ নেন।

রাজনীতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তথ্য প্রযুক্তি ও বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেন।

বঙ্গভবনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, টেক্সটাইল বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অন্যতম প্রধান এবং সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত।

তিনি টেক্সটাইল খাতের আধুনিকায়ন ও বৈচিত্রকরণে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্য রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের টেক্সটাইল পণ্যকে আরো বেশি জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় করতে ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সাক্ষাতকালে বুটেক্স উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়াদি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, ১৯৫৭ সালে তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী থাকাকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ও  আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য তেজগাঁওয়ে জায়গা বরাদ্দ দেন এবং প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণকাজ শুরু করেন।

বুটেক্স উপাচার্য বলেন, পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে এটিকে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।